💕 " দুইশত টাকাতে ভালোবাসা "

in hive-129948 •  3 months ago 

হ্যালো বন্ধুরা,

মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার প্রিয়"আমার বাংলা ব্লগ"এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগন,কেমন আছেন সবাই?আশা করি সবাই ভাল আছেন।আমিও আলহামদুলিল্লাহ্‌ আল্লাহ্‌র অশেষ রহমতে বেশ ভাল আছি।

আমি @shimulakter"আমার বাংলা ব্লগ"এর আমি একজন নিয়মিত ইউজার।আমি ঢাকা থেকে আপনাদের মাঝে যুক্ত আছি।আমি প্রতিনিয়ত নানা বিষয়ের উপর পোস্ট শেয়ার করে থাকি।যদিও ব্যস্ত সময় পার করছি।তারপরেও আপনাদের মাঝে এসে নিজের অনুভুতি গুলো শেয়ার না করতে পারলে ভালো লাগে না।তাই আজ একটি জেনারেল রাইটিং পোস্ট শেয়ার করবো বলে এলাম।আশাকরি সবাই সঙ্গেই থাকবেন।

দুইশত টাকাতে ভালোবাসাঃ


CollageMaker_20241020153048662.jpg

বন্ধুরা,আজ আমি আপনাদের মাঝে একটি জেনারেল রাইটিং পোস্ট শেয়ার করবো বলে এলাম।আপনারা জানেন আমি প্রতিনিয়ত ভিন্ন ভিন্ন পোস্ট শেয়ার করে থাকি।একই রকমের পোস্ট সব সময় শেয়ার করলে ভালো লাগে না।তাই ভিন্ন ভিন্ন পোস্ট আমি আপনাদের মাঝে শেয়ার করি।আজ ভাবলাম একটি জেনারেল রাইটিং পোস্ট শেয়ার করি।কেননা আমাদের জীবনে প্রতিনিয়ত নানান রকমের অভিজ্ঞতা ও শিক্ষা পাই আমরা জীবন থেকে।সেই রকম কিছু অনুভূতি আমি সব সময় শেয়ার করে থাকি।আজ ভাবলাম জীবন থেকে নেয়া সেই রকম একটি অভিজ্ঞতা আজ আপনাদের মাঝে শেয়ার করি।আশাকরি আমার আজকের অনুভূতিগুলো আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।

20241017_202156.jpg

আপনারা অনেকেই জানেন আমার আব্বু ধানমণ্ডির একটি হাসপাতালে ভর্তি আছেন।আমি প্রতিদিনই হাসপাতালে যাই।এইতো সেদিনের কথা।আমি আব্বুকে দেখে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে রিকশা নেই।রিকশা রাইফেলস স্কয়ারের পথে ঢুকতে স্টার কাবাব রেস্টুরেন্ট থেকে আমি জ্যামের মধ্যে বেশকিছু সময় বসে ছিলাম।জ্যাম ছেড়ে দেবে ঠিক তার কিছু আগে একজন মাঝ বয়সী মহিলা হাতে করে বেশকিছু জিনিস বিক্রি করার উদ্দেশ্যে রাস্তার সব গাড়ি ও রিকশার কাছে আসছিল।আমি তাকে জিজ্ঞেস করাতে সে আমার কাছে এসে কিছু বলবে ঠিক এমন সময় জ্যাম ছেড়ে গেলো। আমি ভাবলাম হয়তো মহিলা হয়তো থেমে গেছে।কিন্তু আমি শুনতে পেলাম মা মা বলতে বলতে মহিলা এতো জ্যাম ঢেলে আমার রিকশার কাছে আসার চেষ্টা করছেন।

আমি তখন রিকশাওয়ালা মামার কাছে জানতে চাইলাম উনি কি আসছেন নাকি? তিনি বললেন,মহিলা আসছেন।আমি এতো পরিমান জ্যাম দেখে তাকে আসতে আর বারন করলাম।কারন আপনারা জানেন জ্যাম ছাড়ার সাথে সাথে বাস,রিকশা,গাড়ি সব কিভাবে ছুটে আসে।আমার খুব ভয় লাগছিল।কখন না উনি এক্সিডেন্ট করে বসে।কিন্তু তিনি ঠিক আমার রিকশার পেছন পেছন আসছিল।তখন আমি রিকশাওয়ালা মামাকে বললাম রিকশাটা এক পাশে থামানোর জন্য। তিনি ঠিক আমার রিকশার সামনে এসে দাঁড়াল। খুব হাঁপাচ্ছিলেন তিনি।আমি তাকে বললাম,আপনি এতো রিস্ক নিয়ে কেন পেছন পেছন এলেন??তিনি বললেন,অন্য কেউ হলে দাঁড়াতো না।আমাকে বলল,সবাই তো এক না।আমি মা তোমাকে দেখেই বুঝেছিলাম তুমি দাঁড়াবে।আরো বলল,তিনি কিডনির পেসেন্ট। শুধুমাত্র নিজের চিকিৎসার জন্য তিনি পথে ঘুরে ঘুরে এসব জিনিস বিক্রি করেন।আমি তাকে দুইশত টাকা দিলাম।কিন্তু তিনি এভাবে টাকা নেবেন না।তাই বাধ্য হয়ে আমি ক্লে নিলাম।আর উনি আমাকে দুটো চিরুনি দিয়ে দুইশত টাকা নিলেন।এই সময়ে এসে এমন মানুষ পাওয়া ভীষণ কষ্টের।

এখন যে যেভাবে পারে হাত পেতে টাকা চায়।কাজ করে নিজের অবস্থার পরিবর্তন খুব কম মানুষ ই করে।এ সময়ে এসে এমন মানুষের দেখা পেয়ে খুবই ভালো লাগা কাজ করলো আমার।উনি খুব খুশী হলেন আমার প্রতি।আল্লাহ উনাকে সুস্থতা দান করুন।আব্বুর জন্য হাসপাতালে গিয়ে প্রতিনিয়ত কিডনির পেসেন্টদের কষ্ট খুব কাছ থেকে দেখতে পাচ্ছি। আল্লাহর কাছে চাইবো উনার কষ্ট কমিয়ে দিয়ে উনাকে সুস্থতা দান করবেন,আমিন।

দুইশত টাকার ভালোবাসার অনুভূতি আজ আমি আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম।আশাকরি আমার শেয়ার করা অনুভূতিগুলো আপনাদের মাঝে ভালো লাগবে।আজ আর নয়।আবার কোন নতুন ব্লগ নিয়ে হাজির হব আপনাদের মাঝে।সবাই সুস্থ থাকবেন,ভালো থাকবেন।

ধন্যবাদ সবাইকে

@shimulakter

পোস্ট বিবরন


শ্রেণীজেনারেল রাইটিং
ক্যামেরাSamsungA20
পোস্ট তৈরি@shimulakter
লোকেশনঢাকা

আমার পরিচয়

96PguSMiZiG2aJ3NLqePiD2iuR7rncmaN6uroXtVxGaAG1DAYEG3NCh1cGMczkPKfnE9jjtVxP35CYEZU6ZxZFFTSivQa1eh1ot6ZzwCmG...AwoqceF6TSWE4Nav1o7HAitS9PezzvoZEzSUMtfS3J217L9uHsjpx3ms5GbxwEGUAuTWUnSdiYDs2iCoK7nkvuuSpyiN2X6By4EGTxBFxVhS7R8KCXs5ErEmc.jpeg

আমি শিমুল আক্তার,আমি বাংলাদেশী।বাংলাদেশ ঢাকা থেকে আমি আপনাদের সাথে যুক্ত আছি।আমি এম এস সি (জিওগ্রাফি) কমপ্লিট করি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।আমি বিবাহিতা।আমি একজন গৃহিণী।আমি একজন স্বাধীনচেতা মানুষ।ভালোবাসি বই পড়তে,নানা রকমের রান্না করতে,আর সবাইকে নতুন নতুন রান্না করে খাওয়াতে ভীষণ ভালোবাসি।ফটোগ্রাফি করতে আমি ভীষণ পছন্দ করি।বাংলায় লিখতে আর বলতে পারার মধ্যে অনেক বেশী আনন্দ খুঁজে পাই।নিজের মধ্যে থাকা সৃজনশীলতাকে সব সময় প্রকাশ করতে পছন্দ করি।এই বাংলার মাটিতে জন্মগ্রহন করেছি বলে নিজেকে অনেক ধন্য মনে করি।

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRPmXA6ginRbBsbKGY2VtVnXzUUJNCrTg8j8t3NuJGgf2KbYWVhU7Jrqyce9L83...PNYeU1ZG126PQwwYwsEMXRPSgTDchsmsthTuCRnsXyUEgYAxXYHvD1KkAgZAv8CLWHJPSdQZmsDDyKM5Ubj9B5mKCqzYYqKNAPfqtYj6eigy9Evp46XYyTvpcv.png

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRQ2cJZBsiyuMbbQNbt2XY3bPDP3soCEvgarH2Jwxn58HCSwZqnJoPtfVfPHher...f1Dq76pKECV4KekfqyZj18qfc4ziQW3kRYsgW1PMLc47emsksqLgif1cmhk34QEfazWiZ3aAFVCXuC6ZFp39Mc57NeUUL4DNuymUk8Cq7TKhE9BkS9WxCKgszV.gif

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRQ1VkjUz8HgY93iu9LmdTomBnX3wHwivw1EntvGjs3kaesGG5gEQD45h4WqnW4...kDi15WZZPbANXygF3SVKwZdVkuwRf1htbPVitjLviFeQQ5eKMhH7ZDZC5Zc1bZgHsniavKZa7QvEZdSVX1rP9UhKEvgek6idjzh2X6gci8Zajbp5FqmxK9TKBC.png

HNWT6DgoBc14riaEeLCzGYopkqYBKxpGKqfNWfgr368M9U7RRG2y2M9YYSM48N5nbcXLb7PqdkYJ9oR9FoA2unvh83eqRV77XS1odgZghsEq4QSkRqvT13kzKTc.jpeg

mCz6aUXpYgcE9hndDxJeFHNCvijWNENnxm5KqcEUM3o1siTRM9RiHCBoSjHNuiJNg7JaN1YHkdVF2iL5yXmTwhgdJbBWGqp5o8DReVS38H...Ngs8B1ZxQ71gjBxiqfcH84Q1vPFSBFZmyW1T5WYxF2TL2KthznYPi6aVayXiVmeqrvyCqCmnquJrNciFufjx91GZCbFjkMM65HFSSmzsVSgn2g7Gro7uZrMtgv.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

আপনার আব্বু অসুস্থ শুনে অনেক বেশি খারাপ লাগলো আপু। দোয়া করি আংকেল তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাবে। এ ধরনের জিনিস কিনতে আমারও অনেক বেশি ভালো লাগে। কয়েকদিন আগে আমিও দারাজ বেশ কিছু ক্লে আর অন্যান্য জিনিস অর্ডার করেছি। হয়তো সেগুলো কালকের মধ্যে পেয়ে যাব।

মতামত প্রকাশ করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।

আমার এরম অভিজ্ঞতা আছে৷ সিঙ্গাপুরে দেখেছি বৃদ্ধ মানুষরা ভিক্ষা করার বদলে টিস্যু পেপার বিক্রি করত। যা সম্মানের। আমি সব সময়ই ওনাদের থেকেই টিস্যু নিতাম৷ এনারা হাত পাততে পারেন না৷ কিন্তু টাকা তো প্রয়োজন। কি করা যাবে৷ জিনিস কিনে পাশে দাঁড়ালেন এটাই বড় কথা। আপনার বাবা দ্রুত সেরে উঠুন এই কামনা করি।

ধন্যবাদ দিদি মতামত শেয়ার করার জন্য।

এমন মানুষের দেখা প্রায়ই পাওয়া যায় পথে। সত্যি বলতে এদের দেখলে বেশ খারাপ লাগে। তবে ঐ মহিলা যে শুধু টাকা নিতে অস্বীকার করেছে এটা দেখে ভালো লাগল। মানুষের জীবন খুবই আশ্চর্যের। যেটা বোঝার ক্ষমতা এই মানুষেরই নেই।

মন্তব্য তুলে ধরার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।

ওই মহিলার কথাটা শুনে সত্যিই খুব খারাপ লাগলো। আমারে আমার মত কিডনির পেশেন্ট হয়েও তিনি এভাবে রাস্তায় হেঁটে জিনিসপত্র বিক্রি করছেন। তবুও তিনি ভিক্ষা করছেন না এটাই অনেক। আপনি তার কাছ থেকে ২০০ টাকা দিয়ে জিনিসগুলো কিনেছেন। এরকম মানুষদের থেকে প্রয়োজন না হলেও জিনিসপত্র কেনা উচিত। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটা পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।