হ্যালো,
কেমন আছেন সবাই আশা করি ভাল আছেন আমিও সৃষ্টিকর্তার কৃপায় ও আপনাদের আশীর্বাদে ভালো আছি সুস্থ আছি।
আজ আমি আপনাদের সঙ্গে ভাগ করে নেবো আপেল সমাচার শিরোনামের একটি পোস্ট। আপনারা হয়তো ভাবছেন আপেল সমাচার সে আবার কেমন। হ্যাঁ আপেল সমাচার সত্যিই অনেক সুন্দর একটি হাস্যকর ঘটনা। আমার তো হাসি পায় যতবার মনে পড়ে এই ঘটনাটি ততবার আমি হাসি একা একা। আর ভাবি ছোটবেলায় কতইনা বোকা ছিলাম। হঠাৎ করে আপেল খাওয়ার সময় ঘটনাটি মনে করে গেল তাই আপনাদের সঙ্গে ভাগ করে নিলাম।
চলুন দেখা যাক ঘটনাটি কি।
আমি তখন বেশ ছোট তৃতীয় শ্রেণি কিংবা চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ি।আমার এক জ্যাঠাতো দিদি ছিলো দেখতে অপূর্ব সুন্দর। অনেক ছেলেই ঐ দিদির জন্য পাগল ছিলেন। পাগল হবেনেই বা না কেন দেখতে এতই সুন্দর যে এক দেখাতেই যে কারো মন কেড়ে নেয়া সম্ভব।
পাশের গ্রামের একটি ছেলে দিদি কে ভীষণ বিরক্ত করতো। ছেলেটির নাম ছিল মতিউর। যেহেতু মুসলিম ছেলে তাই দিদি তাকে কোনভাবেই পাত্তা দিত না হয়তবা। ছেলেটি আবার আমাকে খুব আদর করতো কারণ ছেলেটি ছিল আমার কাকার বন্ধু। এক সাথে পড়াশুনা পড়তো না কিন্তু একই এলাকার হওয়ার কারণে ওঠা চলা সব একসঙ্গে ছিল কাকার সাথে। আমাদের বাড়িতে আসতো সব সময় এখন বুঝতে পারছি এত আসতো কেনো দিদিকে দেখার জন্যই আসতে। তো আমাকে শ্বশড়ি বলে ডাকতো আমিও ডাকতাম জামাই বলে। কারণ আমাকে সব সময় বলতো শাশুড়ি তোমার মেয়েকে চাই।দুষ্টমী করতো আর কি।
একদিন আমি স্কুল থেকে আসছিলাম আর তখনি ঐছেলেটি আমাকে একটা ব্যাগ ধরিয়ে দিয়ে বল্লেন শ্বশুড়ি এটা নিয়ে গিয়ে তোমার দিদিকে দিও।তোমার দিদি কিনতে দিয়েছে আমাকে। কাউকে না বলে দিদির হাতে নিয়ে গিয়ে দিও।
আমি সুবোধ বালিকার মতো ব্যাগটি স্কুল থেকে আসার পথে ঐ দিদিদের বাড়িতে গিয়ে দিতে চাইলাম।স্কুল থেকে আসার পথ আমাদের বাড়ির আগে ঐ দিদিদের বাড়ি তাই ভাবলাম দিয়ে যাই।কেউ কিছু মনে করেনি ব্যাগে কি আছে কারণ শপিং ব্যাগে ছিলো। এখন দিদিকে বল্লাম দিদি তুমি নাকি কি কিনতে দিয়েছিলে মতিউর কাকাকে সে আমাকে দিয়ে বললো তোমাকে দিতে।দিদি অবাক হয়ে আমার দিকে বড় বড় চোখে তাকিয়ে বলল্লো দেখি কি। এদিকে আমি কিন্তু তখনও দেখিনি আসলে ব্যাগের ভিতর কি ছিল। দিদি দেখার পর আমাকে বলল এগুলো তোদের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে রাখ আমি পরে নেব।আমি ব্যাগ নিয়ে এসে রেখে দিলাম। তবে আমাকে আসার সময় বলেছিল এগুলো কাউকে দেখাস না তোর কাছে রেখে দেস।আমি এত কিছু চিন্তা ভাবনা না করিনি এসে বই রাখার সেলফে রেখে দিলাম।
বিকেলে আবার গেলাম এ দিদি এগুলোকে নিয়ে আসবো।দিদি বলল না ওগুলো নিয়ে আসতে হবে না তুই খেয়ে ফেলিস আমার খেতে ইচ্ছে করছে না তবে কাউকে দেখাস না যেন। আসলে দিদিকে ওনি আপেল গুলো পাঠিয়েছে দিদি কিছুই জানতেন না। আমাকে খেতে বলাতে মনে মনে তো খুশি হলাম যে এতগুলো আপেল খেতে পারবো কিন্তু সমস্যা হলো কাউকে দেখাতে না করে দিয়েছে এতগুলো আপেল একবারে খাব কি করে। মহা বিপদে পড়ে গেলাম, ছোট ছিলাম তাই বুদ্ধিও ছিল না যে ওগুলো রেখে রেখে খাওয়া যাব। এজন্য আমার ভাইকে সাথে নিলাম যেহেতু কাউকে দেখাতে না করে দিয়েছে তাই কাউকে না দেখিয়ে পুকুর পাড়ে ব্যাগসহ আমিও আমার ভাই গেলাম এবং আপেল খাওয়া শুরু করে দিলাম দুজনে বসে হাহা।এক থেকে দুই কেজি আপেল হবে এতগুলো আপেল কি আর খাওয়া সম্ভব। এই অ্যাপেলে এক কামড় তো ওই আপেল কামড দিয়ে খাচ্ছি আর পুকুরে ফেলে দিচ্ছি ঢিল ছুরে।
এভাবে আমরা দুই ভাই বোন মিলে সবগুলো আপেল সাভার করে ফেললাম সব মিলিয়ে হয়তো খেয়েছি ভাই দুটো আমি দুটো আর বাকিগুলো সব কাম দিয়েছি আর কুকুরের ঢিল ছুড়েছি।
আমাদের কল্পনায়ও ছিল না যে আপেল গুলো আবার ভেসে থাকবে। আমরা দুজন আপিলগুলো পুকুরে ছুড়ে ফেলে আবার বাড়িতে চলে এসেছি। এখন সকালে যখন যে পুকুর পাড়ে যাচ্ছে আর দেখতে পেয়েছে সারা পুকুর জুড়ে শুধু আপেল আর আপেল🫢।সবাই তো বলাবেলি শুরু করেছে এই আপেল গুলোকে পুকুরে ভাসিয়ে দিয়েছে আর সেগুলো তো আস্ত আপেল নয় সবগুলোতেই দাঁত বসানো। হাহাহা। আমরা দুই ভাই বোন তো ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে আছি কাউকে কিছু বলতেও পারছি না যে এই কাজ আমাদের। কারণ দিদি আমাকে না করে দিয়েছে যে কাউকে বলিস না। বাড়ির কেউ তো কোনভাবেই মিলাতে পারছিল না যে এগুলো আপেল কে এরকম করে খেয়ে ফেলিয়ে দিয়েছে পুকুরে। আমরা চুপচাপ শুধু শুনতে লাগলাম তবে ভয়ে ছিলাম অনেক এই বুঝি সবাই জেনে যাবে তখন কি বলবো? কি জবাব দিহি করবো।
এরপর বাড়ির কেউ আর এই বিষয়টি নিয়ে ঘাটাঘাটি করেনি করবেই বা কিভাবে কারণ কেউ তো জানেই না যে কে কাজ করেছে। আর আমাদের কেউ কেউ দেখেনি ওখানে তাই ঘটনাটি আজ অব্দি ধামাচাপায় পড়ে রয়েছে। একদিন ডেকে দিদি আমাকে বলেছিল কিরে তুই পুকুরে আপেল গুলো সব ফেলে দিয়েছিস তাই না।আমি বললাম যে হ্যাঁ এতগুলো আপেল কি আমি খেতে পারি তুমি তো বলেছিলে যেন কেউ না জানে তাই ভাই ও আমিও একটি করে কামড় দিয়েছি আর কুকুরে ফেলে দিয়েছি। ওতো হেসে কুটি কুটি হয়ে যাচ্ছে এবং আমাকে সাবধান করে দিয়েছে আর যদি কখনো কোনদিন তোকে কেউ কিছু দেয় নিবি না বলবি আমি না। এর পর অবশ্য দিন কিছু দেয়নি আমাকে। এই ছিল আমার আজকের পোস্ট আপেল সমাচার। আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে ঘটনাটি।এই ঘটনাটি মাঝে মাঝেই আমার ভীষণ মনে পড়ে যায় এবং একা একা হাসি পায়। আজকের মত এখানেই শেষ করছি আবারও দেখা হবে অন্য কোন দিন সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন নিরাপদে থাকুন।
টাটা।
পোস্ট | বিবরণ |
---|---|
পোস্ট তৈরি | @shapladatta |
শ্রেণী | জেনারেল রাইটিং |
ডিভাইস | OppoA95 |
লোকেশন | বাংলাদেশhr |
আমি হৈমন্তী দত্ত। আমার স্টিমিট আইডিরঃshapladatta. জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। শখঃবাগান করাও নিরবে গান শোনা,শপিং করা। ভালো লাগে নীল দিগন্তে কিংবা জোস্না স্নাত খোলা আকাশের নিচে বসে থাকতে।কেউ কটূক্তি করলে হাসি মুখে উড়িয়ে দেই গায়ে মাখি না।পিছু লোকে কিছু বলে এই কথাটি বিশ্বাস করি ও সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি।বিপদকে ও অসুস্থতার সাথে মোকাবেলা করার সাহস রাখি সহজে ভেঙ্গে পরি না। সবাইকে নিয়ে ভালো থাকার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি পর হিংসা আপন ক্ষয়। ধন্যবাদ ।
আপু ঘটনাটা পড়ে আমি হাসতে হাসতে শেষ।অতগুলো আপেল কামড় দিয়ে দিয়ে পুকুরে ফেললেন।আবার জানাজানির ভয়ে চুপ ছিলেন। আপনি দেখছি বেশ বিশ্বস্ত।যাইহোক বেশ ভালো ছিলো গল্প টি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হাহাহাহা আমারও ঘটনাটি প্রায় মনে পড়ে এবং একা একা হাসি। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
দারুন একটি ঘটনা শেয়ার করেছেন আপু।আপনার ঘটনাটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো। এভাবে যে আপনি ও আপনার ভাই মিলে আপেল খেয়ে পুকুরে ফেলেছেন এই জিনিসটি পড়ে ভীষণ হাসি পেয়েছিল। আমায় সত্যিই আপনার বুদ্ধির জবাব নেই। এখনো পর্যন্ত যে কথাটি ধামাচাপা রয়েছে সেটি ভেবে আরও ভীষণ ভালো লাগছে। অনেক মজার একটি ঘটনা শেয়ার করেছেন আপু। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হাহাহাহা সত্যি আমারও হাসি পায় মাঝে মাঝে এই ঘটনাটি মনে পড়লে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit