আসসালামু আলাইকুম,
সবাই কেমন আছেন, আশা করি ভালো আছেন ।আমি ও ভালো আছি বেশ।
আজ আমার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা জীবনের শেষে এসে আমি যে এক ভালো বন্ধুর সাক্ষাৎ পেয়েছিলাম তার কথাই এই পোস্টের মাদ্ধমে তুলে ধরবো।
আমার প্রিয় বন্ধুর নাম তামান্না ।ভার্সিটি লাইফে ওর সাথে আমার দেখা।দ্বিতীয় সেমিস্টারের প্রথম ক্লাসে আমি ওর সাথে প্রথম বসি আর ওর নাম যে তামান্না তা অন্য এক মেয়ের কাছ থেকে জানি। আমি একটু ইন্ট্রোভাব প্রকৃতির হওয়া তে সবার সাথে তেমন কথা বলি না।
তামান্না আর আমি যেদিন এক সাথে বসি সেদিন ক্লাসের সব মেয়েরাই নতুন বই নিয়ে যায় ।ফোনিটিক্স ক্লাসে আমার নতুন বইটি চেয়ারের তারকাটার সাথে লেগে কভার পেজ ছিড়ে যায়,তবে আমি তা দেখি নাই ।তো ফোনিটিক্স ক্লাস শেষে আমি একটু করিডোর থেকে ঘুরে আসি ,তখন তামান্না ওর সিটেই বসে ছিলো।
তো আমি করিডোর থেকে ঘুরে এসে যখন আমার বই ব্যাগে রাখার জন্য ধরি তখন দেখি কি কভার পেজের পিছনের সাইট ছিড়ে গেছে (তার কাটার আচর লেগেছে)।তখন আমি তামান্না কে বলি ,আমাদের মনে হয় ভুলে বই এক্সচেঞ্জ হয়ে গেছে ,তুমি মনা হয় ভুলে আমার বই ব্যাগে ঢুকিয়ে নিয়েছো।এই কথা আমি ওর বলার পর ও পুরাই অস্বীকার করে আর বলে তোমার বই আমি কেন ব্যাগে নিবো।তখন আমি ওরে বলি, আমার ভালো বই তুমি নিয়ে ,তোমার ছেড়া বই আমার সিটে রেখে দিছো তুমি ।তামান্না বলে ,জীবনেও না ,আমি গতকাল নিউ বই কিনছি নিলক্ষেত থেকে ,তখন আমিও বললাম আমিও তো নীলক্ষেত কিনছি নতুন বই।ও আমাকে বলো, আমি নাকি সেকন্ধ্যান্ড বই কিনছি তাই ছিড়া।
এই কথা শুনবার পর আমার খুবই মেজাজ খারাপ হয় তখন ছিড়া বই ব্যাগে রেখে দেই ।আর তখন ই আরেকটি মেয়ের কাছে ওর নাম জানতে পারি ।
তবে ও প্রায়ই আমার সাথে বসত ।কথা বলতে। চাইতো তোবে আমি এড়িয়ে যেতাম।ভার্সিটি ফাস্ট বাস সার্ভিস চালু করে ।তখন আমি আমাদের এলাকা ডেমরা স্টাফ কোয়াটার থেকে বাসে উঠতাম আর তামান্না উঠতো মানিকনগর থেকে ,তবে ও বেশিরভাগ সময় বাস মিস করতো ।তাই ও ক্লাসে আমার নাম্বার নেয় যাতে বাস যখন যাত্রাবাড়ী যাবে তখন যাতে ওরে কল দিয়ে বলি বাস এখন যাত্রাবাড়ী ।ইচ্ছা করতো না বলতে তবুও যেহেতু একই ব্যাচে তাই সাহায্য টা করতাম।ও বাসে উঠতো ঠিকই তবে বসার জন্য জায়গা পেতো না ।গরমে ,ঘামে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে যেতো তখন আমি স্বেচ্ছায় ওর জন্য ডেমরা থেকে একটা সিট নিয়ে যেতাম আমার পাশে একটা ডাইরি রেখে।বাকি মেয়েরা আমার জায়গা রাখা দেখে অনেক চিল্লা চিল্লি করতো ,তখন আমি বড় আপুদের ।মিথ্যা বলাতাম যে ,ওর পায়ে সমস্যা ডাক্তার দাঁড়িয়ে থাকতে নিষেধ করেছে এমন করে মেয়েদের আমি থামিয়ে রাখতাম ।আর ওরে আমার পাশের সিটে বসতে দিতাম।এভাবেই ও আমার প্রিয় বন্ধুতে পরিণত হয়েছে।
সারা দিন ক্লাস করে এসেও যেনো আমাদের কথা শেষ হতো না রাতে ভিডিও কলে আবার কথাও বলাতাম ।দুই জন দুইজনের সাথে দেখা করার জন্য অসুস্থ শরীর নিয়েও ভার্সিটি যেতাম।
ইংলিশ ডিপার্টমেন্টের সবাই
জানতো আমরা খুবই ভালো ফ্রেন্ড ।পুরা ভার্সিটি লাইফে আমার একটাই ফ্রেন্ড ছিলো আর তা হলো তামান্না ওরে ছাড়া আমি কারো সাথে তেমন কথা বা মিলামিশা করতাম না।
অতঃপর আমাদের ডিপার্টমেন্টর সবাই আমাদের দুইজনকে দুইজনের সম্পত্তি বলতো ।
করোনার সময় যখন অনলাইনে ক্লাস হয় তখন আমাদের দীর্ঘ ছয় মাস দেখা হয় নাই ।পরে একদিন সময় করে দেখা করি ।মনে হয়েছিল বহুবছর পর ভালো লাগার মানুষের দেখা মিলল ।
আমরা দুইজন ই খেতে খুব ভালোবাসী ।তবে খাওয়ার বিল কে দিবে এটা নিয়ে আমরা কখনো ভাগাভাগি করি নাই ,যার মন চেয়েছে সে দিয়েছে ।আমরা দুজন দুজনের কাছে অনেক টাকা পাই তবে এর হিসাব জানা নাই তাই চাওয়া হয় না ।
ঢাকা শহরের নতুন কোনো রেস্টুরেন্টর কথা শুনলেই মাসের শুরুতে খাওয়ার জন্য ছুটতাম।
আমাদের চার বছরের বন্ধুত্ব এমন চার হাজার শব্দে লিখলেও শেষ হবে না ,আর ছবি ও ক্যাপচার করা আছে অগণিত ।
এই মেয়েটা রাগ ,অভিমান ছাড়া খবুই ভালো মনের অধিকারী ।
ওর মতো এতো ভালো বন্ধু পেয়ে আমি সত্যিই খুশি ।
সত্যি আপু আপনার বন্ধুত্বের গল্প পড়ে দারুন লাগলো। যেই মেয়েটির সাথে আপনার কোন ভালো বন্ধুত্বই তৈরি হয়নি সেই মেয়েটির জন্য মিথ্যে বলে বাসের সিট ফাঁকা করে নিয়ে যেতেন সেটা সত্যিই অনেক ভালোলাগার একটি বিষয় ছিল। আসলে আমাদের জীবনে এমন কিছু মানুষ আসে যারা খুবই আপনজন হয়ে যায়। হয়তো প্রথমে তাদের সাথে অনেক ভুল বোঝাবুঝি হয়। এরপর ধীরে ধীরে যখন বন্ধুত্বের সম্পর্ক তৈরি হয় তখন সেই মানুষগুলো অনেক আপন হয়ে যায়। যাই হোক আপু আপনাদের বন্ধুত্ব এভাবেই চিরদিন থেকে যাক এই প্রত্যাশা করি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভার্সিটি লাইফে সবাই কাছের বন্ধু হয়ে ওঠে না। আর যারা একবার মনের কাছে চলে আসে তারা সারা জীবন কাছের মানুষ হয়েই থেকে যায়। আপনাদের দুই বান্ধবীর বই নিয়ে লাগা কান্ড টা বেশ মজার ছিল 😉। এমন ঘটনা কখনোই সামনে পরে নি আমার। বেশ মজা পেলাম। আর মেয়েদের বন্ধুত্ব গুলোতে খাওয়ার পর বিল দেওয়া নিয়ে কোন চাপ থাকে না। কিন্তু ওখানে যদি আমাদের মত বাঁদর দুই বন্ধু থাকতো তাহলে রীতিমত মুখের কথা দিয়ে তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধ বেধে যেত 😅। ভালো লাগলো আপনাদের বন্ধুত্বের গল্প টা পড়ে। অটুট থাকুক এই বন্ধন এই কামনাই করি।
আর আপু পুরো লেখা টা একবার পড়বেন, বেশ কিছু বানান ভুল আছে। ওগুলো সংশোধন করে দিলে পোস্টটা আরো সুন্দর লাগবে। আমি কয়েকটি দেখিয়ে দিচ্ছি,
একটু ভালো করে চেক করে নেবেন। ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit