নিজ পরিশ্রমে উৎপাদিত ফরমালিনমুক্ত টাটকা শিম গাংনী আড়তে বিক্রয়ের অনুভূতি

in hive-129948 •  10 months ago 


আসসালামু আলাইকুম




হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আজকে আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হলাম শিম বিক্রয়ের অনুভূতি নিয়ে। নিজ হাতে উৎপাদিত টাটকা ফরমালিনমুক্ত শাকসবজি নিজেদের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বিক্রয়ের মধ্যে রয়েছে অন্যরকম ভালোলাগা। আর সেই ভালো লাগাটা আজকে আপনাদের মাঝে শেয়ার করব। আশা করি আপনাদের অনেক অনেক ভালো লাগবে আমার এই পোস্ট। তাই চলুন শুরু করা যাক।

img_1711632654867.jpg


ফটোগ্রাফি সমূহ:



আপনার অনেকে জানেন পুকুর পারে আমি বিভিন্ন প্রকার শাকসবজি উৎপাদন করে থাকি। শীতকালীন শাকসবজি হিসেবে আমি এবার অনেক শিম উৎপাদন করেছিলাম। নিজেদের প্রয়োজনীয় চাহিদা মিটানোর পর বিক্রয় করার জন্য উত্তোলন করে গাংনী আড়তে উপস্থিত হয়েছি একাধিকবার। ঠিক তেমনই একদিন গাংনী আড়তে শিম বিক্রয় করব সিদ্ধান্ত নিয়ে শিম উত্তোলন করতে পুকুর পাড়ের বাগানে উপস্থিত হলাম। বাগানের শিম বানের উপর চোখ রেখে যেন মন ভরে যেত। যেদিকে তাকাই শুধু গাছ ভর্তি শিম আর শিম। শুধু শিম গাছের জন্য যে জায়গা তৈরি করেছিলাম সে জায়গার মধ্যে গাছ সীমাবদ্ধ ছিল না। পাশে থাকা বাঁশ বাগানের উপর শিম গাছ উঠে গেছিল। সেখানে অনেক ধরেছিল। বিকেল টাইমে উত্তোলন করতে থাকলাম। আর সব জায়গা থেকে উত্তোলন করার চেষ্টা করলাম। তবে মজার বিষয় আমার এভাবে পাঁচটা শিমের বান ছিল। কিন্তু তার মধ্য থেকে একটি বানে উত্তোলন করলাম, এরপর বাড়িতে ডিজিটাল স্কেলে মেপে দেখলাম প্রায় ৪৩ কেজি। এরপর শিমগুলো সানের উপর রেখে দিলাম।


IMG_20240216_124928_1.jpgIMG_20240216_124846_0.jpg
IMG_20240216_124906_6.jpgIMG_20240216_135318_268.jpg



রাতের শিম গুলো সুন্দর করে বাছাই করলাম। তবে তত বেশি একটা নষ্ট ছিল না। তবুও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করলাম। পরের দিন সকালবেলায় বাস্তা লোড করে মোটরসাইকেলে করে শিম গুলো নিয়ে চলে গ্রাম গাংনী সবজি আড়তে।


IMG_20240217_065741_584.jpg



সেখানে উপস্থিত হয়ে দেখলাম বেচাকেনা খুবই কম। শীতের সকাল থাকায় সকাল সকাল তত বেশি একটা মানুষের উপস্থিতি ছিলনা। এদিকে এই মুহূর্তে শিমের দাম বেশ কমে গেছে। আমি যখন উপস্থিত হয়েছিলাম ঐদিন দেখলাম কেজিপ্রতি মাত্র ১৫ টাকা। তবে তার এক দুই সপ্তাহ আগেও ছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি। আর তারও আগে ছিল ৫০ টাকা কেজি। তবে যাই হোক মেইন বিষয় হচ্ছে শাকসবজির দাম নাগালের মধ্যে থাকলে সকল মানুষ কিনে খেতে পারে,এতেই আমি আনন্দিত।


IMG_20240220_080603_024.jpg



আমি শুধুমাত্র আড়তে এসে উপস্থিত হই। আমার গাড়ি থেকে ভারতের লোকজন নিজ দায়িত্বে মাল নামিয়ে নেয় এবং বিক্রয় করে দেয়। আমার শুধু দায়িত্ব তাকিয়ে দেখা। ঠিক এমনই সুযোগে আমি বেশ কিছু ফটো ধারণ করার চেষ্টা করলাম সেখানে। তবে সেখানে বেশ অনেক প্রকার শাকসবজি এবং কাঁচা মরিচ চোখে পড়েছিল আমার।


IMG_20240220_080341_391.jpgIMG_20240220_080516_700.jpgIMG_20240220_080346_046.jpg



তবে সবকিছুর মধ্যে থেকে নিজের একটা সেলফি না তুললেই নয়। নিজের প্রচেষ্টায় সবজি উৎপাদন করেছি। সম্পূর্ণ ফরমালিনমুক্ত সবজি। আজকে বিক্রয় করতে এসেছি, একটা সেলফি না তুললে কেমন হয়। স্মৃতি হয়ে থাক। সে আশা করেই সেলফি তুললাম।


IMG_20240220_080355_346.jpg



এরপর একজন ব্যক্তি এসে আমার হাতে শিম বিক্রয়ের দুইটা স্লিপ দিয়ে গেল। শিম গুলো পনেরো টাকা কেজি বিক্রয় হয়েছিল। দুইটা স্লিপে লেখা ছিল যারা শিমগুলো নিয়েছে তাদের নাম। আর কে কত কেজি নিয়েছে, রেট কত ইত্যাদি। এরপর আমি ক্যাশিয়ারের কাছে উপস্থিত হয়ে গেলাম। সেখানে একটি ছেলে আমার হাত থেকে স্লিপ টা নিল এবং তাদের খাতায় ডিটেলস তুলে ফেলল। এরপর হিসাব করে আমার হাতে টাকা বুঝিয়ে দিল। আর এভাবেই আমি আমার পুকুর পাড়েরশিম বিক্রয় করলাম আমাদের গাংনী সবজি আড়তে।


IMG_20240217_074720_378.jpg

IMG_20240220_080510_090.jpg

পোস্ট বিবরণ
বিষয়আড়তে শিম বিক্রয়
ফটোগ্রাফি ডিভাইসInfinix Hot 11s
লোকেশনগাংনী-মেহেরপুর
ব্লগার@sumon09
দেশবাংলাদেশ


পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

received_434859771523295.gif


পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকুন সবাই। আল্লাহ হাফেজ।

TZjG7hXReeVoAvXt2X6pMxYAb3q65xMju8wryWxKrsghkLbdtHEKTgRBCYd7pi9pJd6nDf4ZPaJpEx3WAqvFVny2ozAtrhFXaDMnAMUAqtLhNESRQveVFZ7XHcED6WEQD48QkCkVTAvNg6.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

এর আগে আপনার শেয়ার করা গাছ লাগানোর ব্লগ গুলো দেখেছি।আজকে বেশ ভালো লাগলো আপনার এই অনুভূতি পড়ে। সত্যিই নিজ পরিশ্রমে লাগানো যেকোনো সবজি নিজের পরিবারের চাহিদা মিটাচ্ছে আবার সাথে কিছু বিক্রিও করতে পারছেন এটা জেনে বেশ ভালো লাগলো। ধন্যবাদ ভাইয়া নিজে সবজি উৎপাদন করে সেটা বাজারে বিক্রি করার অনুভূতি শেয়ার করার জন্য। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

এখানে টাটকা শাকসবজি নিজের যেমন খেতে পারা যায় অন্যের মাঝেও তুলে ধরতে পারা যায়, এতে আমি সত্যিই অন্য রকম আনন্দ ফিল করি।

বর্তমান সময়ে টাটকা সবজি পাওয়াটা অনেক কঠিন। প্রতিটা খাবারে জিনিসের মধ্যে ফরমালিন ব্যবহার করছে। আর এই ফরমালিন ব্যবহৃত খাবার খেয়েও মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। আপনি পরিশ্রম করে ফরমালিন বিহীন টাটকা শিম গাংনী আড়তে বিক্রি করতে গিয়েছেন এটা দেখে বেশ ভালো লেগেছে। আপনার উৎপাদিত শিম যারা ক্রয় করেছে তারা ফরমালিন বিহীন একটি সবজি পেল। তবে গাংনী আড়তে শিম বিক্রি করা হয় এটা আমার জানা ছিল না আপনার কাছ থেকে জানতে পারলাম। বেশ কয়েক সপ্তাহ আগের থেকেও বর্তমান সময়ে সবজির দাম কমে গেছে এটা ঠিক।

Posted using SteemPro Mobile

হ্যাঁ ভাই সে ক্ষেত্রে যদি নিজে উৎপাদন করা যায় তাহলে টাটকা খাওয়া সম্ভব।

এবার সবজি চাষাবাদের ক্ষেত্রে আমরা দারুণভাবে সাফল্য পেয়েছি। বিশেষ করে যেরকম পরিশ্রম করেছি ঠিক তার চেয়েও ফল পেয়েছে অধিক। এবার যে পরিমাণ শিম সবজি হয়েছিল আমাদের পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাজারে বেশ কয়েকবার বিক্রয় করতে সক্ষম হয়েছি।

Posted using SteemPro Mobile

হ্যাঁ একদম ঠিক কথা।

জেনে ভালো লাগলো ভাই আপনি যে ফরমালিনমুক্ত টাটকা শিম উৎপাদন করেছেন। আজকাল ফরমালিন মুক্ত টাটকা শাকসবজি পাওয়া খুবই কঠিন। এ রমজানে মোটামুটি শাকসবজির দাম হাতের নাগালে রয়েছে। আপনি যেদিন সিম বিক্রি করতে যান ঐদিন সিমের দাম খুবই কম ছিল মাত্র ১৫ টাকা কেজি। যদিও বেশ কিছুদিন আগে আমি হাফ কেজি শিম পনেরো টাকা দিয়ে কিনে ছিলাম। । তারপরও আপনার চিন্তাভাবনা আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। যেহেতু অল্প দাম হলে মানুষ একটু খেয়ে পড়ে বাঁচতে পারবে।

Posted using SteemPro Mobile

হ্যাঁ সবকিছু যদি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকে সবার জন্য ভালো।

জ্বি ভাই এতে সবারই কষ্ট কম হয়।

Posted using SteemPro Mobile

এই যে কৃষক ভাই এসব তো পুকুর পাড়ের লাগানো শিম যদি ভুল না বলি ৷ তবে আমাদের সবার উচিত যে কোনো কিছু করার পাশাপাশি এই কৃষি বিষয়ে কাজ করা ৷ কারন নিজস্ব চাষ করা যেমন নিজের চাহিদা পূর্ন হয় ৷ তার পাশাপাশি টাকা ইনকাম৷ শিম দেখি অনেক ভালো লাগলো ব্লগটি দেখে ৷

ভালো লেগেছে জেনে আমারও ভালো লাগলো

এখনকার সময়ে তাজা জিনিস পাওয়া খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার৷ আমাদের মধ্যে অনেকে আছেন যারা নিজ পরিবারের সবার জন্য হলেও কিছু চাষ করে থাকেন৷ আপনি সেরকম নিজ পরিশ্রমে উৎপাদিত ফরমালিনমুক্ত টাটকা শিম চাষ করেছেন এবং সেগুলো বাজারে বিক্রি করেছেন দেখে খুবই ভালো লাগলো৷ টাটকা শাকসবজি আমরা সকলেই খেতে পছন্দ করি এবং এগুলো আমাদের শরীরেও কোন ধরনের খারাপ রোগের সৃষ্টি করে না৷ যেভাবে প্রতিনিয়ত ফরমালিনযুক্ত খাবার দেখা যাচ্ছে তা খাওয়ার থেকে না থাকা খাওয়াই ভালো৷ তবে আপনার এই ফরমালিনমুক্ত শাকসবজি সম্পর্কে আগে থেকেই শুনে আসছি৷ আজকে দেখে খুবই ভালো লাগছে৷

হ্যাঁ ভাই ফরমালিনমুক্ত শাকসবজি সকলের খুঁজতে চায় কিন্তু সবসময় পায় না।

একদম। এরকম নিজের থাকলে তো আর কোনো কথাই নেই৷

Posted using SteemPro Mobile