আসসালামু আলাইকুম। আমার বাংলা ব্লগ এর সকল বন্ধুদের শুভেচ্ছা। আশা করছি আল্লাহর অশেষ রহমতে আপনারা সকলে বেশ ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের অনেক অনেক দোয়া সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর অশেষ রহমতে আমি ভালো আছি। আমরা যেন সর্বদা ভালো থাকতে পারি সে কারণে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি।
আজ আমি আপনাদের মাঝে বাস্তব জীবনের কিছু ভয়ংকর পরিস্থিতি শেয়ার করার জন্য উপস্থিত হয়েছি। সাধারণত আজকের এই পরিস্থিতি আমাদের সকলের মধ্যেই বিরাজমান। কি এই ভয়ংকর পরিস্থিতি আসুন পোস্টের মাধ্যমে আমরা জেনে আসি।
বর্তমান পরিস্থিতি টেকনোলজির ভেতর দিয়ে আমরা অতিক্রম করছি। টেকনোলজি আমাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করেছে এবং আমরা সবসময়ই আমাদের নিজেদেরকে আরও বেশি উন্নত স্মার্ট ও আধুনিক করতে প্রতিনিয়ত অনলাইনে সেবা গ্রহণ করছি। যোগাযোগ থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক সংকট দূরীকরণ প্রায়ই সমস্ত ক্ষেত্রে আমরা টেকনোলজির ব্যবহার করছি এবং প্রতিনিয়ত আমাদের জীবনের সাথে তা জড়িত।
তবে আমরা অনেকেই অবগত নেই যে এই অতিরিক্ত টেকনোলজি হয়তোবা আমাদের জীবনের সাধারন মান ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
আমরা আমাদের সুন্দর লাইফস্টাইল এর জন্য বন্ধুদের সাথে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার ও প্রায় সমস্ত ক্ষেত্রেই টেকনোলজির উপর নির্ভ। তবে এই অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা আমাদের জীবনের গতি কমিয়ে দিয়েছে এবং আমরা এখন প্রায় উল্টো পথে চলতে শুরু করেছি।
আমার নিজের জীবনের শৈশব থেকে আমি বলতে পারি। আমি যখন শৈশবে বড় হয়েছি তখন বন্ধুদের সাথে খেলাধুলা করতাম। ব্যাট বল ফুটবল কানামাছি ইত্যাদি খেলাধুলায় নিজেকে আসক্ত করতাম।
যখন কোন বিনোদনের প্রয়োজন হতো তখন আমাদের গ্রাম্য বাউল গান ছাড়াও অন্যান্য বিভিন্ন সংস্কৃতি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতাম এবং সেগুলো ছিল আমাদের বিনোদনের একমাত্র মাধ্যম। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা টেকনোলজির ওপর এতটাই আসক্ত হয়ে গিয়েছি প্রায় সমস্ত ক্ষেত্রে এখন আমরা টেকনোলজির ব্যবহার করছি।
বিশেষ করে আমি বিনোদনের কথা বলি। এখন যদি আমরা বিনোদনের জন্য প্ল্যাটফর্ম খুঁজি তাহলে টিক টক ইনস্টাগ্রাম ও facebook youtube এর ভিডিওর মাধ্যমে এখন আমরা আমাদের বিনোদন খুঁজে বেড়াই। সকালে ব্রাশ করার পূর্ব মুহূর্ত থেকে রাতে ঘুমোতে যাওয়া পর্যন্ত সমস্ত ক্ষেত্রে একটি স্মার্ট ডিভাইস আমাদের সাথে থাকে এবং আমরা এই ডিভাইসের প্রতি এখন বর্তমানে আসক্ত।
বিনোদন থেকে শুরু করে প্রায় সকল ক্ষেত্রে যখন আমরা এই ডিভাইস ব্যবহার করছি তখন আমরা পুরোপুরি সেই ডিভাইসের প্রতি আসক্ত। কিন্তু আমরা আদৌ জানিনা এই ডিভাইস গুলো আমাদের জীবনযাত্রার মান কতটা অবনত করেছে।
যদিও এই ডিভাইস আমাদের বিনোদন দেয় কিন্তু এই সাময়িক বিনোদন আমাদের জন্য অত্যন্ত ভয়াবহ। আমরা প্রতিনিয়ত একটার পর একটা বিনোদন উপভোগ করছি এবং শুধুমাত্র কয়েক সেকেন্ড এর বিনোদন। আর এই সকল বিনোদনগুলো আমাদের মস্তিষ্ক ব্যাঘাত ও বিকৃতি করছে প্রতিনিয়ত। কারণ এই সামান্য বিনোদন গুলো আমাদের মস্তিষ্কের উত্তেজনা তৈরি করে এবং একটি পর আরো একটি বিনোদন পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করে।
আবার আমরা সকলেই জানি অতিরিক্ত আসক্তি যেকোন কিন্তু আমাদের জন্য অত্যন্ত ভয়াবহ। কিন্তু যখন সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরে আমরা স্মার্টফোন এলার্ম এর মাধ্যমে ঘুম থেকে উঠে এবং ঘুম থেকে ওঠার পরে আমাদের বিনোদনের পর্ব শুরু হয়ে যায়। শুধুমাত্র নিজের জীবনকে কিছুটা বিনোদন দেওয়ার জন্য আমরা আমাদের দ্বীনের সাধারণ কার্যাবলী সম্পন্ন করতে পর্যন্ত পারি না। এমনকি আজকের কাজ আমরা আগামী দিন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি এবং শুধুমাত্র এই ডিভাইসের মধ্যেই আমাদের জীবন আসক্ত হয়ে গিয়েছে।
অতিরিক্ত গেমস খেলা, বিনোদনের জন্য বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া ও প্রায় যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম হিসেবে আমরা সোশ্যাল মিডিয়া বেছে নিয়েছি। তবে আমাদের এই অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে আমরা নিজেদেরকে শেষ করে ফেলছি এবং আমাদের বাস্তব জীবনের কাজগুলো সত্যিই ব্যাঘাত ঘটছে প্রতিনিয়ত।
বর্তমান পরিস্থিতিতে এখন আর ছেলে মেয়েগুলো বাহিরে ব্যাট বল নিয়ে খেলতে যায় না। গ্রুপ করে ফ্রি ফায়ার এর মতো গ্রুপিং গেমগুলোতে সকলেই আসক্ত। একা একা কথা বলা এমনকি পরিবারের সাথে খারাপ আচরণের একমাত্র কারণ হলো এই ইনডোর গেমসগুলো। যেখানে আউটডোর গেমস আমাদের স্বাস্থ্য মস্তিষ্ক ও মেজাজ সুন্দর রাখতে সাহায্য করে সেখানে ডিভাইস এর গেমস আমাদের মস্তিষ্ককে বিগড়ে ফেলতে বিন্দুমাত্র দ্বিধাবোধ করে না। এমনকি আমাদের অলস ব্যক্তি হিসেবে সমাজে পরিচয় করে দেওয়ার জন্য এই ডিভাইসের গেম গুলো যথেষ্ট।
বিনোদন, শরীরচর্চা ও অর্থনৈতিক সকল ক্ষেত্রে আমরা এখন একটি আসক্তের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। আমরা সকলে জানি অতিরিক্ত আসক্তি কর কোন জিনিস আমাদের পক্ষে ভালো না। যদিও উন্নত ও আধুনিক বিশ্বে টেকনোলজি অত্যন্ত অবদান রাখছে আমাদের দৈনন্দিন প্রতিটি ক্ষেত্রে তবে তারপরেও এর অতিরিক্ত ব্যবহার আমি মনে করি আমাদের এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ আমার নিজের দিক থেকে আমি বিষয়টি উপলব্ধি করতে পারছি এবং অতিরিক্ত সোশ্যাল মিডিয়া ও শর্ট বিনোদন আমাদের জীবনটাকে সত্যি শেষ করে দিচ্ছে তিলে তিলে। মানব জীবনের সঠিক কাজ কি এবং পরিকল্পনা কি এর থেকে আমরা অনেক দূরে চলে এসেছি এবং এর থেকে দূরে চলে যাব আরও বেশি। মানুষের সাথে পারিবারিক সম্পর্ক বজায় রাখার ক্ষেত্রেও আমরা বেশ জরতা দেখাচ্ছি।
সুতরাং আমার ব্যক্তিগত মতামত থেকে আমি বলতে পারি আমাদের এই অতিরিক্ত সোশ্যাল মিডিয়া আসক্তি ও ভিডিও গেমস ও ইনডোর গেমস থেকে বের হয়ে আসতে হবে। অন্যথায় আমরা আমাদের স্বাভাবিক জীবন হারিয়ে ফেলবো এবং আমাদের সন্তানরা তাদের স্বাভাবিক জীবনের পরিকল্পনা ও বাস্তব রূপ সম্পর্কে অবগত কখনোই হতে পারবে না। তাই আমাদের এখানেই থামা উচিত এবং একটি পরিপূর্ণ সুন্দর ও জীবন যাপনের জন্য অতিরিক্ত ডিভাইস আসক্তি ও সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে আমাদের যথেষ্ট সচেতনতা অবলম্বন করা অত্যন্ত জরুরী। আমাদের সঠিক সিদ্ধান্ত পারে আমাদের সুন্দর জীবনটাকে আরও বেশি পরিপূর্ণতা দান করতে এবং শিশুদের সুন্দর বিকাশে আরো বেশি অবদান রাখতে।
আশা করছি আজকের পোস্ট আপনাদের ভাল লেগেছে। মূল্যবান সময় দিয়ে পোস্ট পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
আমি
আমি মোহাম্মদ আকাশ সরদার
। জাতীয়তা বাংলাদেশী। আমি ব্লগিং করতে অনেক বেশি ভালোবাসি। যদিও আর্ট আমার অনেক বেশি পছন্দ তবে আর্টওয়ার্ক কাজের জন্য আমার হাত একদম বাজে। ভ্রমণ এবং ফটোগ্রাফি আমার সব থেকে প্রিয় বিষয়। নতুন নতুন জায়গা ভ্রমণ এবং নতুন নতুন মানুষের সঙ্গে পরিচিত হতে বেশ ভালো লাগে। অসহায় মানুষদেরকে সাহায্য করতে পারলে মনের ভেতরে আনন্দ আসে। সততা এবং নিষ্ঠার সঙ্গে মানুষের সেবা করতে চাই এবং সকলের প্রিয় ব্যক্তি হয়ে এই সমাজে বসবাস করতে চাই।
https://x.com/steemforfuture/status/1839191782082715915?t=T9XjK2Y8a_f6yz_lVUMs3w&s=19
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনি ঠিক বলেছেন ভাইয়া। যত দিন যাচ্ছে তত নোংরা ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ পাচ্ছে। কিন্তু আফসোস এগুলো কেন বন্ধ করে না দেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীরা। এর প্রভাব প্রত্যেকটা মানুষের উপর পড়ছে। বিবাহিত অবিবাহিত সর্বশ্রেণীর মানুষ নিতে আসক্ত হচ্ছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit