ডিজাইনটি ক্যানভা দিয়ে তৈরি
আসসালামু আলাইকুম। আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুদের শুভেচ্ছা। আশা করছি সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর অশেষ রহমতে আপনারা সকলেই বেশ ভাল আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের অনেক অনেক দোয়া এবং আল্লাহর অশেষ রহমতে আমিও বেশ ভাল আছি। আজ আমি আপনাদের মাঝে আমার শৈশব ও মার্বেল খেলা বেশ কিছু স্মৃতি শেয়ার করতে চাই। কারণ আমার শৈশবের পুরোটা সময় জুড়ে অনেক স্মৃতি রয়েছে এবং সেই সকল স্মৃতিগুলোর মধ্যে মার্বেল খেলা ছিল অন্যতম।
শৈশবে প্রত্যেক মানুষের স্মৃতি থাকে। শৈশবের স্মৃতিগুলো অত্যন্ত আনন্দদায়ক এবং সেই সকল স্মৃতিগুলো আজীবন আমাদের অন্তরে গেথে থাকে। শৈশব পেরিয়ে যখন আমরা যৌবনকালে চলে আসি তখন আমাদের সেই শৈশবের স্মৃতি গুলো মনে হয়।
তেমনি শৈশবে আমার সব থেকে ভালো এবং সুন্দরতম আনন্দদায়ক শৈশব ছিল মার্বেল খেলা নিয়ে। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরেই কোন প্রকার নাস্তা না করেই পকেট এ কয়েকটা মার্বেল নিয়ে বাহিরে দৌড় দিতাম। কারণ বাড়ির লোকজন যদি পকেটে মার্বেল দেখে তাহলে অনেক বকা দেবে এমনকি অনেক গালাগালি করতে পারে। তবে তারপরেও এতটাই খেলার প্রতি আসক্ত ছিলাম ঘুম ভেঙে গেলেই বন্ধুর বাসায় গিয়ে মার্বেল খেলার জন্য বন্ধুকে ডাকতাম। বন্ধুর পরিবার থেকে অনেক বকাবাজি করলেও বন্ধু বের হয়ে আসতো এবং একটি আম বাগানের নিচে গিয়ে বন্ধুরা মিলে মার্বেল খেলতাম।
মার্বেল খেলা শুরু করতাম খুব সকালে এবং কিছুক্ষণ সময় খেলতে না খেলতে পরিবার থেকে কেউ না কেউ এসে বকা দিত এবং মার্বেল গুলো পুকুরে ছড়ে দিত। তখন কান্না শুরু করতাম এবং কান্না করতে করতে বাসার দিকে দৌড়ে যেতাম। বাসায় গিয়ে খাবার না খেয়ে যখন স্কুলে চলে যেতাম তখন পরিবার থেকে আবারও জোরপূর্বক এসে সকালের নাস্তা করাতো এবং স্কুলের ব্যাগ কলম গুছিয়ে দিত স্কুলে যাবার জন্য।
তবে স্কুলে যাবার সময় ব্যাগের ভেতরে আগে থেকেই মার্বেল চুরি করে রেখে দিতাম। স্কুলে গিয়ে কোন এক বাগানে বন্ধুদের সাথে মার্বেল খেলতে বসতাম। যদিও কোনদিন টিচার পকেট চেক করে মার্বেল পেতো তখন অনেক বকা দিত এবং পরিবারের কাছে বিচার দিত।
মার্বেল খেলার এত নেশা ছিল যে টিফিন টাইমে বাসায় খেতে না এসে মার্বেল খেলতাম। টিফিনের জন্য যে এক ঘন্টা সময় দেওয়া হতো ওই সময়টা মার্বেল খেলে অতিক্রম করতাম। মার্বেল খেলতে খেলতেই যখন স্কুলে টিফিনের ঘন্টা শেষ হয়ে যেত তখন আমাদের মার্বেল খেলার নেশা শেষ হতো না।
ছুটির পরে আবারো বন্ধুদের সাথে মার্বেল খেলতাম এবং তখন কোন বড় ভাই বাগানের ভেতরে ছুটির পরে মার্বেল খেলতে দেখলে অনেক বকা দিত এবং তখন আমাদেরকে বাসায় তাড়িয়ে দিত।
বাসায় ফিরে আবার সেই একই কাজ। বাসায় ফেরার পর কোনরকম বিকেল বেলা দুপুরের খাবার শেষ করতাম এবং খাবার খেয়েই পকেটে মার্বেল নিয়ে দৌড় দিতাম। এদিকে পরিবারে বিভিন্ন বাজার করার জন্য বলা হলেও সেই কথা কানে নিতাম না।
আমার এখনো বেশ ভালো মনে আছে। একদিন বন্ধুদের সাথে মার্বেল খেলছিলাম। মার্বেল খেলতে খেলতে বিকেল হয়ে গিয়েছিল এবং আমাদের এলাকার প্রায় ১০ জন ছেলে একসঙ্গে মার্বেল খেলছিলাম এবং সেখানে একটি মেলার মত অবস্থান তৈরি হয়েছিল।
মার্বেল খেলছিলাম এবং বেশ আনন্দ লাগছিল। আমার একটি বিষয় খুব ভালো প্রতিভা ছিল আর তা হল মার্বেল খেলায়। আমি এলাকা চ্যালেঞ্জ করে মার্বেল খেলতাম এবং আমি একটি মার্বেল দিয়ে আরেকটি মার্বেল কে মেরে ভেঙে ফেলার সক্ষমতা রাখতাম। আমি যে মার্বেলকে টার্গেট করে মারতাম সেই মার্বেলটা ভেঙে যেত এবং আমি হান্ড্রেড পার্সেন্ট সেই মার্বেল কে টাচ করা সক্ষমতা রাখতাম।
একদিন বিকেলে অনেক বন্ধুরা মিলে মার্বেল খেলছিলাম এবং ফেলতে খেলতে প্রায় সন্ধ্যা পার হয়ে গিয়েছিল। ইতিপূর্বেই আমার ছোট আঙ্কেল আমাকে মার্বেল খেলা বন্ধ করে বাড়িতে গিয়ে বই নিয়ে পড়তে বসার কথা বলেছিল। তবে আমি তাদের কথা না শুনে মার্বেল খেলছিলাম এবং কিভাবে সন্ধ্যা হয়েছে তা আমি বলতে পারি না।
ইতিপূর্বেই দূর থেকে দেখেছিলাম অন্ধকারে আমার ছোট আঙ্কেল একটি লাঠি নিয়ে আমাকে মারার জন্য এসেছিল। তখন আমি খেলাধুলা বাদ দিয়ে এক দৌড় দিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা। তবে সেদিন আমি আর ছাড় পেয়েছিলাম না।আমার ছোট আঙ্কেল আমাকে বাসায় গিয়ে লাঠি দিয়ে অনেক মার দিয়েছিল এবং সেই বিষয়টি আমার এখনো বেশ ভালো মনে আছে।
মাঝে মাঝে বন্ধুদের সাথে আম বাগানে অথবা বাঁশ বাগানের নিচে, তাছাড়াও মাঝে মাঝে কৃষি জমির ভেতরে লুকিয়ে লুকিয়ে আমি মার্বেল খেলেছি। মার্বেল খেলতে খেলতে যখন অন্ধকার হয়ে যেত তখন টর্চ লাইট জ্বালিয়ে পর্যন্ত আমি মার্বেল খেলেছি এবং এটি আমার সর্বোচ্চ শৈশবের স্মৃতি।
শৈশবের স্মৃতি সকলের বেশ মধুময় হয়ে থাকে। ঠিক তেমনি আমারও শৈশবের স্মৃতি ছিল একটা মধুময় স্মৃতি। এই স্মৃতি হঠাৎ করেই আজ মনে হল এবং আপনাদের মাঝে আমার শৈশবের স্মৃতি ও মার্বেল খেলা নিয়ে এই লাইফ স্টাইল ব্লগ শেয়ার করতে পেরে আমি আনন্দিত। আমি আশাবাদী আপনারাও আপনাদের শৈশবের স্মৃতি নিয়ে আমার বাংলা ব্লগ পরিবারকে ছোট্ট কোন ব্লগ উপহার দিবেন।
আজকে এ পর্যন্ত, তবে এখানেই শেষ নয় ! পরবর্তী খুব শীঘ্রই আগামী আপনাদের মাঝে আবারও নতুন কোন ব্লগ নিয়ে দেখা হচ্ছে। সে পর্যন্ত সকলেই সুস্থ সুন্দর এবং ভালো থাকুন। আজকের মত বিদায় বলছি !!!¡
VOTE @bangla.witness as witness
OR
|250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আমি
আমি মোহাম্মদ আকাশ সরদার
। জাতীয়তা বাংলাদেশী। আমি ব্লগিং করতে অনেক বেশি ভালোবাসি। যদিও আর্ট আমার অনেক বেশি পছন্দ তবে আর্টওয়ার্ক কাজের জন্য আমার হাত একদম বাজে। ভ্রমণ এবং ফটোগ্রাফি আমার সব থেকে প্রিয় বিষয়। নতুন নতুন জায়গা ভ্রমণ এবং নতুন নতুন মানুষের সঙ্গে পরিচিত হতে বেশ ভালো লাগে। অসহায় মানুষদেরকে সাহায্য করতে পারলে মনের ভেতরে আনন্দ আসে। সততা এবং নিষ্ঠার সঙ্গে মানুষের সেবা করতে চাই এবং সকলের প্রিয় ব্যক্তি হয়ে এই সমাজে বসবাস করতে চাই।
https://x.com/steemforfuture/status/1797953820246606191?t=IaLfAWEj8OuEFWnCZSSToQ&s=19
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমাদের শৈশবের এমন কিছু খেলা রয়েছে যেগুলোর কথা আমাদের মাঝে মাঝেই মনে পড়ে। আসলে শৈশবের সেই স্মৃতিময় দিনগুলো ছিল অনেক বেশি সুন্দর। যদিও বাবা মায়ের বকাঝকা তো অবশ্যই থাকতো। কিন্তু এইসব কিছুর মধ্য দিয়েও নানা রকম খেলাধুলা করতে অনেক বেশি ভালো লাগতো। সেই দিনগুলো যদি ফিরে পেতাম তাহলে সত্যি অনেক বেশি ভালো হতো। যদিও সেই দিনগুলো এখন আর ফিরে পাওয়া একেবারেই সম্ভব না। মার্বেল খেলা নিয়ে তো দেখছি আপনার জীবনে অনেক স্মৃতি রয়েছে। আপনার ছোট আঙ্কেল তো দেখছি আপনাকে অনেক বেশি মাইর দিয়েছিল। তবুও সেই স্মৃতিগুলো অনেক আনন্দের ছিল এটা বুঝলাম।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
😆
একদম ঠিক বলেছেন আপু। আমার আঙ্কেল আমাকে অনেক শাসনের ভেতরে রাখতো। তবে ছোটবেলায় মার্বেল খেলার নেশা আমি সবকিছু ভুলে যেতাম।
ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
শৈশবের স্মৃতিগুলো সব সময় অনেক সুন্দর হয়। শৈশবের বিভিন্ন খেলার স্মৃতিগুলো এখনো মনে পড়ে। আসলে সেই সময় গুলোর কথা মনে হলে অনেক ভালো লাগে। যদিও কখনো মার্বেল খেলা হয়নি। তবে আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া। আপনি অনেক সুন্দর করে নিজের অনুভূতি তুলে ধরেছেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
শৈশবের দিনগুলো সত্যি অনেক মিস করি। আপনার মত আমার বড় আপু রয়েছে। আমি তাদের সাথেও মার্বেল খেলে তাদেরকে পরাজিত করতাম এবং আমি অনেক আনন্দ পেতাম। আর আমার বড় বোন ইচ্ছা করে আমার কাছে মার্বেল খেলায় হেরে যেত আমাকে বিজয়ী ঘোষণা করার জন্য।।
আপু এখনো সময় পেলে মার্বেল দেখবেন। ইনভাইট করছে আপনাকে মার্বেল খেলার জন্য। দেখবেন অনেক মজার একটা খেলা।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অতিথি আমরাও এমন মার্বেল খেলেছি ভাই। আপনার এই পোস্ট দেখে কিন্তু সেই অতীতের দিনগুলো মনে পড়ে গেল। মনে পড়ে গেল পাড়াগাঁয়ের সমবয়সী বন্ধুদের সাথে খেলা করার অনুভূতি। হয়তো সেই দিন ফিরে পাবো না তবে এই সমস্ত পোস্টগুলোর মধ্য দিয়ে অনেক স্মৃতি স্মরণ করতে পারি। আর তখন যেন অন্যরকম প্রশান্তি মনের মধ্যে বিরাজ করে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
একদম ঠিক কথা বলেছেন ভাই। যদিও আমরা শৈশব ফিরে পাবো না তবে তার পরেও শৈশবের স্মৃতিগুলো আমাদেরকে মাঝে মাঝে শৈশবে নিয়ে যায়। অনেক ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য। শুভরাত্রি ভাই
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনাকে আর কি বলবো ভাই, মার্বেল খেলা নিয়ে তো আমার নিজেরও অনেক বেশি স্মৃতি রয়েছে ছোটবেলার। যেগুলো মনে পড়ে গিয়েছে আপনার পোস্টটা পড়েই। ছোট বড় বোতল পুরো ছিল ছোটবেলায় মার্বেলে। আম্মু কতবার যে মার্বেলগুলো ফেলে দিয়েছে তা বলেই বুঝাতে পারবো না। রাত দিন ২৪ ঘন্টা খেলতে দিলেও শেষ হতোনা খেলা, এরকমই লাগতো। ইচ্ছে করতো সারাক্ষণ শুধু মার্বেল খেলি মার্বেলের সময়। আমি নিজেও কিন্তু কয়েকবার মার খেয়েছি আমার আম্মুর হাতে। মারলে কি হয়েছে পরবর্তী থেকে আবারো খেলা শুরু করতাম। আপনাকে মনে হয় আপনার ছোট আঙ্কেল একটু বেশি শাসন করতো। তাইতো আপনাকে মার্বেল খেলার জন্য মেরেছিল। খুব ভালো লাগলো আপনার শৈশবের খেলাধুলা করার মুহূর্তের পোস্টটা পড়ে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit