হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আজকে আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি পাঙ্গাস মাছের বাচ্চার খাবার দেওয়ার অনুভূতি নিয়ে। আশা করব আমার এই মাছের খাবার দেয়া দেখার মধ্য দিয়ে আপনাদের অনেক অনেক ভালো লাগবে এবং বেশ কিছু ধারনা পাবেন।
পাঙ্গাস মাছের খাবার দেওয়া দৈনন্দিন ব্যাপার। আর এই বিষয়টা আমাদের কাছে খুবই ইজি হয়ে গেছে। এই বিষয় নিয়ে আপনাদের মাঝে পোস্ট শেয়ার করার নতুন কিছু নেই। তবুও মাঝেমধ্যে বিশেষ বিশেষ মুহূর্তের ফটোগ্রাফি নিয়ে উপস্থিত হতে হয়। ঠিক বেশ কিছুদিন পর আবারো আপনাদের মাঝে পাঙ্গাস মাছের বাচ্চার খাবার দেওয়ার মুহূর্ত নিয়ে উপস্থিত হলাম। কারণ পূর্বের পোস্টগুলোতে আমি আপনাদের মাঝে শেয়ার করেছি পাঙ্গাস মাছের বাচ্চার বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকমের ভাইরাস লাগতে থাকে। আর এই জন্য তাদের প্রতি অনেক অনেক যত্ন রাখতে হয় কখন কোন খাবার খাওয়াতে হয় পাশাপাশি কোন ঔষধ খাওয়াতে হয় এগুলো মাথায় রাখতে হয়। এছাড়াও পুকুরে পানি কতটুকু রাখতে হবে পুকুরের পানির কালার পরিবর্তন হয়ে গেলে কোন ট্রিটমেন্ট করতে হবে বিভিন্ন বিষয় মাথায় রাখতে হয়। এক কথায় বলতে গেলে ছোট বাচ্চাকে সুস্থ অবস্থায় রাখতে গেলে তার প্রতি যেমন যত্নবান হতে হয় ঠিক তেমনি পাঙ্গাস মাছের বাচ্চার জন্য যত্নবান হতে হয় বিভিন্ন সময়ে। বেশ কিছুদিন আগে শুনতে পারলাম পাঙ্গাস মাছের বাচ্চার ভাইরাস লাগার সম্ভাবনা চলছে। এই মুহূর্তে ডোবা খাবার খাওয়ানো যায় না। পাঙ্গাস মাছের বাচ্চার ভাসমান এবং ডোবা দুই জাতীয় খাবার দিতে হয়, তার মধ্যে ভাসমান খাবার গুলোর দাম অনেক বেশি। তবে ডোবা জাতীয় খাবার গুলো ভাইরাস আক্রান্ত হলে আরো সমস্যায় নিয়ে যায়। তাই ওই মুহূর্তে ডোবা খাবার বাদ রেখে ভাসমান খাবার দিতে হয়। তবে প্রথম থেকে আমরা ভাসমান খাবার খাওয়াতে থাকি হয়তো খরচ হয়ে যায় ডাবল তার পরেও মাছগুলো যেন সুস্থ থাকে। প্রত্যেক বস্তা ২৫ কেজি খাবারের দাম ২ হাজার টাকা। আর এ খাবার ৪-৫ দিন পর এক বস্তা করে কিনে আনতে হয়। সে জায়গায় যদি ডোবা খাবার হতো তাহলে ২৫ কেজির জায়গায় ২ হাজার টাকায় ৫০ থেকে ৬০ কেজি হয়ে যায়। তাহলে এবার বুঝতে পারছেন। আর পাঙ্গাসের বাচ্চা ভাইরাস আক্রান্ত হলে খাবার খাওয়ার প্রতি অনীহার প্রকাশ করে। তবে যাই হোক এ সমস্ত খুঁটিনাটি বিষয়গুলো মাথায় রাখা এবং সেভাবেই তাদের যত্নে রাখতে হয়। খাবার দেওয়ার উদ্দেশ্যে পুকুর পাড়ে এসে উপস্থিত হলাম। খাবারের বস্তা থেকে খাবার হাতে নিয়ে পুকুর ফেলতে থাকলাম। লক্ষ্য করে দেখলাম মাছগুলো একদম পুকুর এর কিনারে এসে খেত। কিন্তু ওইদিন কেন জানি দূরে।
তাই আমার কাছে একটু সন্দেহ মনে হল আমাদের মাছের কোন সমস্যা হলো নাকি। কারণ পাঙ্গাস মাছের যখন ভাইরাস সৃষ্টি হয় দেশের সব জায়গাতে কম বেশি আক্রান্ত হতে থাকে। এইতো দুই মাস আগে তেলাপিয়া মাছের ভাইরাস ছিল। হয়তো এই জীবনে প্রথম দেখলাম তেলাপিয়া মাছের ভাইরাস লেগেছে। পুকুরে বিভিন্ন রকমের মাছ রয়েছে কিন্তু কোন মাছ মরল না। প্রায় এক দেড় মাস ধরে তেলাপিয়া মাছ মৃগী রোগের মত ঘুরে ঘুরে মরতে থাকলো। একবারে যে মরে শেষ হয়ে গেছে তা কিন্তু নয় প্রত্যেকদিন ১০ ২০ টা করে পানির মধ্যে ঘুরতো উল্টে যেত এভাবে মরতে থাকলো। অনেক ট্রিটমেন্ট করার পরেও কোন কাজ হলো না। হয়তো রোগের সময় পার হয়ে গেছে এখন আর তেলাপিয়া মাছের রোগ নেই। কিন্তু দীর্ঘ দেড় মাস ধরে এভাবে মরতে থাকলো তেলাপিয়া মাছগুলো। এজন্য প্রচুর পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, আবার যদি পাঙ্গাস মাছের বাচ্চার সমস্যা হয় তাহলে তো আরো ক্ষতি, তাই ভয়তে ভয়তে থাকতে হয়। যাই হোক মাছের খাবার দিতে থাকলাম। এক সময় লক্ষ্য করে দেখলাম পাঙ্গাস মাছের বাচ্চাগুলো আগের মত খাবার খাওয়ায় অনিহার প্রকাশ করছে। তবুও আমি খাবার দিতে থাকলাম এবং দেখতে থাকলাম কেন খাবার খেতে অনিহার মনে হচ্ছে।
মাছের খাবার দিতে দিতে একটি মুহূর্তে মাছ গুলো কিছুটা খাবার খাওয়ার জন্য আরও নিকটে আসলো। এরপর দেখা গেল লাফ দিয়ে সব মাছগুলো পালিয়ে গেল। খাবারগুলো পানিতে ভাসতে থাকলো। তখন বিষয়টা আমার কাছে আরো সিরিয়াস মনে হতে থাকলো। কারণ এতদিন তো মাছে এমন ঝামেলা করে না। হঠাৎ কেন এমন হচ্ছে। আসলে কি ভাইরাস লেগেছে নাকি অন্য কোন সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। পরবর্তীতে জানতে পারলাম রাস্তার পাশ দিয়ে বেশ কিছু মানুষ পুকুরে নেমেছিল মাছের হাড়িতে পানি পরিবর্তন করার জন্য। পাশের চাচাদের পুকুর থেকে মাছ ধরে এনেছিল। রাস্তার পাশে আমাদের এই পুকুরটা হাওয়ায় তাদের জন্য বেশ সুবিধা হয়েছে পানি পরিবর্তন করা। তখনই বুঝতে পারলাম এটা ভাইরাসজনিত কারণ নয় আতঙ্ক জনিত কারণ। পাঙ্গাস মাছ অনেক ভীত হয়ে থাকে। পুকুরে পানির মধ্যে যদি মানুষ নামে তাহলে সেই মাছ খাওয়ার সময় বেশ ঝামেলা করে। আতঙ্ক সৃষ্টি হয়ে যায়। তাই খাবার খাওয়ার মুহূর্তে পালিয়ে বেড়ায়। আবার মাঝে মধ্যে যদি খাবার দেওয়ার সময় সাপ এসে সমস্যা সৃষ্টি করে তাহলে মাছ এভাবে পালিয়ে যায়। হয়তো এমন বেশ কিছু কারণ এর জন্যই মাছগুলো খাবার ঠিকভাবে খাচ্ছিল না।
তবে যাই হোক পূর্ব প্রস্তুতি মতো সিভিট মিশিয়ে খাবার দেওয়া শুরু করলাম। এছাড়াও পানি শোধন করার জন্য বিভিন্ন প্রকার ঔষধ ঘরে কেনা ছিল সে সমস্ত ওষুধগুলো পরিমাণ মতো পানিতে দেয়ার চেষ্টা করলাম। কারণ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সমস্যা হয়ে যায় হুট করে। তাই নিজেদের সাবধানতা নিজেদের নিতে হয়। আর এখন তো দিন দিন চলে আসে ঠান্ডার সময় এই মাছগুলো আর এখানে রাখা যাবে না। খুব শীঘ্রই পুকুর পরিবর্তন করতে হবে মাঠের পুকুরে নিয়ে যেতে হবে। কারণ অতিরিক্ত ছায়াযুক্ত স্থানে পাঙ্গাস মাছের বাচ্চা নষ্ট হয়ে যায়। আর শীতের সময় বাড়ির পুকুর গুলো গাছপালার ছায়া হয়ে থাকায় অতিরিক্ত ঠান্ডা হয়ে থাকে পানি।
বিষয় | পাঙ্গাস মাছের পোনা |
---|---|
ফটোগ্রাফি ডিভাইস | Infinix Hot 11s-50m |
লোকেশন | গাংনী-মেহেরপুর |
ব্লগার | @sumon09 |
দেশ | বাংলাদেশ |
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকুন সবাই। আল্লাহ হাফেজ। |
---|
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক কিছু জানতে পারলাম। মাছ পরিচর্যার বিষয়ে কোন ধারনা আমার ছিল না। কিন্তু এটুকু বুঝি সব প্রাণী পরিচর্যা করাই অতি কঠিন একটি কাজ। আপনি সেই কাজটি ভীষণ যত্নের সাথে করে থাকেন। পাঙ্গাস মাছ যে মানুষ নামলে ভয় পায় সেটা আপনার পোস্ট থেকে জানতে পারলাম। অনেক তথ্য সমৃদ্ধ এই মাছ পরিচর্যা বিষয়ক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করবার জন্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
চেষ্টা করেছি ভাইয়া বেশ কিছু তথ্য দেওয়ার
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় পাঙ্গাস মাছ বাচ্চা থাকা অবস্থায় অনেক ভাইরাসে আক্রান্ত করে তাই এর সমস্যা চিহ্নিত করা অনেক বেশি জরুরী । আর আপনার পাঙ্গাস মাছগুলো খুব ভালোই খাবার খাচ্ছিল। ছবিতে দেখে খুব ভালো লাগলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হ্যাঁ শীতের আগে ও পরে বেশি হয়।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit