স্বরচিত -কবিতা-
সকলকে অনাবিল শুভেচ্ছা। আশা করি সকলেই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি। আর আপনারা সবাই সব সময় ভালো থাকবেন,এটাই প্রত্যাশা করি। আজ আবারো আমার লেখা আর একটি কবিতা নিয়ে হাজির হলাম। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে, আজকের কবিতাটিও।
কবিতাটির পিছনের গল্প:
এই গদ্য কবিতাটি আসলে সমাজের একটি কঠিন বাস্তবতাকে কেন্দ্র করে লেখা, যা আমরা প্রতিদিনই দেখি, অনুভব করি, কিন্তু হয়তো সবসময় প্রকাশ করতে পারি না।
একটি পরিবার হোক বা একটি প্রতিষ্ঠান—সব জায়গায় কিছু মানুষের প্রতি বিশেষ মনোযোগ থাকে, আর কিছু মানুষ অবহেলার অন্ধকারে হারিয়ে যায়। অথচ তারা সবাই একই পরিশ্রম করে, একই চেষ্টা করে, একই রকম স্বপ্ন দেখে।
আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকেও আমি এই সত্যটি উপলব্ধি করেছি। জীবনের নানা পর্যায়ে দেখেছি, কিভাবে একই জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকা মানুষদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি বদলে যায়। কেউ সব সুযোগ পায়, কেউ শুধুই লড়াই করে। কেউ আলোয় থাকে, কেউ ছায়ায় হারিয়ে যায়।
আমি ভাবতে বসি—এই পার্থক্যের জন্ম দিলো কে? কেন আমরা একে অপরকে সমান চোখে দেখতে পারি না? কেন যোগ্যতার মাপকাঠি সবার জন্য এক হয় না?
এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজতেই ‘দুই চোখের মাপ’ কবিতাটি লেখা। আমি চেয়েছি, যারা এই কবিতা পড়বে, তারা অন্তত একবার ভাবুক—আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি কি সত্যিই নিরপেক্ষ? নাকি আমাদের চোখও রঙে রঙে বিভক্ত?
আমি চাই, একদিন এমন সময় আসুক, যখন কোনো পার্থক্য থাকবে না। থাকবে না অবহেলার দেয়াল, থাকবে না পক্ষপাতের আলো। সবার জন্য থাকবে একটাই সূর্য, একটাই ন্যায়বিচার, একটাই ভালোবাসার জায়গা।
এই কবিতার মধ্যে লুকিয়ে আছে সেই স্বপ্ন, সেই আশা…
সমান দৃষ্টির এক নতুন ভোরের প্রত্যাশায়
একই ছাদের নিচে,
একই রোদ গায়ে মেখে,
একই বাতাসে নিঃশ্বাস নিয়ে
আমরা বড় হই।
তবু কিছু চোখের মাপ আলাদা।
এক চোখ ঝলমলে আলো ছুঁড়ে দেয়,
যেন কেউ ঈশ্বরের আদরের সন্তান।
তাদের পদতলে লাল কার্পেট,
শব্দে শব্দে বন্দনা,
তাদের ভুলগুলোও সোনালি
গর্জনে ঢাকা পড়ে।
অন্য চোখের দৃষ্টি ধুলোবালির মতো—
একটু একটু করে ঝরে পড়ে অবহেলায়।
তাদের জন্য কোনো লাল কার্পেট নেই,
শুধু কাঁটা, শুধু শীতল নিরাসক্তি,
শুধু "তুমি যোগ্য নও" বলা অদৃশ্য দেয়াল।
কিন্তু মাটি কি আলাদা জানে?
বৃষ্টি কি আলাদা ভেজায়?
একই মাটিতে দাঁড়িয়ে কেউ
আকাশ ছোঁয়ার অনুমতি পায়,
আবার কেউ শিকড়ের কাছেই আটকে থাকে।
এই দুই চোখের মাপ কে বানালো?
মানুষ কি সমান নয়?
তবে কেন কারও জন্য উঁচু সিংহাসন,
আর কারও জন্য ধুলোর বিছানা?
একদিন হয়তো সময়ই হবে সবচেয়ে বড় পাল্লা,
যেখানে দুই চোখের বিভেদ গলে যাবে,
যেখানে আলো আর অন্ধকার মিশে যাবে,
সবার জন্য একই সূর্য উঠবে,
একই ছায়া পড়বে।
কিন্তু ততদিন—
ততদিন কিছু চোখ রয়ে যাবে
পক্ষপাতের রঙে আঁকা,
ততদিন কিছু মানুষ পড়ে থাকবে
ছায়ার কোণায়,
অপেক্ষায়…
সমান দৃষ্টির এক নতুন ভোরের।
---------------------------------------.
৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
সময় রাত -১:২৭
কবিতা কুটির নীলফামারী।
বন্ধুরা আমার আজকের কবিতটি, নিশ্চয়ই আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। আর আপনাদের ভালোলাগাই আমার সার্থকতা ও পরম পাওয়া। সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। পরবর্তীতে আবারো সুন্দর সুন্দর কবিতা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব, আমি সেলিনা সাথী...
আমি সেলিনা সাথী। ছন্দের রাজ্যে, ছন্দরাণী কাব্যময়ী-কাব্যকন্যা বর্তমান প্রজন্মের নান্দনিক ও দুই বাংলার জনপ্রিয় কবি সেলিনা সাথী। একধারে লেখক, কবি, বাচিক শিল্পী, সংগঠক, প্রেজেন্টার, ট্রেইনার, মোটিভেটর ও সফল নারী উদ্যোক্তা তার পুরো নাম সেলিনা আক্তার সাথী। আর কাব্যিক নাম সেলিনা সাথী। আমি নীলফামারী সদর উপজেলায় ১৮ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। আমার বাবা পিতা মরহুম শহিদুল ইসলাম ও মাতা রওশনারা বেগম। ছড়া কবিতা, ছোট গল্প, গান, প্রবন্ধ, ব্লগ ও উপন্যাস ইত্যাদি আমার লেখার মূল উপজীব্য। আমার লেখনীর সমৃদ্ধ একক এবং যৌথ কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ১৫ টি। আমার প্রথম প্রকাশিত কবিতার বই অশ্রু ভেজা রাত, উপন্যাস মিষ্টি প্রেম, যৌথ কাব্যগ্রন্থ একুশের বুকে প্রেম। জীবন যখন যেমন। সম্পাদিত বই 'ত্রিধারার মাঝি' 'নারীকণ্ঠ' 'কাব্যকলি'সহ আরো বেশ কয়েকটি বই পাঠকহমলে বেশ সমাদৃত। আমি তৃণমূল নারী নেতৃত্ব সংঘ বাংলাদেশ-এর নির্বাচিত সভাপতি। সাথী পাঠাগার, নারী সংসদ, সাথী প্রকাশন ও নীলফামারী সাহিত্য ও সংস্কৃতি একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। এছাড়াও আমি জেলা শাখার সভাপতি উত্তোরন পাবনা ও বাংলাদেশ বেসরকারি গ্রন্থাগার পরিষদ নীলফামারী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছি। তিনি মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০১৪ সালে নীলফামারী জেলা ও রংপুর বিভাগীয় পর্যায়ে সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদানের জন্য শ্রেষ্ঠ জয়িতা অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছি। এছাড়াও সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় ও সামাজিক সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে বিশেষ অবদান রাখায় আমি বহু সম্মামনা পদক অর্জন করেছি। যেমন সাহিত্যে খান মইনুদ্দিন পদক ২০১২। কবি আব্দুল হাকিম পদক ২০১৩। শিশু প্রতিভা বিকাশ কেন্দ্র কর্তৃক সম্ভাবনা স্মারক ২০১৩। সিনসা কাব্য সম্ভাবনা ২০১৩। বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উদযাপন উপলক্ষে সম্মামনা স্মারক ২০১৩। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৩৭ তম মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে সম্মাননা স্মারক ২০১৩। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর ১১৫ তম জন্ম জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ২০১৪। দৈনিক মানববার্তার সম্মামনার স্মারক ২০২৩। চাতক পুরস্কার চাতক অনন্যা নারী সম্মাননা ২০২৩ ওপার বাংলা মুর্শিদাবাদ থেকে মনোনীত হয়েছি।
বিষয়: ক্রিয়েটিভ রাইটিং
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
যে সমতার কথা চিন্তা করে তুমি এই কবিতাটি লিখে ফেলেছ, তোমার সেই ভাবনাকে আমি কুর্নিশ জানাই। অসাধারণ একটি ভাবনাচিন্তার প্রকাশ ঘটিয়েছ তোমার লেখা এই কবিতায়। সব থেকে ভালো লাগলো সমাজের সকল মানুষের জন্য একটি ছাদের কথাটি। এত সুন্দর কবিতাটি পড়ে সমাজের একটি দিকের কথা একেবারে স্পষ্ট ভাবে ধরা দিল।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমার একান্ত চিন্তা চেতনার বহিঃপ্রকাশ এই কবিতাটি। তোমার কাছে ভালো লেগেছে জেনে অনেক খুশি হলাম। ভালো থেকো সব সময়।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অনেক ভালো লাগলো কবিতাটি, এভাবেই চলার চেস্টা করবো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit