সকলকে শুভেচ্ছা। আশা করি সকলেই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি। আর আপনারা সবাই সব সময় ভালো থাকবেন,এটাই প্রত্যাশা করি।
শীতকালীন শৈশবের স্মৃতি যেন এক মধুর কবিতা, যা হৃদয়ের গভীরে চিরস্থায়ী হয়ে আছে। সেই সময়ে প্রতিটি দিনই ছিল এক অপূর্ব গল্প, আর প্রতিটি মুহূর্ত যেন আবেগের রঙে রাঙানো। শীতকাল এলেই শৈশবের সেই সোনালী দিনগুলোর কথা মনে পড়ে—যে দিনগুলোতে জীবন ছিল সরল, কিন্তু অসীম আনন্দে ভরা।
শীতের সকাল মানেই ছিল কুয়াশার চাদরে ঢাকা এক রহস্যময় পরিবেশ। ঘুম থেকে উঠতেই মা'র গায়ে কাঁথা দিয়ে দেওয়া আর "ঠান্ডা লাগবে" বলে নরম গলায় বকাঝকা, যেন মায়ের ভালোবাসার সবচেয়ে উষ্ণ পরশ। উঠোনে যখন প্রথম রোদের আলোর আভা পড়ত, মনে হতো যেন পৃথিবী সোনায় মোড়া। মা কিংবা দাদির হাতের তৈরি গরম পিঠার ঘ্রাণে পুরো বাড়ি যেন এক আনন্দধাম হয়ে উঠত। চিতই, ভাপা, পাটিসাপটা কিংবা নারকেলের ভরা পুলি—প্রতিটি পিঠায় ছিল শীতের একটি বিশেষ গল্প।
শীতকালের মাটির গন্ধ ছিল অনন্য। সকালে স্কুলে যাওয়ার আগে মোটা কোট গায়ে চড়িয়ে, কানটুপি পরে, কাঁপা কাঁপা ঠোঁটে দুধের চুমুক দিয়ে বের হওয়ার সেই দৃশ্যগুলো এখনো চোখে ভাসে। মেঠোপথ ধরে সাইকেল চালানো, বন্ধুদের সঙ্গে জমিতে ঘোরাঘুরি, আর জমির ধানক্ষেতে ঘন কুয়াশার মধ্যে দিগন্ত হারিয়ে যাওয়া দৃশ্য আমাদের কল্পনার জগৎকে উড়িয়ে নিয়ে যেত।
বিকেলের সময়টা ছিল আরও আনন্দের। তখন গ্রামের মাঠে বিভিন্ন ধরণের খেলা চলত। ব্যাডমিন্টন, কাঁথার বল দিয়ে ফুটবল খেলা কিংবা গাছে চড়ার মতো ছোট ছোট কাজগুলো মনে হতো বড় কোনো দুঃসাহসিক অভিযান। পুকুরে মাছ ধরার আনন্দ যেন শীতের এক অপরিহার্য অংশ ছিল। ঠান্ডা পানিতে হাত ডুবিয়ে মাছ ধরা আর সে সময়ে সবাই মিলে খুনসুটি—এসব মুহূর্ত জীবনের এক অমূল্য স্মৃতি হয়ে আছে।
রাতের গল্পগুলো ছিল আলাদা রকমের মধুর। আগুন জ্বালিয়ে সবাই মিলে গোল হয়ে বসে শীত পোহানোর সময় দাদু-নানুর মুখে শোনা শীতকালীন গল্প বা ভূতের কাহিনিগুলো শিহরণ জাগাত। আর শীতের রাতের আকাশে তারা যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠত। কুয়াশার ফাঁকে চাঁদের আলো যেন পৃথিবীকে মোহময় করে তুলত। চাদরের তলে ঢুকে গল্পের বই পড়া কিংবা মায়ের হাতে গরম দুধ খাওয়ার সেই ছোট ছোট অভ্যাসগুলো আজও মনে দোলা দেয়।
শীতকালীন শৈশবের স্মৃতি কেবলই এক সময়ের গল্প এটি আমাদের জীবনের সেই অধ্যায় যা বারবার আমাদের শিকড়ে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। সেই সরল জীবন, নিঃশর্ত ভালোবাসা আর আনন্দের মুহূর্তগুলো আজকের ব্যস্ত জীবনে এক শান্তির আশ্রয়। শীতের স্মৃতিগুলো আমাদের মনে করিয়ে দেয়, ছোট ছোট মুহূর্তেও কত বড় সুখ লুকিয়ে থাকতে পারে।
আমি সেলিনা সাথী। ছন্দের রাজ্যে, ছন্দরাণী কাব্যময়ী-কাব্যকন্যা বর্তমান প্রজন্মের নান্দনিক ও দুই বাংলার জনপ্রিয় কবি সেলিনা সাথী। একধারে লেখক, কবি, বাচিক শিল্পী, সংগঠক, প্রেজেন্টার, ট্রেইনার, মোটিভেটর ও সফল নারী উদ্যোক্তা তার পুরো নাম সেলিনা আক্তার সাথী। আর কাব্যিক নাম সেলিনা সাথী। আমি নীলফামারী সদর উপজেলায় ১৮ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। আমার বাবা পিতা মরহুম শহিদুল ইসলাম ও মাতা রওশনারা বেগম। ছড়া কবিতা, ছোট গল্প, গান, প্রবন্ধ, ব্লগ ও উপন্যাস ইত্যাদি আমার লেখার মূল উপজীব্য। আমার লেখনীর সমৃদ্ধ একক এবং যৌথ কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ১৫ টি। আমার প্রথম প্রকাশিত কবিতার বই অশ্রু ভেজা রাত, উপন্যাস মিষ্টি প্রেম, যৌথ কাব্যগ্রন্থ একুশের বুকে প্রেম। জীবন যখন যেমন। সম্পাদিত বই 'ত্রিধারার মাঝি' 'নারীকণ্ঠ' 'কাব্যকলি'সহ আরো বেশ কয়েকটি বই পাঠকহমলে বেশ সমাদৃত। আমি তৃণমূল নারী নেতৃত্ব সংঘ বাংলাদেশ-এর নির্বাচিত সভাপতি। সাথী পাঠাগার, নারী সংসদ, সাথী প্রকাশন ও নীলফামারী সাহিত্য ও সংস্কৃতি একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। এছাড়াও আমি জেলা শাখার সভাপতি উত্তোরন পাবনা ও বাংলাদেশ বেসরকারি গ্রন্থাগার পরিষদ নীলফামারী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছি। তিনি মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০১৪ সালে নীলফামারী জেলা ও রংপুর বিভাগীয় পর্যায়ে সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদানের জন্য শ্রেষ্ঠ জয়িতা অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছি। এছাড়াও সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় ও সামাজিক সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে বিশেষ অবদান রাখায় আমি বহু সম্মামনা পদক অর্জন করেছি। যেমন সাহিত্যে খান মইনুদ্দিন পদক ২০১২। কবি আব্দুল হাকিম পদক ২০১৩। শিশু প্রতিভা বিকাশ কেন্দ্র কর্তৃক সম্ভাবনা স্মারক ২০১৩। সিনসা কাব্য সম্ভাবনা ২০১৩। বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উদযাপন উপলক্ষে সম্মামনা স্মারক ২০১৩। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৩৭ তম মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে সম্মাননা স্মারক ২০১৩। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর ১১৫ তম জন্ম জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ২০১৪। দৈনিক মানববার্তার সম্মামনার স্মারক ২০২৩। চাতক পুরস্কার চাতক অনন্যা নারী সম্মাননা ২০২৩ ওপার বাংলা মুর্শিদাবাদ থেকে মনোনীত হয়েছি।
বিষয়: ক্রিয়েটিভ রাইটিং
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলে শীতকালের ছোটবেলার অনুভূতিগুলো সত্যিই আলাদা। আপনার মত আমাদের সবার জীবনের এই অনুভূতিগুলো আমাদের বারবার যখন মনে পড়ে তখন আমাদের পুনরায় সেই শৈশব করে ফিরে যেতে ইচ্ছে করে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
শৈশবের স্মৃতিগুলি আসলেই মধুর, এটা মন থেকে কখনোই মুছে ফেলা যায় না।আপনি আপনার শৈশবের শীতকালের সুন্দর অনুভূতি ব্যক্ত করেছেন,ভালো লাগলো পড়ে।ধন্যবাদ আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit