হ্যালো,
আমার বাংলা ব্লগ বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই। আশা ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি আপনাদের আশীর্বাদ ও সৃষ্টিকর্তার কৃপায়।
আমি @shapladatta বাংলাদেশ থেকে। আমার বাংলা ব্লগের একজন ভেরিফাই নিয়মিত ইউজার। আমি গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সঙ্গে যুক্ত আছি।
আজ আ আমি আপনাদের সাথে ভাগ করে নেবো একটি পরিবারের গল্প নিয়ে গল্প ভাগ।আমার কাকাতো বোনকে ছেলে পক্ষ দেখতে এসেছি গতকাল আর সে উপলক্ষে আমি এসেছি আর আমাদের পাশের বাড়ির কাকুকে দেখে ইচ্ছে হলো তার পরিবারও তার সম্পর্কে কিছু লেখার আর সেজন্য শুরু করলাম।আমি পরিবারটির প্রথম থেকে এখন অবদি ভাগ করে নেবো।
আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে।
তো চলুন দেখা যাক গল্পটি কেমন।
আমাদের গ্রামে একটি সম্ভ্রান্ত হিন্দু পরিবার ছিলো। অনেক জমিজমার মালিক ছিলো।আগের দিনে গরুর গাড়ির প্রচলিত ছিলো আর ওনাদের ব্যাক্তিগত গরুর গাড়ি ছিলো ডজন খানেক।এগুলো গল্প শুনেছি। এখন মানুষের যেমন কার থাকে তখন ছিলো গরুর গাড়ি।অনেক লোকজন কাজও করতো ওনাদের বাড়িতে।
তো ঐ ব্যাক্তির নাম ছিলো সমরেশ। সমরেশের বিয়ের নেশা ছিলো।অন্যের বিধবা কে বিয়ে করতো।তিনটি বউছিলো ওনার। এরপর এক বিধবার সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে এবং তাকে বিয়ে করতে চায়।মহিলাটি অনেক সুন্দর ছিলো আর সেজন্য তাকে ভালোবেসে ফেলেছে সমশের।যে কোন মূল্যে তাকে বিয়ে করতে চায়।
এদিকে সমশেরের আত্নীয় স্বজন ও গ্রামের মানুষ বাঁধা দেয় কারণ তিনতিনটি বউ আছেই আবারও সে অন্যের বিধবাকে বিবাহ করতে চায় এটা কিছুতেই মেনে নেয়া হবে না। সাফ গ্রামের মোরলরা জানিয়ে দেয় যদি বিয়ে করে বিধবা মহিলাকে তাহলে তাকে সমাজ থেকে বয়কট করা হবে।
এদিকে সমরেশের কথা সে যে কোন মূল্য বিয়ে তাকে করবেনই।এভাবে নানান টানাপোড়েনের মধ্যে দিয়ে একদিন সমরেশ ঐ বিধবা মহিলাকে বিয়ে করলেন এবং বিয়ে করে আনার পর সমাজ থেকে বাদ দিলো আর তখনি সমরেশ ঘোষণা দিলো সে আর থাকবে না এই হিন্দু ধর্মে সে পুরাপরিবার নিয়ে মুসলিম হবে।সমরেশের কোন বাচ্চা ছিলো না আগের তিন বউয়ের তারাও স্বামির কথা মতো মুসলিম হলো।আসলে আগের দিনের মহিলারা বিয়ের পর স্বামী যা করবে তাই মেনে নিতেই। স্বামির ভুলকেও মেনে নিতেন।তাই স্বামির সাথে মুসলিম হয়ে গেলেন।
সমাজের কারণে পরিবারের কারণে সমরেশ স্বধর্ম ত্যাগ করে মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করলেন।
কয়েক বছর চার বউ নিয়ে সংসার করার পর কোন বউয়ের একটিও সন্তান হলো না তাই সমরেশ ঠিক করলেন বাচ্চার জন্য তাকে আবারও বিয়ে করতে হবে।এবার সে বিয়ের জন্য এক ভাটিয়ালি মহিলাকে পছন্দ করলো।ভাটিয়া বলতে আমাদের এলাকায় চর অঞ্চলের মানুষকে বোঝায়।
এরপর বিয়ে করলেন সেই মহিলাকে।এদিকে এতো বিয়ে করতে করতে এবং বাজে নেসার কারণে আস্তে আস্তে ধংস হয়ে যেতে লাগলো তার জমিজমা ও সংসারের সব কিছু।কারন হিসেবে সবাই আবিষ্কার করলো পাঁচ বউ মিলে কাজের লোকদের কে দিয়ে যে যার মতো ধন সম্পদ হাতিয়ে নিতো।ধান চাল চুরি করে বিক্রি করতো।কাজের লোকেরা চুরি করে সব হাতিয়ে নিতো। এবার পাঁচ নং বউয়ের ঘরে একে একে এলো দুই মেয়ে দুই ছেলে।মেয়েদেরকে বিয়ে দিলো এবং এক ছেলে সংসারের হাল ধরলো।এরপর সমরেশ গরীব হয়ে গেলো এবং দুর্বিষহ জীবন কাটাতে লাগলো এবং অসুস্থ হয়ে একদিন তিনি পরপারে চলে গেলো।
এরপর ছেলেদের জীবন যুদ্ধ শুরু হয়ে গেলো।বড়ো ছেলে বাবার সব সম্পদ চুরি করে করে এমনি অভ্যাস হয়ে গেছে যে সে এখন অভাবের কারণে মানুষের জিনিসপত্র চুরি করে থাকে।ছোট ছেলে খুব ভালো স্বাভাবের এবং পরাশুনায় বেশ পারদর্শী। আস্তে আস্তে পরিবারটি এতোই গরিব হয়ে গেছে যে সমরেশের সব ছোট বউ অবশেষে মানুষের বাড়িতে কাজ ও ভিক্ষা করতে বাধ্য হয়েছে।
আমরা কাজাও পিসির সাথে সমরেশের ছোট ছেলে পড়াশুনা করতো ও অলটাইম আমাদের বাড়িতে থাকতো।আমার কাকার সাথে খাওয়াদাওয়া করবাড়িতেই পড়াশোনা করতো কারণ আলোর ব্যাবস্থা ছিলো না।
অনাহারে থাকতো বেশি সময় তবুও না খেয়ে আছে তা স্বিকার করতো না।অনেক সততার সাথে জীবন যাপন করতেন। আমার দিদু খেতে দিতেন সব সময়।নিজের ছেলের মতোই ভালোবাসতো।দিদর কোন প্রয়োজন হলে লুৎফর কাকু কে বলতেন এবং সাথে সাথে তা করে দিতেন।এতোই সততার সাথে থাকতেন যে কল্পনার বাইরে।এভাবে চলতে চলতে পরাশুনা করা অবস্থায় লুৎফর কাকু বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন।
ছুটিতে আসলে আমাদের বাড়িতে এসে উঠতেন। চাকুরী পাওয়ার পর লুৎফর কাকুর মায়ের কষ্ট চলে যায় কিন্তুু সে সুখ বেশিদিন থাকে না।মারা যায় তার মা। লুৎফর কাকু ভীষণ ভেঙ্গে পরে এবং আমার দিদু তখন বলে আমি তোর মা। আমার দিদুকে কাকি বলে ডাকতো।এখন চাকুরী থেকে আমাদের বাড়িতে এসে উঠতো।বড়ো ভাই চুরি ডাকাতির সাথে জড়িত জন্য অনেক বোঝালো অনেক চেষ্টা করলো কিন্তুু কিছুতেই পারলো না ফেরাতে সেজন্য আমাদের বাড়িতেই ছুটি কাটাতো।
এসব আমার জন্মের আগের ঘটনা।মা,দিদুর কাছে গল্প শুনেছি লুতৎফর কাকুর ছোটবেলার তবে তারপর তার বিবাহিত জীবন ও এখন অবদি ওনার জীবনের ঘটে যাওয়া ঘটনা গুলে দেখেই আসছি।
লুৎফর কাকু ওয়ারেন্ট অফিসার ছিলেন। বেশ ভালোই চলছিলো দিনকাল। সুখেই ছিলো বেশ।লুতৎফর কাকুর বোনেরা বিয়ে ঠিক করেন।যেহেতু সবার বাধ্য ভাই ছিলো তাই বিয়েতে ইচ্ছে না থাকার পরেও বিয়ে করতে সন্মত হয় এবং বিয়ে করে ফেলেন।লুতৎফর কাকু বিয়ের পর চলে যায় কর্মসংস্থানে বউকে বাড়িতে রেখে যায়।
এদিকে বড়ো ভাইয়ের বউ মানে যে ভাই চোর তার বউ বিয়েটা মেনে নিতে পারে না কারণ এখন আর আগের মতো তেমন টাকা পয়সা পাবে না সেজন্য।লুতৎফর কাকুর বউকে নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু করে।আগে যেহেতু ফোন ছিলো না তেমন ভাবে একমাত্র চিঠি আদান প্রদানের মাধ্যম ছিলো চিঠি তাই মাঝে মাঝেই চিঠি দিয়ে বউয়ের খোঁজখবর নিতেন কিন্তুু চিঠি যেহেতু লুতৎফরে কাকুর বড়ো ভাইয়ের নামে আসতো তাই বেশি ভাগ চলে চিঠি গায়েব করে ফেলতো।দিতো না।এদিকে বউ চিঠি পাঠালে তা পোস্ট না করে বলতো পোস্ট করেছে।
(চলবে)
পোস্ট | বিবরণ |
---|---|
পোস্ট তৈরি | @shapladatta |
শ্রেণী | জেনারেল রাইটিং |
ডিভাইস | OppoA95 |
লোকেশন | বাংলাদেশ |
আমি হৈমন্তী দত্ত। আমার স্টিমিট আইডিরঃshapladatta. জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। শখঃবাগান করাও নিরবে গান শোনা,শপিং করা। ভালো লাগে নীল দিগন্তে কিংবা জোস্না স্নাত খোলা আকাশের নিচে বসে থাকতে।কেউ কটূক্তি করলে হাসি মুখে উড়িয়ে দেই গায়ে মাখি না।পিছু লোকে কিছু বলে এই কথাটি বিশ্বাস করি ও সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি।বিপদকে ও অসুস্থতার সাথে মোকাবেলা করার সাহস রাখি সহজে ভেঙ্গে পরি না। সবাইকে নিয়ে ভালো থাকার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি পর হিংসা আপন ক্ষয়। ধন্যবাদ ।