নাটক রিভিউ || হাড় কিপটে || ৪৭ তম পর্ব

in hive-129948 •  6 months ago 


আজ - সোমবার

২৪ ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
১০ সেপ্টেম্বরে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ


আসসালামু আলাইকুম



হাই! বন্ধুরা

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি অনেক অনেক ভাল আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হলাম হাড় কিপটি নাটকের ১০৫ পর্বের মধ্য থেকে ৪৭ তম পর্ব রিভিউ করে শেয়ার করার জন্য। যেখানে নাটকের হাসি আনন্দ দুঃখ বেদনা সবকিছুই নিজের মত করে তুলে ধরার চেষ্টা করব। আশা করি আমার এই রিভিউ পোস্ট আপনাদের অনেক অনেক ভালো লাগবে। তাহলে চলুন বিস্তারিত শুরু করি।


Screenshot_20240902-150343.jpg

স্ক্রিনশট: ইউটিউব


নাটকের কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যঃ


নামহাড় কিপটে
রচনাবৃন্দাবন দাস
পরিচালকসালাউদ্দিন লাভলু
অভিনয়েআমিরুল হক চৌধুরী, চঞ্চল চৌধুরী, বৃন্দাবন দাস, মোশাররফ করিম, আ খ ম হাসান, শামীম জামান, শাহনাজ খুশি সহ আরো অনেকে।
দেশবাংলাদেশ
ভাষাআঞ্চলিক বাংলা
ধরণকমেডি,ড্রামা
পর্বের সংখ্যা১০৫
রিভিউ৪৭ তম পর্ব
দৈর্ঘ্য১৮ মিনিট
প্ল্যাটফর্মইউটিউব @cdchoicedrama চ্যানেল


চরিত্রেঃ

  • মোশাররফ করিম
  • আমিরুল হক চৌধুরীর
  • চঞ্চল চৌধুরী
  • বৃন্দাবন দাস সহ আরো অনেকে


কাহিনীর সারসংক্ষেপ

নজর আলী কৃপণের ছোট ছেলে নহর বেশ রাগান্বিত। কারণ সে তার প্রেমিকা রেশমার সাথে রাগারাগি করে ফেলেছে। তাদের দীর্ঘদিনের ভালবাসা প্রেম যেন আজ ব্যর্থ হয়ে চলেছে। দুজনার মধ্যে আর আগের মতো মনের টান আর সে আবেগ নেই। কারণ তারা চেষ্টা করেছিল তাদের খুব শীঘ্রই বিয়ে হয়ে যাবে। তারা একে অপরের পিতা-মাতাকে যতদূর সম্ভব চেষ্টা করেছিল একসাথে এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করানোর। কিন্তু কি আলোচনা হয়েছে কেউ ঠিক জানেনা। এতে তারা বুঝতে পেরেছে তাদের মধ্যে আর সুসম্পর্ক নিশ্চিত হতে যাচ্ছে না। তাই মহর চিন্তাভাবনা নিয়েছে তার প্রেমিকা রেশমাকে বান মারবে। কারণ তার সাথে রাগারাগি হয়ে গেছে নহরের। এজন্য হারাধন দত্তের বাড়িতে এসে বসে রয়েছেন নহর। কিন্তু তার মুখের কথা শুনে শিবানী রেগে উঠলো। শিবানী বলল তার বাবা কোনদিন কারো বান মারে নাই। সে যেন চোখের সামনে থেকে দূর হয়ে যায়। এরপর শিবালীর মামা খুব সুন্দর করে নহরকে বোঝালো। হারাধন দত্তের ডাব চুরি হয়েছে হারাধন দত্ত যদি এত কিছুই জানতো তাহলে অবশ্যই সে তার ডাব চোর ধরে ফেলতো। এরপর বিষয়টা নহর বুঝতে পেরে হারাধন দত্তের বাড়ি ছাড়লো।

Screenshot_20240910-130344.jpg

স্ক্রিনশট: ইউটিউব


এদিকে নজর আলীর মনের মধ্যে অনেক কষ্ট। তার মনের কষ্ট এতদিন দুই কুলাঙ্গার ছেলে তার বিরোধিতা করতো পরবর্তীতে গোল্লা এসে যুক্ত হয়ে আরো বিরোধিতা শুরু করেছিল। কিন্তু ইদানিং দেখা যাচ্ছে গোপনে গোপনে শত্রুতা করার পর প্রকাশ্যে শত্রুতা করেছে তার স্ত্রী। তার ঘরের মধ্যে যদি এত শত্রু থাকে তাহলে সে কি করে বাঁচবে। এমনই দুশ্চিন্তায় নজর আলী গাছের নিচে এসে বসে রয়েছে। কিন্তু তার বন্ধু যখন সান্তনা স্বরূপ বিভিন্ন কিছু বলার চেষ্টা করল দেখা গেল দুই বন্ধুর মধ্যে ঝগড়া বিবাদ সৃষ্টি হয়ে গেল। কারণ পূর্বের পূর্বগুলোতে লক্ষ্য করে দেখেছি যখনই দুই বন্ধু কোন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে যায় তখনই তাদের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ সৃষ্টি হয়ে যায়। ঠিক এই পর্বের একে কান্ড কলা ঘটলো তাদের দুইজনার মধ্যে। এমনকি নজর আলী কৃপণের দুই হাত দেখে ভাগ্য বলে দেওয়ার চেষ্টা করল বন্ধু হারাধন কিন্তু কিছুতেই কৃপণ নজর হাত দেখাতে দিল না টাকা দেওয়ার ভয়ে। সে ফ্রি ফ্রি হাত দেখাবে বলেছিল কিন্তু তাতে নজর আলী রাজি হলো না।

Screenshot_20240910-130455.jpg

স্ক্রিনশট: ইউটিউব


এদিকে নহরের পাগলামি কান্ড কলা শুনে গোল্লা খুবই রাগ করলো। সবাই চাই ভালোবাসার মানুষকে জান প্রাণ দিয়ে ভালবাসতে তাকে ভালো রাখতে। আর তাকে বান মেরে মেরে ফেলার চিন্তা বা খারাপ কোন পরিকল্পনা কেউ যদি না সে কিভাবে সত্যিকারের প্রেমিক হতে পারে। তাই বললা বলতে থাকলো সে এতদিন জানতো তার ভালোবাসা পবিত্র। এখন দেখছে তার ভালোবাসার কোন মূল্যই নেই তার তো একটা প্রতারণামূলক ভালোবাসা। সত্যিকারে ভালোবাসা তো কখনোই প্রিয় মানুষটার ক্ষতি চায় না। গোল্লার এমন সুন্দর কথাবার্তা শুনে খুশি হল নহর আলী। নহর মনে মনে তার ভুল বুঝতে পারলো।

Screenshot_20240910-130624.jpg

স্ক্রিনশট: ইউটিউব


এদিকে নজর আলী তার পরিবারের প্রতি রাগ করে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে শুয়ে রয়েছে। সে বুঝতে পেরেছে তার বউ ছেলে সবাই তার মৃত্যু কামনা করে। তাহলে এ জীবন রেখে আর লাভ কি। সবাই তার সম্পত্তির লোভী হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেউ তার বেঁচে থাকা পছন্দ করেনা। সবাই চায় সে যেন তাড়াতাড়ি মরে যায় এবং তার জমিগুলো তারা গ্রাস করতে পারে। এমনই মনে কষ্ট নিয়ে শুয়ে রয়েছে বিছানায়। বন্ধুর সাথে দুইটা কথা বলতে গেলেও তাদের মনের ভেতর ঝগড়া সৃষ্টি হয়ে যায় এবং প্রকাশ পায়। তাই এ জীবন থেকে আরো লাগছে। এমনই বিভিন্ন চিন্তাধারা নিয়ে যখন শুয়ে রয়েছেন নজর আলী কৃপণ। তখন তার মেজো ছেলে এসে তাকে সান্ত্বনা দিতে থাকে। কিন্তু সে সান্তনাও কোন কাজে আসলো না। নজর আলী কৃপণ তাকেও অ্যাটাক করে কথা বলল কেন সে চুমকিকে ভাবি ডাকে ডেকেছে এবং তার থেকে লুঙ্গি নিয়েছে। শেষ পর্যন্ত তার প্রিয় ছেলেটাও যেন শত্রু হয়ে দাঁড়ালো। কিন্তু কিছুতে ই বহর বুঝাতে পারলো না তার বাবাকে। তাই মনের কষ্ট নিয়ে বহর তার বাবার কাছ থেকে ছেড়ে চলে গেল এবং বলে দিল তার দুই চোখ যেখানে যায় সেখানে চলে যাবে, আর এ বাড়িতে থাকবে না।

Screenshot_20240910-130642.jpg

স্ক্রিনশট: ইউটিউব


এদিকে মজনুর বড় ভাই মজনুর হাত থেকে দোকানটা নিয়ে নিয়েছে এবং নিজের মতো করে সাজানো শুরু করেছে। দোকানে একটি গান চলার মত রেডিও না থাকলে কেমন হয়। তাই ঘরে পড়ে থাকা নষ্ট রেডিওটা সে ঠিক করতে লেগেছে। রেডিও ঠিক করার পাশাপাশি তার বউয়ের সাথে গল্প করছিল। তার বন্ধু নজর আলী কৃপণের ছেলে বহর কৃপণ এমন একটা কথা বলেছে যে কথায় তার অনেক রাগ হয়েছে। সে তার বন্ধুর কাছে যখন ডাক নিয়ে বলছিল তার বউ দারুন চা বানাতে পারে, এ কথা শুনে বহর বলেছিল সে তার বুকের কাজে লাগিয়ে দিতে পারে চা বানানোর। তাহলে দোকানে অনেক বেচা কেনা হবে। অযথা পরের বাড়ির মানুষকে ঘরে বসে খাওয়ানোর কি দরকার। এমন কথায় তার খুবই রাগ হয়েছিল। আর সেই কথা তার বউকে বলল। কিন্তু দেখল তার বউ তার বন্ধুর কথা সমর্থন করছে। উনি দুই পায়ে খাড়া রয়েছেন দোকানের চা তৈরি করার জন্য। কিন্তু ধমকের সাথে মজনুর ভাই তার বউকে থামিয়ে দিল। মেয়ে মানুষ দোকানে কেন যাবে চা বানাতে। ঘরের বউ ঘরে মানায়।

Screenshot_20240910-130744.jpg

স্ক্রিনশট: ইউটিউব


ব্যক্তিগত মতামত:

আমরা সবাই জানি হাড় কিপটে নাটকটা অনেক জনপ্রিয়। তবে এ নাটকের প্রত্যেকটা পর্বের মধ্যে বেশ দারুন দারুন অভিনয় রয়েছে। এজন্য নাটকটা আমি খুবই পছন্দ করি ও ভালবাসি। তাই দীর্ঘদিন ধরে এই নাটকটা আমি রিভিউ করে চলেছি। আজকে ৪৭ তম পর্বে আমি লক্ষ্য করে দেখেছি নজর আলী কৃপণের মনের কষ্টের বিষয়টা সত্যিই শোচনীয়। কতটা মনের কষ্ট হলে মানুষ না খেয়ে থাকে। বাড়িতে সবাই যখন তার শত্রু হয়ে দাঁড়ায় তখন আর বেঁচে থাকার ইচ্ছে জাগেনা। ঠিক তেমনটাই লক্ষ্য করা গেছে এই নাটকে নজর আলীর জীবন নিয়ে। কিন্তু দেখা গেছে নজর আলীর ছেলে যখন ভাত খাওয়ানোর জন্য অনুরোধ করল, নজর আলী তখন ও ছেলেকে ভুল বুঝল। এদিকে নজর আলী কৃপণের ছোট ছেলের প্রেম ভেঙে চাওয়ার পথে। তাদের দুজনার মধ্যে রাগারাগি হয়ে গেছে। তাই নহর চেষ্টা করতে প্রেমিকার চুমকিকে কিভাবে বান মারা যায়। তবে এ কথা শোনার পর গোল্লা নহরকে খুব সুন্দর ভাবে বুঝিয়ে সুদ্রিয়ে দিল। যাইহোক এ পর্বে নজর কৃপণের ট্রাজেডি লাইফ লক্ষ্য করেছি। তবে এই ট্রাজেডির মধ্যে নিখুঁত অভিনয় লক্ষণীয়। যদিও জানি প্রত্যেক জন তার নিজ নিজ অবস্থান থেকে দারুন অভিনয় করে। তবে এই পর্বের শ্রেষ্ঠ অভিনয় লক্ষ্য করেছি নজর আলী কৃপণের মধ্যে। একদম বন্ধুর থেকে শুরু করে বিছানায় শুয়ে থাকা পর্যন্ত তার অভিনয়টা অসাধারণ ছিল।


ব্যক্তিগত রেটিং:

৯.২৫/১০

নাটকের লিংক


সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

received_434859771523295.gif


পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন নাটক রিভিউতে, ততক্ষণ ভালো থাকুন। আল্লাহ হাফেজ।

TZjG7hXReeVoAvXt2X6pMxYAb3q65xMju8wryWxKrsghkLbdtHEKTgRBCYd7pi9pJd6nDf4ZPaJpEx3WAqvFVny2ozAtrhFXaDMnAMUAqtLhNESRQveVFZ7XHcED6WEQD48QkCkVTAvNg6.png

6VvuHGsoU2QBt9MXeXNdDuyd4Bmd63j7zJymDTWgdcJjnzpQii6mQVp5A4gDGCDR68W9RxwfgYXDkuSdrT6M7Y7xaaSUX484gjnbdCNf4usUnqiHpgSG4y2v9nUyHY.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

হাড় কিপটে নাটকের এই পর্বটি আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগলো। তবে এই পর্বে মজনুর বড় ভাই তার কাছ থেকে দোকান কেড়ে নেওয়ার বিষয়টা সত্যি একটু খারাপ লাগলো। যাইহোক আপনার পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ধন্যবাদ।

অনেক খুশি হলাম মন্তব্য দেখে।

হাড় কিপটে নাটকটার ৪৭ তম পর্বের রিভিউ পড়তে আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। একে একে আপনি অনেকগুলো পর্বের রিভিউ আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন এই নাটকের। দেখতে কিন্তু এই নাটকের অনেকগুলো পর্ব শেষ হয়ে গিয়েছে। আপনি অনেক সুন্দর রিভিউ শেয়ার করেন এটা আমার অনেক ভালো লাগে। হাড় কিপটে নাটকটার পরবর্তী পর্বে কি হয়েছে, এটা জানার জন্য অধীর অপেক্ষায় থাকলাম।

দারুন মন্তব্য করেছেন

ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে খুবই সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। আপনি আজকে আমাদের মাঝে নাটক রিভিউ পোস্ট শেয়ার করেছেন। আপনার এই নাটকের আগের পর্বগুলো আমি দেখেছি। তাই আজকেই পার্বতী দেখতে পেয়ে খুবই ভালো লাগলো। মোশারফ এর নাটক আমার এমনিতে অনেক ভালো লাগে। তাছাড়া এই নাটকটি কিন্তু অনেক মজার। ধন্যবাদ আপনাকে শেয়ার করার জন্য।

মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

খুবই সুন্দর একটা নাটকের রিভিউ করেছেন আপনি। আসলে নাটকের রিভিউ পোস্ট দেখলে আমার অনেক বেশি ভালো লাগে। যে নাটকটি আমি দেখি নাই সে নাটক দেখার সুযোগ হয়। কারণ সব সময় আপনারা সুন্দর নাটকগুলোর রিভিউ করে থাকেন। চমৎকার একটি নাটকের রিভিউ করার জন্য ধন্যবাদ।

ভালো লাগার মত নাটক তাই ভালো লাগে।