প্রচন্ড বৃষ্টির সম্মুখীন

in hive-129948 •  2 months ago 


আসসালামু আলাইকুম


হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদের কে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আজকে আমি আপনাদের মাঝে আবার উপস্থিত হলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। প্রচন্ড বৃষ্টির সম্মুখীন একটি মুহূর্তের বর্ণনা শেয়ার করব এই পোস্টে।


'আমার বাংলা ব্লগ'
কোয়ালিটি সম্পন্ন পোস্ট


img_1727410395203.jpg

photo editing by infinix mobile gallery apps




ফটোগ্রাফি সমূহ:


দুইদিন আগে সকাল ভরে বিশেষ কারণে গাংনী বাজারে উপস্থিত হয়েছিলাম। সেখানে সবজি আড়তে এবং মাছের আড়তে উপস্থিত হয়েছিলাম কিছুটা সময়ের জন্য। লক্ষ্য করে দেখলাম সবজি আড়তে অনেক সবজি জুটেছে। সেখানে অনেক ক্রেতা বিক্রেতারা তাদের কেনাবেচায় ভিড় জমিয়েছে। আরেকটু সামনের দিকে এগিয়ে এগিয়ে লক্ষ্য করে দেখলাম মাছের আড়ত গুলোতে ঠিক একই বেচাকেনার ভিড়। তখন সকাল সাতটার সময়, কিন্তু এত সকালে এত মানুষের উপস্থিতি আর বেচাকেনার ভিড় দেখে যেন অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছিল। কারণ এই মুহূর্তে আমরা অনেকেই ঘুমিয়ে থাকি কিন্তু এনারা ব্যবসা শুরু করে দিয়েছেন এত সকালে। যাইহোক এরপর নিকটে থাকা একটি হোটেল থেকে খিচুড়ি নেয়া হলো। ততক্ষণে আকাশে প্রচন্ড মেঘ জমে গেছে। ভেবেছিলাম হয়তো এই মেঘে আমাকে থামিয়ে রাখতে পারবে না। ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে বাড়িতে পৌঁছে যেতে পারবো। কারণ সকাল বেলায় রাস্তাঘাটে তেমন কোনো যানজট নেই। যার জন্য দ্রুত ড্রাইভ করে বাড়ি পৌঁছানো সম্ভব। এরপর নিজের কাজ সেরে বাড়ির দিকে রওনা দিলাম।

IMG_20240924_071627_274.jpg

IMG_20240924_071950_665.jpg

IMG_20240924_072024_984.jpg

IMG_20240924_071916_634.jpg

Photography device:Infinix hot 11s
Location


এরপর আমি গাড়িতে উঠে পড়লাম এবং বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। কিন্তু পথের মাঝখানে হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হয়। সেখানে থামার জায়গা ছিল। নিকটে গোপালনগর নামক স্থানের দোকানে দাঁড়ালে দাঁড়ানো যেত। কিন্তু ভাবলাম হালকা বৃষ্টি ততক্ষণে মড়কা বাজারে পৌঁছে যাব। তাই আর না থেমে যেভাবে রানিং ছিলাম সেভাবেই চলে আসতে থাকলাম। কিন্তু পানি এত দ্রুত বিশাল রূপ ধারণ করল তা বলে বোঝানো যাবে না। যেন মোটরসাইকেল চালাতে গিয়ে কোন কিছুই দেখতে পারছি না চোখে বৃষ্টি পড়ার কারণে। দেড় কিলো দুই কিলো রাস্তা 2 মিনিটের ব্যবধান। ততক্ষণে আমি প্রচন্ড বৃষ্টিতে ভিজে গেলাম। এদিকে আমার মোবাইল ছিল দুইটা পকেটে। মোবাইল গুলো প্যাকেটের মধ্যে রাখা হয়েছিল না। আমার কাছে পলিথিন ছিল। তারপরেও গাড়ি থামিয়ে মোবাইল প্যাকেটে রাখতে গেলে ভিজে যাবে মোবাইল গুলো। তাই আরো দ্রুত গাড়ি টানা শুরু করলাম। আর এভাবেই চলে আসলাম মড়কা বাজারে। ততক্ষণে আমি প্রচন্ড আকারে ভিজে গেছি। আর এই প্রচন্ড আকারে ভিজে যাওয়ার কারণে সোজাসুজি গাড়ি নিয়ে ঢুকে পড়লাম মোটরসাইকেল মেরামতের একটি দোকানের ছাউনির নিচে। বাজারে এসে লক্ষ্য করে দেখলাম দোকানপাট তেমন খোলা হয়নি এখনো। শুধু আমার মত কয়েকজন মানুষ বৃষ্টির জন্য আশ্রয় নিয়েছে দোকানের ছাউনিতে।

IMG_20240924_073358_643.jpg

IMG_20240924_073305_049.jpg

IMG_20240924_073313_799.jpg

IMG_20240924_073342_105.jpg

Photography device:Infinix hot 11s
Location


এরপর গাড়ি থেকে নেমেই দ্রুত পকেট থেকে রুমাল বের করে মাথা মুছে নিলাম। তখন এত জোরে জোরে বৃষ্টি পড়ছিল,মাথার উপর টিনের চালে মনে হচ্ছিল যেন খোয়া নিক্ষেপ করা হচ্ছে। আমি দ্রুত মাথা মুছে নিলাম। এরপর পকেটে থাকা পলিথিন বের করে দেখলাম ভিজে গেছে কিনা। এরপর চেষ্টা করলাম মোবাইল দুটো ঠিকঠাক আছে কিনা। তখন লক্ষ্য করে দেখলাম হ্যাঁ মোবাইল এখনো ভিজে নাই। তখন আমি কিছু ফটো ধারণ করার চেষ্টা করলাম। আর এই ফটো ধারণ করার মুহূর্তে এত জোরে বৃষ্টি হচ্ছিল, যেন ফটো গুলো ভালো হচ্ছিল না। আমি মোবাইলের উপর রুমাল দিয়ে পুঁছে দেওয়ার চেষ্টা করলাম কারণ হালকা বৃষ্টির পানি লেগেছে। এর কিছুক্ষণ পর হঠাৎ লক্ষ্য করে দেখলাম আমারই মাস্টার চাচা অর্থাৎ জাহাঙ্গীর আঙ্কেল গাংনী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় এর টিচার আমার কাছে এসে উপস্থিত হলেন তার নতুন বাইকে চড়ে। আঙ্কেল আমাকে প্রশ্ন করলেন বাবা কোথা থেকে আসছো এত সকালে? বললাম আঙ্কেল একটু গাংনী মাছের আড়তের দিকে গেছিলাম। বললেন ব্যাপক বৃষ্টি নেমে গেছে হঠাৎ করে। আঙ্কেল রেইনকোট গায়ে দিয়ে বের হয়েছিলেন মেঘ দেখে। এখানে উনার বুদ্ধি কাজে লেগেছে। রেনকোট গায়ে থাকায় আঙ্কেলের সাথে থাকা জিনিসপাতি ভিজতে পারে নাই। এত দ্রুত বৃষ্টি আসবে কে জানতো। সত্যি ততক্ষণে প্রচন্ড বৃষ্টি হয়ে চলেছে। এরপর হালকা বৃষ্টি কমলো আঙ্কেল আবারো তার স্কুলের উদ্দেশ্যে রওনা দিলেন। এদিকে আমি আমার মোটরসাইকেল নিয়ে মোটরসাইকেল মেরামতের দোকানের ছাউনির নিচে। আমার পিছনে জাহাঙ্গীর আঙ্কেলের বোনের ছেলের রাজু বড়া তৈরি করা ঘরের সামনের নিচে মোটরসাইকেল বসে থাকলো। আর এভাবে লক্ষ্য করে দেখলাম জায়গায় জায়গায় অনেকেই থেমে গেছেন পথ চলতে গিয়ে। আজকের বৃষ্টি আধা ঘন্টা ধরে হতে থাকলো প্রচন্ড বেগে।

IMG_20240924_073357_359.jpg

IMG_20240924_073410_190.jpg

Photography device:Infinix hot 11s
Location


কিছুটা সময়ের পর লক্ষ্য করে দেখলাম আমার একজন স্টুডেন্ট তিনটা কুঞ্চির ছড়ি হাতে, সাইকেলের পেডেল মেরে ভিজতে ভিজতে স্কুলে যাচ্ছে। ছেলেটার নাম মোরসালিন। প্রশ্ন করলাম কিহবে বৃষ্টির দিন এগুলা। সে আমাকে দেখে হেসে পড়ল এবং বলল স্যার মারতে হবে মারতে হবে। তখন বুঝলাম প্রায় দেড় বছর স্কুল ত্যাগ করেছি কিন্তু ছাত্রছাত্রীরা আমাকে এখনো ভুলি নাই। এরপরে আমি আমার মোটরসাইকেলটা রুমাল দিয়ে মুছে বাড়ির উদ্দেশ্যে বের হয়ে পড়লাম। ততক্ষণে হালকা বৃষ্টি পড়ছে, পথের মধ্যে লক্ষ্য করে দেখলাম কিছু দোকানের ছাউনিতে দাঁড়িয়ে রয়েছে আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা। আর এভাবে প্রচন্ড বৃষ্টির মুখোমুখি হয়ে মড়কা বাজারে আশ্রয় নিয়ে এরপর বাড়ির দিকে চলে আসলাম।

IMG_20240924_073427676_BURST0001_COVER.jpg

IMG_20240924_073434_910.jpg

IMG_20240924_073315_760.jpg

IMG_20240924_073327_993.jpg

Photography device:Infinix hot 11s
Location

99pyU5Ga1kwqSXWA2evTexn6YzPHotJF8R85JZsErvtTWY68oBe2d5MBQiiXJUc2pjsGrMz4xjWmvQsjsdJnMVeP8i6MwiRYrHdW8u9nnLtpmjP8p8fhZZKVziK8U1tQW2.png


এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

received_434859771523295.gif

পোস্ট বিবরণ


ব্লগারsumon09
ফটোগ্রাফি ডিভাইসInfinix Hot 11s
What3words LocationGangni-Meherpur
ক্যামেরা50mp
দেশবাংলাদেশ



পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ।

R6TbvATub8MquGoqJZ4SE2UCpaUQzmNnWQxvJGwvYApXWE4KsVzC8vNNXWgtz7hrfoYPSrjupZgj7VtKhrH935ua1PLs4Vr7KiYnVAy3oD...tCNiac63XNuwJJZPbTjHfGPYJH4BJoHgX8HdohSPrSasKvArV8wiiFV7ntYqz66tLZiqG67BKrPAveZFRs3vaqucpJgsaE3qA6Rwasb2fYDx3U5dXGLwwRdyH8.png

6VvuHGsoU2QBt9MXeXNdDuyd4Bmd63j7zJymDTWgdcJjnzpQii6mQVp5A4gDGCDR68W9RxwfgYXDkuSdrT6M7Y7xaaSUX484gjnbdCNf4usUnqiHpgSG4y2v9nUyHY.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

বৃষ্টির দিনে খিচুড়ি খাওয়ার মজাই আলাদা।তাছাড়া গ্রামে আগেও ছাত্র-ছাত্রীদের বলা হতো কুঞ্চি নিয়ে যেতে স্কুলে কারন বেত ব্যবহার এখন নিষিদ্ধ যে।যাইহোক আড়তে ভোরে ভিড় জমে জেনে ভালো লাগলো,সবাই একটু কম দামে জিনিস কিনতে চায় আরকি! ধন্যবাদ ভাইয়া।

হ্যাঁ ঠিক বলেছেন

বেশ কয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। টানা বৃষ্টি হওয়ার কারণে পুকুর,খাল ও বিলে এখন পানিতে ভর্তি। আর এই বর্ষার ভেতর গরম গরম খিচুড়ি খেতে খুবই ভালো লাগে। আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো ভাই ধন্যবাদ।

হ্যাঁ খিচুড়ি আমারও পছন্দ।

কম বেশি সবাই খিচুড়ি অনেক পছন্দ করে। আপনি খিচুড়ি পছন্দ করেন যেনে ভালো লাগলো ভাই।