শৈশব স্মৃতি-শৈশবের একটি মজার স্মৃতি||

in hive-129948 •  2 months ago 

আসসালামু-আলাইকুম/আদাব।


বন্ধুরা, কেমন আছেন? আমি @shopon700 🇧🇩 বাংলাদেশ থেকে। আজ আমি আমার শৈশবের একটি মজার স্মৃতি আপনাদের মাঝে শেয়ার করবো। তো বন্ধুরা চলুন আমার আজকের পোস্ট পড়ে নেয়া যাক।

শৈশবের একটি মজার স্মৃতি:

children-7186580_1280 (1).jpg

source


তখন আমি খুব সম্ভবত ক্লাস ফাইভে পড়ি। সে সময় সবাই মিলে আনন্দ উল্লাস করতে অনেক পছন্দ করতাম। আর যদি কোন উৎসবের আমেজ আসতো তাহলে আনন্দ আরও বেড়ে যেত। প্রত্যেকবার পহেলা বৈশাখে আমরা সবাই পান্তা ভাতের আয়োজন করতাম। সেবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। আমরা যেহেতু একই এলাকার অনেকেই সমবয়সী ছিলাম তাই প্রত্যেকবার অনেক ভালোভাবেই পান্তা ভাতের আয়োজন করা হতো। অল্প কিছু টাকা চাঁদা ধরে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো কেনা হতো।

প্রত্যেকবারের মতো সেবারও পান্তা ভাতের আয়োজন করা হয়েছিল। আমরা সবাই চাঁদা তুলেছিলাম। কিন্তু শেষ পর্যায়ে এসে মেয়েরা বলল তারা আলাদা করে পান্তা ভাতের আয়োজন করবে। আমাদের সাথে আয়োজন করবে না। জানিনা কি হয়েছিল। তবে আমার চেয়ে যারা বড়রা ছিল তাদের সাথে কিছু একটা ঝামেলা হয়েছিল। এখন কি আর করার। যেহেতু আলাদাভাবে আয়োজন করা হচ্ছে তাই অনেকটা পাশাপাশি আয়োজন করা হয়েছিল। রাস্তার পাশে আমরাও পান্তা ভাতের আয়োজন করেছি আর সব মেয়েরা মিলে তারাও আয়োজন করেছে। যখনই কেউ রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল তখনই আমরা তাদেরকে আপ্যায়ন করে পান্তা খাওয়ার জন্য ডাকছিলাম। আমাদের আয়োজনটা ভালোই ছিল মোটামুটি বলতে গেলে। আর মেয়েরাও অনেক সুন্দর করে আয়োজন করেছিল।

পান্তা খাওয়ার পর অনেকে খুশি হয়ে টাকা দিত। সেই টাকার পরিমাণ খুব একটা বেশি ছিল না। তবে আমাদের আনন্দ অনেক বেশি ছিল। দিনশেষে সেই টাকার হিসাব করা হতো আর সবাই মিলে সেই টাকা দিয়ে বাজার করে আবারো পিকনিক করতাম আমরা। সেই বারো তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে এবার যেহেতু মেয়েরা আলাদা করে পান্তার আয়োজন করেছে তাই আমাদের এখানে টাকার পরিমান খুবই অল্প ছিল।

যখন বিকেল হয়ে গেল তখন টাকা হিসাব করে দেখা গেল খুব একটা যে বেশি টাকা হয়েছে তাও না। আসলে গ্রামের লোকজন তো আর ১০, ২০ টাকার বেশি দিত না ।তাই অল্প টাকাই হয়েছিল। অন্যদিকে মেয়েরা তো ভালোই টাকা পেয়েছিল। এরপর যখন তারা সবকিছু গুছিয়ে নিচ্ছিল হঠাৎ করে আমার এক চাচাতো ভাই দৌড়ে এসে বলে আমি একটি ব্যাগ কুড়িয়ে পেয়েছি। আর ব্যাগের মধ্যে অনেকগুলো টাকা আছে। তখন আমার এক চাচা বলে দেখি কত টাকা আছে? এরপর টাকা গণনা করে দেখা হয় খুচরো অনেক টাকাই আছে।

হঠাৎ করে চারপাশে খোঁজাখুজি শুরু হয়েছে। মেয়েরা পান্তা ভাতের আয়োজন করে যেই টাকা পেয়েছিল সেই টাকা একটি ব্যাগের মধ্যে রেখেছিল। আর সেই ব্যাগটি হারিয়ে ফেলেছে। এটা শুনে তো আমরা সবাই বুঝতেই পারছিলাম ব্যাগটা আসলে তাদের। এবার তো তাদের শাস্তি দেওয়ার পালা। সবাই তাদের সামনে গিয়ে শুধু ব্যাগটা দেখাচ্ছিল আর ঘুরে ঘুরে চলে আসছিল। সেই সময় দুজন মেয়ে তো একেবারে কান্নাকাটি শুরু করে দিল। অবশেষে তাদের ব্যাগ ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেই স্মৃতিটা এখনো মনে পরে। আসলে তারা জিতে গিয়েও হেরে গিয়েছিল।

🥀ধন্যবাদ সকলকে।🌹


আমার পরিচয়

photo_2021-06-30_13-14-56.jpg

আমি মো: স্বপন । আমি একজন বাংলাদেশী। বাংলা আমার মাতৃভাষা। তাই আমি বাংলায় লেখালেখি করতে ভালোবাসি। ফটোগ্রাফি, পেইন্টিং এবং ক্রাফটিং করা হচ্ছে আমার অন্যতম শখ। অবসর সময়ে গান শুনতেও অনেক ভালোবাসি। এছাড়া বাগান করতে আমার অনেক ভালো লাগে। মাঝে মাঝে রান্না করতেও অনেক ভালো লাগে। আমার স্টিমিট আইডি নাম @shopon700। আমি ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে স্টিমিট ব্লগিং শুরু করি। আমি গর্বিত, কারণ আমি আমার বাংলা ব্লগের একজন ভেরিফাইড ব্লগার।


Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

হঠাৎ করে মেয়েদের কি ঝামেলা হলো তারা ছেলেদের সঙ্গে আয়োজন করবে না। আপনাদের এই পান্তার আয়োজনটি বেশ মজা লেগেছে। সবাই খাওয়া-দাওয়া শেষে টাকাও দেয় দেখছি। আসলে টাকার ব্যাগটি মেয়েরা হারিয়ে ফেলে মেয়েরা কান্নাকাটিতো করবেই। এত কষ্ট করে আয়োজন করেছিলেন। যাই হোক শেষে ফেরত দিয়ে ভালো করেছেন। ভালো লাগলো আপনার ছোটবেলার কাহিনী পড়ে।

কি যে ঝামেলা হয়েছিল জানিনা। ওরা একটু বেশি পেকে গিয়েছিল। তাই আলাদাভাবে আয়োজন করেছে। প্রতিবার অবশ্য একসাথে আয়োজন করা হতো।

আসলে শৈশবের স্মৃতিচারণ করতে বেশ ভালো লাগে। সকলের শৈশবে বিভিন্ন রকমের ঘটনা রয়েছে রয়েছে হাসি আনন্দ-বেদনা। আর এই সমস্ত ঘটনাগুলো যদি শেয়ার করা যায় তাহলে একে অন্যের অজানা জিনিস সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। ঠিক তেমনি ভালো লাগলো আপনার আজকের এই ঘটনা পড়ে। যেন পান্তা ভাতের মধ্যে আমিও হারিয়ে গেলাম প্রাইমারি লাইফে।

শৈশবের স্মৃতিগুলো খুবই ভালো ছিল। আর এখনো সেই দিনগুলোর কথা অনেক বেশি মনে পরে আপু। ধন্যবাদ আপনাকে।

আপনাদের ছোটবেলার স্মৃতি চারণটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো।এধরনের ঘটনা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ঘটে থাকে যা আপনার সঙ্গে ঘটেছে। তবে সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে যে মেয়েদের টাকার ব্যাগ আপনারা শেষমেষ ফেরত দিয়েছেন।

মাঝে মাঝে ছোটবেলার স্মৃতিগুলো মনে পড়লে অনেক ভালো লাগে। আর সেই ঘটনাটি তুলে ধরার চেষ্টা করেছি আপু।

সেই সময় দুজন মেয়ে তো একেবারে কান্নাকাটি শুরু করে দিল।

ভাই মেয়েদের তো কাজ ই এটা😂। না পারলে তারা কান্না করবেই। তাছাড়া কতো কষ্ট করে মানুষকে পান্তা খাইয়ে টাকা গুলো ইনকাম করেছে। শেষ পর্যন্ত তাদের ব্যাগ ফিরিয়ে দিয়েছেন, এটা জেনে খুব ভালো লাগলো। তবে পান্তা খাইয়ে টাকা ইনকাম করার ব্যাপারটা কখনো শুনিনি। ছোটবেলায় আমরা ঝোলা পাতি খেলতাম মেয়েদের সাথে। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

সেদিনের ঘটনাটি এখনো মনে পড়ে। তাদের কান্নার কথাগুলো বেশি মনে পড়ে। আমাদের এদিকে পান্তা ভাতের দোকান বসানো হয় ভাইয়া পহেলা বৈশাখে।