রেসিপিঃ তালের রসের পায়েস।

in hive-129948 •  3 months ago 

শুভেচ্ছা সবাইকে।

বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই ? আশাকরি ভালো আছেন।প্রত্যাশা করি সবসময় ভালো থাকেন। আজ ১৪ই ভাদ্র ১৪৩১বঙ্গাব্দ।শরৎ-কাল। ২৯শে আগস্ট ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ।।

f1.jfif

f7.jfif

বন্ধুরা, বাংলাদেশের দক্ষিণ–পূর্বাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অন্তত ১১টি জেলায় উজান থেকে আসা পানি ও বৃষ্টির কারনে যে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল, এখন বৃষ্টি কমায় তা দিন দিন উন্নতি হচ্ছে। বন্যাদূর্গত মানুষের সহায়তায় দেশের মানুষ সরকারের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছে। আশাকরি, অচিরেই বন্যাদূর্গত এলাকার মানুষ দূর্যোগ কাটিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবেন। প্রিয় আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা নিয়মিত ব্লগিংয়ে হাজির হয়েছে একটি রেসিপি পোস্ট নিয়ে। প্রতি সপ্তাহে একটি করে রেসিপি পোস্ট দেওয়ার চেষ্টা করি। তারেই অংশ হিসেবে আজকের রেসিপি পোস্ট। আর আজকের রেসিপিটি হচ্ছে তালের রসের পায়েস, এখন তালের সিজন। চারপাশেই তাল পাওয়া যাচ্ছে।সিজনাল ফল হিসেবে তাল না খেলে চলে বলেন! তালের বিভিন্ন রেসিপি তৈরি করা যায়। আমি আজ শেয়ার করবো তালের রসের পায়েস। সিজনাল ফল হিসেবে আমাদের তাল খাওয়া দরকার। তালের অনেক পুষ্টি গুন আছে ।কোষ্টকাঠিন্য দূর করে, দাঁত ও হাড় মজবুত করে,পেটের জ্বালা পোড়া কমানোসহ মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। আজকে তালের রসের পায়েস তৈরিতে উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করেছি তালের রস,দুধ,চিনি,চালসহ অন্যান্য উপকরণ। যা নিম্নে সবিস্তারে বর্ণনা করা আছে। বন্ধুরা, আসুন দেখে নেই কিভাবে তৈরি হলো আমার আজকের রেসিপি তালের রসের পায়েস।আশাকরি ভালো লাগবে আপনাদের।

উপকরণ

f25.jfif

f26.jfif

f15.jfif

f21.jfif

উপকরণপরিমাণ
পোলাও এর চাল২ টেঃ চামচ
সাগু২ টেঃ চামচ
দুধ১কেজি
কনডেন্স মিল্ক৪-৫ টে; চামচ
গুড়ো দুধআধা কাপ
তালের পাল্প১ কাপ
লবনপরিমাণ মতো
চিনি১/২কাপ

রন্ধন প্রণালী

ধাপ-১

f22.jfif

f24.jfif

প্রথমে পোলাও এর চাল ও সাগু পানিতে কিছুক্ষন ভিজিয়ে রেখে ধুয়ে ঝরিয়ে নিয়েছি।

ধাপ-২

f20.jfif

f19.jfif

একটি হাড়িতে তালের পাল্প সামান্য চিনি দিয়ে জ্বাল দিয়ে ঘন করে নিয়েছি। এবং একটি বাটিতে ঢেলে নিয়েছি।

ধাপ-৩

f18.jfif

f17.jfif

f16.jfif

চুলায় দুধের হাড়ি বাসিয়ে দিয়েছি। এরপর দুধে ধুয়ে ঝরিয়ে রাখা পোলাও এর চাল,সাগু ও সামান্য লবন দিয়ে দিয়েছি।যে কোন মিস্টি জাতীয় খাবারে লবন দিলে স্বাদ ভালো লাগে।

ধাপ-৪

f14.jfif

f13.jfif

এবার চাল ও সাগু কিছুটা সিদ্ধ হয়ে এলে গুড়ো দুধ সামান্য লিকুইড দুধের সাথে গুলে নিয়ে ঢেলে দিয়েছি।

ধাপ-৫

f12.jfif

f11.jfif

এবার তাতে কনডেন্স মিল্ক ও চিনি দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়েছি। কনডেন্স মিল্ক দিলে পায়েস খেতে বেশ ভালো লাগে।

ধাপ-৬

f10.jfif

f9.jfif

দুধ কিছুটা ঘন হয়ে এলে তাতে জ্বাল দেয়া তালের পাল্প দিয়ে দিয়েছি। এবং ভালোভাবে দুধের সাথে মিশিয়ে নিয়েছি।তালের পাল্প দেয়ার পর ৩-৫ মিঃজ্বাল দিয়ে ঘন করে নিয়েছি।পায়েস ঘন হয়ে এলে একটি বাটিতে ঢেলে নিয়েছি। পায়েসের উপর কিছুটা তালের পাল্প দিয়ে সাজিয়ে নিয়েছি। সাথে কিছু ফটোগ্রাফি করে নিয়েছি।

উপস্থাপন

f1.jfif

f3.jfif

f3.jfif

আশাকরি, তালের রসের পায়েসের রেসিপিটি আপনাদের ভালো লেগেছে। সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করে আজকের ব্লগ এখনেই শেষ করছি। আবার দেখা হবে অন্য কোন ব্লগ নিয়ে। সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন।

পোস্ট বিবরণ

শ্রেনীরেসিপি
ক্যামেরাRedmi Note A5
পোস্ট তৈরি@selina 75
তারিখ২৯শে আগস্ট, ২০২৪
লোকেশনঢাকা,বাংলাদেশ

আমার পরিচয়

আমি সেলিনা আখতার শেলী। জন্মসূত্রে বাংলাদেশী। জন্ম,বেড়ে ওঠা চট্রগ্রাম শহরে। চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনশাস্ত্রে অনার্স-মাস্টার্স। দীর্ঘ দিন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অধিকার রক্ষায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করেছি। স্বামীর বাড়ী দিনাজপুরে,বর্তমানে ঢাকায় থাকি।ঘুরে বেড়ানো,বই পড়া,অজানাকে জানা,নিত্য নতুন রান্না ও বিভিন্ন ধরণের হাতের কাজ করা আমার শখ।দেশাত্ববোধ,দেশীয় শিল্প,সাহিত্য ও সংস্কৃতি আমার অন্যতম ভালো লাগা। এদেশে জন্মগ্রহণ করে আমি গর্বিত।

সাথে থাকার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

খেজুরের রস দিয়ে পায়েস তৈরি করে খেয়েছি তবে তালের রস দিয়ে কখনো পায়েস তৈরি করে খাওয়া হয়নি। রেসিপিটা আমার কাছে একটু ভিন্ন রকম মনে হলেও অনেক লোভনীয় লাগছে যাইহোক পর্যায়ক্রমে তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ।

অনেক মজা হয়েছিল তালের রসের রেসিপিটি। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

আপু আপনার তৈরি করা রেসিপি গুলো আমার খুবই ভালো লাগে। তবে এভাবে কখনো তালের রসের পায়েস তৈরি করে খাওয়া হয়নি। মনে হচ্ছে খেতে খুবই ভালো লাগবে। আমি অবশ্যই একবার বাসায় তৈরি করবো আপু।

বেশ খেতে কিন্তু তালের পায়েস। জি আপু একদিন বাসায় বানাবেন। আশাকরি ভালো লাগবে। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপু।

তালের রসের পায়েস আমি এই ভাবে কখনো খাইনি। তবে আপানর পোস্ট ভিজিট করে শিখে নিলাম। রেসিপি দেখে জিবে জল চলে এসেছে। আশাকরি খেতে নিশ্চয়ই অনেক সুস্বাদু হয়েছিল।

জি ভাইয়া খেতে বেশ মজা ছিল। আর একদিন বানিয়ে দেখবেন। আশাকরি ভালো লাগবে। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ।

ভীষণ লোভনীয় রেসিপি করেছেন আপু।তালের রসের পায়েস কখনো খাওয়া হয়নি তবে ভীষণ লোভনীয় ও সুস্বাদু একটি রেসিপি তা আপনার রেসিপিটি দেখে বুঝতে পেলাম।খেতে অনেক মজাদার তা রেসিপিটি দেখেই বুঝতে পারছি।ধাপে ধাপে চমৎকার সুন্দর করে তালের পায়েস রন্ধন প্রনালী চমৎকার সুন্দর করে আমাদের সাথে ভাগ করে নিয়েছেন। ধন্যবাদ আপনাকে ইউনিক রেসিপিটি আমাদের সাথে ভাগ করে নেয়ার জন্য।

জি আপু খেতে বেশ মজা ছিল তালের পায়েস। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপু।

আপু আপনি আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন তালের রসের পায়েস রেসিপি তৈরি করে। আপনার তৈরি রেসিপি দেখে মনে হচ্ছে খেতে বেশ সুস্বাদু হয়েছে। আসলে তালের রস দিয়ে এর আগে কখনো এভাবে রেসিপি তৈরি করে খাওয়া হয়নি। আমাদের এলাকায় তালের রস খুবই কম পাওয়া যায়। ধন্যবাদ এত সুন্দর ভাবে রেসিপি তৈরি করে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

আমার তাল খুব পছন্দ। তাই তাল দিয়ে বিভিন্ন রেসিপি বানানোর চেস্টা করি। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।

এখন বন্যার পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হলেও চারপাশের ক্ষয়ক্ষতির দেখা যাচ্ছে। ব্যাপক পরিমাণে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আশা করি সবার প্রচেষ্টায় এ ক্ষতি কিছুটা পূরণ হবে। যাই হোক আপু তালের রস দিয়ে কখনো পায়েশ খাওয়া হয়নি। আপনার রেসিপিটি একেবারে ইউনিক লেগেছে আমার কাছে। তাছাড়া যেভাবে পরিবেশন করেছেন খেয়ে টেস্ট করে দেখতে ইচ্ছা করছে। খুবই লোভনীয় লাগছে দেখতে।

জি আপু বন্যায় অনেক ক্ষতি হয়েছে। আশাকরি দ্রুত এই ক্ষতি পূরন হয়ে যাবে সকলের চেস্টায়। যাইহোক তালের পায়েস কিন্তু খেতে বেশ । একদিন বানিয়ে খাবেন। আশাকরি ভালো লাগবে। ধন্যবাদ আপু।

সত্যিই অনেক ভয়াবহ দিন কাটিয়েছে বন্যার্ত
মানুষেরা।চারপাশে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তাদের।আশা করছি বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষ দুর্যোগ কাটিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে সবাই। আপু আপনার তৈরি রেসিপিটি আমার কাছে অনেক ইউনিক লেগেছে। তালের রস দিয়ে এত মজাদার একটি রেসিপি তৈরি করা যায় জানা ছিল না। নতুন একটি রেসিপি আপনার মাধ্যমে শিখে নিলাম।রেসিপিটি বাসায় একদিন ট্রাই করবো। ধন্যবাদ আপু একটি মজাদার রেসিপি আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য

জি আপু বন্যার্ত মানুষেরা যেনো তাদের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারে এই দোয়া করি। তবে তালের পায়েস কিন্তু খেতে বেশ হয়েছিল। এক দিন ট্রাই করবেন জেনে ভালো লাগলো। মতামতের জন্য ধন্যবাদ আপু।

image.png

পায়েস আমার ভীষণ ভালো লাগে। তবে তালের পায়েস আমার কখনো খাওয়া হয়নি। এই রেসিপিটি খুবই সুস্বাদু একটি রেসিপি যা আপনার রান্নার প্রক্রিয়া দেখে বুঝতে পারছি। ধাপে ধাপে দারুন স্বাদের এই রেসিপিটি শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

জি আপু খেতে বেশ মজা এই রেসিপিটি। আপনার ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপু।

আপু আপনার তালের রসের পায়েস এতটাই লোভনীয় ও আকর্ষণীয় হয়েছে যে দেখে খেতে ইচ্ছে করছে। আমি আবার পায়েস খেতে ভীষণ পছন্দ করি। আপনার পায়েস রেসিপি প্রতিটি ধাপ খুবই চমৎকারভাবে উপস্থাপন করেছেন। ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটি রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

পায়েস খেতে আমি খুবই পছন্দ করি। বাসায় বিভিন্ন রকমের পায়েস রান্না করা হয়। তালের রসের পায়েস অনেক লোভনীয় লাগছে। চমৎকার একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন এজন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি আপু।

ইশ! আপু, এমন সুন্দর তালের রসের পায়েসের রেসিপি শেয়ার করেছেন যে জিভে জল চলে এসেছে! তালের গগন্ধটাই আমার কাছে বেশ ভালো লাগে! তার উপর তা দিয়ে এমন পায়েস হলে তো কথাই নেই। তবে আমি অবশ্য এবছর এখনো তাল এর তৈরি কিছু খেতে পারি নি। আপনার রেসিপি শেয়ার করে রাখলাম। এবার তাল আনলে বানাবো এভাবে। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু আপনাকে এমন দারুণ একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য।

আপনার তালের রসের পায়েস ভীষণ সুন্দর হয়েছে তা ছবি দেখেই বেশ বোঝা যাচ্ছে। এমন সুন্দর করে রেসিপি আমাদের মধ্যে উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। প্রতিটি ধাপ খুব সুন্দর করে ব্যাখ্যা করলেন। তালের পায়েস খুব আনকমন একটি পদ। আমি তো খুব একটা খাইনি। অনেক ধন্যবাদ এমন সুন্দর একটি পোস্ট করবার জন্য।

বন্যা চলাকালীন সময়ের থেকে গুরুত্বপূর্ণ সময় বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সময় অনেক পোকামাকড় এবং পানিবাহি রোগ জীবানুর হাত থেকে রক্ষা পাওয়া।

অনেক দারুন একটা রেসিপি শেয়ার করেছেন আপনি আপু খুব সুন্দর হয়েছে।রেসিপি টা প্রথম দেখলাম আমি।ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।

আপু দেখতেও সুন্দর লাগছে এবং খাইতেও অবশ্যই সুন্দর হবে😇😇