হ্যালো,
আমার বাংলা ব্লগ বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই। আশা করছি ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি আপনাদের আশীর্বাদ ও সৃষ্টিকর্তার কৃপায়।
আমি @shapladatta বাংলাদেশ থেকে। আমার বাংলা ব্লগের একজন ভেরিফাই নিয়মিত ইউজার। আমি গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সঙ্গে যুক্ত আছি।
আজ আমি আপনাদের সাথে ভাগ করে নিতে এসেছি ধর্ম ত্যাগ তছনছ পরিবারের শেষ পর্ব।
এভাবে চলতে চলতে এক সময় লুৎফর কাকা ঠিক করলেন বউকে আর এখানে রাখবে না।ওনাদের একটি ছেলে সেই ছেলেকেও ভালো স্কুলে ভর্তি করতে হবে তাই তারা বাসা ভাড়া নিলেন এবং সেখানে বসবাস করতে লাগলেই।
যেহেতু লুৎফর কাকা অবসরে এসেছে তাই তিনি একটা ব্যাবসা শুরু করলেন। এভাবে চলতে চলতে অজানা কোন কারণে তিনি বউ নিয়ে শ্বশুর বাড়ি চলে গেলেন। সেখানে গিয়ে বাসা ভারা নিয়ে বসবাস করতে থাকলেন এবং তাদের একটি কন্যা সন্তান জন্ম নিলো।এক ছেলে এক মেয়ে নিয়ে বেশ ভালোই চলেছিলো।
হঠাৎ শুনলাম তিনি নাকি এখন গ্রামের বাড়িতে বেশি সময় থাকে কারণ বউয়ের সাথে বনিবনা হচ্ছে না।টাকা পয়সা সব বউয়ের কাছে।বাড়ি কিনেছে বউয়ের নামে এখন আর সেই বউ তালে দেখতে পারে না।কি আজব পৃথিবীর মানুষ গুলো।যে ব্যাক্তি বউকে এতো ভালোবাসতো এবং বউয়ের জন্য এতোকিছু করলো এখন সেই ব্যাক্তিকে বউ আর দেখতে পারে না।
সে বড়ো ভাইয়ের বাড়িতে এসে থাকে বেশি সময় তাট বউয়ের নাকি কথা গ্রামের বাড়ির যে বাড়িভিটা আছে তা বিক্রি করে নিয়ে যেতে হবে।এদিকে সেই বাড়ি ভিটা তো তাদের দু ভাইয়ের আর ওনার ভাসতা সেই জায়গায় বাড়ি করেছে।খুব কষ্টে আছে বেচারা লুৎফর কাকা।এখানেও ভাসতা বউ তার থাকাটা পছন্দ করে না।
আমাদের বাড়িতে এসে খায় প্রতিদিন যে কোন একবেলা সেটাও না কি তার ভাসতা পছন্দ করে না।আমাদের বাড়িতে খেতে নিষেধ করেছে তবুও ওনি চুপিচুপি এসে খেয়ে যায়।মাকে আমরাও বলেছি যে তাকে যাতে খেতে দেয় আসলে।লুৎফর কাকাকে দেখে খুব খারাপ লাগলো।
এতো ভালো,নম্র ভদ্র একজন মানুষের এই করুন পরিনতি দেখে খুব খারাপ লাগলো।আমাদের কে খুব ভালোবাসতেন।ছোটবেলায় ভাবতাম নিজের পরিবারের সদস্য সে এবং সে আমাদের নিজের কাকা।
আমার কাকার সাথে ঢাকতো ছুটিতে বাড়িতে দু-মাসের ছুটিতে আসলে আমাদের এখানে খাওয়া,স্নান করতো কাকার সাথে ঘুমাতো আমরা ভাবতাম আমাদের নিজের কাকা।
ওনার বউ আন্টিও বেশ ভালোবাসতো আমাদের কে।আমাদের সাথে অলটাইম আমাদের বাড়িতে থাকতো এবং আমাদেরই সাথে গল্পগুজব করতো।আমাদের কে সুন্দর সুন্দর নাস্তা বানিয়ে খেতে দিতো এবং কিছু খেতে মন চাইলে আমার মাকে বলতো বৌদি আমাকে এই জিনিসটা রান্না করে খাওয়ান।
আমাদের বাড়িতে ভালোমন্দ রান্না হলেই সে আমাদের বাড়িতে খেতো।ওনার ছেলের নাম আজমির তখন তার বয়স ছিলো তিন কি চার বছর হবে।সে আমাদের কে ছারা কিছু বুঝতো না সারাক্ষণ আমাদের বাড়িতে থাকতো আমাদের সাথে খেলা করতো আমাদের বাড়িতে খেতো ও স্নান করতো ঘুমাতো।
আজমির কখনো তরকারি খেতো না সে শুধু চিনি দিয়ে ভাত খেতো।কখনো দুধ ভাত দিয়ে খেতো।সে কথা গুলো এখনো খুব মনে পড়ে।ওর মায়ের কাছে গেলে কান্না করতো তাই ওর মা আমাদের বাড়িতেই রাখতো বেশি ভাগ আজমির কে।আমাদের কে আপু ডাকতো।কালো ছিলো সে অনেক তবে দেখতে অপূর্ব সুন্দর।কালো জন্য আমরা আজমির কে দোয়েল পাখির বাচ্চা বলতাম।
কতোই না সাজানো গোছানো ছিলো তাদের সুখী পরিবারটি কিন্তুু এভাবে কেন তছনছ হয়ে যাচ্ছে তা বুঝতে পারছি না।খুব হাস্যজ্বল এখনো লুৎফর কাকা তবে হাসির মাঝে একটা চাপা কষ্ট আছে তা বোঝা যায়।বাড়িতে গিয়ে যখন লুৎফর কাকাকে দেখলাম ও তার সম্পর্কে এতোসব শুনলাম মায়ের কাছে তখন খুব খারাপ লাগলো আমার। দেখলাম সবার সাথে হেসেখেলে যাচ্ছে এতো চাপা কষ্ট নিয়েও।বাবার সাথে বসে টেবিলে ভাত খেলো গল্প করলো।
কাউকে বুঝতে দেয়না তার চাপা কষ্ট গুলো কিন্তুু কিছু কিছু কষ্ট আছে যা চোখে মুখে স্পষ্ট হয়ে ওঠে।একটাই চাওয়া সৃষ্টি কর্তা লুৎফর কাকুর সব ঝামেলা মিটিয়ে দেক।বেচারা লুৎফর কাকু জন্মদুঃখী। সম্ভ্রন্ত পরিবার ছেলে ভাগ্যের নির্মাম পরিহাসে না খেয়ে দিনপাত করতে হয়েছে। প্রথম বউকে নিয়ে সুখী হতে পারেনি সংসার ভেঙ্গে গেছে আবার খুব ভালো একটা চাকুরী করার পরেও অবসরে যাওয়ার পর তার এই করুন অবস্থা সত্যি খুব কষ্টকর।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি আবারও দেখা হবে অন্যকোন পোস্টের মাধ্যমে।সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ ও নিরাপদ থাকুন।
টাটা
পোস্ট | বিবরণ |
---|---|
পোস্ট তৈরি | @shapladatta |
শ্রেণী | জেনারেল রাইটিং |
ডিভাইস | OppoA95 |
লোকেশন | বাংলাদেশ |
আমি হৈমন্তী দত্ত। আমার স্টিমিট আইডিরঃshapladatta. জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। শখঃবাগান করাও নিরবে গান শোনা,শপিং করা। ভালো লাগে নীল দিগন্তে কিংবা জোস্না স্নাত খোলা আকাশের নিচে বসে থাকতে।কেউ কটূক্তি করলে হাসি মুখে উড়িয়ে দেই গায়ে মাখি না।পিছু লোকে কিছু বলে এই কথাটি বিশ্বাস করি ও সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি।বিপদকে ও অসুস্থতার সাথে মোকাবেলা করার সাহস রাখি সহজে ভেঙ্গে পরি না। সবাইকে নিয়ে ভালো থাকার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি পর হিংসা আপন ক্ষয়। ধন্যবাদ ।