#Childhood memory : শৈশবে পুকুর অথবা নদীতে গোসলের হারিয়ে যাওয়া দিনগুলো

আসসালামু আলাইকুম। শুভ সকাল আমার বাংলা ব্লগ। আশা করছি আল্লাহর অশেষ রহমতে আপনারা সকলেই বেশ ভাল আছেন। আলহামদুলিল্লাহ সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর অশেষ রহমতে আমিও বেশ ভাল আছি। আমরা যেন সব সময় সুস্থ সুন্দর এবং ভালো থাকতে পারি সে কারণে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি।

শৈশব সব সময় আমাদের মধুর হয়ে থাকে। আমারও বেশ কিছু শৈশবে স্মৃতি রয়েছে এবং সেগুলো সত্যিই অনেক বেশি আনন্দময় ছিল। আমি প্রত্যেক সপ্তাহে অন্তত একটি করে পোস্ট লেখার চেষ্টা করি শৈশবের স্মৃতি নিয়ে। আর এরই ধারাবাহিকতায় আমি আজকে আপনাদের মাঝে শৈশবে পুকুরে অথবা নদীতে গোসলের হারিয়ে যাওয়া দিনগুলোর কথা স্মরণ করে একটি ব্লগ লিখতে চাই। আমি আশাবাদী আজকের এই ব্লগ আপনাকেও শৈশবে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে এবং শৈশবের কথা মনে করিয়ে দিবে। সকলে আমন্ত্রিত আজকের এই ব্লগ উপভোগ করুন ।

শৈশবে অনেক অনেক স্মৃতিময় মুহূর্ত রয়েছে। আর সে সকল স্মৃতিময় মুহূর্ত গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো শৈশবে পুকুরে অথবা নদীতে গোসল করার চমৎকার দিন।

আমার এখনো বেশ ভালো মনে আছে। ছোটবেলায় আমি পুকুরে গোসল করতাম এবং পুকুরে গোসল করতে আমার অনেক বেশি ভালো লাগতো। কারণ বিশাল পুকুরে সাঁতার কাটার মজাই ছিল আলাদা।

যখন আমি প্রথম প্রথম পুকুরে গোসল করা শিখেছিলাম তখন আমার মাঝে মাঝে ভয় লাগতো। কারণ আমি সাঁতার জানতাম না। আর সেই সুযোগে যখন আমি পানিতে নামতাম কিংবা পুকুরে নামতাম তখন আমার সমবয়সী দ্বারা সাঁতার জানতো তারা আমাকে নিয়ে মজা করত। মাঝে মাঝে আমাকে কোলে নিয়ে পুকুরের যেখানে সাঁতার পানি সেখানে গিয়ে ছেড়ে দিত এবং আমি পানি খেয়ে নিতাম। তখন তারা আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করত। আর সেই ভয়ে যখন আমার সমবয়সী বন্ধুরা পুকুরে নামতো তখন আমি তাদের সাথে পুকুরে গোসল করতাম। যখন কেউ থাকতো না তখন আমি পুকুরে গোসল করতাম।

গোসল করতে করতে আমি হঠাৎ একদিন সাঁতার শিখে গিয়েছিলাম। আমার বড় বোনের সাহায্যে আমি সাঁতার শিখেছিলাম এবং তখন আর পুকুরে নামতে আমার কোন ভয় লাগত। যখন সাঁতার শিখে গেলাম তখন আমাকে আর কেউ সাঁতার শেখানোর জন্য কিংবা পুকুরে নামতে ভয় দেখাতো না।

যখন আমি পুকুরে পুরোপুরি সাঁতার শিখে গিয়েছিলাম তখন আমি বন্ধুদের সাথে পুকুরে অনেক মজা করেছি। পুকুরের পাশে রয়েছে বড় বড় খেজুর গাছ। খেজুর গাছের ডালে আহরণ করতাম এবং একটি ডাল নিচের দিকে এনে বাঁকা করে ধরতাম। এবার রসের মতো করে ঝুলে যেতাম এবং যখন ওই খেজুরের ডাল এবং আমি পুকুরের পানির কাছে চলে যেতাম তখন হাত ছেড়ে দিতাম। তখন পুকুরের পানিতে পড়ে যেতাম এবং এভাবে আমরা বন্ধুরা মিলে সাঁতার কাটতাম।

তাছাড়াও কে কতদুর লাফ দিয়ে পুকুরের মাঝের অংশে যেতে পারে এই বিষয় নিয়ে অনেক প্রতিযোগিতা করেছি। বিশেষ করে পুকুরের পাড়ি থেকে লাভ দিতাম এবং কে কতদূর যেতে পারে সেই বিষয় নিয়ে আমাদের মাঝে বেশ ভালো প্রতিযোগিতা হতো। তাছাড়াও বিভিন্ন মানুষের বিভিন্ন স্কিল ছিল।

আমার একজন বন্ধু ছিল যার পুকুরের গোসলের অভিজ্ঞতা ও ইস্কেল ছিল অনেক বেশি। সে দৌড় দিয়ে পুকুরের কাছে এসে ঘুরে ঘুরে লাফ দিতে পারতো এবং এটা ছিল তার একটি চমৎকার স্কেল এবং আমরা এই বিষয়টি সকলের মিলে উপভোগ করতাম।

যখন শীতকাল চলে আসত তখনও আমরা পুকুরে গোসল করতাম। কারণ শৈশবে ঠান্ডা কি জিনিস অতটা বুঝতে পারতাম না। গোসল করতে করতে চোখের সামনে যেন অন্ধকার হয়ে যেত। চোখের সামনে ধোঁয়ার মতো দেখতাম এবং পুরো চোখ লাল হয়ে যেতো। তবে তারপরেও যেন আমাদের গোসলের স্বাদ মিটতো না। যত গোসল করতাম আরো গোসল করার শখ থেকে যেত মনের ভেতরে ।

মাঝে মাঝে স্কুল থেকে ফিরে কোনরকম স্কুল ব্যাগ রেখে পুকুরে গোসল করতে চলে যেতাম। গোসল করতে করতে সন্ধ্যা লেগে যেত এবং পরিবারের অনেকে আমাদেরকে বকাবকি করেছে।

শৈশব আসলে অনেক স্মৃতির একটি জিনিস। শৈশবে না ছিল হারানোর কোন কিছু হয় কিংবা পাবার তীব্র বাসনা। কিন্তু তারপরেও শৈশবের এই দিনগুলো এখন হবে মনে। শৈশব সব সময় স্মৃতিময় হয়ে থাকে এবং আনন্দময় হয়ে থাকে।

শৈশবের নদীতে অথবা পুকুরে গোসল করার এই মুহূর্তগুলো আমি এখনো বেশ মিস করি। তাই আমি আমার অনুভূতিগুলো আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের কাছে শেয়ার করতে পেরে বেশ আনন্দিত। আমি আশাবাদী আপনাদেরও শৈশবের বেশ স্মৃতি রয়েছে। চাইলে আপনিও আপনার শৈশবের স্মৃতি নিয়ে আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের মাঝে লিখতে পারেন। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি আপনার শৈশবের স্মৃতি সম্পর্কে জানতে আগ্রহী। প্রকাশ করুন আপনার অনুভূতি আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের মাঝে।

আপনার দিনটি শুভ হোক