🥰.. আসসালামুয়ালাইকুম ...🥰

🥰...এবং হিন্দু ভাই বোনদের কে আদাব.💗🙏।আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন ? আশা করছি সকলেই ভালো আছেন। আমি আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির একজন নতুন সদস্য, এই প্লাটফর্মের সাথে দীর্ঘ কয়েক মাস আগে যুক্ত হয়েছি। সত্যি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে যুক্ত হতে পেরে আমার কাছে অনেক ভালো লাগতেছে ।আজকে আমি আপনাদের সাথে প্রাকৃতিক উপাদানে চুলের যত্ন : ঘরোয়া হেয়ার অয়েল তৈরি পদ্ধতি শেয়ার করবো । আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক অনেক ভালো লাগবে। চলুন এবার শুরু করা যাক।

চুলের যত্নে ভালো মানের তেল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।চুলের যত্ন নেওয়ার জন্য বাজারে প্রচুর তেল পাওয়া যায়, কিন্তু বেশিরভাগ তেলেই কেমিক্যাল থাকে যা দীর্ঘমেয়াদে চুলের ক্ষতি করতে পারে। আমি যখন দেখলাম আমার চুলের অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে যাচ্ছে,শুষ্কতা, চুল পড়া, খুশকি, আর আগা ফাটা ছিল নিত্যদিনের সমস্যা। তখনই সোশ্যাল মিডিয়ায় নানান "অর্গানিক হেয়ার অয়েল" এর বিজ্ঞাপন দেখতে শুরু করি। ভাবলাম, সত্যিই কি এইসব তেল এত উপকারী? তবে কেন আমি নিজেই প্রাকৃতিক উপকরণ দিয়ে একটা কার্যকর তেল তৈরি করে ব্যবহার করছি না?

তখন সিদ্ধান্ত নিলাম কেন না প্রাকৃতিক উপকরণ দিয়ে নিজের হাতে একটি অর্গানিক চুলের তেল বানিয়ে ব্যবহার করি!

দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে এটি ব্যবহার করার পর আমি দারুণ ফল পেয়েছি, আলহামদুলিল্লাহ! তাই যখন তেল শেষ হয়ে গেল, তখন আর দেরি না করে আবারও নতুন করে বানিয়ে নিলাম। আজ আমি আপনাদের সাথে এই বিশেষ তেলের রেসিপিটি শেয়ার করছি, যা আপনাদের চুলের যত্নেও কার্যকরী হতে পারে।

প্রয়োজনীয় উপকরণ

• আমলকি
• হরিতকি
• বহেরা
• সিকাকাই
• কালোজিরা
• মেথী
• লং
• তেজপাতা
• পেয়ারার কচি পাতা
• কালো কেসারির পাতা ও গাছ
• দুবলা ঘাস
• জাত নিমের পাতা
• মেহেদী পাতা
• অ্যালোভেরা
• পেঁয়াজ
• রসুন
• গোলাপ ফুল ও পাতা
• জবা ফুল ও পাতা
• নারকেল তেল
• অলিভ অয়েল
• ভিটামিন ই ক্যাপসুল

ধাপ : ১

প্রথমে সমস্ত উপকরণ ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে, যাতে ময়লা ও ধুলো বালি না থাকে।তারপর বড় উপকরণ গুলো,যেমন আমলকি,হরতকি,বহেরা, পেঁয়াজ, অ্যালোভেরা ইত্যাদি ছোট ছোট টুকরো করে কাটে নিতে হবে।রসুনের খোসা ছাড়িয়ে নিতে হবে।সবুজ পাতা ও ফুল ধুয়ে জল ঝরিয়ে শুকনো করে নিতে হবে।

ধাপ : ২

এরপর, পানিতে ভেজানো আমলকি, হরতকি, বহেরা ও শিকাকাই নরম হলে, সেগুলো হামানদিস্তায় হালকা পিষে নেব। তারপর পরিমাণ মত পানি দিয়ে সেগুলো থেকে পুষ্টিগুণ রস গুলো বের করে নিবো।

ধাপ : ৩

এরপর কড়াইয়ে মধ্যে ,আমলকি, হরতকি, বহেরা ও শিকাকাই রস গুলো দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ ঝাল দিবো।

ধাপ : ৪

এরপর পেয়ারার কচি পাতা,জবা ফুলের পাতা ,কালোজিরা ,মেথী,লং গোলাপ ফুলের পাপড়ির, মেহেদী পাতা ,কালো কেসারির পাতা , দুবলা ঘাস, জাত নিমের পাতা ,জবা ফুল দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ নেড়েচেড়ে মিশিয়ে নিলাম।

ধাপ : ৫

এরপর সেখানে কেটে রাখা রসুন কুচি, পেঁয়াজ কুচি দিয়ে সব গুলো নেড়েচেড়ে মিশিয়ে নিবো।

ধাপ : ৬

এরপর তেজপাতা , এলোভেরার কুচি সেখানে দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ নেড়েচেড়ে মিশিয়ে নিবো।

ধাপ : ৭

তারপর বেশ কিছুক্ষণ ঝাল দেওয়া হয়ে গেলে , সেখানে নারিকেল তেল দিয়ে সব গুলো উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে ভাজা ভাজা করে নিতে হবে।যখন সব উপকরণ ভাজা হয়ে যাবে, তেল গুলো কড়াইয়ে উপরে ভেসে উঠবে।তখন আমরা বুঝবো আমাদের প্রাকৃতিক তেল তৈরি হয়েগিয়েছে।

ধাপ : ৮

এরপর তেল গুলো একটি সাকনির সাহায্য ছেকে নিলাম।একটি বাটির মধ্যে, তারপর তেল গুলো একটি তেলের বোতলে রেখে দিবো।

তেলের উপকারিতা:

• চুল পড়া কমায়
• চুলের গোড়া মজবুত করে
• খুশকি দূর করে
• চুলকে নরম ও উজ্জ্বল করে
• নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে

তেলের ব্যবহার বিধি:

• সপ্তাহে ২-৩ বার এই তেল চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করুন।
• ২-৩ ঘণ্টা রেখে মৃদু শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
• নিয়মিত ব্যবহারে চুল স্বাস্থ্যকর, ঘন ও উজ্জ্বল হবে।

এই অর্গানিক তেল ব্যবহার করে আমি সত্যিই দারুণ উপকার পেয়েছি। কয়েক মাস ব্যবহারের পর আমার চুল আগের চেয়ে বেশি স্বাস্থ্যকর, উজ্জ্বল ও ঘন হয়ে উঠেছে। এখন আর বাজারের কেমিক্যালযুক্ত তেল ব্যবহারের দরকার পড়ে না।

আপনিও যদি চুলের যত্নে প্রাকৃতিক কিছু চেষ্টা করতে চান, তাহলে একবার এই তেল বানিয়ে কয়েক মাস ব্যবহার করেই দেখুন, নিশ্চয়ই ফলাফল পাবেন।

এই ছিল আজকের ব্লগ । আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।কার কাছে কেমন লেগেছে তা অবশ্যই কমেন্টের মন্তব্য করে জানাবেন। কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আজকের মত বিদায় নিচ্ছি, আবার নতুন কিছু নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে।সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং সবার জন্য অনেক শুভকামনা রইল ।

আমার নাম মোছাঃ সামছুন্ নাহার সুইটি । আমি একজন বাংলাদেশী মুসলিম নাগরিক । আমি আমার মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। আমি অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ালেখা করি । আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করার জন্য যুক্ত হয়েছি । আমি গত ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই । এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি ।আমি ভ্রমণ করতে অনেক বেশি পছন্দ করি।সেই সাথে নতুন নতুন ফটোগ্রাফি করতে ও ইউনিক রেসিপি এবং নতুন নতুন ইউনিক ডাই তৈরি করতে বেশ পছন্দ করি । আর স্টিমিট প্ল্যাটফর্মকে আঁকড়ে ধরে ভবিষ্যতে আরো এগিয়ে যেতে চাই, এটাই আমার লক্ষ্য।