বিয়ে ফ্যান্টাসি হানিমুন পর্ব শেষ পর্ব-

in hive-129948 •  last year 

সদ্য বিবাহিত স্ত্রীকে নিয়ে হানিমুনে এসেছি। স্ত্রী ঘুরতে খুব পছন্দ করে আর ছবি তুলতে। বার্মিজ মার্কেট থেকে ফেরার পথে এক রিক্সা ওয়ালার সাথে পরিচয় হয়ে যায় । লোকটি খুব মিশুক। সেই প্রস্তাব দেয় হিমছড়ি যাওয়ার জন্য। স্ত্রীর মুখের দিকে তাকাতে বুজতে পারি ও খুব রাজি। আমি হেসে বলে,কি হলো মহারানী
যাবেন নাকি হিমছড়ি।
সেখানে গিয়ে বানাবো আমাদের ভালোবাসার বাড়ি।

download (6).jpg

দুষ্টমানী করে কিল মারে আমাকে। আমি কেনা কাটার জিনিষ পত্র হোটেলে রেখে হিমছড়ির উদ্দেশ্য রওনা দেয়। হিমছড়ি যাওয়ার রাস্তার পশ্চিম পাড়ে সাগর আর পূর্ব দিকে উঁচু নিচু পাহাড়। কখনো পাহাড় বেয়ে পড়ছে ছোট্ট ছোট্ট ঝর্না। কখনো চোখে পড়ে পাহাড়ের ঘা বেয়ে ফুটা নাম জানা ফুল,অর্কিড।কিছুক্ষন পর পর ছোট্ট ছোট্ট কলার বাগান। ভাবতে অবাক লাগে এতো উচুঁতে কলার বাগান দেখে ।কি করে যে আদিাবাসীরা কলা বয়ে নিয়ে আসে এতো উচুঁ থেকে। পশ্চিম দিকে বয়ে যাওয়া সাগরের উত্তাল মাতাল হাওয়ায়। ছো্ট্ট ছো্ট্ট ডিঙ্গি সাগরের ঢেউ এর সাথে নাচতে থাকে। অজানা অতিথি পাখি কিচির মিচির করে উড়ে যায় দুজনের মাথার উপুর দিয়ে। শোভার আনন্দের সিমা থাকে না। শোভা অনিকে এক হাতে জড়িয়ে ধরে সেলফি তুলে। অনি হাসি মুখে বলে তোমার কেমন লাগছে? শোভা অনির খুব কাছে গিয়ে বলে জান্নাতে আছি। অনি বলল তাই নাকি।

download (8).jpg

তা হলে এ জান্নাতটা কি এ পাহাড়,সাগর তাহলে এখানে থেকে যাও। শোভা আলতো করে একটা কিস দেয় অনির কপালে, বলে এ জান্নাতটা হলো তুমি। যদি এ জান্নাতটা আমার কাছে থাকে তাহলে সব কিছু রঙ্গিন মনে হয়। মামা দেখেন সুটিং হচ্ছে যাবেন না কি।? রিক্সাওয়ালার কথা শুনে দুজনে তাকিয়ে দেখে। সমুদ্রে সৈকতে সুটিং হচ্ছে। অনি না করে। কিন্তু শোভা বলে চল না ঘুরে আসি। একটু দেখে যাই।বৌয়ের কথা কখনো অনি ফেলতে পারেনা। অনি রিক্সাওয়ালাকে বলল, চলুন আংকেল একটু সুটিং দেখে যাই। তা না হলে বাড়িতে গিয়ে আবার আমার বারটা বাজাাবে।শোভা অনির হাতে ভালোবাসার চিমটি কাটে। রিক্সা থেকে নেমে সুটিং স্পটে গিয়ে দেখে কোন এক গানের এলবামের জন্য সুটিং হচ্ছে।মডেলিং এর ছেলে মেয়ে দেখে হাসি ছাড়া উপায় ছিল না। জানি না তারা কি করে চান্স পেয়েছে! অনি বৌয়ের কানে কানে বলে তার চেয়ে আমরা সুটিং করলে তো দর্শক লুফে নিত।শোভা ও মুচকি হেসে সম্মত জানাই।অনি রিক্সাওয়ালাকে বলে চলুন আংকেল যাওয়া যাক। কিছুদূর যাওয়ার পর একটা পর্যটক স্পর্ট দেখতে পাওয়া গেল। স্থানীয় ভাষায় এলাকার নাম দরিয়া নগর। বাইরে বড় একটা মাছের ভাস্কর্য। মাছের হ্যা করা ভিতর দিয়ে যেতে হয়। দেখতেই খুব ভালো লাগে।টিকেট কাটার সময় কাউন্ট্রার বলল,আপনাদের সাথে একটা ছোট্ট ছেলে দিয়ে দিচ্ছি গাইড হিসাবে। ও সব কিছু আপনাদের কম সময়ে দেখিয়ে নিয়ে আসবে এবং ছবি ও তুলতে পারবে। ওকে কিছু বখছিস দিয়ে দিবেন। দেখলাম ছেলেটির বয়স ১০/১২ হবে। টিকেট কেটে অনি আর শোভা মাছের হ্যা করা দিয়ে প্রবেশ করে। ভিতরে গিয়ে দেখতে পায় গাছের ফাকে ফাকে বাঘ,জেব্রা আর কিছু পাখির মাটির ভাস্কর্য। হঠাৎ মনে হয় যেন এগুলো ভাস্কর্য নয়। বাস্তব।স্পর্টটি দক্ষিন সাইডে পাহাড়ের গা ঘেষে চলে গেছে সুরঙ্গ। কিছু দূর গেলাম। অনেক অন্ধকার। ভিতরে আর যাওয়ার সাহস হল না। আর ভিতরে কেউ যায় ও না। এ প্রথম মনে হলো কোন এক অচেনা জগতে চলে এসেছি। পাহারের উপরের গাছ থেকে এক লম্বা লত দেখলাম। বুজতে পারলাম পর্যটক আসলে দোল খায়। অনেক সময় টারজান ছবিতে দেখা গেছে টারজান এক গাছ থেকে অন্য গাছর যাওয়ার জন্য এ লত ব্যবহার করত। অনি ও লত নিয়ে দোল খায়। পাহাড়ের সাথে দাক্কা খেয়ে পড়ে যায়। শোভা আতকে উঠে বলে ব্যাথা পেয়েছে? অনি হেসে বলে, তুমি পাশে থাকলে কোন কিছুতে ব্যথা লাগে না। শোভা হেসে বলে পাগল। অনি ভাবল গাইড ছেলেটি থাকাতে ভালো হলো। মনে সাহস নিয়ে ঘুরে ফিরছি। এবং ছবি ও তুলছে। ছেলেটির নাম শাকিল ৫ম শ্রেণীতে পড়ে।ছেলেটি মুহুতের মধ্য কিছু স্পর্টে নিয়ে গেলো। যেখানের ছবির সুটিং হয়। তারপর নিয়ে চলল পাহাড়ে। অনি কিছুটা ভয় পেল। এতো উচুঁ পাহাড়। শোভাকে না করল তুমি উঠনা। কিন্তু শোভা কিছুতে রাজি হলনা। সে যাবে। ছোট্ট ছেলে শাকিল বলল,ভয় নেই যেতে পারবে। পাহাড়ে সাইড দিয়ে সিড়ি বানায়াছে পর্যটকদের সুবিধার জন্য। এক এক করে সিড়ি বেয়ে পাহাড়ে উঠে যায় শোভা অনি।মনে হল যেন আকাশ ছুঁয়েছে। পশ্চিমে সাগর,পূর্বে পাহাড় ঘন বন আর উপরে আকাশ। স্নিগ্ধ বিকেল। এক অন্য রকম পরিবেশ। মনে হল দুজন কপোত কপোতি আদি মানব। এখানে শোভা আর অনি ছাড়া কেউ নেই। শোভা মমতা মাখা চোখ নিয়ে অনিকে উদ্দেশ্য করে অনেক জোরে আওয়াজ করে বলে. এ আকাশ,পাহাড় এবং সমুদ্র তোমরা সাক্ষী. আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি অনি এবং আমি তোমার সন্তানের মা হতে যাচ্ছি। অনির আনন্দের সিমা থাকে না ।সন্তানের কথা শুনে মনে হলো শোভা বলেছিল হ্যানিমুনে গেলে তোমাকে একটা কথা বলব। অনির চোখ দিয়ে খুশিতে পানি এসে পড়ে। স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে বলে আমি ও তোমাকে অনেক ভালোবাসি ১.২.৩...
দুজনের কথার প্রতি ধবনি এক পাহাড় থেকে আরেক পাহাড়ে শব্দ হতে থাকে। ভালোবাসি ভালোবাসি।

download (7).jpg

সমাপ্ত

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আপনি কমিউনিটি রুলস ভঙ্গ করেছেন। আপনি নিজের ফটো অথবা কঁপিরাইট ফ্রী ফটো ছাড়া আপনার পোষ্টের মধ্যে ব্যবহার করতে পারবেন না।

কমিউনিটির নিয়মাবলী :
https://steemit.com/hive-129948/@rme/last-updated-rules-of-amar-bangla-blog-community-16-aug-22

যে কোন বিষয়ে জানার প্রয়োজন হলে আমাদের সাথে Discord এ যোগাযোগ করুন।

Discord server link: https://discord.gg/ettSreN493

https://www.istockphoto.com/photo/a-hugging-couple-in-white-summer-clothing-stands-on-a-tropical-beach-gm1293037576-387616727?phrase=maldives+couple&searchscope=image%2Cfilm

sorry my mistake