হ্যালো,
আমার বাংলা ব্লকবাসি বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই আশা করছি ভালো আছেন আমিও ভাল আছি আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো মজার একটি দুধ চুরির ঘটনা আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে ।
আমার দিদুর বাবার বাড়ি গাইবান্ধা জেলার কামার পাড়ার প্যারিধাম জমিদার বাড়ি।এর আগে এক পোস্টে আপনাদের সাথে ভাগ করে নিয়েছিলাম। দিদুর মূলত মামার বাড়ি এই জমিদার বাড়িটি তবে দিদুর মা দিদুকে জন্মদিতে গিয়ে মারা যাওয়ার কারণে মামার বাড়ি হয়ে ওঠে দিদুর বাবার বাড়ি।
আমরা দেখতাম দিদু মাঝে মাঝে তার বাবার বাড়িতে যেতেন আর গেলে তিন মাস,এক মাস,পনেরোদিন এরকম থাকতেন সেখানে।দিদুর মামারা সব ভারতে চলে গিয়েছিল অনেক আগে তবে দিদুর এক মামা থাকতেন নাম ওনার জহর সবাই জহর বাবু নামে ডাকতেন আড়ালে আর সামনে বাবু বলতেন । ওনার ছেলে মেয়ে বউ সবাই থাকতেন ভারতে ওনি একা এখানে থাকতেন এবং মাঝে মধ্যে ভারতে গিয়ে থাকতেন এবং গেলে তিন মাস কিংবা ছয় মাস করে থেকে আসতেন সেখানে।আর সেই পুরা সময়টা দিদু থাকতেন জমিদার বাড়িতে।
রান্নার জন্য বেতন ভুক্ত এক পান্ডা ছিলেন নাম কার্তিক। আমরা কার্তিক দাদু বলে ডাকতাম।একদমই বয়স কম ছিলো বিশ বছর হবে হয়তো বা।দিদুর সব ফরমায়েসী করতেন রান্না করা কাপড় কাঁচা সব কাজ করতেন। দিদু যখন তার বাবার বাড়িতে যেতেন তখন একা যেতেন না সাথে করে নিয়ে যেতেন আমার দিদিকে ও আমার পিশাস তিন দিদি ও এক দাদাকে সবাই ছোট ছিলো কেউ বা চতুর্থ শ্রেনীর কেউবা পঞ্চম, কেউ বা ষষ্ঠ শ্রেনীর। আমি বেশ ছোট ছিলাম তাই আমাকে ও আমার ভাইকে নিয়ে যেতেন না মাঝে মাঝে গিয়ে ঘুড়িয়ে আনতেন আমার বাবা কিংবা কাকা।
তো এতো গুলো বাচ্চা থাকে সেজন্য তাদের জন্য দুধ উঠানা করা ছিলো তিন লিটার করে সাথে বড়োরাও খেতেন বড়োরা বলতে আমার দিদু ও আমার পিসি ছিলেন তিনি তখন কলেজে পড়তেন গাইবান্ধা সরকারি কলেজে আর দিদুর সাথে যেতেন।সবাই দুধ খেতেন আর কেউ কম জ্বাল করা দুধ খেতেন না। যেহেতু এতোগুলা বাচ্চা থাকে দিদুর সাথে আর তাদের কে রাত্রির বেলা মাছ বেছে দেয়া কষ্টকর ছিলো জন্য দিদু বুদ্ধি করে রাত্রির বেলা বাচ্চাদের কে দুধ ভাত খাওয়াতেন। দুপুরের রান্না শেষে দুধ গুলো একটি পাতিলে করে বসিয়ে রাখতেন রান্না ঘরের চুলায়।মাটির ও লাকড়ির চুলা ছিলো।দুধ বসিয়ে রাখলে অল্প আঁচে দুধ গুলো খুব সুন্দর জ্বাল হতো ঘনো মিষ্টি ও দুধের সর পড়তো খেতে মজা হতো।
কিছুদিন থেকে দিদু লক্ষ্য করছিলো দুধ কম হচ্ছে বাচ্চাদের। প্রথম প্রথম কয়েকদিন ভেবে নিয়েছে হয়তো বেশি জ্বাল করার ফলে শুখিয়ে গেছে।প্রতিনিয়ত এমন হচ্ছে দেখে রান্নার ছেলেটিকে বলেছে এই কার্তিক দুধ কি কম নিচ্ছিস উঠানার। কার্তিক জড়োসড়ো হয়ে বলল্লো না তো দিদি দুধ সঠিক মাপেই আনছি। তখন না কি দিদু বলেছেন তাহলে দুধ কম হচ্ছে যে কার্তিক বল্লো জানি না দিদি তবে কার্তিক মনে মনে হয়তো লজ্জিত হয়েছে।
এরকম চলতে চলতে দিদু ভাবলো সাপ এসে দুধ খেয়ে যাচ্ছে না তো কার্তিক দাদুকে ডেকে বল্লো কার্তিক একটু খেয়াল রাখিস তো এই বাড়িতে তো অনেক সাপ থাকে আবার সাপ এসে দুধ খেয়ে যাচ্ছে না তো।কার্তিক মাথা নেড়ে সন্মানিত দিয়েছেন।
জমিদার বাড়িটি যেহেতু মানুষ শুন্য এবং অনেক গুলো ঘর পরিত্যক্ত এবং তালাবদ্ধ তাই সাপ ও বাঁদুরের আনাগোনা অনেক।রান্না ঘরটি একটু দূরে ছিলো এবং রান্না করার চুলার সাথেই একটি জানালা ছিলো।একদিন রান্না খাওয়া শেষ করে যখন দুপুর বেলা সবাই শুয়ে পড়েছে তখন কার্তিক দাদু কেন জানি রান্না ঘরে গেছে আর তখন দরজা খোলার শব্দ শুনে রান্না ঘরের পিছনে দৌড় দেয়ার শব্দ পেয়েছে এবং রান্না ঘর খুলতেই কার্তিক দাদুর চোখ ছানাবড়া হয়েছে এবং দিদি দিদি বলে চিৎকার করে দিদুকে ডেকেছে। দিদু গিয়ে দেখতে পায় জানালার সাইডে একটু ফুটা ছিলো আর সেই ফুটা দিয়ে একটি পাটকাঠি ঢুকিয়ে দিয়ে দুধের পাতিল থেকে দুধ টেনে খেয়েছে 😀।এদিলে সাপের দোষ হয়েছিল। এগুলো আসলে কিছু দুষ্ট ছেলের কাজ ছিলো।ওরাই প্রতিনিয়ত দুধ এভাবে খাচ্ছিল পাটকাঠির সাহায্যে।
এই ঘটনা দেখার পর তো রাগবে না হাসবে তা খুঁজে পাচ্ছিল না।তবে কোন ছেলে দুধ খেয়েছে তা আর ধরতে পারে নি।
তবে ঘটনাটা কিন্তুু মজাদার ছিলো। আমার কাছে বেশ লেগেছে। আপনাদের কাছে কেমন লাগলো তা অবশ্যই জানাতে ভুলবেন না।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি আবারও দেখা হবে অন্য কোন পোস্টের মাধ্যমে সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন।
টাটা
পোস্ট | বিবরণ |
---|---|
পোস্ট তৈরি | @shapladatta |
শ্রেণী | জেনারেল রাইটিং |
ডিভাইস | OppoA95 |
লোকেশন | বাংলাদেশ |
আমি হৈমন্তী দত্ত। আমার স্টিমিট আইডিরঃshapladatta. জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। শখঃবাগান করাও নিরবে গান শোনা,শপিং করা। ভালো লাগে নীল দিগন্তে কিংবা জোস্না স্নাত খোলা আকাশের নিচে বসে থাকতে।কেউ কটূক্তি করলে হাসি মুখে উড়িয়ে দেই গায়ে মাখি না।পিছু লোকে কিছু বলে এই কথাটি বিশ্বাস করি ও সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি।বিপদকে ও অসুস্থতার সাথে মোকাবেলা করার সাহস রাখি সহজে ভেঙ্গে পরি না। সবাইকে নিয়ে ভালো থাকার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি পর হিংসা আপন ক্ষয়। ধন্যবাদ ।
ব্যাপার টা সত্যি বেশ হাস্যকর ছিল কিন্তু আপু। এমন ঘটনা আগে কখনও শুনিনি। সত্যি বেশ ভালো লেগেছে। তবে একটা বিষয় বলি সাপ কিন্তু দুধ কখনোই খাই না। কারণ সাপ দুধ খেয়ে হজম করতে পারে না। এটা আমাদের একটা ভুল ধারণা।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হ্যাঁ এটা ভুল ধারনা তবে গ্রামগঞ্জে এখনো এটা বিশ্বাস যে সাপ দুধ খায় বিশেষ করে গাভীর বাট থেকে না কি দুধ খেয়ে যায় রাত্রির বেলা চুপিচুপি। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
প্রথমে ভেবেছিলাম কার্তিক নামের লোকটাই আবার দুধ খাচ্ছে না তো কিংবা সাপ।শেষের ঘটনাটা পড়ে খুবই হাসি পাচ্ছিল। কিছু দুষ্টু ছেলে ফুটো দিয়ে পাটকাঠি ঢুকিয়ে দুধ খাচ্ছিল ব্যাপারটা বেশ মজার। ধন্যবাদ আপু মজার একটি গল্প শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ঠিক বলেছেন প্রথমে তাই মনে হয় যে কার্তিকই হয়তো দুধ খাচ্ছে কিন্তু আসলেই চুরির ঘটনাটি অনেক মজার। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit