ক্রিয়েটিভ রাইটি:- “আত্মতৃপ্তি”।

in hive-129948 •  9 months ago 

শুভ বিকেল বন্ধুরা!

আশা করি সবাই ভাল আছেন? আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভাল আছি সৃষ্টিকর্তার অসীম রহমতে। আজকে দুইদিন হলো বেশ গরম অনুভব করতেছি। রমজানের দিনে গরম টা একদম সহ্য হয় না। যদিও এর আগের দিন গুলো বেশ ভালোই কাটছিল ঠান্ডা ঠান্ডা। তবে লোডশেডিং এর মাত্রা যেমন বাড়তেছে এবং গরমের পরিমাণও বাড়তেছে। দেখতে দেখতে রোজা প্রায় শেষের দিকে। আশা করি বাকি রোজা গুলো সুস্থভাবে রাখতে পারব সৃষ্টিকর্তার কাছে সে কামনা করছি। এই রমজানের দিনে ঈদের কেনাকাটা নিয়ে সবার দিনকাল কেমন যাচ্ছে বন্ধুরা? নিশ্চয় অনেক ব্যস্ততার মধ্যেই যাচ্ছে সবার দিন গুলো সেই আশা ব্যক্ত করছি। আজকে বন্ধুরা আমি আবার উপস্থিত হয়েছি নতুন একটি টপিকস নিয়ে।

vecteezy_creative-leadership-and-differentiated-business-ideas_10195364.jpg
Image Source

চেষ্টা করি সব সময় ভিন্ন কিছু বিষয় আপনাদের সাথে শেয়ার করার। আজকে অবশ্যই শিরোনাম দেখে আপনারা বুঝতে পারছেন আমি আপনাদের সাথে কি বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। আজকে আমি যে বিষয় নিয়ে আলোচনা করব তা হচ্ছে “আত্মতৃপ্তি” নিয়ে।

“আত্মতৃপ্তি”

আমরা মানুষ জাতি। আমাদের মধ্যে অনেক কিছু ইচ্ছা অনিচ্ছা থাকে। আমাদের অনেক কিছু পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা থাকে। আমরা চেষ্টাও করে থাকি আমাদের ইচ্ছে গুলো পূরণ করার। আমাদের না পাওয়া জিনিস গুলো পাওয়ার জন্য আমরা পরিশ্রম করেই থাকি। যখন আমরা পরিশ্রম করে কোন কিছু পাই তখন আমরা মানসিকভাবে খুবই শান্তি পাই। যদি আমাদের ইচ্ছে পূরণ হয় মনের মধ্যে বেশ সুখ বয়ে আনে। এটাই হচ্ছে আমাদের আত্মতৃপ্তি। আমরা চেষ্টা করি কোন কাজে সফল হওয়ার জন্য। এই সফলতা অর্জনের জন্য প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়। যখন আমরা কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে আমাদের সেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারি তখন আত্মতৃপ্তি পাই। অর্থাৎ আমাদের মনের শান্তির জন্য আমাদের মানসিক প্রশান্তির জন্য নিজেদের সফলতার জন্য আমরা কঠোর পরিশ্রম করে থাকি।

যখন সফলতা আসে তখন আমরা মানসিকভাবে খুবই সুখী হয়। মূলত আমি এটাকে আত্মতৃপ্তি বুঝে থাকি। তবে মাঝে মধ্যে আত্মতৃপ্তি আমাদের বিপরীত হয়ে যায়। আমাদের এমন কিছু ইচ্ছে থাকে এমন কিছু চাহিদা থাকে যেগুলো আমাদের মঙ্গল বয়ে আনে না। এই আত্মতৃপ্তি পূরণের জন্য আমরা অন্যের ক্ষতি করে থাকি। আমরা নিজের আত্মতৃপ্তি গুলো মেটানোর জন্য অন্যের ইচ্ছে অনিচ্ছা গুলোকে বিসর্জন দিতে চেষ্টা করি। অন্যের ভালোমন্দ বিচার না করে নিজের ইচ্ছে গুলো পূরণ করার জন্য অন্যের ক্ষতি করে ফেলি। এই ধরনের আত্মতৃপ্তি কখনো মানুষের মঙ্গল বয়ে আনতে পারেনা। এই ক্ষেত্রে সৃষ্টিকর্তাও অসন্তুষ্ট থাকেন।

আবার দেখবেন যে যখন ইচ্ছে আকাঙ্ক্ষা গুলো পূরণ হয় তখন নিজেদের মধ্যে একটু আত্মবিশ্বাস চলে আসে। যখন আত্মবিশ্বাস চলে আসে তখন আমরা আরও পরিশ্রমী হই। যে কোন কাজের জন্য আত্মবিশ্বাস ভাল। সফলতার জন্য আরও সামনের দিকে এগিয়ে যায় ভালভাবে। এক সময় যখন কঠোর পরিশ্রম করতে করতে নিজের সফলতা গুলো পর্যায়ক্রমে অর্জন করতে থাকে তখন কিছু মানুষ আছেন নিজেদের মধ্যে আত্ম অহংকার জন্মায়। অতিরিক্ত আত্মতৃপ্তির কারণে অতিরিক্ত অহংকার কখনো সুখকর হতে পারে না। আমাদের জীবন চলার পথে সবকিছুর মধ্যে কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এই সীমাবদ্ধতার গণ্ডি যখন আমরা অতিক্রম করি তখন সেটা আমাদের মঙ্গলের জন্য কাজ করে না। এই আত্মতৃপ্তির পেছনে অনেক ভালো মন্দ কিছু দিক রয়েছে।

Untitled design.jpg
Image Source

প্রথমত আত্মতৃপ্তি পূরণ করতে পারলে আত্মবিশ্বাস জন্মে। আত্মবিশ্বাসের কারণে আমরা বারবার সফলতার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছাতে চেষ্টা করি এবং সক্ষম হয়। যখন আমরা অতিরিক্ত সফলতা অর্জন করব তখন আমাদের মধ্যে আত্ম অহংকার জন্ম নেই তবে সবার ক্ষেত্রে নয়। এর কারণেই আমাদের আচার ব্যবহারের মধ্যে খারাপ প্রভাব পড়ে। যার কারণে আমরা আমাদের চারপাশের মানুষের সাথে খারাপ ব্যবহার করি। আমাদের আচরণের মধ্যে খারাপ প্রভাব পড়ার কারণে মানুষ কষ্ট পায়। যখন আত্মতৃপ্তির পরে আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায় তখন অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের কারণে অহংকারবোধ জন্ম নেয়। এরপরে আমাদের চরিত্রের মধ্যে বেশ খারাপ প্রভাব পড়ে যায়।

যেটাকে আমরা নৈতিবাচক দিক বলে চিনে থাকি। যখন কারও চরিত্রের মধ্যে নৈতিক পরিচয় পাওয়া যায় তখন মানুষ তাকে আর সম্মান করেনা। সেই ব্যক্তিকে সম্মান করা থেকে বিরত থাকেন। এভাবে মানুষ আত্নসম্মান হারিয়ে ফেলে। আবার যখন আত্মতৃপ্তি কে আমরা ব্যালেন্সের মাধ্যমে পরিচালনা করব। আমাদের আত্মবিশ্বাস ভালো থাকবে এই আত্মবিশ্বাস পূরণের ক্ষেত্রে আমাদের আত্ম অহংকার জন্মাবে না তখন আত্মসম্মান চলে আসবে। এই আত্মমর্যাদার কারণে সমাজে একটি ইতিবাচক প্রভাব পড়ে যায়। যার কারণে মানুষের চরিত্রের মধ্যে ভাল প্রভাব পড়ে এটাই মূলত আত্মতৃপ্তি।

আত্মতৃপ্তি, আত্মবিশ্বাস, আত্মঅহংকার এবং আত্মমর্যাদা একে অপরের সাথে জড়িত। আমরা যদি এই চারটি বিষয়ের মধ্যে ব্যালেন্স করে চলতে পারি তাহলে আমরা আত্মতৃপ্তি কি জিনিস তা খুব সুন্দরভাবে উপলব্ধি করতে পারব। আমরা চাইবো না আমাদের অতিরিক্ত আত্মতৃপ্তির কারণে যেন আমাদের চরিত্রের মধ্যে নৈতিক প্রভাব না পড়ে। আমরা চাইবো সুন্দর আত্মতৃপ্তির মাধ্যমে আত্মবিশ্বাস গড়ে উঠুক। সেই আত্মবিশ্বাসের কারণে যেন আমাদের আত্মঅহংকার জন্ম না নেই। যদি অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের কারণে আত্মঅহংকার জন্ময় তাহলে চরিত্রের মধ্যে খারাপ প্রভাব পড়বে।

আমরা চাইবো না আত্ম অহংকারের কারণে আমাদের আত্মসম্মান বা মর্যাদার মধ্যে আঘাত না আসুক। যখন আত্মঅহংকার আমরা বাদ দিয়ে চলব তাহলে আমাদের চরিত্রের মধ্যে আত্মসম্মান বেড়ে যাবে। সবাই ভালো চোখে দেখবে সমাজে সেই ব্যক্তির মর্যাদা বাড়বে। আমাদের আত্মতৃপ্তি হয়ে উঠুক সুখকর। আত্মতৃপ্তি যেন অন্যের ক্ষতির কারণ হয়ে না দাঁড়ায় সেদিকে আমাদেরকে খেয়াল রাখতে হবে। অতিরিক্ত আত্মতৃপ্তির কারণে যেন আমাদের মনের মধ্যে আত্মঅহংকার জন্ম না নেই সেই দিকে আমাদেরকে খেয়াল রাখতে হবে।

তাহলে সমাজে আমাদের আত্মসম্মান বাড়বে। আমরা সেই আত্মসম্মানের মাধ্যমে সুন্দর জীবন উপলব্ধি করতে পারব। আশা করি বন্ধুরা আমার আজকের লেখা গুলো আপনাদের কাছে ভালোই লেগেছে। অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই সবাইকে আমার লেখা গুলো সময় দিয়ে পড়ার জন্য।

268712224_305654151337735_1271309276897107472_n.png

লেখার উৎসনিজের অনুভূতি থেকে
ইমেজ সোর্সভিক্টিজি ডট কম
অবস্থানকক্সবাজার, বাংলাদেশ
ক্যাটাগরিক্রিয়েটিভ রাইটি


সবাইকে অনেক ধন্যবাদ সময় দিয়ে আমার ব্লগটি ভিজিট করার জন্য।

268712224_305654151337735_1271309276897107472_n.png

🥀আল্লাহ হাফেজ সবাইকে🥀


আমার পরিচয়
আমি সামশুন নাহার হিরা। আমার ইউজার আইডি @samhunnahar। আমি আমার বাংলা ব্লগে কাজ করছি বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে। আমি বাংলা ভাষায় লিখতে-পড়তে অনেক ভালবাসি। রান্না করতে আমি অনেক পছন্দ করি। তাছাড়া সময় পেলে ভ্রমণ করি আর প্রকৃতিকে অনুভব করি। ফটোগ্রাফি করতে আমার ভীষণ ভাল লাগে। আমি মাঝে মাঝে মনের আবেগ দিয়ে কবিতা লেখার চেষ্টা করি। আমার প্রিয় শখের মধ্যে তো গান গাওয়া অন্যতম। আমার মনের ভাব বাংলায় প্রাকাশ করতে পেরে অনেক আনন্দিত। তার জন্য আমার প্রাণের/ভালবাসার কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"কে অনেক ভালবাসি।

D5zH9SyxCKd9GJ4T6rkBdeqZw1coQAaQyCUzUF4FozBvW7DiLvzq9baKkST8T1mkhiizFXSFVv2PXDydTeMWpnYK2gToiY733FT9uwSdBSXWz7RnGmzsa8Pr9pGoyYaQFsuS3p.png

24QmLBi2hi5sxeF4rfhXesN4Z3rEWTikWPFADtR6zyMx1Ehur2Z3EsVgTD2AcTmkokXePYxgzpSqwnBNBj3ZteFgQGBvoV1Gau6PdZ2iRjGoCbkshRWuRQSfGSpuzhGGAeLA4Vf5U1Hc8iJwwxD89QHRxVn1je1P4CmpDJ3i8T6K3VVLivshpofZcmEc1F66yhadmSAKB5S67TB9CT5ts8F67pFjTnJQ9RnA2Qqq1Qc1.gif

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

চমৎকার কিছু কথা বলেছেন আপু । প্রথম কথা হলো কখনোই বেশি আত্মবিশ্বাসী ভাবা ঠিক নয়। আত্মতৃপ্তি বলতে আমি যেটা বুঝি সেটা হলো, যেকোন অবস্থায়ই শুকরিয়া আদায় করা। হতে পারে আমি খারাপ অবস্থায় আছি তবুও আল্লাহ তায়ালার কাছে শুকরিয়া আদায় করে। এটা ভাবতে হবে যে আমার থেকেও অনেকে খারাপ অবস্থায় আছে। তাই সবকিছুই নিজের উপরে ডিপেন্ডেড। আপনি কমে সন্তুষ্ট থাকবেন নাকি বেশিতে!

আত্মতৃপ্তি, আত্মবিশ্বাস, আত্মঅহংকার এবং আত্মমর্যাদা এই চারটা খুবই স্পর্শকাতর ব‍্যাপার। এই চারটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে জীবনে সফলতা আত্মতৃপ্তি এগুলো আসবে। আর এগুলোর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললে অহংকার টা বেড়ে যাবে বাহ আত্মবিশ্বাস হারিয়ে যাবে যেটার কোনটাই ভালো হবে না। জীবনে আত্মতৃপ্তির প্রধান একটা উপায় হচ্ছে সফলতা। আর এই সফলতা আসলেই জীবনে চলে আসে আত্মবিশ্বাস।

Posted using SteemPro Mobile

অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া বিস্তারিত পড়ে খুব সুন্দর অনুভূতি প্রকাশ করলেন।

চমৎকার একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন আপনি৷ আসলে আমাদের কোনমতেই আমাদের জীবনে ঘটে যাওয়া বিষয়গুলোকে নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করা উচিত নয়৷ সৃষ্টিকর্তা আমাদেরকে সুখ এবং দুঃখ উভয় দিয়েছেন৷ এই দুইটিকে নিয়ে আমাদেরকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে৷ যদি আমরা তা করতে না পারি তাহলে আমাদের সফলতা হবে না৷ যদি আমরা খারাপ সময় কাটানোর ক্ষেত্রেও যদি সৃষ্টিকর্তার শুকরিয়া আদায় করি তাহলে আমাদের জীবন সুন্দর৷ অনেক ধন্যবাদ এরকম একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য৷

ঠিক বলছেন ভাইয়া শুকরিয়া আদায় করা উচিত। অনেক মানুষ আছে বেশি অহংকারী হয়ে যায়।