😴 " ছেলেকে কথা দিয়ে বিপদে পরে গেলাম "

in hive-129948 •  2 days ago 

হ্যালো বন্ধুরা,

মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার প্রিয়"আমার বাংলা ব্লগ"এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগন,কেমন আছেন সবাই?আশা করি সবাই ভাল আছেন।আমিও আলহামদুলিল্লাহ্‌ আল্লাহ্‌র অশেষ রহমতে বেশ ভালো আছি।

আমি @shimulakter,"আমার বাংলা ব্লগ"এর আমি একজন নিয়মিত ইউজার।আমি ঢাকা থেকে আপনাদের মাঝে যুক্ত আছি।আমি প্রতিনিয়ত নতুন নতুন বিষয় নিয়ে ব্লগ শেয়ার করে থাকি।আমি বিশ্বাস করি আমার ব্লগ আপনাদের কাছে ভালো লাগে।আমি আমার প্রতিদিনের নানা রকম কর্মকান্ড থেকে কিছু কিছু বিষয় আপনাদের মাঝে শেয়ার করে থাকি।আজ ও এসেছি এমন একটি বিষয় আপনাদের মাঝে তুলে ধরতে।আশাকরি সঙ্গেই থাকবেন।

ছেলেকে কথা দিয়ে বিপদে পরে গেলামঃ


20241231_173045.jpg

বন্ধুরা,আজ নতুন একটি বিষয় নিয়ে পোস্ট শেয়ার করতে চলে এলাম।আজকের বিষয়টি সম্বন্ধে আপনারা ইতিমধ্যে বুঝতে পেরেছেন টাইটেল দেখে।আপনারা হয়তো ভাবছেন,আমি কথা দিয়ে কি এমন বিপদে পরে গিয়েছিলাম।আসলে এই বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করে আপনাদের মাঝে আজ তুলে ধরতে এসেছি।মানুষ চলার পথে বিপদে পরেই।কিন্তু কথা দিয়ে ও যে বিপদে পরতে হয় তাই আজ শেয়ার করবো বন্ধুরা।

20241231_173045.jpg

আমার আব্বু আমাদেরকে রেখে না ফেরার দেশে চলে গিয়েছেন তা আপনারা সবাই জানেন।গত বছরের অক্টোবর মাসের ২৩ তারিখে আব্বু মারা গিয়েছেন।আব্বু মারা যাওয়ার পর অনেকটা ই ভেঙ্গে পরেছিলাম আমি।পরিবারের উপর এতোটা দুঃখের ছায়া পরে গিয়েছিল তা আর কি বলবো।যার বাবা নেই সেই কষ্ট একমাত্র সেই ই বুঝবে।সেই সময় আমি প্রায় অনেকদিন আমার বাবার বাসায় ছিলাম।আমার মায়ের পাশে ছিলাম প্রায় ১৮ থেকে ২০ দিন।অর্থাৎ আমি বাসায় যখন যাই তখন ছেলের ফাইনাল এক্সাম শুরু হতে মাত্র ১৫ দিনের মতো ছিল।

20241231_173033.jpg

ছেলের ফাইনাল এক্সাম শুরু হওয়ার জন্য আমি বাসায় চলে গিয়েছিলাম।আমার ছেলের লেখাপড়ার চেয়ে খেলাধুলার প্রতি ভীষন ঝোঁক তা কিন্তু প্রায় সময় আমি আপনাদের মাঝে শেয়ার করে থাকি।ফুটবল তার ভীষণ পছন্দের খেলা।আমি যখন বাসায় যাই তখন যেনো আমার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পরলো।কারন এতোদিনের পড়া গুলো ম্যানেজ করা খুব বেশী কষ্টের।আমি ওর ক্লাস টিচারকে যদিও সব জানিয়েছিলাম।এরপর আমি বাসায় এসে যতটুকু পেরেছি এ,ওর কাছ থেকে নোট নিয়েছি।আর বাকি গুলো ইউ টিউব থেকে সবকিছু খাতায় নোট করে দিয়েছি।আমার ছেলে ইংলিশ ভার্সনের চতুর্থ শ্রেনীর একজন ছাত্র।

এতো বড় সিলেবাস শেষ করা এতো কম সময়ে সম্ভব নয়।এই বিষয়টি আমি বেশ বুঝতে পারছি। তাই কম সময়ে নিজেই শর্ট সিলেবাস করে সব সাবজেক্টের নোট আমি করে দিয়েছিলাম।কিন্তু চিন্তায় ছিলাম এতোটুকুও এই শর্ট সময়ে শেষ করতে পারবে কিনা।ওকে নিয়ে সত্যি ই ভীষণ চিন্তার মধ্যে ই ছিলাম।তাই বুদ্ধি করলাম সময় যেহেতু কম এই কম সময়ে কোন একটা বুদ্ধি করে এক্সামের শর্ট সিলেবাস শেষ করা যায় কিনা।ছেলে অনেক আগে থেকেই বলছিলো সাইকেল কেনার কথা।আমি বলেছিলাম আগে আর একটু বড় হও।ক্লাস সেভেন,এইটে উঠো তখন সাইকেল কেনা হবে।ফাইনাল এক্সামের আগে ওর এই পছন্দের বিষয়টি আমার মনে পরে গেলো।তখন ভাবলাম পছন্দের এই বিষয়টিকে নিয়েই এক্সামের ভালো ফলাফল করানো সম্ভব। কারন প্রতিটি মানুষ ই তার পছন্দের জিনিস গুলোর ব্যাপারে ভীষণ অ্যাক্টিভ থাকার চেষ্টা করে। যদিও সে বয়সে ছোট, তবুও পছন্দের ব্যাপার গুলো সব বয়সের জন্য এক ই থাকে।

তাই আর চিন্তা না করে ছেলেকে বললাম তুমি এক্সামের সিলেবাস এই ১৫ দিনে শেষ করে যদি ভালো ফলাফল করে ক্লাস ফাইভে উঠো,ঠিক তখন ই আমি তোমার পছন্দের একটি সাইকেল কিনে দিব।ছেলে তখন বলল সত্যি?? আমি বললাম হে সত্যি।কারন ছেলে জানে আমি কথা দিলে কথা রাখি।আর এই বিষয়টি ও মনে প্রানে বিশ্বাস ও করে যে ওর মামনি কথা দিলে কথা রাখবে।তবে আমি বলেছি অবশ্যই রেজাল্ট দেখার পর।কি আর বলবো বন্ধুরা,এতো কম সময়ে পড়ে ও যে এতো ভালো রেজাল্ট করবে এটা আমি ভাবতেই পারিনি।ছেলে শুধু ভালো ই নয়।খুব ই ভালো করেছে।আমি ভীষণ সন্তুষ্ট হয়েছি।

যদিও এতো আগে সাইকেল দেয়ার কখনো আমার ইচ্ছে ছিল না।নিজেই এতো কাহিল সেখানে সাইকেল কি করে চালাবে এই ভাবনাটা ই বেশী ভাবিয়েছিল আমাকে।এরপর রাস্তায় সাইকেল চালিয়ে হাত-পা ভেঙ্গে ফেলে কিনা এটা ও খুব চিন্তার।এজন্য ই চেয়েছিলাম আর একটু বড় হোক এরপর সাইকেল কিনে দেয়ার ইচ্ছে ছিল।যাই হোক কথা যখন দিয়েছি কথা তো এখন রাখতেই হবে তাই বাবার বাসায় এসে ভাইয়াকে দিয়ে সাইকেল কিনে দিয়েছিলাম।এই হচ্ছে আমার আজকের বিপদে পরার গল্প।আশাকরি আপনারা বুঝতে পেরেছেন আমার অনুভূতি গুলো।এই বছরের প্রথম দিনেই ওকে সাইকেলটি কিনে দিয়েছিলাম।কথা দিয়ে লক্ষ্য পূরণ হলেও সাইকেল কিনে দিয়ে বিপদ ডেকে আনব ভেবেছিলাম। যদিও ছেলেকে বলেছিলাম তুমি সাইকেল একা চালাতে পারবে না।এর পরিবর্তে অন্য কিছু নাও।কিন্তু না সে সাইকেল ই নেবে।তবে কেনা সত্ত্বেও ২ দিন চালাতে পেরেছিল।এখন ঘরেই ফেলে রেখেছে।কারন সে একা চালাতে পারে না।কারো জন্য তার অপেক্ষায় বসে থাকতে হয়।এই ছিল আমার আজকের অনুভূতি গুলো।

আমার মনের অনুভূতি গুলো আপনাদের মাঝে নিজের মতো করে শেয়ার করে নিলাম।আশাকরি আপনাদের সকলের কাছে আমার অনুভূতি গুলো ভালো লেগেছে।সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ ও সুন্দর থাকবেন।আজ এখানেই শেষ করছি।

ধন্যবাদ সবাইকে

@shimulakter

পোস্ট বিবরন


শ্রেনিলাইফ স্টাইল
প্রয়োজনীয় ডিভাইসSamsung A 20
ফটোগ্রাফার@shimulakter
স্থানওয়ারী,ঢাকা

আমার পরিচয়

96PguSMiZiG2aJ3NLqePiD2iuR7rncmaN6uroXtVxGaAG1DAYEG3NCh1cGMczkPKfnE9jjtVxP35CYEZU6ZxZFFTSivQa1eh1ot6ZzwCmG...AwoqceF6TSWE4Nav1o7HAitS9PezzvoZEzSUMtfS3J217L9uHsjpx3ms5GbxwEGUAuTWUnSdiYDs2iCoK7nkvuuSpyiN2X6By4EGTxBFxVhS7R8KCXs5ErEmc.jpeg

আমি শিমুল আক্তার।আমি একজন বাংলাদেশী।আমি এম এস সি(জিওগ্রাফি) কমপ্লিট করি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।আমি বিবাহিতা।আমি একজন গৃহিণী।আমি স্বাধীনচেতা একজন মানুষ।ভালোবাসি বই পড়তে,নানা রকমের রান্না করতে,ফটোগ্রাফি করতেও আমি ভীষণ পছন্দ করি।বাংলায় লিখতে আর বলতে পারার মধ্যে অনেক বেশী আনন্দ খুঁজে পাই।নিজের মধ্যে থাকা সৃজনশীলতাকে সব সময় প্রকাশ করতে পছন্দ করি।এই বাংলার মাটিতে জন্মগ্রহণ করেছি বলে নিজেকে অনেক ধন্য মনে করি।

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRPmXA6ginRbBsbKGY2VtVnXzUUJNCrTg8j8t3NuJGgf2KbYWVhU7Jrqyce9L83...PNYeU1ZG126PQwwYwsEMXRPSgTDchsmsthTuCRnsXyUEgYAxXYHvD1KkAgZAv8CLWHJPSdQZmsDDyKM5Ubj9B5mKCqzYYqKNAPfqtYj6eigy9Evp46XYyTvpcv.png

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRQ2cJZBsiyuMbbQNbt2XY3bPDP3soCEvgarH2Jwxn58HCSwZqnJoPtfVfPHher...f1Dq76pKECV4KekfqyZj18qfc4ziQW3kRYsgW1PMLc47emsksqLgif1cmhk34QEfazWiZ3aAFVCXuC6ZFp39Mc57NeUUL4DNuymUk8Cq7TKhE9BkS9WxCKgszV.gif

HNWT6DgoBc14riaEeLCzGYopkqYBKxpGKqfNWfgr368M9U7RRG2y2M9YYSM48N5nbcXLb7PqdkYJ9oR9FoA2unvh83eqRV77XS1odgZghsEq4QSkRqvT13kzKTc.jpeg

mCz6aUXpYgcE9hndDxJeFHNCvijWNENnxm5KqcEUM3o1siTRM9RiHCBoSjHNuiJNg7JaN1YHkdVF2iL5yXmTwhgdJbBWGqp5o8DReVS38H...Ngs8B1ZxQ71gjBxiqfcH84Q1vPFSBFZmyW1T5WYxF2TL2KthznYPi6aVayXiVmeqrvyCqCmnquJrNciFufjx91GZCbFjkMM65HFSSmzsVSgn2g7Gro7uZrMtgv.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

You've got a free upvote from witness fuli.
Peace & Love!

image.png

Screenshot_20250110-152310_Chrome.jpg

Screenshot_20250110-150708_Chrome.jpg

Screenshot_20250110-150532_Chrome.jpg

Screenshot_20250110-150408_SuperWalk.jpg

আসলে আপু বাচ্চাদের কথা দিলে অবশ্যই বিপদে পড়তে। তবে ছেলে যেহেতু ভালো রেজাল্ট করেছে তাহলে তো কথা রাখতেই হবে। আর বাচ্চারা এমন একটা জিনিস একটা করার চেয়ে কেনার আগ্রহ অনেক বেশি।বেশ ভালো লাগলো আপনার অনুভূতি গুলো পড়ে।

সুন্দর মন্তব্য শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

এই যে কথা দিয়ে কথা রাখার বিষয় টি আপনার জন্য আপনার ছেলের মাঝেও অটোমেটিক ঢুকে যাচ্ছে, বিষয়টি আমার ভীষণ ভালো লাগলো আপু। আর পছন্দের জিনিসের জন্য ছোট থেকে বড় সকলেরই আলাদা টান কাজ করে। তাই অনেক কিছুই করতে পারে পছন্দের জিনিসটাকে নিজের করে নেয়ার জন্য। সাইকেল নিয়ে ওতো বেশি দুশ্চিন্তা করবেন না আপু। আশা করি ও ভালোভাবেই সাইকেল চালাতে সক্ষম হবে কোনো রকম ইন্সিডেন্ট ছাড়াই। শখের জিনিস বলে কথা! ওর জন্য শুভকামনা রইলো।

সুন্দর ও সাবলীল মন্তব্য শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ দিদি।

বাচ্চাদের আবদারের কোন শেষ নেই, তবে আমার কাছে মনে হয় আপনার ছেলের জন্য এই অবদার ঠিক ছিলো। যেহেতু সে পরীক্ষায় অনেক ভালো রেজাল্ট করেছে সেহেতু সে এই ছোট্ট অবদার রাখাতেই পারে। আর আপনি কথা দিয়ে কথা রাখেন এই বিষয়টা আমার কাছে অনেক ভালো লাগলো। শুভ হোক আপনার ছেলের আগামী দিনের পথ চলা।

অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

যেহেতু ছেলেকে কথা দিয়ে ফেলেছেন কথা তো রাখতেই হবে। রামিম ভালো রেজাল্ট করেছে শুনে খুশি হয়েছি। সাইকেলটি অনেক সুন্দর হয়েছে। ধন্যবাদ।

অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি আপনাকে ও।

যাক আপনি ছেলেকে একটি কথা দিয়েছিলেন বলে তার একটি সাইকেল প্রাপ্তি হল। এই বিষয়টি কিন্তু বেশ মজার। আসলে এগুলোই বাচ্চাদের কাছে অনেক আনন্দের হয়ে ওঠে। আর তারা বাবা মায়েদের কাছ থেকে এই জিনিসগুলো পেয়ে অনেক আনন্দ লাভ করে।

মতামত প্রকাশ করে পাশে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ দাদা।