লাইস্টাইলঃ- মেয়ের জন্মদিনে গিফটের মাধ্যমে আনন্দ দেওয়া।

in hive-129948 •  10 hours ago 

শুভ দুপুর,

প্রিয় আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সম্মানিত ব্লগার ভাই ও বোনেরা আসসালামু আলাইকুম। আশা করি বন্ধুরা আপনারা সবাই ভালো আছেন কর্মব্যস্ততা নিয়ে। পরিবারের সবাইকে নিয়ে সুস্থ আছেন সেই প্রত্যাশা কামনা করছি। আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি আপনাদের দোয়ায় সৃষ্টিকর্তার অসীম রহমতে। আপনাদের দোয়ায় সুস্থ আছি পরিবারের সবাইকে নিয়ে। প্রিয় বন্ধুরা সকাল থেকে ব্যস্ততা শেষ হচ্ছে না সেই ব্যস্ততার মাঝেও পোস্ট লেখা শুরু করে দিলাম। আসলে বিকেলবেলা পোস্ট করতে গেলে খুবই ঝামেলা হয়ে যায়। যেহেতু বাচ্চাদেরকে পড়াতে হয় তাদেরকে সময় দিতে হয় সেই সাথে রান্না করা না থাকলে রান্না করতে হয়। আর সকাল বেলায়ও এখন আর পোস্ট করতে পারি না বাচ্চাদের স্কুল থাকে তাই বিজি থাকি। আবার দুপুরে রান্না করতে হয় সবকিছু মিলিয়ে বেশ ক্লান্ত হয়ে যায়। আজকে আমি আবার হাজির হয়েছি আপনাদের সাথে নিত্যদিনের ধারাবাহিকতা নিয়ে একটি টপিকস।

IMG_20241117_230534685.jpg

গত 17 তারিখ আমার বড় মেয়ের জন্মদিন ছিল। বন্ধুরা প্রতিবছর ছোট বা বড় করে অনুষ্ঠানটি পালন করার চেষ্টা করি। যদিও কেক কেটে হৈয় হোল্লর করা তেমন একটা হয় না কিন্তু কতমে কুরআনের আয়োজন করা হয়ে থাকে। কিন্তু এবার একদম ভিন্ন হয়ে গেল। কারণ এত ব্যস্ততার মাঝে আসলেই ঝামেলা করতে একদম ইচ্ছে করেনি আমার। তাছাড়া শারীরিক সুস্থতা বলে একটি কথা আছে। যখন মন মানসিকতা একদম ঠিক থাকে না তখন আর কিছু ভালো লাগেনা। তাই একদম চুপচাপ চলে গেল দিনটি। যদিও ছোট বাচ্চা বলে কথা তারা কিন্তু প্রতিটি মুহূর্ত আমাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেয়। কিন্তু জীবনের প্রথম সন্তানের মা হওয়ার অনুভূতি বলে কথা আমারও বেশ মনে থাকে এই দিনটি। তাই মেয়ে বলছিলো আমি কি গিফট দেব তাকে। আমিও বললাম দেখি কি দেওয়া যায়। আমি চিন্তা করেছিলাম একটি ছোট সাইজের হাতের রিং দেবো।

IMG_20241117_221832210.jpg

যেহেতু মেয়ের একটি হাতের রিং ছিল গোল্ডের। গত বছর দুই মেয়েকে নিয়ে সমুদ্র সৈকতে ঘুড়ি উৎসব দেখতে গিয়েছিলাম। তখন রিং হাতের আঙ্গুলে পড়ে সেই আমার সাথে গিয়েছিল সমুদ্র সৈকতে। এখন সেখানে ঘুড়ি নিয়ে খেলা করছে এদিক ওদিক দৌড়াদৌড়ি করছে। আসলে মেয়ের হাতে যে রিং ছিল সেটা আমার খেয়ালও ছিল না একদম। কিন্তু এর আগেও এই রিংটি প্রায় সময় পরে যেত। মাঝেমধ্যে আমি একটু বকা দিতাম ছোট বাচ্চা আসলে গোল্ডেন জিনিসগুলো ব্যবহার করা মোটেই ভালো নয় ছোট বাচ্চাদের। তাই মেয়েকে নিষেধ করার পর ও এই রিং পরে। আর মেয়ের বাবা ও গোল্ডের জিনিস পরার জন্য বলে মেয়েকে। আমার কথা হচ্ছে এই জিনিসগুলা সখ করে নিলাম কোন ওকেশনারলী পড়লে একটা কথা। কিন্তু এদিক ওদিক গেলে সেগুলো হারিয়ে গেলে সমস্যা। সেজন্য যা চিন্তা করেছিলাম তাই হয়েছিল।

IMG_20241117_164849062.jpg

এখন বাসায় এসে হুট করে মেয়েকে জিজ্ঞেস করলাম হাতের রিং কই। কিন্তু মেয়ে বলে কই হাতে তো ছিল তুমি নিছু? আমি বললাম না আমি নিই নাই। যাক অবশেষ রিংটি হারিয়ে গেল। অবশেষে মেয়ে হাতের রিং বীচের বালিতে দিয়ে আসে। কিন্তু কি আর করার ছোট বাচ্চা তাকে বকাঝকা করে আর কোন লাভ নেই যেহেতু সেই রিং হারিয়ে ফেলল। আমার দোষ আমি পড়ায় দিলাম তার হাতে সেজন্য। তখন থেকে আমার একদম খারাপ লাগতো সেই মন টা ছোট করে থাকতো। কিন্তু গোল্ড এর হাতের ব্রেসলেট, গলার চেইন কিংবা কানের দুল থাকলেও হাতে রিংটা হারিয়ে আমার বেশি খারাপ লাগলো। সেজন্য এবার সিদ্ধান্ত নিলাম এর জন্মদিন উপলক্ষে একটি হাতের রিং কিনে দিবো। অবশেষে মেয়ের বাবা ব্যস্ত ছিল তাই মেয়ে দুইজনকে নিয়ে আমি সোজা গোল্ডের দোকানে চলে যাই।

IMG_20241117_164909924.jpg

আমাদের পরিচিত একজন গোল্ডের দোকান আছে কক্সবাজার জিপি ধর এ। সেখান থেকে আমরা প্রায় সময় আমাদের প্রয়োজনীয় গোল্ডের জিনিস গুলো কেনাকাটা করে থাকি। তাই সোজা চলে গেলাম অপু দাদার কাছে। অপু দাদাকে বললাম আমাকে ছোট একটি হাতের রিং দেওয়ার জন্য। তখন দাদা ও ছোট রিং গুলো আমাদেরকে দেখালো। আমি প্রথমে বলেছি আমি বাইরের গোল্ড নেবে না। এবার ২২ কেডিয়াম নিব তাই সেজন্য দেশি বানানো স্বর্ণগুলো দেখালো। যেহেতু ছোট বাচ্চা কোন নিশ্চিত নেই কখন যে হারিয়ে ফেলে সেজন্য। তো সেখান থেকে একটি রিং পছন্দ হয় মেয়ের এবং আমার। ওজন দিয়ে দেখলাম এক আনা থেকে একটু বেশি আছে। এক আনা থেকে বেশি গোল্ডের দাম সবকিছু মিলিয়ে ৬ হাজার ৮০০ টাকা আসলো। দাদা আমার থেকে ৬ হাজার ৮০০ টাকা দাবি করছিল।

IMG_20241117_165027477.jpg

কিন্তু আমি প্রথমে ৬৫০০ টাকা দিয়েছিলাম কিন্তু দাদাকে মানাতে পারছিলাম না। সেজন্য দাদার হাতে অবশেষে টোটাল ৬৬০০ টাকা দিয়ে রিংটি নিয়ে নিলাম। বন্ধুরা মেয়ে যখন অনেক বেশি খুশি হলো তখন আমার অনেক বেশি ভালো লাগলো। তার হাতের আঙ্গুলে যখন রিং পরলো তখন বেশ ভালোই লাগছিল। আসলে বাচ্চাদের এমন আনন্দ দেখলে মা-বাবারা অনেক বেশি খুশি হয়। তা প্রত্যেকটি মা-বাবার কাছে একই অনুভূতি কাজ করবে। ছোটখাটো জিনিস দিয়ে যখন বাচ্চাদের হাসিটুকু ফুটানো যায় তখন মনে হয় যে আসলেই স্বার্থক। এরপরে ১৭ তারিখ মেয়ের জন্মবার্ষিকীর দিন তাকে আমরা ডিনার করাবো বলছিলাম।

IMG_20241117_220858056.jpg

মেয়ে তার বাবাকে বলছিল তার পছন্দের কিছু জিনিস কেনাকাটা করে দিতে। সেই জন্য আমরা যখন ডিনার করতে যাব তখন যাওয়ার পথে আমরা স্বপ্ন সুপার শপে প্রবেশ করি। যেহেতু সেখানে বাচ্চাদের ড্রইং এর কিংবা স্টিকার এর বিভিন্ন ধরনের আইটেম পাওয়া যায়। বলতে গেলে স্বপ্নতে বিভিন্ন ধরনের জিনিস পাওয়া যায় যেগুলো ফ্যামিলির প্রয়োজনীয়। এখন তবে সুন্দর সুন্দর ড্রেসও পাওয়া যায়। তো সেই খান থেকে মেয়ের পছন্দমত জিনিসগুলো কিনলো। কেনার পরে এদিক ওদিক কয়েকটি ফটোগ্রাফি করে নিয়েছিলাম। অবশেষে আমরা ডিনার করার জন্য তাজদার ,রেস্টুরেন্টে চলে যাই। তাজদার রেস্টুরেন্টে গিয়ে আমরা আমাদের পছন্দ মত মেনু দেখে চিকেন বিরিয়ানি, মাটন বিরিয়ানি অর্ডার করেছিলাম।

IMG_20241117_220812053.jpg

অবশেষে আমরা খাওয়া-দাওয়া করে রাত ১১ টা ৩০ এর দিকে বাসায় ফিরে আসি। সেই দিন অনেক বেশি ভালো লাগছিল যেহেতু মেয়েদেরকে আনন্দ দিতে পারছিলাম। সবকিছু মিলিয়ে বেশ সুন্দর একটি সময় কাটিয়েছিলাম। আশা করি বন্ধুরা সেদিনের মুহূর্তটি আপনাদের কাছে পড়ে ভাল লাগবে।

24QmLBi2hi5sxeF4rfhXesN4Z3rEWTikWPFADtR6zyMx1Eh2qs4cCyucf3FD7ahStNw2cTHPk2QiaQacbQjJNEWnuhyjY1PXfUUMr27ifyD15nkQhFHksgx6bm9BxYLdCkQDMy8JhQrktZHYy6njdzRU4bQ9b1d2xjCdoVzCDDY85pLPq2s7FhKBwPjpuHdozHaReDxEaFH2aYse13zaqogf9utVshuSban6ex1saRA.png

ডিভাইসের নামWiko,T3
মডেলW-V770
Locationকক্সবাজার
ফটোগ্রাফার@samhunnahar
ক্যাটাগরিলাইফ স্টাইল


সবাইকে অনেক ধন্যবাদ সময় দিয়ে আমার ব্লগটি ভিজিট করার জন্য।

268712224_305654151337735_1271309276897107472_n.png

আমার পরিচয়


hira.jpeg

আমি সামশুন নাহার হিরা। আমার ইউজার আইডি @samhunnahar। আমি আমার বাংলা ব্লগে কাজ করছি বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে। আমি বাংলা ভাষায় লিখতে-পড়তে ভালবাসি। আমি রান্না করতে পছন্দ করি। ভ্রমণ আমার প্রিয় একটি নেশা। আমি বিভিন্ন ফটোগ্রাফি করতে পছন্দ করি। আমি আমার মনের ভাব বাংলায় প্রাকাশ করতে পেরে অনেক আনন্দিত। তার জন্য আমার প্রাণের কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"কে অনেক ভালবাসি।
D5zH9SyxCKd9GJ4T6rkBdeqZw1coQAaQyCUzUF4FozBvW7DiLvzq9baKkST8T1mkhiizFXSFVv2PXDydTeMWpnYK2gToiY733FT9uwSdBSXWz7RnGmzsa8Pr9pGoyYaQFsuS3p.png

New_Benner_ABB1.png

Banner_PUSS1.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আমার আজকের টাস্ক সমূহঃ-

Screenshot_20241121-173924~2.png

Screenshot_20241121-173612~2.png

Screenshot_20241121-173114~2.png

মেয়ের জন্মদিনে মেয়েকে খুব সুন্দর একটি রিং গিফট করলেন। আগের রিংটি হারিয়ে ফেলেছে দেখে একটু খারাপ লাগলো। ঠিক বলেছেন আপু ছোট বাচ্চাদেরকে সোনার জিনিস পড়ালে অনেকটাই বিপদ। লাগাতেও ভালো লাগে আবার হারিয়ে গেলেও খারাপ লাগে। যাইহোক তা কিছু নিয়ে চিন্তা করে লাভ নেই। মেয়ের জন্মদিনে খাওয়া-দাওয়া এবং ঘুরাঘুরি খুব ভালই ইনজয় করলেন দেখে ভালই লাগলো। আপনার মেয়েদের জন্য অনেক অনেক দোয়া রইল।

ছোটদের আনন্দে বড়রা আনন্দিত হয়। আর এ আনন্দটা মানুষকে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা সৃষ্টি করে। আপনার বাবুর জন্মদিন যেন ভালো লাগলো। সেখানে আপনারা বেশ আনন্দ করেছেন এবং খাওয়া-দাওয়ার আইটেম করেছেন। বিস্তারিত বিষয়গুলো সবই আমাদের মাঝে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন একটু একটু করে। যেন খুবই ভালো লাগলো আমার।