স্বরচিত -কবিতা-
সকলকে নতুন বছরের অনাবিল শুভেচ্ছা। আশা করি সকলেই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি। আর আপনারা সবাই সব সময় ভালো থাকবেন,এটাই প্রত্যাশা করি। আজ আবারো আমার লেখা আর একটি কবিতা নিয়ে হাজির হলাম। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে, আজকের কবিতাটিও।
কবিতাটি লেখার সময় আমি একান্তে বসে আকাশের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। প্রকৃতির মাঝে বসে মনে হচ্ছিল, আকাশের কি আসলেই কোনো সীমানা আছে? ছোটবেলায় আকাশ যেন আমার চারপাশেই ছিল—ঘুড়ি ওড়ানো, চাঁদ দেখার অপেক্ষা, কিংবা সন্ধ্যার মেঘ দেখে কল্পনার জগতে হারিয়ে যাওয়া। কিন্তু সময়ের সঙ্গে বুঝেছি, আকাশের মতো বিশাল কিছু শুধু অনুভবেই ধরা যায়।
এই কবিতাটি আমার শৈশব, কল্পনা এবং বাস্তবতার মেলবন্ধন। মনে হয়েছিল, আকাশ আমাদের মনের আয়না। যতটা আমরা কল্পনা করি, আকাশ ততটাই বড়। আর যা ধরতে পারি না, তা আমাদের সীমাবদ্ধতার বাইরে রয়ে যায়।
কবিতায় আমি আকাশের সঙ্গে জীবনের নানা দিকের তুলনা করেছি। যেমন, আকাশ তার সীমানায় রাখে আমাদের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না। একইভাবে আমাদের জীবনেও অনেক স্মৃতি, আশা, স্বপ্ন জমে থাকে। আকাশের মেঘ যেমন আমাদের হারিয়ে যাওয়া দিনগুলোকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়, তেমনি সময়ও আমাদের অনেক কিছু ফেলে এগিয়ে যায়।
লেখার সময় নিজের মনের গভীর আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করার চেষ্টা করেছি। আকাশের সীমানায় পৌঁছানোর ইচ্ছা যেন প্রতীক হয়ে দাঁড়ায় আমাদের জীবনের সীমাবদ্ধতাকে ছাড়িয়ে যাওয়ার।
এই কবিতাটি লিখতে গিয়ে আমার শৈশবের দিনগুলো, হারানো স্মৃতি, আর অজানা স্বপ্নগুলো নতুন করে অনুভব করেছি। আমি মনে করি, আকাশের সীমানা শুধু প্রকৃতির নয়; এটি আমাদের কল্পনা, অনুভূতি আর আত্মার প্রতিফলন।
কবিতাটি লিখেছি ১৫ জানুয়ারি ২০২৫ সালের বিকেলে, আমার নীলফামারীর ছোট্ট কবিতা কুটিরে বসে। প্রকৃতির সেই শান্ত বিকেল আমাকে এমন এক জগতে নিয়ে গিয়েছিল, যেখানে আকাশ আর আমার মন এক হয়ে গিয়েছিল।
আকাশের কি সীমানা আছে?
যে আকাশ শৈশবে ঘুড়ি উড়ানোর মাঠ ছিল,
সে আকাশ তো আমার ছাদের এক টুকরো।
যে আকাশ সন্ধ্যায় চাঁদ ওঠার অপেক্ষা ছিল,
সে আকাশ তো আমার চোখের পলক।
তবু কেন যেন মনে হয়,
আকাশের এক অদৃশ্য সীমানা আছে।
সীমান্তের কাঁটাতারের মতো নয়,
আকাশের সীমানা যেন অনুভবের—
যতটা আমি ছুঁতে পারি,
ততটাই আমার।
আর যা পারি না,
তা রয়ে যায় আমার কল্পনার ভেতর।
আকাশের সীমানায় কত স্মৃতি জমে থাকে!
মেঘ হয়ে ভাসে আমাদের
সেই হারিয়ে যাওয়া দিনগুলো।
যে পাখিগুলো দূরে উড়ে যায়-
তাদের ডানায় ভর করে
আমাদের ফেলে আসা সময়েরাও
তাঁদের মত উড়ে যায় ।
যেন কিছুই আর ফেরে না।
ফিরে আসে শুধু সন্ধ্যার নির্জনতা।
আকাশের সীমানায়
কখনো রঙের খেলা,
কখনো বজ্রপাতের গর্জন।
কখনো অঝোর বৃষ্টি,
কখনো রোদেলা দুপুর।
আকাশ তার সীমানায়
সবকিছু লুকিয়ে রাখে—
আমাদের কান্না,
আমাদের হাসি।
কিন্তু যদি বলি,
আমি আকাশের সীমানা ছুঁতে চাই?
আমি কি পারব?
না কি আমার ডানাগুলো
মাটির ভারেই ভেঙে পড়বে?
তবু আমি উড়তে চাই।
তবু আমি আকাশের
সেই সীমানায় যেতে চাই,
যেখানে কল্পনার শেষ নেই,
যেখানে স্বপ্নের কোনো বাঁধন নেই।
আকাশের সীমানা
আসলে আমাদের মনের আয়না।
যতটা বিশাল ভাবি,
ততটাই আমাদের।
তাই আমি আকাশের সীমানায়
লিখে রাখি----
আমার প্রত্যাশা,
আমার ভালোবাসা,
আমার অসমাপ্ত গল্প
যেন সমুদ্রের বুকে
অসীম আকাশের শেষ প্রান্তে
লুকোচুরি খেলে,,,,
১৫ জানুয়ারি ২০২৫
সময় বিকেল -৪:৫০
কবিতা কুটির- নীলফানারী।
বন্ধুরা আমার আজকের কবিতটি, নিশ্চয়ই আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। আর আপনাদের ভালোলাগাই আমার সার্থকতা ও পরম পাওয়া। সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। পরবর্তীতে আবারো সুন্দর সুন্দর কবিতা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব, আমি সেলিনা সাথী...
আমি সেলিনা সাথী। ছন্দের রাজ্যে, ছন্দরাণী কাব্যময়ী-কাব্যকন্যা বর্তমান প্রজন্মের নান্দনিক ও দুই বাংলার জনপ্রিয় কবি সেলিনা সাথী। একধারে লেখক, কবি, বাচিক শিল্পী, সংগঠক, প্রেজেন্টার, ট্রেইনার, মোটিভেটর ও সফল নারী উদ্যোক্তা তার পুরো নাম সেলিনা আক্তার সাথী। আর কাব্যিক নাম সেলিনা সাথী। আমি নীলফামারী সদর উপজেলায় ১৮ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। আমার বাবা পিতা মরহুম শহিদুল ইসলাম ও মাতা রওশনারা বেগম। ছড়া কবিতা, ছোট গল্প, গান, প্রবন্ধ, ব্লগ ও উপন্যাস ইত্যাদি আমার লেখার মূল উপজীব্য। আমার লেখনীর সমৃদ্ধ একক এবং যৌথ কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ১৫ টি। আমার প্রথম প্রকাশিত কবিতার বই অশ্রু ভেজা রাত, উপন্যাস মিষ্টি প্রেম, যৌথ কাব্যগ্রন্থ একুশের বুকে প্রেম। জীবন যখন যেমন। সম্পাদিত বই 'ত্রিধারার মাঝি' 'নারীকণ্ঠ' 'কাব্যকলি'সহ আরো বেশ কয়েকটি বই পাঠকহমলে বেশ সমাদৃত। আমি তৃণমূল নারী নেতৃত্ব সংঘ বাংলাদেশ-এর নির্বাচিত সভাপতি। সাথী পাঠাগার, নারী সংসদ, সাথী প্রকাশন ও নীলফামারী সাহিত্য ও সংস্কৃতি একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। এছাড়াও আমি জেলা শাখার সভাপতি উত্তোরন পাবনা ও বাংলাদেশ বেসরকারি গ্রন্থাগার পরিষদ নীলফামারী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছি। তিনি মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০১৪ সালে নীলফামারী জেলা ও রংপুর বিভাগীয় পর্যায়ে সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদানের জন্য শ্রেষ্ঠ জয়িতা অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছি। এছাড়াও সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় ও সামাজিক সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে বিশেষ অবদান রাখায় আমি বহু সম্মামনা পদক অর্জন করেছি। যেমন সাহিত্যে খান মইনুদ্দিন পদক ২০১২। কবি আব্দুল হাকিম পদক ২০১৩। শিশু প্রতিভা বিকাশ কেন্দ্র কর্তৃক সম্ভাবনা স্মারক ২০১৩। সিনসা কাব্য সম্ভাবনা ২০১৩। বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উদযাপন উপলক্ষে সম্মামনা স্মারক ২০১৩। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৩৭ তম মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে সম্মাননা স্মারক ২০১৩। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর ১১৫ তম জন্ম জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ২০১৪। দৈনিক মানববার্তার সম্মামনার স্মারক ২০২৩। চাতক পুরস্কার চাতক অনন্যা নারী সম্মাননা ২০২৩ ওপার বাংলা মুর্শিদাবাদ থেকে মনোনীত হয়েছি।
বিষয়: ক্রিয়েটিভ রাইটিং
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার লেখা কবিতাটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। খুবই সুন্দর ভাষায় কবিতা লিখেছেন। পড়ে যেন অনেক ভালো লেগেছে আমার আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার লেখা সুন্দর সুন্দর কবিতাগুলো সব সময় আমাকে ভাবতে শিখায় এবং নতুন করে কোন কিছু লিখতে শেখায়। ঠিক তেমনি আজকের ভাবনাটা কিন্তু দারুন ছিল। যে ভাবনা থেকে অসাধারন কবিতা লিখেছেন এবং আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। খুব ভালো লাগলো এত সুন্দর কবিতা সামনে পেয়ে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit