হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আজকে আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি বেশ কষ্ট লাগা ঘটনা প্রকাশ করার জন্য। আশা করব এই পোস্ট আপনাদের জন্য বেশ উপকারে আসবে এবং এই পোস্ট পড়ার মধ্য দিয়ে সচেতন হবেন।
কিছু কিছু হঠাৎ মৃত্যু মোন থেকে মেনে নেওয়া যায় না। আমি আম্মার অপারেশনের জন্য ঢাকায় অবস্থানকালীন মুহূর্তে জানতে পেরেছিলাম আমাদের এক নিকটস্থ চাচা রোড এক্সিডেন্টে মারা গেছেন। উনার সাথে দীর্ঘদিনের সুসম্পর্ক আমাদের। পথ চলতে একসাথে চলাচল কত কথা কত হাসাহাসি। মানুষটা আমাদের থেকে ৫ থেকে ৮ বছরের বড়। তবে তার সাথে খুব সুন্দর নিবিড় সম্পর্ক ছিল আমাদের। ঢাকায় অবস্থানকালীন মুহূর্তে হঠাৎ ভাই আমাকে বলেছিলেন আশা চাচা ঝিনাইদহায় ট্রাকের সাথে এক্সিডেন্ট করে মারা গেছেন। এই তো কিছুদিন আগে হাসিখুশি মুখটা তার দেখে গেলাম আর হঠাৎ তার মৃত্যু সত্যি মেনে নেওয়া কঠিন। এরপর ঢাকা থেকে বাড়িতে আসার পরের দিন আসা চাচাদের বাড়ির পাশের আমাদের এক দাদা মৃত্যুবরণ করলেন। উনি হয়তো বয়স হয়েছিলেন তবে এতটাও নয় যে মৃত্যুর কুলে ঢুলে পড়বেন। সেই দাদার নাম হান্নান। মানুষটার সাথে আমার খুব ইয়ার্কি হত। একদম প্রাইমারি লাইফ থেকে তার সাথে পরিচয়। কারণ উনার বাড়ি আমাদের গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে। অর্থাৎ একে মহল্লার দুইজন একটি বাড়ির পাশাপাশি দুইজন মারা গেলেন। যেহেতু ঢাকা থেকে আসার পর দিন হান্নান দাদার মৃত্যু হল তাই তার জানাযায় শরিক হতে পেরেছিলাম।
আমি ঢাকাতে যাওয়ার আগে রাস্তায় তার সাথে একজন দেখা হল। দেখলাম নিরবে রাস্তায় হেঁটে চলছেন। তার শরীরের ভেতর খারাপ লাগতো এটা শুনেছি। কিন্তু তার শরীরে যে ক্যান্সারের বীজ ছড়িয়ে পড়ছে দিন দিন কেউ জানে না। মাত্র ৩৫ দিনে অবস্থান করেছি ঢাকাতে। তারপরে এসে দেখি এ অবস্থায়। এরপর আমি তথ্য নিলাম কেন কিভাবে মারা গেলেন উনি। মানুষ মারা যাওয়ার পূর্বে কারণ থেকে থাকলে। হয় অসুস্থ হন অথবা এক্সিডেন্ট অথবা অন্যান্য কারণ। তবে শুনতে পারলাম ঈদের আগে থেকে নাকি উনি বেশ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। গ্রামের কিছু কিছু মানুষের রয়েছে অসুস্থ হলে কবিরাজ দেখায় কিন্তু ডাক্তার দেখাতে চান না। গায়ে জ্বর আসলে জ্বরের বড়ি খান কিন্তু কেন জ্বর এসেছে সে দিকে লক্ষ্য রাখেন না। কি উনার ক্ষেত্রেও কিছুটা এমন হয়েছে শুনেছি। প্রথমত শরীর খারাপ। এরপরে শরীরে ক্যান্সারের ছড়িয়ে পড়া ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া। তারপর অল্প দিনের মধ্যেই বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে ট্রিটমেন্টে কাজ হলো না চলে গেলেন দুনিয়া ছেড়ে। উনার সাথে কত হাসি খুশি ভাবে চলাচল করেছি আমরা। পথে দেখলেই আগে প্রশ্ন করে বসতাম দাদা ভালো আছেন। এখন হয়তো সেই কথা বলার মানুষটাও আর থাকলো না।
মাইকে যখন এনাউন্স করছিল মানুষটা মারা গেছেন সত্যিই আমি মন থেকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। মনে হয়েছিল বলে কিরে! দাদা মারা গেল, কেন মারা গেল, কিভাবে মারা গেল? তাই বারবার মনের মধ্যে প্রশ্ন ছিল কার কাছে জানবো কিভাবে মারা গেলেন। গোরস্থানের ওখানে জানতে পারলাম উনার এই মৃত্যুর কথা। আসলে কখন কার মৃত্যু হবে কেউ জানে না তবে অকাল মৃত্যু বলে একটা কথা রয়েছে। আমি একজন ইউটিউবে হুজুরের কথা শুনেছিলাম মানুষের নির্দিষ্ট টাইম থাকে তবে নিজেকে সুস্থ রাখার জন্য যে যতটা নিয়ম মেনে চলে তার জন্য ভালো হায়াত বৃদ্ধি কমানোর মালিক আল্লাহ। তবে বেশি কিছু জানি না বুঝিনা শুধু এটাই মন থেকে কষ্ট লাগা সৃষ্টি করে যখন প্রিয় মানুষগুলো কাছ থেকে চলে যায়। হান্নান দাদার জানাজার মুহূর্তে ভেবে দেখলাম সত্যি মানুষ কতটা অসহায়। আজ দীর্ঘদিন আমি ঢাকাতে অবস্থান করলাম আমার আম্মার অসুস্থতার জন্য। আশা করেছিলাম পাঁচ সাত দিনের মধ্যে বাড়িতে ফিরে আসবো। যাব অপারেশন হয়ে যাবে আম্মা সুস্থভাবে বাড়িতে ফিরে আসবো। কিন্তু সেখানে যে বিভিন্ন সমস্যায় আটকা পড়লাম রক্তস্বল্পতা লবণের সফলতা রক্ত প্রদান করতে হবে টেস্ট করতে হবে একাধিকবার টেস্ট তারপর অপারেশন এর টেস্ট অপারেশন এভাবেই ৩৫দিন মতো চলে গেল ঢাকাতে। বাড়িতে নিয়ে এসে আম্মু তেমন সুস্থ হননি, সুস্থ মানুষগুলা যখন অসুস্থ শুনে বা কেউ এমন মারা যাচ্ছে শুনি তখন খুব ভয় লাগে আব্বা আম্মার জন্য। আল্লাহ যেন আমাকে পিতা-মাতাকে সুস্থ রাখেন নেক হায়াত দান করেন। দোয়া করি সবার পিতা মাতার জন্য,আল্লাহ যেন নেক হায়াত দান করে আপনাদের পিতা-মাতাকে হাসিখুশি অবস্থায় চোখের সামনে রাখেন। তাই আমার থেকে পরামর্শ থাকবে আমাদের পিতা মাতা হোক আত্মীয়-স্বজন যেই হোক না কেন একটু অসুস্থ দেখলে যেন তাদেরকে সঠিক পরামর্শ দেওয়া হয় এবং কি সমস্যা হয়েছে না হয়েছে এই বিষয়টা দ্রুত যাচাই-বাছাই করা হয়। কারণ কখন কার কোন অসুস্থতা দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। আজ যেমন আমাদের হান্নান দাদা মারা গেলেন শরীরে তার ক্যান্সারের বীজ ছড়িয়ে পড়েছে তাই। মহান সৃষ্টিকর্তা আমাদের এই সমস্ত রোগবালা থেকে হেফাজত করুক। আমিন।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
বিষয় | দাদার মৃত্যু |
লোকেশন | Location |
ফটোগ্রাফি ডিভাইস | Infinix hot 11s |
ফটোগ্রাফার | @sumon09 |
দেশ | বাংলাদেশ |
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকুন সকলে। আল্লাহ হাফেজ। |
মৃত্যু অনিবার্য মৃত্যু চির সত্য, কিন্তু কিছু কিছু মৃত্যু অনেক সময় আমাদেরকে কষ্ট দেয়। আপনি লিখেছেন আপনার আশা চাচার মৃত্যু অনাকাঙ্খিত। হঠাৎ এক্সিডেন্ট করে মারা গেছে। আসলে ভাই আমার কাছে কিন্তু সেটা মনে হচ্ছে না আমার কাছে মনে হচ্ছে তার হায়াৎ যত দিন ছিল সে ততদিনই বেঁচেছিল। হয়তো তার সাথে আপনার বেশি ওঠা-বসা ছিল এজন্য এমনটা মনে হচ্ছে। তবে সবচেয়ে কষ্টের বিষয় হচ্ছে যে আপনি তার জানাজায় অংশগ্রহণ করতে পারেননি। আর আপনার দাদা ক্যান্সার এ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন, আপনি তার জানাজায় অংশগ্রহণ করতে পেরেছেন জেনে ভালো লাগলো। আমাদের উচিত যখনই কোন রোগের উপস্বর্গ দেখা দেয় তখনই ভালো ডাক্তার দেখানো। ধন্যবাদ ভাইয়া।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হ্যাঁ আপনি একদম ঠিক বলেছেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit