তেঁতুল পাড়ার স্মৃতিচারণ ❤️

in hive-129948 •  4 months ago 

হ্যালো

আমার বাংলা ব্লগ বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই আশা করছি ভালো আছেন। আমিও সৃষ্টি কর্তার কৃপায় ভালো আছি।আমি শাপলা দত্ত, বাংলাদেশ থেকে আজ আপনাদের মাঝে শেয়ার করবো আজকে তেঁতুল পারার মজার একটি ঘটনা

IMG_20240511_214250.jpg

আমি তখন ক্লাস এইটে কি নাইনে পড়ি।আমাদের পাশের বাড়ির এক বৌদিদের বাড়িতে বিশাল বড়ো তেঁতুল গাছ ছিলো।ছোট বেলা থেকেই ঐ তেঁতুল গাছের তেঁতুল খেতাম।লবন, ও শুকনা মরিচ দিয়ে কাঁচা তেঁতুল চটকিয়ে খেতাম ভীষণ মজা লাগতো।আজ কথাটা খুব মনে পড়ে গেলো কারণ আজ কিছু তেঁতুল কিনেছি আর সে গুলো দেখেই পুরানা সেই কথাটি মনে পড়ে গেলো।
তো বৌদির সাথে আমাদের খুব ভাব ছিলো।বৌদি তেঁতুল দিতো খেতে আর আমরা তেঁতুল খেতাম আর গল্প করতাম।

IMG_20240511_214302.jpg

তেঁতুল গাছটি অনেকটা বড়ো হওয়াতে পাকা পাকা লম্বা তেঁতুল গুলো গাছে না উঠলে পাড়া যেত না।গ্রামের এক জেঠাতো ভাই ছিলো সেও তেঁতুল খাওয়ার পটু সে বল্লো আমি তেঁতুল গাছে উঠে পাকা পাকা তেঁতুল পাড়বো তোরা কুড়াবি।
যে কথা সে কাজ গাছে উঠলো গাছে ওঠার জন্য আমার এক কাকার বাড়ির প্রাচীর ব্যাবহার করলো।তেঁতুল গাছটি ছিলো ঐ কাকাদের একদমই রান্না ঘরের উপরে।তেঁতুল গাছের নিচে রান্না ঘর এবং সে রান্না ঘরের আবার সিমেন্টের টিন।আমরা তখন বুঝতাম না কোনগুলো সিমেন্টের টিন এবং কোন গুলো শুধুই টিন।তো ওনাদের বাড়িতে কেউ থাকতো না দিনের বেলায় কারণ কাকি জব করতেন।
প্রাইমারিতে আর কাকা জব করতেন কমিউনিটি হেল্থ ক্লিনিকে।এক মাত্র ছোট ছেলেকে কাকি মা সঙ্গে করে স্কুলে নিয়ে যান।বাড়িতে থাকলে হয়তো সাবধান করতেন যে সিমেন্টের টিন আছে সাবধানে যাতে তেঁতুল পাড়ি আমরা।
তো তেঁতুল পাড়া শেষ হয়ে গেছে। কিছু তেঁতুল গাছের নিচে ফেলেছে আবার কিছু তেঁতুল ওর সঙ্গে রাখা ব্যাগে ভরেছে।
আমরা নিচ থেকে তারা দিচ্ছিলাম যে তেঁতুল আর পারতে হবে না নিচে চলে আসতে। কারণ অনেক তেঁতুল হয়েছে পাড়া।
গাছ থেকে নিচে নামার সময় ঘটলো বিপত্তি।গাছ থেকে দেখতে পেরেছে তেঁতুল গাছের নিচের রান্না ঘরের ছাপড়ায় অনেক তেঁতুল পড়ে আছে।ও গাছের ডাল থেকে দিয়েছে রান্না ঘরের চালের উপরে লাফ।অমনি রান্না ঘরের চাল ভেঙ্গে পা ঢুকে গেছে ভীতরে। ভাগ্যিস পায়ের কোন ক্ষতি হয়নি।এবার সে বড়ো বড়ো চোখ করে আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে আর বলছে কাজ সারছে আজ কপালে দুঃখ আছে।আমরা ওকে বল্লাম তারাতাড়ি চলে আয় নইলে খবর আছে।ও তারাতাড়ি নিচে নেমে আসলো। এবার তেঁতুল খাওয়ার থেকে ভয় কাজ করছে বেশি যে কাকি যদি দেখে আর তাহলো আমাদের খবর আছে।তবে আমাদের একটাই সাহস ছিলো আমরা ছারা আর কেউ জানে না এবং তেঁতুল পাড়তেও দেখেনি কেউ।আমাদের আর সবাই মিলে আনন্দ করে তেঁতুল খাওয়া হলো না।সবাই তেঁতুল ভাগ করে নিয়ে চুপচাপ বাড়িতে চলে আসলাম।
আর ওদিকে গেলাম না দুদিন। তবে বৌদির বাড়ি ও ঐ কাকিমার বাড়ি একদমই পাশাপাশি হওয়ার কারণে ওনাদের বাড়ির সব কথাই শুনতে পারেন।
ঘটনার পরদিন সকালে যখন কাকিমা রান্না ঘরে ঢুকেছে তখনি খেয়াল করেছে যে আকাশ দেখা যাচ্ছে রান্না ঘর থেকে🙂।অমনি বাড়িতে না কি চিৎকার চেঁচামেচি করেছে কি ভাবে এমন হলো। নিশ্চয়ই গাছের ডাল ভেঙ্গে পড়ে ছিলো। এত্তো বড়ো গাছ আমার ঘরের উপরে রেখেছে। ঝড়বৃষ্টিতে কবে জানি আমার পুরাঘরে উপরে পড়বে।এসব বলছিলো।আমাদের বৌদি শুনছিলো কিন্তুু কিছু বলেনি।কারণ আসল নাটের গুরু তো আমরা।
আজ অবদি গোপন কথাটি গোপনে রয়ে গেছে।আমরা কয়েকজন ছারা কেউ জানে না ঘটনাটি।
দু এক বছর আগে তেঁতুল গাছটি কেটে ফেলেছে। বাড়িতে গেলেই মনে পড়ে সেই ঘটনাটি।তেঁতুল দেখলেও মনে পড়ে সেই ঘটনাটি।আজকে এই তেঁতুল গুলো দেখে মনে পড়ে গেলো কথাটি।তাই ভাবলাম আপনাদের সাথে ভাগ করে নেই ঘটনাটি ভালো লাগবে।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি।আবারও দেখা হবে অন্যকোন পোস্টের মাধ্যমে।সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন। নিরাপদে থাকুন।

টাটা

পোস্টবিবরণ
পোস্ট তৈরি@shapladatta
শ্রেণীজেনারেল রাইটিং
ডিভাইসOppoA95
লোকেশনবাংলাদেশ

photo_2021-06-30_13-14-56.jpg

IMG_20230826_182241.jpg

আমি হৈমন্তী দত্ত। আমার স্টিমিট আইডিরঃshapladatta. জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। শখঃবাগান করাও নিরবে গান শোনা,শপিং করা। ভালো লাগে নীল দিগন্তে কিংবা জোস্না স্নাত খোলা আকাশের নিচে বসে থাকতে।কেউ কটূক্তি করলে হাসি মুখে উড়িয়ে দেই গায়ে মাখি না।পিছু লোকে কিছু বলে এই কথাটি বিশ্বাস করি ও সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি।বিপদকে ও অসুস্থতার সাথে মোকাবেলা করার সাহস রাখি সহজে ভেঙ্গে পরি না। সবাইকে নিয়ে ভালো থাকার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি পর হিংসা আপন ক্ষয়। ধন্যবাদ ।

A5tMjLhTTnj4UJ3Q17DFR9PmiB5HnomwsPZ1BrfGqKbjddgXFQSs49C4STfzSVsuC3FFbePnB7C4GwVRpxUB36KEVxnuiA7vu67jQLLSEq12SJV1etMVkHVQBGVm1AfT2S916muAvY3e7MD1QYJxHDFjsxQDqXN3pTeN2wYBz7e62LRaU5P1fzAajXC55fSNAVZp1Z3Jsjpc4.gif



IMG_20240510_205312.jpg

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আসলে ছোটবেলায় এরকম কত দুষ্টামি করেছি। সেটা সত্যিই আপনার পোস্ট পড়ে মনে পড়ে গেল। আমিও অনেক তেঁতুল পেরে খেয়েছি সেই সময় অনেক বড় বড় তেতুল গাছ দেখতে পেতাম । যেটা এখন দেখা যায় না তেঁতুল পেকে থাকতো যেগুলো দেখে লোভ সামলাতে পারতাম না। আসলে সিমেন্টের টিনের উপর লাফ দিয়েছে ভাগ্যিস সেই সময় পায়ের কোন ক্ষতি হয়নি মজা লাগলো গল্পটি পড়ে।

ঠিক ব'লেছেন ভাইয়া পাঁকা তেঁতুল দেখলে লোভ সামলানো যায় না।এখন আর বড়ো তেঁতুল গাছ চোখে পড়ে না।

দিদি আপনি আজকে আমাদের মাঝে দাঁরন একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। আসলে দিদি তেতুলের কথা শুনলেই যেন জিভে জল চলে আসে। সেই সাথে আপনার আজকে তেতুল পাড়ার স্মৃতিচারণ পড়তে পেরে বেশ ভালো লাগলো। আর আপনার জেঠু তো ভাই গাছ থেকে পাকা পাকা তেতুল পেড়ে দিতো। গাছ থেকে পাকা তেঁতুল খেতে খুবই ভালো লাগে। পোস্টটি দারুন ছিল ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।

তেঁতুলের কথা শুনলে আমারও জিভে জল চলে আসে।ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

আহা আপনার তেঁতুলগুলো দেখে তো মুখে পানি চলে আসলো। আমার খুব ভালোভাবে মনে আছে আমাদের বাড়ির সামনে একটি বাঁশ ঝাঁড়ের মধ্যে বড় তেঁতুল গাছ ছিল আর আমরা সেই বাঁশগুলো ঝাঁকিয়ে-ঝাঁকিয়ে তেঁতুল পারতাম। এখন সেই গাছটি আর নেই।খুব মনে পড়ল সেই সময়ের কথা।অসংখ্য ধন্যবাদ আপু তেঁতুল পাড়ার স্মৃতিচারণ শেয়ার করার জন্য।

আপার বাড়ির সামনে বাঁশ ঝাড়ের মধ্যে বড় তেঁতুল গাছ ছিলো আর বাঁশ ঝাঁকিয়ে ঝাঁকিয়ে তেঁতুল পাড়তেন জেনে বেশ ভালো লাগলো।ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

তেতুল গাছ থেকে একেবারে চালের উপর এবং চাল গেল ভেঙে। আপনাদের কপাল টা ভালো ছিল সেজন্য হয়তো সেরকম কিছু হয়নি। কিন্তু আফসোস তেতুল গাছটা আর নেই। ছোটবেলায় এইরকম তেতুল পাড়ার স্মৃতি আমারও আছে। আপনার টা পড়ে বেশ ভালো লাগল আপু।

অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

রান্নাঘর দিয়ে আকাশ দেখা যাবেই তো দিদি কারণ তেঁতুল চুরি করতে গিয়ে তো মাটির টিন টাই ভেঙে ফেলা হয়েছে। হা হা হা... 😂😂🤭🤭 তবে সেই সময় যে তেঁতুল গাছ থেকে লাফ দিয়ে চালের উপর পড়েছিল, তার যে কোনো ক্ষতি হয়নি, এটাই বড় কথা। যদিও এই ধরনের ঘটনা গ্রামাঞ্চলে জানাজানি হয়ে যায়। আপনাদের ব্যাপারটা কেন জানাজানি হলো না বুঝলাম না।

হাহাহাহা জানাজানি হয়নি কারণ কেউ দেখেনি আমরা যে চারজন দেখেছি বলতে গেলে চারজনেই অপরাধী 🙂🙂

হি হি হি.. 😁😁 সবাই অপরাধী হওয়ার কারণে বেঁচে গেছেন দিদি এই যাত্রায়।

প্রথমে তো তেঁতুলের নাম শুনেই জিভে জল চলে আসলো। খুবই মজার কিছু অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আপু।সত্যি ছোটবেলায় এ ধরনের ঘটনা আমাদের সকলের সাথে ঘটে থাকে। ভীষণ মজা পেলাম তেঁতুল পারার গল্প পড়ে। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

তেতঁলের নাম শুনলে আমারও জিভে জল আসে আপু।ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।