নাটক রিভিউ "উড়ে যায় বকপক্ষী" দশম পর্ব

in hive-129948 •  6 months ago  (edited)


আসসালামু আলাইকুম

আজ
শুক্রবার

০৭ জুন,
২০২৪

কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমি আপনাদের দোয়ায় মোটামুটি অনেক ভালো আছি। সকলকে শুভকামনা জানিয়ে শুরু করছি নতুন একটি পোস্ট। আজকে আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি নাটক রিভিউ নিয়ে। নাটকের নাম 'উড়ে যায় বকপক্ষী', যা আমার অতি প্রিয় একটি নাটক। নাটকটির মূল পর্ব ২৬ টি। আজ আমি আপনাদের মাঝে দশম পর্ব রিভিউ আকারে শেয়ার করব। আশা করি আপনাদের অনেক ভালো লাগবে।


Screenshot_20240605-155939.jpg

❤️স্ক্রিনশট: ইউটিউব❤️


নাটকের বিশেষ তথ্যঃ


নামউড়ে যায় বকপক্ষী
রচনাহুমায়ূন আহমেদ
পরিচালকহুমায়ূন আহমেদ
অভিনয়েমেহের আফরোজ শাওন,রিয়াজ,চ্যালেঞ্জার,মাসুম আজিজ,ফারুক আহমেদ,স্বাধীন খসরু,এজাজুল ইসলাম,ড. ইনামুল হক,সালেহ আহমেদ সহ আরো অনেকে।
দেশবাংলাদেশ
ভাষাবাংলা
ধরণহাস্যরসাত্মক এবং সামাজিক
পর্বের সংখ্যা২৬
রিভিউদশম পর্ব
দৈর্ঘ্য২৩ মিনিট ৪১ সেকেন্ড
প্ল্যাটফর্মইউটিউব চ্যানেল @NTVNatok


প্রধান চরিত্রেঃ


চ্যালেঞ্জার
মেহের আফরোজ শাওন
ফারুক আহমেদ
মাসুম আজিজ সহ আরো অনেকে


কাহিনীর সারসংক্ষেপ



হুমায়ূন আহমেদ রচিত "উড়ে যায় বকপক্ষী নাটকের সবচেয়ে আনন্দদায়ক একটি পর্ব দশম তম পর্ব। এই পর্বে বেশ হাস্যরসাত্মক অনুভূতি রয়েছে। যেখানে গানের ওস্তাদের পরিবারে খাবার জোটে না কিন্তু এই নিয়ে কোন মাথা ব্যাথা নেই ওস্তাদের বা ওস্তাদের মেয়ে পুষ্পর। এদিকে বৈদেশিক হাসান এসে তার বাড়িতে রয়েছে। কিন্তু হাসান যখন বলেছিল আমি খাবারের দাম দিয়ে দিব কিন্তু তখন দেখা গেছিল তারা খাবারের দাম দিতে চেয়েছে তাই রাখতে চান নাই। এতটাই আন্তরিকতা তাদের মধ্যে, তারা বোঝাতে চেয়েছে কখনো কারো কাছ থেকে খরচ নিবেন না। তবে তাদের দুঃখ কষ্টের মুহূর্তেও কাউকে সেটা বুঝতে দিতে চান না। যেখানে দুইজনের খাবার জোটে না সেখানে চারজন মানুষ পাঁচজন মানুষের খাবারের ব্যবস্থা করে বসে রয়েছেন পুষ্প ও তার পিতা। এদিকে নিজের খাওয়ার বেলায় নারিকেলের সাস খেয়ে সময় অতিবাহিত করার চেষ্টা পুষ্পের।


Screenshot_20240605-154924.jpg

🌻স্ক্রিনশট: ইউটিউব🌻




এদিকে ফজলু চাচার দিন দিন যেন পাগলামি বেড়ে চলেছে। তার স্ত্রীকে কুটুমে নিয়ে গেছে এবং দিতে চায়না, এজন্য গ্রামের মন্ডল সোলাইমান সাহেবের বাড়িতে এসে উপস্থিত হয়েছেন। যেন উনি তার বউকে বাড়িতে ফিরে আনতে পারেন সেই আশায়। কিন্তু যখন দেখলেন সোলায়মান সাহেব খেতে বসেছেন এবং সে খাওয়া দাওয়া করেছে কিনা জানতে চাইলেন,ওই মুহূর্তে ফজলু চাচা তাড়াহুড়ো করে নিজেই খাবার রেডি করে নিয়ে খাওয়া শুরু করে দিয়েছেন। এতে তার মানসিক ব্যালেন্সের বিকৃতি ঘটেছে ধারণা করা যায়।


Screenshot_20240605-155409.jpg

🌻স্ক্রিনশট: ইউটিউব🌻




নাটকের শুরুর থেকে আমরা একটা বিষয় লক্ষ্য করে আসি, তৈয়বের মধ্যে রয়েছে অন্যরকম রোমান্টিক অনুভূতি। গ্রামের এক পাড়া-প্রতিবেশীর বাড়িতে সেলিনা বেগম নামের মেয়ে এসে উপস্থিত হয়েছে অর্থাৎ বোনের বাসায় বেড়াতে এসেছেন তিনি। তার সাথে হঠাৎ তৈয়ব ভাব জমিয়ে ফেলেছেন। এমনকি তাকে ওস্তাদের গানের আসরে নিয়ে এসেছেন। ওস্তাদ তার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাইলে দেখা যায় তৈয়ব সবকিছুর উত্তর দিয়ে ফেলছেন। এতে ওস্তাদ বেশ বিরক্ত ফিল করেন। কারণ যার কাছে প্রশ্ন তার মুখে উত্তর নেই, আর একজন কিভাবে উত্তর দিতে থাকে এতে বোঝা যায় কতটা এক্সপার্ট এবং কতটা ধারণা রাখেন এই সমস্ত বিষয়গুলোতে।


Screenshot_20240605-155431.jpg

🌻স্ক্রিনশট: ইউটিউব🌻




এদিকে বৈদেশিক হাসানের কাছ থেকে ওস্তাদ লেখাপড়া শিখে বেশ আনন্দে রয়েছেন। কারন সে এখন খুব সহজে পেপার পড়ে অনেক কিছু জানতে পারেন। এদিকে একদিন সে তো সাইনবোর্ড গরু ছাগলের হাট লেখা দেখে বেশ আনন্দ পেয়েছিলেন। আর এমনই হাসি আনন্দের কথা তার একমাত্র মেয়ে পুষ্পের কাছে বেশ বলার চেষ্টা করেছিলেন আনন্দের সাথে।

Screenshot_20240605-155536.jpg

🌻স্ক্রিনশট: ইউটিউব🌻




এ নাটকের সুন্দর হাস্যরসাত্মক অনুভূতি ও অভিনয় বেড়ে চলেছে এই জায়গাতে। যেখানে দেখা গেছে বৈদেশিক হাসান মুখে কাদা লাগিয়ে বসে থাকার সুন্দর এক পরামর্শ দিয়েছে পুষ্পকে এবং সেই কাজ করছে দুইজন। আর এই বিষয়টা এসে দেখেছেন তৈয়ব আলী। সে তো রীতিমতো অবাক হয়েছে তাদের এই কর্মকান্ড দেখে। ফজলু চাচা কেউ বিষয়টা দেখানোর চেষ্টা করেন। এমনকি এই বিষয়ে সে নিজেও প্রভাবিত হয়।

Screenshot_20240605-155556.jpg

🌻স্ক্রিনশট: ইউটিউব🌻




এমন একটি মুহূর্তে দেখা যায় তৈয়ব নিজেই তার মুখে কাদা লাগানো শুরু করেছে এক বাঁশ বাগানের নিচে বসে। কিন্তু এমন দৃশ্যটা ফজলু চাচা দেখে ভেবেছিলেন সে কাদা খাওয়াই ব্যস্ত রয়েছেন। তাই তাকে উদ্ভট প্রশ্ন করেছিলেন, কাদা খেতে কেমন লাগে লবণ দিয়েছে কিনা ইত্যাদি। তার এমন পাগলামি কথাবাত্রা শুনে তৈয়ব বারবার উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেছে কিন্তু কিছুতেই ফজলু চাচা বুঝতে চাইনি তাই তৈয়ব রাগ করে কাদা ফেলে চলে যায়। কিন্তু লক্ষ্য করা যায় ওয়েব চাচা, সেই কাদাগুলো খালে করে নিয়ে তৈয়বের পিছু পিছু দৌড়াতে থাকে এবং বলতে থাকে তৈয়ব খেয়ে যাও। অর্থাৎ সে তার পাগলামি দেখিয়েই চলেছে।

Screenshot_20240605-155616.jpg

🌻স্ক্রিনশট: ইউটিউব🌻




নাটকের শেষ দিকে লক্ষ্য করা যায় বৈদেশিক হাসান পুষ্পকে পরীক্ষা করার জন্য সে তার জিনিসপত্র গুছিয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার ভান করছে। সে মূলত পরীক্ষা করে দেখতে চাই হাসান চলে গেলে পুষ্পের অনুভূতি কেমন হবে। আর তার এমন কর্মকাণ্ড দেখে বেশ বিরক্তিকর করলো পুষ্প। হাসান যখন পুষ্পের বাড়ির বেড়ার পাশে বসে গিটার বাজায়,এই মুহূর্তে পুষ্প একটি পাত্রে পানি এনে তার মাথার উপর ঢেলে দেয়। অর্থাৎ এখানেই পুষ্পের রাগের প্রকাশ ঘটে অতি গোপন আনন্দের সাথে। তবে হাসান কিন্তু এ বিষয়টা খুব সহজে হাসিমুখে মেনে নেয়।

Screenshot_20240605-155816.jpg

🌻স্ক্রিনশট: ইউটিউব🌻


99pyU5Ga1kwqSXWA2evTexn6YzPHotJF8R85JZsErvtTWYsppmXccekHQtuRnvumd4YXJL6tgu3HeQ9kVdaMY7Ztny91Kmy6WbCfuPPL5AaxDjDtXQqm2QqLmK5DNCPD34-1.png

ব্যক্তিগত মতামত:

এ নাটকটা আমি খুবই পছন্দ করে থাকি। কতবার যে দেখেছি তার ঠিক নেই। একবার দেখতে গিয়ে তিনবার দেখেছি টেনে টেনে আবার ব্যাকে এসে দেখেছি। ঠিক এভাবে প্রায় প্রত্যেক বছরে আমার দেখা চলে এ নাটকটা। তাহলে এতে ধারণা করতে পারেন কতটা ভালো লাগা এর মধ্যে রয়েছে। আর সেক্ষেত্রে এই দশম পর্বে তৈয়ব আর ফজলু চাচার অভিনয় আমাকে মুগ্ধ করে। কারণ এ নাটকের এই পর্বে ফজলু চাচার পাগলামি বেড়ে চলতে থাকে এমনকি জল চিকিৎসা শুরু হয়। এদিকে তৈয়েবের বেশ আনন্দের অভিনয় এখানে প্রকাশ পেয়েছে। একদিকে গ্রামের নতুন অতিথি মেয়েকে সাথে নিয়ে আসা গানের ওস্তাদের দলে আরেক দিকে পুষ্প ও হাসানের কাদামাখার দৃশ্য দেখে অবাক হয়ে নিজেও তার মুখে মাখার চেষ্টা করে। আর এভাবেই নাটকের সবচেয়ে হাসি আনন্দের অভিনয় করেছেন তৈয়ব ও ফজলু চাচা। তাই বলতে পারি প্রথম থেকে দশ পর্ব পর্যন্ত সবচেয়ে আনন্দদায়ক পর্ব ছিল এটা এবং এখানে যেন দর্শকের মন জয় করেছে হান্ডেটে হান্ডেট পার্সেন্ট।


ব্যক্তিগত রেটিং:

৯.৭৫/১০


নাটকের লিংক



রিভিউটা ভিজিট করার জন্য ধন্যবাদ।

received_434859771523295.gif

আমার পরিচয়

আমি মোছাঃ সিমরান জারা। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সদস্য সুমন জিরো নাইন এর পরিবার। আমার বাসা গাংনী মেহেরপুর। আমি একজন গৃহিণী। আমি ফটোগ্রাফি, রেসিপি পাশাপাশি ব্লগ করতে বেশি পছন্দ করে থাকি। এছাড় বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করতে ভালো লাগে। আমি এসএসসি পাশ করেছি। গাংনী ডিগ্রী কলেজে অধ্যায়ণরত রয়েছি।


qjrE4yyfw5pEPvDbJDzhdNXM7mjt1tbr2kM3X28F6SraZjhKfwarvyppgw9vqb9HZvwjHzdVYbXjNSwmxX8BvQtkJibkzjkMfqSg4GHwc6sRTpcDcvAvyxra.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

আসলে এই ধরনের ধারাবাহিক নাটক গুলো আমার খুব ভালো লাগে। কেননা এই নাটকগুলোতে অনেক কিছু শেখার আছে। এছাড়াও আপনার নাটকের রিভিউটি যখন পড়ছিলাম তখন মনে হচ্ছিল যে নাটকটি আমি দেখি। কিন্তু এই সব ধারাবাহিক পর্বের নাটক দেখার আর কখনো সময় হয় না। যদিও বাংলাদেশী নাটকের যেসব অভিনেতা এবং অভিনেত্রী অভিনয় করে তাদের অভিনয় এক কথায় অসাধারণ হয়। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটা নাটকের রিভিউ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

ভালো লাগলো ভাইয়া

উরে যায় বক পক্ষি হুমায়ন আহমেদ এর খুবই চমৎকার এক সৃষ্টি অনেক বার দেখা হয়েছে তবুও যেনো নতুন লাগে।খুব সুন্দর রিভিউ করেছেন আপনি।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর করে উপস্থাপন করার জন্য।

অনেক ভালো লেগেছে আপনার মন্তব্য।

উড়ে যায় বকপক্ষী নাটকটার বেশ কয়েকটা পর্বের রিভিউ আমার পড়া হয়েছে। দেখতে দেখতে এই নাটকের দশটা পর্ব শেষ হয়ে গিয়েছে। এরকম গ্রাম্য নাটক গুলো অনেক সুন্দর লাগে আমার কাছে দেখতে। এই নাটকের পুরো কাহিনী কিন্তু অনেক সুন্দর। এটার রিভিউগুলো পড়ে নাটকের পুরো কাহিনী জেনে নিতে পেরে খুব ভালো লাগতেছে। আশা করছি আপনি খুব তাড়াতাড়ি আমাদের মাঝে নাটকটার ১১ তম পর্ব নিয়ে হাজির হবেন।

খুব সুন্দর মন্তব্য করেছেন

আপনার শেয়ার করা উড়ে যায় বকপক্ষী নাটকটার বেশিরভাগ পর্বের রিভিউ আমি পড়ার চেষ্টা করেছি। কারণ এই রকম নাটক গুলো আমার কাছে খুব ভালো লাগে। যদিও সময়ের কারণে দেখা হয় না। কিন্তু রিভিউ পড়াটা হাতছাড়া করতে চাই না। এত মিনিটের একটা নাটক 2 মিনিটেই কাহিনীটা জেনে নিতে পারি, তাই মিস করতে ইচ্ছে করে না। আজকেও একটা পর্বে রিভিউ পড়ে ভালো লাগলো। এখন তো অপেক্ষায় আছি এর পরবর্তীতে কি হবে এটা জানার জন্য।

আপনার কথা জেনে খুশি হলাম