স্মৃতিকথামূলক রচনা : স্টিমিট বা "আমার বাংলা ব্লগ" সম্পর্কে স্মৃতিময় যে কোনো মৌলিক রচনা
আসসালামু আলাইকুম। আমার বাংলা ব্লগ পরিবারকে আমার পক্ষ থেকে তৃতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে জন্মদিনের শুভেচ্ছা। আমার বাংলা ব্লগ পরিবার ইতিপূর্বেই তিনটি বছর আনন্দের সহিত অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছে এবং আমরা সকল ব্যবহারকারী আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সাথে কাজ করতে পেরে চরম আনন্দিত।
এরই ধারাবাহিকতায় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি থেকে বিভিন্ন কার্যক্রম এর অংশগ্রহণ ও বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। এরই ভিতরে আমার বাংলা ব্লগের শ্রদ্ধেয় ফাউন্ডার @rme দাদা একটি চমৎকার প্রতিযোগিতার ঘোষণা করেছেন। ফটোগ্রাফি ,DIY , ও স্মৃতিকথা মূলক রচনা নিয়ে চমৎকার এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পেরে আমি আনন্দিত।
ক্রেডিট: @hafizullah
আমার বাংলা ব্লগ পরিবার ইতিপূর্বেই ধীরে ধীরে হাটাহাটি পায় পায় করতে করতে প্রায় তিন বছর অতিক্রম করে ফেলেছে। স্টিম প্লাটফর্ম এর সর্বসেরা কমিউনিটি এবং সর্বশ্রেষ্ঠ কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ।
বিশেষ এক ব্যক্তির মাধ্যমে আমি আমার বাংলা ব্লগে কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলাম এবং আমি তাকে আমার ব্লগিং গুরু হিসেবে জানি। তার কথা না বললেই নয় এবং তিনি আমাদের শ্রদ্ধেয় হাফিজুল্লাহ ভাই। মূলত তার একটি চমৎকার পোস্ট এর মাধ্যমে আমি আমার বাংলা ব্লগ সম্পর্কে জেনেছিলাম এবং আমি এখানে কাজ শুরু করি। এরপর ধীরে ধীরে আমার যাত্রা খুব ভালো হতে থাকে।
তবে এই স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে প্রবেশের একটি চমৎকার গল্প রয়েছে আমার জীবনে। চলুন আজকে আমি কিভাবে স্টিম প্ল্যাটফর্ম এ প্রবেশ করেছিলাম সেই স্মৃতিচারণ নিয়ে একটি ছোট্ট রচনা উপভোগ করে আসি।
তখন 2017 সাল । পরিবারের অবস্থা বেশ বাজে ছিল। বাবা ব্যবসায়ের কাজে অনেক ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল এবং এক সময় আমাদের পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা একদম ভেঙে পড়েছিল। মধ্যবিত্ত এই পরিবারে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা ঋণ হয়ে গিয়েছিল এবং একদিন বাবা এবং মা রাতে ঢাকায় চলে এসেছিল।
ঢাকাই চলে আসার পর আমাদের যে একটি মুদিখানার দোকান ছিল দোকানটা অন্য জনের দখলে চলে গিয়েছিল এবং আমি বাড়িতে একা ছিলাম। কারণ তখন আমার ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষার সময় চলে এসেছিল। তাই আমি পরিবারের সাথে ঢাকায় না এসে বাড়িতে ছিলাম এবং তখন আমাকে বাড়িতে অনেক পরিশ্রম করতে হতো।
আমি আমার বড় বোন ও বড় চাচাদের বাসায় বিভিন্ন সন্ধ্যায় বিভিন্নভাবে খেতাম। তবে এর জন্য আমাকে অনেক পরিশ্রম করতে হতো এবং আমার লেখাপড়ার খরচ চালানোর জন্য আমাকে অনেক কষ্ট করতে হতো।
ইন্টারমিডিয়েটে আমার সাইন্স থাকায় সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরে আমি কলেজে গিয়ে কোর্স করতাম এবং কলেজ শেষ করে আবারও সেই কোর্স অর্থাৎ কেমিস্ট্রি বায়োলজি কোর্সে অংশগ্রহণ করতাম। একদিকে যদি আমি কলেজ করতাম তাহলে কলেজে যাবার খরচ ম্যানেজ করতে পারতাম না এবং অপরদিকে কলেজে যাবার খরচ ম্যানেজ করতে গেলে আমি কলেজে যেতে পারি।
খুব বাজে একটা অবস্থা ছিল।এরপর আমি বিকেলে বন্ধুদের সাথে একদিন খেলতে গিয়েছিলাম এবং আমার এক বন্ধুর মাধ্যমে আমি জানতে পারলাম আমার এক বড় ভাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় লেখাপড়া করে এবং সে অনলাইন থেকে আর্নিং করে। তাই আমারও আর্নিং করার বেশ ইচ্ছা জেগেছিল।
আমি আমার বড় ভাইয়ের নাম্বার সংগ্রহ করলাম এবং তার সাথে কথা বললাম। প্রথমত আমাকে সে বলেছিল আমি যে প্ল্যাটফর্মে কাজ করব সেখানে কাজ করতে হলে আমাকে সর্বনিম্ন 2350 টাকা অগ্রিম জমা দিতে হবে। এবং আমি কিছুটা ক্যাশব্যাক পাব।
আমার কাছে একটি samsung এর ট্যাব ছিল। আমি ট্যাবটা বিক্রি করে দিলাম এবং দ্রুত তার বিকাশ নাম্বারে আমি ২৩৫০ টাকা পাঠিয়ে দিলাম।
আমাকে একটি আইডি দেওয়া হয়েছিল এবং এক সপ্তাহ পরে সেই আইডি পরিবর্তন করে আমার একটি আইডি ওপেন করে দেওয়া হয়েছিল. এরপর আমি ধীরে ধীরে কাজ শুরু করেছিলাম।
বেশ ভালোভাবে আমি আমার ব্লগিং কার্যক্রম চালিয়ে গিয়েছিলাম। তবে মাঝখানে ডলার উইদ্যজনিত বিশেষ একটি সমস্যা দেখা দিয়েছিল এবং এর জন্য আমাকে সমস্ত সাপোর্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।
এরপর আমি সমস্ত পথ হারিয়ে ফেললাম এবং পরীক্ষা শেষ হয়েছিল আমার ইতিমধ্যেই। তাই আমি ঢাকায় পরিবারের কাছে ফিরে আসলাম এবং ঢাকায় আসার পর আমি একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে চাকরি নিলাম। চাকুরী নেওয়ার পর আমাকে এক সপ্তাহ রাত্রেও এক সপ্তাহ দিনের শিফটে কাজ করতে হতো।
সেদিন আমি রাত্রে কাজ করছিলাম। এমন সময় হঠাৎ করেই আমি স্টিম মার্কেট ভ্রমণ করেছিলাম এবং স্টিম ডলার সম্পর্কে অবগত হয়েছিলাম। প্রায় একটি ডলারের মূল্য $৬ এর ওপরে। আমি চিন্তা করেছিলাম, সারাদিনে মাত্র একটি ডলার ইনকাম করতে পারলেই আমার চাকুরী অপেক্ষা ডাবল ইনকাম হবে।
যেহেতু আমি রাত্রে নাইট করতাম তাই প্রোডাকশন বুঝিয়ে দিতাম এবং আমি রাত্রে গিয়ে কিভাবে স্টিমিট ডলার উইথড্রো করতে হয় সেই বিষয়ে ইউটিউবে বিভিন্ন ভিডিও দেখিয। অবশেষে আমার সামনে একটি কার্যকরী ভিডিও এসেছিল এবং আমি খুব সহজে আমার ডলার গুলো উইদ্র করতে শিখেছিলাম।
আমার এই কার্যক্রম শিখতে আমি মোট ১৭ রাত না ঘুমিয়ে কাটিয়েছি। অর্থাৎ পুরো রাত প্রোডাকশন বুঝিয়ে দিতাম এবং আমি পুরো দিন শুধুমাত্র কিভাবে ডলার উইথড্রো করতে হয় সেই বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করার পর অবশেষে সফলতা পেয়েছিলাম। আলহামদুলিল্লাহ, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে আমি আবারও স্টিমিট এ ফিরে আসতে পেরেছিলাম। এবং আমি আমার কার্যক্রম সঠিকভাবে সম্পন্ন করি।
আমার বাংলা ব্লগ এর ভূমিকা
যদিও আমি আমার কার্যক্রম আয়ত্ত করতে পেরেছিলাম তবে এর পরেও আমার বাংলা ব্লগের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত বেশি। কারণ আমি তখন থেকেই আমার বাংলা ব্লগে কাজ শুরু করে এবং আমার এখানে কাজ করতে অনেক ভালো লাগ। কারণ স্টিমিট প্লাটফর্মে একমাত্র বাংলায় যে কমিউনিটি রয়েছে তা হল আমার বাংলা।
এরপর ধীরে ধীরে আমি এবিবি স্কুল এর ক্লাস করলাম এবং এখান থেকে অনেক কিছু শিখেছিলাম।
যাই হোক আমি নিজেকে পরিপূর্ণতা করার চেষ্টা করেছিলাম এবং অবশেষে আমার বাংলা ব্লগ আমাকে সম্পূর্ণ পরিপূর্ণ হতে সাহায্য করেছিল।
সুতরাং, আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির আজকের এই জন্মদিনে আমার পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। বিশেষ করে সমস্ত ক্রেডিট আমার বাংলা ব্লগের ফাউন্ডার @rme দাদা। কারণ উনার মাধ্যমেই আমরা চমৎকার একটি কমিউনিটি পেয়েছি। চমৎকার একটি পরিবার পেয়েছি এবং পাশাপাশি আমার বাংলা ব্লগের সকল এডমিন প্যানেল ও মডারেটর প্যানেলের প্রতি অনেক অনেক শুভেচ্ছা শুভকামনা ও ভালোবাসা।
টিকে থাকুক আমার বাংলা ব্লগ ব্লকচেইন এ আজীবন। শুধু আমাদের প্রজন্ম নয়। আগামীতে যতগুলো প্রজন্ম আসবে তারা আমার বাংলা ব্লগ সম্পর্কে জানবে এবং তারাও যেন এখানে কাজ করতে পারে সেই দোয়া করি। আমার বাংলা ব্লগের একজন গেস্ট ব্লগার হিসেবে আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সর্বোচ্চ উন্নতি ও সফলতা কামনা করছি।
পরিশেষে, অন্তরের অন্তস্থল থেকে তৃতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে শুভ জন্মদিন আমার বাংলা ব্লগ। দীর্ঘজীবী হও আমার বাংলা ব্লগ। পাশাপাশি দীর্ঘজীবী হোক আমার বাংলা ব্লগের শ্রদ্ধেয় ফাউন্ডার @rme দাদার। অন্তরের অন্তস্থল থেকে অনেক অনেক দোয়া শুভেচ্ছা ও শুভকামনা। ভালোবাসা অবিরাম।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
|250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আমি
আমি মোহাম্মদ আকাশ সরদার
। জাতীয়তা বাংলাদেশী। আমি ব্লগিং করতে অনেক বেশি ভালোবাসি। যদিও আর্ট আমার অনেক বেশি পছন্দ তবে আর্টওয়ার্ক কাজের জন্য আমার হাত একদম বাজে। ভ্রমণ এবং ফটোগ্রাফি আমার সব থেকে প্রিয় বিষয়। নতুন নতুন জায়গা ভ্রমণ এবং নতুন নতুন মানুষের সঙ্গে পরিচিত হতে বেশ ভালো লাগে। অসহায় মানুষদেরকে সাহায্য করতে পারলে মনের ভেতরে আনন্দ আসে। সততা এবং নিষ্ঠার সঙ্গে মানুষের সেবা করতে চাই এবং সকলের প্রিয় ব্যক্তি হয়ে এই সমাজে বসবাস করতে চাই।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
https://x.com/steemforfuture/status/1800243958586728707?t=Hivdj7FQcC_2rMEQxSn_mg&s=19
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit