হাই বন্ধুরা!
আমার গল্পের রাজ্যে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগতম। পূর্বসপ্তার ন্যায় আজকে উপস্থিত হয়ে গেলাম সুন্দর একটি গল্প নিয়ে। যে গল্পের মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন আমার জীবনে কোন একটা লুকিয়ে থাকা ঘটনা। একজনের জানা ঘটনা অন্য জনের মাঝে ব্যক্ত করার মধ্য দিয়ে প্রকাশিত হয় অজানা তথ্য। ঠিক তেমনি সুন্দর একটি গল্প নিয়ে উপস্থিত হয়েছি আজ। আশা করি স্মৃতিচারণ মূলক এই গল্প আপনাদের অনেক অনেক ভালো লাগবে। তাই চলুন আর দেরি না করে গল্পটা পড়ি এবং গল্প পড়ার আনন্দ উপভোগ করি।
আমরা যখন ছোট ছিলাম, পাড়ার বন্ধুরা মিলে খেলা খেলতাম একটি শিশু বাগানে। বাগানটা সারিবদ্ধ ভাবে শিশু গাছ লাগানো ছিল। অনেকে হয়তো এই গাছটা অন্য নামে জেনে থাকবেন তবে আমাদের এলাকায় এ নামে প্রচলিত। তবে যাইহোক আমরা পাড়ার বন্ধুরা সবাই প্রাইমারি স্কুল থেকে বাড়ি এসে খাওয়া দাওয়া শেষেই পৌঁছে যেতাম সেই বাগানে। আমরা চেষ্টা করতাম যত দ্রুত বাগানে পৌঁছাতে, কারণ আমরা একাধিক খেলায় নিয়োজিত থাকতাম। এমনকি গরমের দিনেও আমরা সেখানে উপস্থিত হতাম, কেউ পাটি পেরে শুয়ে বসে থাকতো। এরপর রোদের তেজ কমলেই খেলাধুলা শুরু হয়ে যেত, মানে এক কথায় বাগানটা ছিল আমাদের খেলাধুলার বা অবস্থান করার প্রাণকেন্দ্র।
বাগানটাতে আমরা খেলাধুলা করতাম পাশাপাশি ছাগল গরু চরাই করত। অনেকে গাছের সাথে ছাগল বেঁধে রেখে যেত বড় রশি দিয়ে। ঠিক তেমনি একটা দিন বিকেলে আমরা খেলাধুলা করার জন্য উপস্থিত হলাম। ঘটনার ঐদিন আমরা গোল্লাছুট খেলার জন্য উপস্থিত হয়েছি। সম্ভবত এমন ফাল্গুন চৈত্র মাস, কারণ গাছে গাছে পাতা ঝরা ছিল আর নতুন পাতা জন্মাচ্ছে এমন একটা মনে আছে। কে জানি একটা ছাগলের ধাড়ি বড় রশি দিয়ে বেঁধে রেখে গেছে আমরা যে জায়গায় গোল্লা ঘর কাটতাম তারি নিকটে। আমরা সবাই বেশ বিরক্ত হচ্ছিলাম ছাগলটা এভাবে বাধা দেখে। আমাদের মধ্য থেকে কেউ একজন একটু সাইডের গাছের সাথে ছাগলটা বেঁধে আসলো। তার পিছনে তিনটা ছাগলের বাচ্চা। ছাগলের বাচ্চাগুলো এতটাই ছোট আমাদের খেলাধুলাতেও ডিস্টার্ব করতে থাকলো। আমরা কমবেশি বিরক্ত হতেই থাকলাম কারণ গোল্লাছুট মানেই তো ছোটাছুটি খেলা। না জানি কখন ছাগলের বাচ্চা গুলো পায়ের নিচে পড়ে। কে এমন বেকুবের মত বাগানের মধ্যে ছোট ছোট ছাগলের বাচ্চা রেখে গেছে। আমাদের খেলাধুলায় বেশ ব্যাঘাত ঘটতে থাকলো ছাগলের জন্য। এদিকে ছাগলের বাচ্চার জন্য কিছু করতে পারছি না, বলতে পারছি না।
হঠাৎ আসরের আযান দেওয়ার আগ মুহূর্তে আমাদেরই এক চাচী আম্মা ছাগল নিতে আসলো। হঠাৎ তার মুখে হাসি আর আনন্দ মূলক কথা শুনতে পারলাম। আমরা খেলাধুলা থামিয়ে দিলাম চাচীর কথা শোনায়। চাচী বলছে এগারোটার সময় ছাগল আমি এখানে বেঁধে রেখে গেছি, বাড়ি থেকে কেউ দেখতে আসেনি। আমার উপর সব দায়িত্ব। এভাবে হঠাৎ বলে বসলো ওমা! কি সুন্দর তিনটা কালো ছাগলের বাচ্চা হয়েছে। অর্থাৎ চাচী একটা পোয়াতি ধাড়ী ছাগল বেঁধে রেখে গেছেন। কিন্তু কখন যে ছাগলের বাচ্চাগুলো হয়েছে কেউ জানে না। আমরা এসে দেখছি তো ছাগলের পিছে তিনটা বাচ্চা লাফাচ্ছে। ছাগলের বাচ্চা গুলো দেখার পর উনি এতটাই আনন্দিত, আরো পাঁচ সাত জন মহিলাকে এদিক সেদিক থেকে ডাক দিয়ে জোগাড় করে ফেলল। এরপর বলল দুইটা খাসির বাচ্চা একটা মেয়ে বাচ্চা। তিনটায় ঘন কালো ছাগলছানা। মাঝে মাঝে আনন্দ প্রকাশ করছে, আর মাঝে মাঝে হাই-হুতাশ করছে। যদি কুকুরে ছাগলছানা গুলো খেয়ে যেত, দুপুর বেলায় কেউ ছিলনা বাগানে। অর্থাৎ কখন বাচ্চা গুলো হয়েছে কারোর জানা নেই।
আমরা মূলত খেলার জন্য যখন উপস্থিত হয়েছিলাম তখন লক্ষ্য করেছি ছাগলছানা যখন তখন দুধ পান করছে। এ পর যাই হোক অনেকেই উপস্থিত হলো ছাগলগুলো হাতে কোলে নিয়ে তারা তাদের বাড়ির দিকে রওনা দিল। আর এভাবেই কিন্তু আমাদের ওই দিনের খেলাধুলা নষ্ট হল। বুঝতেই পারছেন গরমের সময় খেলাধুলা করলে প্রচন্ড হাপিয়ে যেতাম। পাশেই একটা পুকুর ছিল। খেলাধুলা শেষ করে হালকা রেস্ট নিয়ে একদম সন্ধ্যাবেলায় আমরা সেই পুকুরে গোসল করে বাড়ির দিকে চলে যেতাম। তবে একটু আগে থেকে পুকুরে নামতে পারলে পুকুরের মধ্যেও খেলা হয়ে যেত, উল্টা ছাতার সোজা ছাতার ডিগবাজি সহ আরো অনেক কিছু। ঠিক পূর্ব দিনের মতো আমরা একই কাজ করে বাড়িতে চলে গেলাম।
গল্পটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
পুনরায় ফিরে আসবো নতুন কোন গল্প নিয়ে। ততক্ষণ ভালো থাকুন সবাই, সবার জন্য শুভকামনা রইল। আল্লাহ হাফেজ। |
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমাদের এলাকায়ও শিশু গাছ বলে। আপনারা গরমের দিনে সব বন্ধুরা মিলে খেলতে যেতেন শিশু বাগানে জেনে ভালো লাগলো।ছাগল ছানা গুলো বিরক্ত করতো তাই ছাগল টি কে একটু দূরে সরে বেঁধেছেন।আপনার ওই চাচি জানতো না যে বাচ্চা হয়ে খেলছে।আসলে হঠাৎ পালিত পশুর এমন তিনটি বাচ্চা দেখতে পেলে কার না ভালো লাগবে।চমৎকার লাগলো গল্পটি।ধন্যবাদ সুন্দর গল্পটি শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হ্যাঁ আপু আমাদের সেই আন্টি এতটাই আনন্দিত হয়েছিল তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব না।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit