আজ - মঙ্গলবার
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদের কে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আজ আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি বিশেষ কিছু উপস্থাপন করার জন্য। আমার সেই ছোট্ট ফলের বাগানটি এখন আর নেই। সেখানে ঘর তোলার ফলে প্রয়োজনীয় বিশেষ গাছগুলো তুলে তার পাশে লাগিয়েছি আর সেই গাছগুলো লাগানোর অনুভূতি আর বর্তমান দৃশ্য নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়ে গেলাম। আশা করি বিস্তারিত সময় জুড়ে পাশেই থাকবেন।
'আমার বাংলা ব্লগ' কোয়ালিটি সম্পন্ন পোস্ট |
---|
আমি ছোটবেলা থেকেই বৃক্ষরোপণ করতে বেশি ভালোবাসি, তাই দীর্ঘদিন লেখাপড়ার পাশাপাশি ছোট্ট ফলের বাগান তৈরি করেছিলাম। এছাড়াও শাকসবজির আলাদা বাগানো রয়েছে। গাছপালা বৃক্ষ নিয়ে আমার জীবনযাত্রা। কারণ আমি সবুজের মাঝে নিজেকে বিলিয়ে রাখি, যেন তার মধ্যে নিজের সত্যিকারের প্রাণ খুঁজে পায়। আর এই জন্য প্রতি বছর আমি কয়েকটি করে ফলের গাছ লাগিয়ে থাকি। এবারও আমার খুব ইচ্ছে ছিল কয়েকটি কমলা লেবুর গাছ লাগাবো আমার ছোট্ট বাগানের মধ্যে আর চেষ্টা করেছিলাম বাগানটিকে আরেকটু বড় করার জন্য যেহেতু পাশে জমি ছিল। তবে হঠাৎ বাড়িতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলো ফল গাছ লাগানোর পূর্বে এই ফলের বাগানটিকে সাফ করে ফেলে এখানে ঘর তৈরি করতে হবে। অনেক প্রচেষ্টার ফলেও বাগানটিকে ঠেকাতে পারি নাই তাই বাগানের গুরুত্বপূর্ণ গাছগুলো তুলে পাশের স্থানে লাগাতে হয়েছিল। হয়তো অনেক প্রকার ফলের গাছ ছিল তবে তার মধ্য থেকে বাদাম বা জাম্বুরা, মাল্টা, কমলালেবু, বেদানা, ক্ষীর খাজুর, পেয়ারা ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ গাছগুলো উঠাতে পেরেছি। শুধু ওঠাতে পারি নাই আম গাছের চারা, কাঁঠাল গাছের চারা, জাম গাছের চারা, বেল গাছের চারা, কুল বা বরুই গাছের চারা। তবে যে গাছগুলো তুলে লাগাতে পেরেছি প্রত্যেকটা গাছে সুস্থ সবল রয়েছে এবং বেঁচে গেছে। হয়তো এখানে লক্ষ্য করছেন পাশাপাশি মালটা আর বেদানা গাছের চারায় খুব সুন্দর ভাবে নতুন পাতার গজিয়েছে।
Photography device: Infinix hot 11s
লোকেশন
হয়তো নতুন গাছের চারা কিনে লাগাতে পারি নাই। তবে এই চারা গুলো যে স্থানান্তর করা হয়েছে এবং একটা গাছও নষ্ট না হয়ে বেঁচে রয়েছে যে গাছগুলো লাগিয়েছিলাম এ দেখে আমার মন সত্যি খুবই খুশি ও আনন্দিত। কারণ আমি খুবই হতাশাগ্রস্ত ছিলাম যে আমার পুরা বাগানে হয়তো ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে যা চার বছর ধরে তিলে তিলে করেছিলাম। হয়তো আমার বাগান সম্পর্কেই তো পূর্বে আপনাদের মাঝে পোস্ট করেছিলাম যেখানে তার সুন্দর দৃশ্য উপস্থাপন করতে পারছিলাম। তবে এই মুহূর্তে বাগান নষ্টের পূর্বে যদি আবারও পোস্ট করতে পারতাম তখন হয়তো বেশি ভালো লাগতো কারণ তখন গাছগুলো অনেক বড় হয়ে গেছিল এবং আরো সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেয়েছিল এই বাগানের। যাইহোক এখানে লক্ষ্য করলে বুঝতে পারবেন আমার কমলা লেবু গাছে কত সুন্দর সুন্দর সাদা ফুল এসে গেছে। ভেবেছিলাম হয়তো কাজগুলো তুলে লাগাচ্ছি তাই এবার কোন ফুল আসবে না। তাই ইচ্ছা ছেড়ে দিয়েছিলাম এই গাছের ফল দেখতে পাওয়ার। তারপরেও সৃষ্টিকর্তার অশেষ মেহেরবানীতে অনেক সুন্দর সুন্দর ফুল এসে গেছে জানিনা ফল হবে কি।
Photography device: Infinix hot 11s
লোকেশন
এদিকে তুলে লাগানো বাদাম বা জাম্বুরা গাছটি নতুন কষি নিয়ে ঘরের চাল অতিক্রম করে গেছে। এ জাম্বুরা গাছের পিছনে অনেক ইতিহাস রয়েছে একদম ছোটবেলা থেকে নিজেরা ছাড়া দিয়ে গাছ তৈরি করার চেষ্টা করছিলাম। আর এর বীজ সংরক্ষণ করেছিলাম আমাদের নানির বাসার বড় জাম্বুরা গাছ থেকে। কারণ নানী বাড়ির জাম্বুরা গাছের জাম্বুরা আমাদের সকলের খুবই প্রিয় এলাকার মধ্যে এত সুন্দর সাধের জাম্বুরা খুব কম চোখে পাওয়া যায়। অনেকবার সাড়া দিয়েছি চারা তৈরি করেছি কিন্তু ফল ধরা পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারি নাই। পুকুর পাড়ে অনেকগুলো হয়েছিল। বনে আগুন লাগিয়ে বন পোড়ানোর ফলে গাছ গুলো পড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। অবশ্য আগুন আমারও লাগিয়েছিলাম না কোন একজন বেয়াদবি করে আগুন দিয়ে গাছগুলো নষ্ট করে দিয়েছিল। যেহেতু পুকুর পাড়ে অনেক প্রকার জঙ্গল হয়ে থাকে তাই জঙ্গল দেখেই আগুন দিয়েছিল হয়তো। কারণ এই সময়টাতে পুকুর এর জঙ্গল সাফ করার জন্য আগুন লাগানো হয়। যাইহোক এই গাছটা নিয়ে বড় আশা ভরসা ছিল তবে বাগানটা সাফ করার ফলে আশা ভঙ্গের পথে চলে গিয়েছিল গাছটা বাঁচাতে পারবো কিনা। সবই মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ মেহেরবানী তা না হলে কেন গাছটা বেঁচে যাবে এবং অত সুন্দর বৃদ্ধি পাবে নতুন পাতা গজিয়ে।
Photography device: Infinix hot 11s
লোকেশন
এদিকে আমার মালটা গাছের প্রতিটা ডাল জুড়ে নতুন পাতা গজিয়েছে। জানিনা আপনাদের এলাকায় এই গাছটিকে কি নামে বলা হয়ে থাকে। তবে কমলালেবুর বড় জাতটিকে মালটা বলা হয়। আর এই মালটা গাছ তৈরীর শখ আমার বহুদিনের। তাই আমার এই ছোট্ট বাগানটি অনেক চেষ্টার মাধ্যমে তৈরি করেছিলাম কিন্তু আজ বিশেষ কারণে সে বাগান ধ্বংস করতে হয়েছে আর তার মধ্য থেকে বিশেষ গাছগুলো ঘরের পাশেই লাগানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে কারণ তেমন প্রস্তুতকৃত মুহূর্তে জায়গা নেই বলে চলে। যাহোক মালটা গাছেও বেশ সুন্দর সাদা সাদা ফুল চলে এসেছে এই মুহূর্তে।
Photography device: Infinix hot 11s
লোকেশন
এদিকে আমার পেয়ারা গাছে নতুন কুশি চলে এসেছে। গাছের চারাটি যখন তুলে বাইরে লাগানো হয়েছিল ছাগলে তার ছাল খেয়ে গাছটা প্রায় নষ্টের দিকে নিয়ে গেছিল, তাই পেয়ারা গাছের আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। যেহেতু বাগান ঘিরা ছিল তাই ছাগলে ক্ষতি করতে পারত না কিন্তু এখন তো আর ঘেরা নেই যার জন্য গাছটি নিয়ে বড় সমস্যা। এদিকে ক্ষীর খাজুরের গাছটা বেশ সুস্থ-সবল ও মোটা ছিল। শুধু এই গাছটাই নয় এর চেয়ে ছোট ছোট আরো ১৫ থেকে ২০ টাকা ছিল যা আমার নিজের প্রচেষ্টায় তৈরি করেছিলাম। এই ঘর তোলার জন্য আমার বাগানের মহামূল্যবান গাছগুলো সবই বিসর্জন দিতে হয়েছে। জানিনা আপনারা কি ফিল করছেন আমার এই ছোট্ট ফলের বাগান উজাড় করে দেওয়ার অনুভূতি শুনে। তবে আমার কাছে মানুষের মত মূল্যবান ছিল আমার এ বাগানটি। যেন প্রিয়জন ছেড়ে চলে গেলেও কষ্ট যতটা না লাগে তার চেয়ে বেশি কষ্ট লেগেছিল এই বাগান নষ্ট করার মুহূর্তে। দীর্ঘদিনের ভালোবাসার মানুষটা যখন হঠাৎ ব্রেকআপ করে চলে যায় তখন যেমন কষ্ট অনুভব করা হয় ঠিক তেমনি দীর্ঘ ৪-৫ বছরের বাগানটা হঠাৎ বিশেষ প্রয়োজনে যখন নষ্ট করতে হয়েছে তখন ঠিক একই কষ্ট লাগা অনুভব হয়েছিল মনের মধ্যে। অনেকদিন ধরে খারাপ লাগছিল তবে নতুন পাতা গজানো এবং ফুল আসা দেখে কিছুটা স্বস্তি মিলেছে মনের মধ্যে। হয়তো বাগান তৈরি করে ফেলতে পারব এই জায়গাতে একটু সময় লাগবে তবুও গাছগুলোর নতুনত্ব দেখে আমি অনেক খুশি। আর এই আনন্দটা ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য আজকের পোস্ট।
Photography device: Infinix hot 11s
লোকেশন
💌আমার পরিচয়💌
আমি মোঃ নাজিদুল ইসলাম (সুমন)। বাংলা মাস্টার্স ফার্স্ট ক্লাস মেহেরপুর গভমেন্ট কলেজ। আমার বাসা গাংনী-মেহেরপুর। মড়কা বাজার, গাংনী,মেহেরপুর এ গ্রীনরেইন ল্যাবরেটরি স্কুল নামক প্রি-ক্যাডেট স্কুলের সহকারি শিক্ষক । ইলেকট্রনিক্সের যন্ত্রপাতি মেরামত ও সৌর প্যানেল নিয়ে রিসার্চ করতে পছন্দ করি। প্রাকৃতিক দৃশ্য ফটোগ্রাফি করা আমার সবচেয়ে বড় ভালোলাগা। দীর্ঘদিনের আমি পাঙ্গাস মাছ চাষী এবং বিরহের কবিতা লেখতে খুবই ভালোবাসি। |
---|
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার পরিচিতি | কিছু বিশেষ তথ্য |
---|---|
আমার নাম | @sumon09🇧🇩🇧🇩 |
ফটোগ্রাফি ডিভাইস | মোবাইল |
ব্লগিং মোবাইল | Infinix hot 11s |
ক্যামেরা | camera-50mp |
আমার বাসা | মেহেরপুর |
আমার বয়স | ২৬ বছর |
আমার ইচ্ছে | লাইফটাইম স্টিমিট এর 'আমার বাংলা ব্লগ' এ ব্লগিং করা |
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ। |
---|
আপনার বাগানের ওপর দিয়ে অনেক বড় একটি বড় ঝড় বয়ে গেছে। আপনার বাগানের দেখলাম অনেক ধরনের ফলের গাছ রয়েছে। এত ফলের গাছ সাধারণত একটি বড় বাগানেও থাকে না। যাইহোক যে গাছগুলি তুলে লাগিয়েছেন আশাকরি সবগুলো কাজ যদি বড় হয়ে ফল ধরে তাহলে আপনার চেষ্টা সফল হবে। ধন্যবাদ ভাইয়া।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ধন্যবাদ খুবই ভালো লাগলো মন্তব্য পড়ে
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit