লাইফ স্টাইল :- নতুন গাছের, প্রথম সাদা শিম উঠানোর অন্যরকম আনন্দ।।

🥰.. আসসালামুয়ালাইকুম ...🥰

🥰...এবং হিন্দু ভাই বোনদের কে আদাব.💗🙏।আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন ? আশা করছি সকলেই ভালো আছেন। আমি আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির একজন নতুন সদস্য, এই প্লাটফর্মের সাথে যুক্ত হয়েছি। সত্যি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে যুক্ত হতে পেরে আমার কাছে অনেক ভালো লাগতেছে ।আজকে আমি আপনাদের সাথে " আমার যত্নের ফসল, ছোট্ট গাছে বড় আনন্দ, নিজের হাতে নতুন গাছের প্রথম সাদা শিম তোলার গল্প " শেয়ার করবো ।এই ফটোগ্রাফি গুলো দীর্ঘ কয়েক দিন আগে সংগ্রহ করেছিলাম।নানা ব্যস্ততার কারণে পোস্টটি শেয়ার করতে পারি নি । আজকে হঠাৎ গ্যালারিতে থাকা ফটোগ্ৰফি গুলো দেখতে দেখতে এই সাদা শিমের ফোটোগ্রাফি গুলো চোখ পড়লো,তাই ভাবলাম অনুভূতি গুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করি ।আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক অনেক ভালো লাগবে। চলুন এবার শুরু করা যাক।

শীতকালীন শিম বাংলাদেশের একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় সবজি, বিশেষ করে অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি মাসে এটি বেশি চাষ করা হয়। দেশি শিম, হাইব্রিড শিম, লতা শিম, চ্যাপ্টা শিম, সাদা শিম, পাতি শিম নানান রকমের শিম দেখা যায়। তবে আমাদের বাসার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এই সাদা শিম গাছটি আমার কাছে সবচেয়ে প্রিয়, কারণ এটি আমার আম্মুর হাতে রোপণ করা।এই গাছগুলো মাত্র কয়েক মাস আগেও ছিল এক মুঠো বীজ মাটির গভীরে লুকিয়ে থাকা একরাশ সম্ভাবনা। একটু পানি, একটু রোদ আর যত্ন পেলেই যে এত সুন্দর সবুজ ছাতা বানিয়ে ফল দিতে পারে, তা ভাবতেই অবাক লাগে! প্রকৃতি আসলে খুবই উদার শুধু ধৈর্য আর ভালোবাসা জানলেই সে প্রতিদান দিতে কার্পণ্য করে না।

সকালের নরম রোদ গায়ে মেখে আমি দাঁড়িয়ে ছিলাম গাছটার সামনে। বেশ কিছুদিন ধরে দেখছি, ছোট্ট গাছটা ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে। সবুজ পাতার ফাঁকে সাদা শিম গুলো লুকিয়ে ছিল এতদিন, আজ যেন একসঙ্গে উঁকি দিচ্ছে।

হঠাৎ আম্মুর চোখ পড়ল গাছের দিকে। মুখে একরাশ আনন্দ ফুটিয়ে বললেন, "এবার তো শিম তোলার সময় হয়েছে!" আমি যেন আর দেরি করতে পারছিলাম না ! ছুটে গিয়ে একটি ঝুড়ি নিয়ে এলাম।

গাছের নিচে দাঁড়াতেই চোখে পড়ে ঝুলন্ত সাদা শিমের সারি। পাতার কোণে জমে থাকা শিশির রোদের আলোয় ছোট ছোট মুক্তোর মতো ঝিলমিল করছে। এতদিন গাছের যত্ন করেছি, পানি দিয়েছি, আগাছা তুলেছি, কিন্তু আজ প্রথমবার নিজের হাতে শিম তুলব! এই ভাবনাতেই মনে অদ্ভুত শিহরণ জাগল।

আমি হাত বাড়িয়ে প্রথম শিমটা ছিঁড়তেই একটা মিষ্টি খসখসে শব্দ কানে এল একটি ছোট্ট বিজয়ের অনুভূতি। এরপর একে একে সিম তোলা শুরু করলাম, গাছের সবুজ ডালের মাঝে হাত বাড়িয়ে। তরতাজা চকচকে সাদা শিম একে একে ঝুড়িতে জমা হতে লাগল। মনে হচ্ছিল প্রকৃতি যেন নিজ হাতে আশীর্বাদ দিয়ে বলছে, "এখন তুমি নিজের ফল তুলতে পারো।" আজকের শিম গুলো একটু বেশি যত্ন নিয়ে ছিঁড়লাম, যেন গাছ কষ্ট না পায়।

শিম গুলো হাতে নিয়ে আম্মু কাছে গেলাম। হাতের শিম গুলো দেখে ভাবতে লাগলাম, এগুলোর পরিণতি কী হবে? দাদির পুরনো রেসিপিতে রান্না হবে? নাকি সরষে আর আলুর সাথে হালকা ঝোলে? অথবা লুচির সঙ্গে শুকনো ভাজি? সিদ্ধান্ত না নিয়েই সিম গুলো নিয়ে এলাম রান্নাঘরে, আম্মুর হাতে তুলে দিলাম টাটকা শিম গুলো, নতুন গাছের সবুজ ছোঁয়া মেখে তারা একেবারে তরতাজা। একটু পরেই রান্নাঘর থেকে ভেসে এলো মসলার ঘ্রাণ, আম্মু যত্ন করে ভাজি করে নিলেন শিম গুলো। গরম ভাতের সঙ্গে সেই নরম-মুচমুচে শিম ভাজির স্বাদ এক কথায় অপূর্ব।

সেদিনের শিমের তরকারির স্বাদ যেন একেবারেই অন্যরকম! এক টুকরো পরিশ্রম, এক চিমটি ভালোবাসা, আর এক থালা গর্ব সব মিশে ছিল সেই খাবারে।

সিম তোলার অনুভূতিটা যেন এক টুকরো প্রশান্তি, এক টুকরো ভালোবাসা, আর প্রকৃতির সঙ্গে এক নিবিড় সংযোগ। যারা কখনো নিজের হাতে নতুন শিম তুলেছেন, তারা জানেন এ শুধু সবজি নয়, বরং মাটির স্নেহ আর প্রকৃতির আশীর্বাদ।

এই ছিল আজকের ব্লগ । আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।কার কাছে কেমন লেগেছে তা অবশ্যই কমেন্টের মন্তব্য করে জানাবেন। কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আজকের মত বিদায় নিচ্ছি, আবার নতুন কিছু নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে।সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং সবার জন্য অনেক শুভকামনা রইল ।

আমার নাম মোছাঃ সামছুন্ নাহার সুইটি । আমি একজন বাংলাদেশী মুসলিম নাগরিক । আমি আমার মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমি আমাদের বাসার পাশেই বদরগঞ্জ মহিলা ডিগ্রী কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ালেখা করি। পাশাপাশি ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাজিল প্রথম বর্ষে পড়ালেখা যুক্ত রয়েছি । আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করার জন্য যুক্ত হয়েছি । আমি গত ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই । এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি । আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলার সাহাপুর গ্রামে অবস্থিত । আমি ভ্রমণ করতে অনেক বেশি পছন্দ করি।সেই সাথে নতুন নতুন ফটোগ্রাফি করতে ও ইউনিক রেসিপি এবং নতুন নতুন ইউনিক ডাই তৈরি করতে বেশ পছন্দ করি । আর স্টিমিট প্ল্যাটফর্মকে আঁকড়ে ধরে ভবিষ্যতে আরো এগিয়ে যেতে চাই, এটাই আমার লক্ষ্য।