ফটোগ্রাফি ||| কাঁসার জিনিসপত্রের ফটোগ্রাফি।

in hive-129948 •  last year 
আসসালামু আলাইকুম। আমার বাংলা ব্লগের বাংলার এপার-ওপারের সকল সকল ভাই ও বোনেরা আশা করছি ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি।

আমি আজ আপনাদের মাঝে ভিন্ন ধরনের একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আমি এর আগেও আর একটি পোষ্ট আপনাদের মাঝে নিয়ে হাজির হয়েছিলাম।আমি আবারও আপনাদের মাঝে কিছু ফটোগ্রাফি নিয়ে হাজির হয়েছি। তবে এ ফটোগ্রাফি গুলো কোন ফুল বা প্রাকৃতিক দৃশ্যের নয়। আমাদের হারিয়ে-যাওয়া ঐতিহ্য কিছু জিনিসের ফটোগ্রাফি। ফোনে রেখে দেওয়া সেই ফটোগ্রাফিক গুলো সব আপনাদের মাঝে তুলে ধরা সম্ভব হয়নি যদিও বাকি ফটোগ্রাফি গুলো আপনাদের মাঝে হাজির করতে চাচ্ছি। আশা করি আপনাদের ভাল লাগবে। স্মৃতি মানুষকে কিছু সময় হাসায় আবার কাঁদায়। ভালোবাসা এমন একটা জিনিস যেটা বহিঃপ্রকাশ করে শেষ করা যাবে না। আমার কাছে ভালোবাসা এক রকম হতে পারে আপনার কাছে সেটা সেরকম নাও হতে পারে। এর আগের পোস্টে আমি একটি আঙ্কেলের কিছু বিস্তারিত বলেছিলাম তার ভালোবাসার কথা। তার ভালোবাসার মানুষের জিনিসপত্র পোশাক সকল কিছু সে যত্ন করে রেখে দিয়েছিল একটি বাক্সে। যখন তার বউ এবং তার মার জন্মদিন ও মৃত্যু বাষিক হতো তখন সেই জিনিস গুলো এবং সে নিজের হাতে পরিষ্কার করে সেই দিনটি দেখে আবার বাক্সে ঢুকিয়ে রাখতো। আসলে তার ভালবাসা ছিল অন্যরকম । সে তার মা বা বউ এতটাই ভালোবাসতো যে তাদের স্মৃতিগুলো সে সুন্দর করে যত্ন করে রেখে দিয়েছে। সেই আঙ্কেল এর মৃত্যুর আগে তার সকল জিনিস গুলো তার ছেলের বউকে দিয়েছে এবং যত্ন করে রেখে দিতে বলেছে। আসলে তার ভালোবাসাটা এত বেশি ছিল যে মৃত্যুর আগেও তার মা ও তার বউকে জিনিসপত্রগুলো ছেলের বৌয়ের কাছে দিয়ে যত্ন করে রাখতে বলেছে কারন সে আর থাকবে না। এই দুনিয়ায় সবাইকে একদিন না একদিন চলে যেতে হবে।তাইতো আঙ্কেল হয়তোবা বুঝতে পেরে তার ছেলের বড় বউকে জিনিসগুলো যত্ন করে রাখার জন্য দিয়ে গেছে।আর সেই জিনিস গুলো দেখে আমার এতটা ভালো লেগেছে যার কারণে সেই জিনিসগুলোর ফটোগ্রাফি আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম। আমাদের এখনকার সময়ে আমরা কাসার জিনিস ব্যবহার করা প্রায় ভুলেই গেছি।সেই হারিয়ে যাওয়ার জিনিসগুলোকে আপনাদের সামনে আজ উপস্থাপন করলাম।চলুন আর কথা না বাড়িয়ে সেই কাঁসার জিনিসপত্রর ফটোগ্রাফি গুলো নিয়ে আলোচনা করা যাক।

IMG_20230428_104626_716.jpg

হুক্কা

প্রথমতো আগেকার দিনে মানুষ গুলো খুব সুন্দরভাবে জীবন-যাপন করতো।তারা কোথাও কোনো বিচার বা সালিশ করতে গেলে সেখানে একটি চেয়ার ও ধূমপান করার জন্য একটি হুক্কার ব্যবস্থা করা হতো। যেটি এখনকার সমাজে আর নেই।সেই ফটোগ্রাফি আপনাদের মাঝে তুলে ধরলাম।

IMG_20230428_104750_436.jpg

অলংকারের বক্স

দ্বিতীয়ত আগের দিনের মানুষ অনেক অলংকার পড়তো এবং গা ভর্তি অলংকার রাখতেও ওরা বেশি স্বাচ্ছন্দ বোধ করতো।সে সময়ে অলংকারগুলো তারা সেই কাঁসার বাটির ভিতরে অলংকার রেখে ঢাকনা বন্ধ করে রাখত। এটি ছিল তাদের বা সেই সময়ের একটি ঐতিহ্যময় অলংকারের বক্স ।

IMG_20230428_104913_252.jpg

নাম জানিনা

আমরা যেমন পানি গ্লাসে খাই সেই সময় কিছু কিছু পরিবারের নিয়ম ছিল কাঁসার কলসির মতো দেখতে কিন্তু ছোট আমি ঠিক এটার নাম জানিনা এগুলোর ভিতর পানি খেতো।

IMG_20230428_104856_190.jpg

পানদানী

আগের দিনের মানুষগুলোর মন ছিল অন্যরকম। তাদের মনে ছিল যেমন ভালোবাসা তেমনি তারা ছিল সহজ ও সরল। বাড়িতে কোনো মেহমান আসলে তাদেরকে খাবার খাওয়ানোর পরে কাসার প্লেট সাজিয়ে পান পরিবেশন করতো।

IMG_20230428_104830_943.jpg

বাটি

তারা মনে করত কাসার জিনিসে না খেলে হয়তোবা তাদের মান সম্মানের হানি হবে। তাইতো তারা সব জিনিসপত্রই কাঁসার তৈরি করে সেগুলো ব্যবহার করত এবং মেহমান আসলেও সেগুলোতেই আপ্যায়নের ব্যবস্থা করতো।তাইতো কাসার বাটির ফটোগ্রাফি আপনাদের মাঝে তুলে ধরলাম।

IMG_20230428_105224_073.jpg

ছাঁকনি

পিঠা খাওয়ার ধুম এটা বাঙালি জাতির ঐতিহ্য।এই ঐতিহ্য শুরু থেকে ছিল বিধায় আমাদের এখনকার সময়েও চলে আসছে। সেসময় কিছু করে খাওয়া অনেক কষ্ট ছিল কিন্তু এখনকার সময়ে আমরা মেশিনে সবকিছুতে নিমেষেই করে নিতে পারছি। তাইতো ভাঁপা পিঠা বানানোর একটি ছাঁকনি আপনাদের মাঝে তুলে ধরলাম ।

IMG_20230428_105439_090.jpg

IMG_20230428_105430_663.jpg

বদনা

আমরা নামাযে এখন মগ ও নানান ধরনের জিনিস ব্যবহার করে থাকি ওযুর জন্য কিন্তু সেই সময়ে এই ধরনের কাঁসার বদনা ব্যবহার করা হতো এবং সেই বদনাটিকে কাউকে টাচ করতে দেওয়া হতো না।কারন এটি শুধু ওযুর জন্য । সেই ওযুর একটি বদনার ফটোগ্রাফি আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম।

received_617824823488930.jpeg

আমি মোছাঃ সায়মা আক্তার। আমি একজন ব্লগার, উদ্যোক্তা এবং শিক্ষিকা।কবিতা লিখতে, নতুন কোনো রেসিপি তৈরি করতে এবং নতুন নতুন ডিজাইন সৃষ্টি করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।সব সময় অবহেলিত মানুষের পাশে থাকতে এবং অবহেলিত মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারলে খুব ভালো লাগে।তাই সব সময় অবহেলিত মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করি।

বিষয়ঃ- ফটোগ্রাফি "কাঁসার জিনিসপত্রের ফটোগ্রফি"।

কমিউনিটিঃ- আমার বাংলা ব্লগ।

আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট করে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ..........

🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩

received_929440788081405.jpeg

received_3543384005885066.jpeg

received_1368894727258026.jpeg

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আপু আপনার লেখাটা পড়ে সত্যি ভীষণ ভালো লাগলো । কতটা ভালোবাসতো তার মা বউ কে যে তাদের পুরনো জিনিসগুলো বারবার বের করে পরিষ্কার করে আবার রেখে দিত । আর মৃত্যুর আগে পুত্রবধূকেও বুঝিয়ে দিয়ে গিয়েছিল, আসলে মানুষের ভালোবাসা একেকজনের একেক রকম । দারুণ সব কাঁসার জিনিসপত্র আপনি আমাদের সঙ্গে শেয়ার করেছেন যেগুলো এখন দেখাই যায় না । বেশ ভালো লাগলো । আগের দিনের মানুষ কাঁসার পাত্রে অলংকার দেখে মুখ বন্ধ করে রাখতো এটি আমার জানা ছিল না । নতুন কিছু জানতে পারলাম । বেশ ভালো লাগলো ধন্যবাদ ।

আপনার মন্তব্যটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। এধরনের মন্তব্য পেলে কাজ করার আগ্রহ অনেকগুণ বেড়ে যায়।

অনেকদিন পরে এ ধরনের কাঁসার জিনিস গুলো দেখলাম। আসলেই প্রত্যেকটা জিনিসের উপরে একেকজনের আলাদা আলাদা একটি ভালোবাসা থাকে। আর এই কারণে ওই আঙ্কেলটি তার জিনিসগুলো একেবারে ফেলে না রেখে তার ছেলের বউকে বুঝিয়ে দিয়ে যাচ্ছেন যাতে সেগুলো যত্নে রাখে । আর এসব জিনিসের সাথে আসলেই মানুষের হাজার বছরের ঐতিহ্য জড়িয়ে আছে দেখলেই পুরনো অনেক কথাই মনে পড়ে।

এখন এ ধরনের জিনিসপত্র চোখেই পড়ে না আপু। তাই চোখে পড়ার সাথে সাথে ছবি উঠাতে মিস করেনি।

কাঁসার জিনিসপত্রের ফটোগ্রাফিগুলো অসাধারণ লাগতেছে। পানদানী, ছাকনি, বদনা এইগুলো কাসার জিনিসপত্র এখন প্রায় দেখাই যায়না। ফটোগ্রাফিগুলো অসম্ভব সুন্দর হয়েছে। অনেক শুভকামনা রইলো আপনার প্রতি?

মন্তব্য করে উৎসাহ দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

আপু হুক্কা আর বদনাটা দেখে অনেক স্মৃতি ভেসে উঠলো। এমন একটি কাঁসার বদনা আমাদের ঘরেও আছে। তবে হুক্কা নেই। এটা বর্তমানে প্রায় বিলুপ্ত। ধন্যবাদ আপু।

জি ভাই ঠিক বলেছেন এখন হুক্কা বিলুপ্ত ।