রবিবারের আড্ডা - পর্ব ৬১ | জীবনের গল্প - পর্ব ৩

ব্যানার ক্রেডিট @hafizullah

সবাইকে স্বাগতম জানাচ্ছি আমার বাংলা ব্লগের নতুন আয়োজন জীবনের গল্পের শো-তে । মূলত আমরা যেহেতু প্রথম থেকেই বলেছিলাম, রবিবারের আড্ডার কিছুটা ভিন্নতা হবে, ঠিক সেই ভিন্নতার জায়গা থেকেই, এই সংযোজন। মানুষের জীবনে কত গল্পই তো থাকে, কত সুখস্মৃতি থাকে, থাকে পাওয়া না পাওয়ার অভিজ্ঞতা কিংবা হারিয়ে ফেলার তিক্ততা , কিংবা থাকে সফলতার হাজারো গল্প, যা হয়তো অনায়াসেই, অন্য কাউকে অনুপ্রাণিত করে ফেলে মুহূর্তেই। এই গল্পগুলো হয়তো অজানাই থেকে যায়, আমরা আসলে কান পেতে থাকি, এই গল্পগুলো শোনার জন্য। এইজন্য বাংলা ব্লগ আয়োজন করেছে, জীবনের গল্প। যেখানে অতিথি তার নিজের জীবনের গল্প অন্যদের সামনে অনায়াসেই বলে ফেলবে এবং অতিথি নিজের থেকেও বেশ হালকা হবে, সেটা হয়তো মনের দিক থেকে।

আজকের অতিথিঃ @kazi-raihan
ভেরিফাইড সদস্যঃ আমার বাংলা ব্লগ

অতিথির অতীত ও বর্তমান জীবনের প্রেমের গল্প

যেহেতু গতদিন তুহিন ভাই তার জীবনের ফেলে আসা প্রেমের গল্প বলেছিল, তাই আমিও চাচ্ছি আমার জীবনের প্রেমের গল্প আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করার জন্য। তখন আমি ছোট সম্ভবত ক্লাস সেভেনে পড়ি, তখন আমার বন্ধু সমবয়সী এক মেয়ের প্রেমে পড়ে, তবে দুঃখের বিষয় মেয়েটার ক্লাস সেভেনে পড়া অবস্থাতেই বিয়ে হয়ে যায়। সেই সময় আমার বন্ধু বড্ড কষ্ট পায়। অতঃপর আমরা যখন ক্লাস নাইনে পড়ি, তখন আমার বন্ধু ক্লাস এইটের এক মেয়ের প্রেমে পড়ে। প্রায়ই আমার বন্ধুর সঙ্গে আমি থাকতাম, সেই সুবাদে আমার বন্ধুর প্রেমিকার এক বান্ধবী আমাকে দেখে পছন্দ করে।

নাম তার সময় সুমী। প্রথম যেদিন আমাকে কথা বলার জন্য ডেকেছিল, তখন মনের ভিতরে অদ্ভুত রকম এক অনুভূতি কাজ করছিল। অবশেষে সে একটা চিঠি দিয়েছিল, যখন চিঠিটা হাতে পাই তখন আমার বন্ধু আর আমি দুজনে মিলে চিঠিটা পড়ি টিচারদের ওয়াশরুমে গিয়ে। আমার বন্ধু আমাকে বেশ সহযোগিতা করেছিল চিঠিটা পড়ার ক্ষেত্রে। অবশেষে বাড়িতে ফিরে এসে বাসার দরজা-জানলা বন্ধ করে দিয়ে পুনরায় চিঠিটা আবারো পড়ি। অতঃপর তার সেই প্রশ্নের উত্তর গুলো আমি লিখে দিলাম এবং পরের দিন চিঠিটা দেওয়ার ব্যবস্থা করলাম। তারপর থেকে প্রায়ই স্কুল ছুটির পরে আমরা একত্রে হাঁটতে যেতাম এবং গল্প করতাম। তবে বেশি মজা হয়েছিল,ও যখন নাইনে উঠলো, তখন আমার আর ওর ক্লাস পাশাপাশি ছিল, ও ওর ক্লাসের সামনে দাঁড়াতো আর আমি আমার ক্লাসের সামনে। এভাবেই কখন যে মাধ্যমিক পেড়িয়ে উচ্চমাধ্যমিকে পদার্পণ করলাম, তা যেন বুঝে উঠতেই পারিনি।

যদিও উচ্চমাধ্যমিকে আমার কেমিস্ট্রিতে খারাপ ফলাফল হয়েছিল বিধায় ওর সঙ্গে পুনরায় পরীক্ষা দিতে হয়েছিল তবে সময়টা আমাদের ভালোই চলছিল। হুট করেই ওর বিয়ের কথা শুরু হয় বাড়িতে, ও আমাকে জানিয়েছিল। তবে আমি নিজেই ছাত্র ছিলাম বিধায় সেদিকে এগিয়ে যেতে পারিনি। আমার এখনো মনে আছে ওর বিয়ে হয় ১৪ ই ফেব্রুয়ারিতে, তার দুইদিন আগে মা আমাকে সাত হাজার টাকা দিয়েছিল এবং বলেছিল তুই বাহির থেকে ঘুরে আয়। সেই সময় আমার মামা ঢাকায় ছিল, তার সঙ্গে আমি চট্টগ্রাম ঘুরতে গিয়েছিলাম। তবে তারপরেও ওর কথা বারবার মনে পড়ছিল।

ওর বিবাহ পরবর্তী জীবনেও ওর সঙ্গে আমার যোগাযোগ হয়। মুঠোফোনের মাধ্যমে, তবে আমি আর নিজের থেকে সম্পর্কটাতে এগিয়ে যেতে চাইনি বরং ওকে নিষেধ করেছি। এভাবেই সুমীর সঙ্গে আমার ইতি হয়ে যায়।

এরপর যখন আমি অনার্সে ভর্তি হই তখন আমার পরিচয় হয় তন্নীর সঙ্গে। যদিও আমি দীর্ঘদিন ক্লাস করেছি তবে কখনোই ওকে দেখিনি, হঠাৎই পরীক্ষার ভিতর পাশাপাশি সিট পড়ার কারণে ওকে দেখেছিলাম। পরীক্ষা শেষ ওকে বলে ফেললাম তোমার ফেসবুক আইডি কি আমাকে দেওয়া যাবে, তারপর আমরা দুজন দুজনার ফেসবুক আইডি সংগ্রহ করি। প্রথমদিকে বেশ ভালোই বন্ধুত্বপূর্ণ কথাবার্তা হচ্ছিল, অবশেষে একটা সময়ের পরে সম্পর্কটা আরও গভীরে চলে যায়। অতঃপর কিছুদিন আগে আমরা যখন কক্সবাজার ঘুরতে গিয়েছিলাম সেখান থেকে ওর জন্য কিছু গিফট কিনে ছিলাম এবং তারপরেও আমি ওর জন্য অনেক বড় বাজেটের একটা শাড়ি কিনেছিলাম, আমি মূলত তন্নী কে প্রপোজ করেছিলাম এমন একটা জায়গায় যেখানে বিলের মধ্যে চতুর্দিকে শাপলা ফুটে আছে আর সেই বিলের মধ্যে নৌকা নিয়ে গিয়ে ওকে শাড়িটা দেই এবং প্রপোজ করি।

যদিও আমাদের সম্পর্কের ব্যাপারটা এখন দুই পরিবারই জানে, তবে তন্নীর বাবা চায়, তার মেয়ের জামাই সরকারি চাকুরিজীবী হোক, তবে এদিকে তো আমি ব্যবসা করছি। এখন দেখি, কি হয় শেষমেষ এই সম্পর্কটার।

অতিথি ও শ্রোতাদের জন্য শুভেচ্ছা পুরস্কার

পুরস্কার বিতরণের সম্পূর্ণ অবদান @rme দাদার

উপস্থিত দর্শক শ্রোতারা বেশ ভালই উপভোগ করেছিল অতিথির শৈশব জীবনের প্রেমের গল্প। তারা বেশ ভালই প্রশ্ন রেখেছিল এবং উত্তরগুলো খুঁজেও পেয়েছিল, অতিথির গল্পের মাঝে।

সব মিলিয়ে জীবনের গল্প চলছে, একদম দুর্বার গতিতে । পরবর্তীতে আমরা আসছি কিন্তু আপনার দরজায়, আপনি প্রস্তুত তো।

ধন্যবাদ সবাইকে

ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht

|| Join the Discord Server for more Details ||

VOTE @bangla.witness as witness

OR

SET @rme as your proxy