ভালবাসা দিবস সেলিব্রেশন

হ্যালো আমার বাংলা ব্লগবাসী।আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি।আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করব আমার ভালবাসা দিবস উদযাপনের গল্প।

ভালবাসা অনেকটা জলের মত।না জলের অপর নাম যেমন জীবন, ভালবাসার অপর নাম তেমন জীবন নয়। বরং অনেককে কে তো বলতে শোনা যায়,"এই ভালবাসা আমার জীবনটাকে কয়লা বানিয়ে দিল।"সেদিক থেকে বলতে পারেন ভালবাসা আগুনের মত। তবে আমি জলের মত বললাম কেন? কারন জল যেমন যে পাত্রে রাখা যায় সে পাত্রের আকার ধারন করে তেমনি ভালবাসাও দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী একেক জনের কাছে একেক রকম।

যেমন আমি সন্ন্যাসী মানুষ,(কেউ আবার এটা বলবেন না, যে মেয়েরা পছন্দ করেনা তাই দু:খে সন্ন্যাসী হয়েছি)আমার কাছে প্রেম ভালবাসা মানে মোহ মায়া।জীবন টাকে দুর্বিষহ করার অন্যতম প্রধান উপায়।এই লেখা দেখে পাশে থেকে ছোট ভাই বলতেছে,আঙ্গুর ফল টক।যাই হোক ও নিন্দুক।নিন্দুকের কাজই নিন্দা করা।কয়দিন পর যখন ছ্যাকা খাবে তখন আমাকেই বলবে, ভাই তুমিই ঠিক ছিলা।

ছোট থেকে ভাই ব্রাদার আর বন্ধুদের ছ্যাকা খাওয়া দেখতে দেখতে এগুলোর প্রতি রুচি উঠে গেছে।বিয়েশাদির ইচ্ছাও নেই,কিন্তু নেহাৎ পরিবারের চাপে পড়ে করতে হবে।সিঙ্গেল হিসেবে আমার ব্রেকাপ কে প্রমোট করা উচিৎ। কিন্তু আমি দুই দলকেই সমান সমর্থন দেই।যাই হোক অনেক বকবক করলাম এখন চলুন শেয়ার করি কিভাবে আমার ভ্যালেন্টান্স কাটালাম।

ভ্যালেন্টাইন্স আমার কাছে আর পাচটা দিনের মতই।খাও দাও,বাতি নিভিয়ে ঘুমাও। সকাল সকাল উঠে টিউশন গেলাম।কিন্তু স্টুডেন্ট নাকি পড়বে না।হোম টিউটর দের অলিখিত শাস্ত্রে লেখে,স্টুডেন্ট পড়বে না বলার সাথে সাথে তার বাড়ি ত্যাগ করবে।বলা তো যায়না হয়ত ১সেকেন্ডেই মত পালটে আবার পড়তে চাইতে পারে।তাই তারাতারি বিদায় নিলাম।

একটু পর মা এসে বলল কি রে সবাই সেজে গুজে পাঞ্জাবী পড়ে বাইরে যাচ্ছে,তুইও যেয়ে ঘুরে আয়।তখন বাবা লেপের নিচে থেকে মুখ তুলে বলে,"ওর কি বাইরে যাওয়ার মুখ আছে নাকি?ওর থেকে ছোট গুলো গার্লফ্রেন্ড নিয়ে ঘুরবে আর ও দেখবে চেয়ে চেয়ে।বলেই সবাই মিলে হাসতে থাকল।

যাই হোক আমি তাদের কথা গায়ে মাখলাম না। গল্পের বইয়ের দিকে মনযোগ দিলাম।এরপর বিকেলে এক বড় ভাই ফোন দিল।ভাবিকে নিয়ে ঘুরতে বের হবে আমাকে সাথে যেতে হবে। পরে ভাইকে বুঝালাম আজকের দিনটা তাদের একা একা ঘোরা উচিৎ। আমি গেলে কাবাবের হাড্ডি হব।তাও ভাই নাছোড় বান্দা। পরে আরো ভালভাবে বুঝালাম।তখন ভাই বুঝল।

এরপর সারাদিন শুয়ে বসে থাকায় মনটা কেমন যেন খাই খাই করছিল।ভাবলাম যাই একটু খেয়ে আসি।মায়ের থেকে টাকা চাইতেই বলল,গার্লফ্রেন্ড থাকলে না হয় বুঝতাম তাকে নিয়ে বাইরে গিয়ে খাবি।এখন একা একা গিয়ে হুদাই জোড়া গুলোকে ডিস্টার্ব করার দরকার নাই।কিন্তু আম নাছোড়বান্দা।তাই শেষে টাকা দিল।

এরপর টাকা নিয়ে চলে গেলাম বনফুলে। হোটেলের ওয়েটার চেনা মানুষ। প্রায়ই যাওয়া হয়। আমাকে দেখে বলে,কি মামা আজকেও একাএকা? আপনি হিমালয়ে চলে যান।কিছু না বলে গ্রিল আর নান এর অর্ডার দিয়ে বসে গেলাম। প্রায় সাথে সাথেই খাবার চলে আসল।বেশ আয়েস করে নিজের সঙ্গ উপভোগ করতে কর‍তে গ্রিল আর নান শেষ করলাম।তারপর বিল দিয়ে একটা কোকাকোলা খেতে খেতে বাড়ি চলে আসলাম।তারপর একটি টিউশন ছিল।টিউশন থেকে এসে আড্ডা ঘরে যোগ দিলাম।তারপর লম্বা শান্তির ঘুম।

এই ছিল আমার ভালবাসা দিবস উদযাপন। নিজের সঙ্গ নিজে উপভোগ করার মজা সবাই বোঝে না।আপনাদের ভালবাসা দিবস কিভাবে কাটল তা জানাবেন।ধন্যবাদ সম্পূর্ণ পোস্ট পড়ার জন্য।