DIY প্রোজেক্ট-ও সৃষ্টিশীলতার গল্প ||~~💞~~

in hive-129948 •  8 months ago 

আস্সালামুআলাইকুম /আদাব
সকলকে শুভেচ্ছা। আশা করি সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি। আর আপনারা সবাই সবসময় ভালো থাকবেন, এটাই প্রত্যাশা করি।

1000017613.jpg

DIY প্রোজেক্ট-ও সৃষ্টিশীলতার গল্প

1000017612.jpg

বন্ধুরা আজ আমি শৈশবের কাগজ দিয়ে যেভাবে ফুল বানাতাম সে রকমি একটি ফুলের ডাই নিয়ে হাজির হলাম। আমার এই কাগজের ফুলগুলো শুধু একটা সৃষ্টিই নয়, বরং আমার শৈশবের মধুর স্মৃতিগুলোর প্রতিচ্ছবি। ছোটবেলার সেই দিনগুলো, যখন বান্ধবীদের সাথে মিলে এমন সৃজনশীল কাজ করেছিলাম , সেগুলো যেন এখনো আমার মনে গেঁথে আছে। এই ফুলগুলো আমাকে সেই আনন্দময় দিনগুলোতে ফিরিয়ে নিয়ে যায়, যেখানে হাসি, খেলা, আর ছোট ছোট কাজগুলোতে মিশে ছিল খাঁটি আনন্দ।

শৈশবের সেই নির্ভেজাল সময়গুলো মনে করা, যখন আমরা ছোট ছোট জিনিস নিয়ে বড় স্বপ্ন দেখতাম, সত্যিই মনের ভিতর এক ধরনের উষ্ণ অনুভূতি জাগিয়ে তোলে। এই ফুলগুলো যেন সেই মধুর মুহূর্তগুলোরই পুনর্জন্ম।

গল্প-- কাগজের ফুল নিয়ে একটি রূপক গল্প "

কাগজের ফুলের গল্পটি শুরু হয় একটি ছোট্ট গ্রামে, যেখানে একটি মেয়ে ছিল নাম সুমি। সুমি ছিল সবসময় হাসিখুশি, সৃষ্টিশীল, আর তার সবচেয়ে প্রিয় কাজ ছিল কাগজ দিয়ে নানা কিছু বানানো। তার এই ভালোবাসা কাগজের প্রতি জন্মেছিল তার মায়ের কাছ থেকে, যিনি ছোটবেলায় তাকে নানা রকমের হাতের কাজ শিখাতেন।

একদিন স্কুলে ফেরার পথে সুমি আর তার বন্ধুদের মাথায় এল, তারা একটি নতুন কিছু করবে। সবাই মিলে ঠিক করল, তারা একটি বাগান বানাবে, তবে সেই বাগানের ফুল হবে কাগজ দিয়ে তৈরি। সুমি খুব উত্তেজিত হলো, কারণ এটি তার সবচেয়ে প্রিয় কাজ ছিল।

বাড়িতে ফিরে সুমি তার সংগ্রহ করা রঙিন কাগজ, কাঁচি, আর আঠা নিয়ে বসে গেল। তার মা তাকে দেখে মুচকি হেসে বলল, "কী বানাচ্ছো আজ, মা?"

"আমরা একটা বাগান বানাবো মা, তবে সেটা হবে কাগজের ফুল দিয়ে!" সুমি উচ্ছ্বাস নিয়ে বলল।

সুমি খুব যত্ন নিয়ে ফুলগুলো বানানো শুরু করল। প্রতিটি কাগজের ফুল যেন তার মনের সমস্ত মাধুরী মিশিয়ে তৈরি করা। রাতের বেলায় মায়ের পাশে বসে কল্পনা করত, কেমন হবে তাদের কাগজের বাগান। তার মা তাকে বলতেন, "মনের মাধুরী দিয়ে যেটাই বানাও, সেটা সুন্দর হবে। কারণ তাতে তোমার ভালোবাসা থাকে।"

কয়েকদিন পর, সুমি আর তার বান্ধবীরা মিলে তাদের কাগজের ফুল দিয়ে বাগান সাজাল। বাগানটি হয়ে উঠল তাদের গ্রামের সবচেয়ে সুন্দর জিনিস, যেখানে ছোট থেকে বড় সবাই এসে দেখে যেত।

এই কাগজের ফুলের বাগানটি সুমির জীবনে এক অনন্য স্মৃতি হয়ে রইল। তার বন্ধুদের সাথে সেই দিনগুলো, যখন তারা মিলে হাসি-মজার মধ্যে দিয়ে এমন একটি সৃষ্টিশীল কাজ করেছিল, তা সুমির মনে সবসময় উজ্জ্বল হয়ে থাকবে।

এখন সুমি বড় হয়েছে, তবে এখনো যখন সে কাগজের ফুল বানায়, তার মনে পড়ে সেই ছোটবেলার মধুর দিনগুলো, যখন কাগজের ফুলের মাঝে খুঁজে পেত ভালোবাসা, বন্ধুত্ব আর নির্মল আনন্দের ছোঁয়া।

DIY প্রোজেক্ট- রঙিন কাগজের সাধারণ ফুল |~~



💞

প্রয়োজনীয় উপকরন


1000017546.jpg

1000017602.jpg


  • রঙিন কাগজ

  • কাচি

  • স্কেল

  • আঠা

  • পুঁথি

siam 2.png

১ম ধাপ
প্রথমেই সবুজ রঙের কাগজ গুলো এভাবে লম্বা লম্বা করে কেটে, আবার কুচি কুচি করে নেব।

1000017605.jpg

1000017604.jpg

siam 2.png

দ্বিতীয় ধাপ
এবার লাল কাগজ গুলো ছোট লম্বা লম্বা করে কেটে এভাবে গোল গোল করে নিবো।

1000017602.jpg

1000017603.jpg

siam 2.png

তৃতীয় ধাপ
এবার লাল রঙের গোলকারের সাথে সবুজ কুচি কুচি কাটা কাগজ গুলো পেঁচিয়ে ফুলের মতো করে আঠা লাগিয়ে নিব।

1000017607.jpg

1000017606.jpg

siam 2.png

চতুর্থ ধাপ
এবার ফুল গুলোর মাঝ খানে আঠা দিয়ে সাদা রঙের পুঁথি বসিয়ে দিবো।

1000017610.jpg

1000017608.jpg

siam 2.png

পঞ্চম ধাপ
এভাবেই তৈরি করে নিলাম শৈশবের সেই রঙিন কাগজের ফুল। এই ফুলের সঙ্গে মিশিয়ে আছে নানা রকমের শৈশবের স্মৃতি।আশা করি আমার অতি সাধারণ এই ফুলটি দেখে আপনাদের ও শৈশবের অনেক স্মৃতি মনে পড়ে যাবে।

1000017613.jpg

1000017612.jpg

siam 2.png


siam 2.png

ফাইনাল আউটপুট

1000017613.jpg

siam 2.png

photo_2021-06-30_13-14-56.jpg

photo_2023-07-07_17-27-00.jpg

আমি ছন্দের রাজ্যে, ছন্দরাণী কাব্যময়ী-কাব্যকন্যা বর্তমান প্রজন্মের নান্দনিক ও দুই বাংলার জনপ্রিয় কবি সেলিনা সাথী। একধারে লেখক, কবি, বাচিক শিল্পী, সংগঠক, প্রেজেন্টার, ট্রেইনার, মোটিভেটর ও সফল নারী উদ্যোক্তা।আমার পুরো নাম সেলিনা আক্তার সাথী। আর কাব্যিক নাম সেলিনা সাথী। আমি নীলফামারী সদর উপজেলায় ১৮ মার্চ জন্মগ্রহণ করি। ছড়া কবিতা, ছোট গল্প, গান, প্রবন্ধ, ব্লগ ও উপন্যাস ইত্যাদি আমার লেখার মূল উপজীব্য। আমার লেখনীর সমৃদ্ধ একক এবং যৌথ কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ১৫ টি। আমার প্রথম প্রকাশিত কবিতার বই- সাথীর শত কবিতা,অশ্রু ভেজা রাত, উপন্যাস মিষ্টি প্রেম, যৌথ কাব্যগ্রন্থ একুশের বুকে প্রেম। জীবন যখন যেমন। সম্পাদিত বই 'ত্রিধারার মাঝি' 'নারীকণ্ঠ' 'কাব্যকলি' অবরিত নীল সহ আরো বেশ কয়েকটি বই পাঠকহমলে বেশ সমাদৃত। আমি তৃণমূল নারী নেতৃত্ব সংঘ বাংলাদেশ-এর নির্বাচিত সভাপতি। সাথী পাঠাগার, নারী সংসদ, সাথী প্রকাশন ও নীলফামারী সাহিত্য ও সংস্কৃতি একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। এছাড়াও আমি জেলা শাখার সভাপতি উত্তোরন পাবনা ও বাংলাদেশ বেসরকারি গ্রন্থাগার পরিষদ নীলফামারী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছি। আমি মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০১৪ সালে নীলফামারী জেলা ও রংপুর বিভাগীয় পর্যায়ে সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদানের জন্য শ্রেষ্ঠ জয়িতা অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছি। এছাড়াও সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় ও সামাজিক সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে বিশেষ অবদান রাখায় আমি বহু সম্মামনা পদক অর্জন করেছি। যেমন সাহিত্যে খান মইনুদ্দিন পদক ২০১২। কবি আব্দুল হাকিম পদক ২০১৩। শিশু প্রতিভা বিকাশ কেন্দ্র কর্তৃক সম্ভাবনা স্মারক ২০১৩। সিনসা কাব্য সম্ভাবনা ২০১৩। বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উদযাপন উপলক্ষে সম্মামনা স্মারক ২০১৩। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৩৭ তম মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে সম্মাননা স্মারক ২০১৩। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর ১১৫ তম জন্ম জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ২০১৪। দৈনিক মানববার্তার সম্মামনার স্মারক ২০২৩। চাতক পুরস্কার চাতক অনন্যা নারী সম্মাননা ২০২৩ ওপার বাংলা মুর্শিদাবাদ থেকে মনোনয়ন পেয়েছি। এছাড়াও ,ওপার বাংলা বঙ্গবন্ধু রিসার্চ এন্ড কালচারাল ফাউন্ডেশন ভারত বাংলাদেশ। কবিগুরু স্মারক সম্মান ২০২৪ অর্জন করেছি।

A5tMjLhTTnj4UJ3Q17DFR9PmiB5HnomwsPZ1BrfGqKbjddgXFQSs49C4STfzSVsuC3FFbePnB7C4GwVRpxUB36KEVxnuiA7vu67jQLLSEq12SJV1etMVkHVQBGVm1AfT2S916muAvY3e7MD1QYJxHDFjsxQDqXN3pTeN2wYBz7e62LRaU5P1fzAajXC55fSNAVZp1Z3Jsjpc4.gif



বিষয়: ডাই প্রজেক্ট
আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটil

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

সত্যিই স্কুলের দিনগুলোতে এমন কাগজের ফুল আমরাও বানাতাম। মনে পড়ে গেল সেসব কথা৷ একবার তো এমন ফুল বানানোর ঝোঁক উঠল আলাদা কাগজ না পেয়ে পড়ার খাতার পৃষ্ঠা ছিঁড়ে তাতে রঙ করে বানালাম৷ তারপর যা ঘটেছিল তা ইতিহাস। তোমার ফুলগুলি বেশ সুন্দর হয়েছে দেখতে৷ মাঝে পুঁতিগুলো আরও উজ্জ্বলতা বাড়িয়েছে।

একদম ঠিক বলেছ,, শৈশবের সেই স্মৃতিগুলো আজও মুগ্ধতা ছড়ায় মনের অজান্তে। আর সেই স্মৃতিকে সামনে রেখেই অতি সাধারণ ফুলটি আজ বানিয়ে ফেললাম। তোমার মন্তব্য পড়ে অনুপ্রেরণা পেলাম।

চমৎকার কাগজের ফুল তৈরি করেছেন আপু। সেই সাথে খুব সুন্দর একটি রূপক গল্প শেয়ার করেছেন। গল্পটি পড়ে অনেক ভাল লেগেছে। ধন্যবাদ জানাচ্ছি এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

শৈশবের স্মৃতিকে ধারণ করে এই ফুলটি বানিয়েছিলাম। সেই সাথে রূপক গল্পটিও, আপনার মনের স্থান পেয়েছে। এ আমার পরম পাওয়া।

রবিন কাগজ ব্যবহার করে অনেক সুন্দর একটা প্রজেক্ট তৈরি করে আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আপু। ব্যবহার করে এমন জিনিস তৈরি করতে অনেক বেশি দক্ষতা প্রয়োজন হয়।

ভাইয়া রঙিন কাগজ লিখতে গিয়ে রবিন হয়ে গেছে। আমার শৈশবের স্মৃতিময় প্রজেক্ট টি আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো।

কাগজের ফুল চমৎকার হয়েছে আপু। মাঝে পুঁথি ব্যবহার করে সাজিয়ে তুলেছেন। আপনি অনেক দক্ষতার সাথে ফুল তৈরি করেছেন। চমৎকার একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি আপু।

রঙ্গিন কাগজ দিয়ে চমৎকার একটি ফুল তৈরি করেছেন আপু দেখতে অনেক সুন্দর লাগছে। গল্পটি পড়েও অনেক ভালো লাগলো। অনেক দক্ষতার সাথে আপনি ডাই পোস্টটি করেছেন এবং ধাপে ধাপে সুন্দরভাবে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

স্মৃতিময় শৈশবের এই প্রজেক্টটি আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম প্রিয় আপু। সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

আন্দাজ! 🤩 অসুম বিশ্বাসের ডাই প্রজেক্ট নয়। এখানে ছাত্র-ছাত্রী ও লেখক-লেখিকা সম্পৃক্ত থেকে আন্দাজ টিপস উচিত।

আপনি রঙিন কাগজ দিয়ে খুবই সুন্দর একটি ফুল তৈরি করেছেন তাছাড়া অসাধারণ একটা গল্প লিখেছেন। গল্পটি পড়ে অনেক বেশি ভালো লাগলো। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে চমৎকার একটা পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।