হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদের কে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আজকে আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি সবজি আড়তে রান্না খাওয়া কলা বিক্রয়ের অনুভূতি নিয়ে। এই পোস্ট পড়ার মধ্য দিয়ে আপনারা অনেক কিছু জানতে পারবেন।
'আমার বাংলা ব্লগ' কোয়ালিটি সম্পন্ন পোস্ট |
---|
বেশ কিছুদিন ধরে আমি একটা বিষয়ে লক্ষ্য করে দেখছি আমাদের দেশে শাকসবজির দাম অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। শাক সবজির দাম এমন বৃদ্ধি পাওয়াতে অনেক মানুষের সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে দৈনন্দিন খাবার কিনতে গিয়ে। বিশেষ করে শাকসবজি এবং এর সাথে প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো কিনতে গিয়ে সকল শ্রেণীর মানুষ হিমশিম খাচ্ছেন। প্রতিনিয়ত শাকসবজির দাম বেড়েই চলেছে। হয়তো এর পেছনে বেশ অনেক কারণ রয়েছে। বেশ কিছুদিন আগে আমাদের দেশের ১৩ টি জেলায় বন্যা হয়েছিল। এরপর প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে। এদিকে সরকার পতন হয়েছে। তার আগে প্রচন্ড পরিমাণ রোদ বেশি এর ফলে ফসল ফলাতে সক্ষম হয়নি অনেক কৃষক। হয়তো এই সমস্ত কারণ কে কেন্দ্র করেই দেশের এই ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি। আর এই ভয়াবহতার কারণে সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে সর্বশ্রেণীর জনসাধারণের। আমি গত পরশুদিন সকাল সাতটার দিকে আমাদের নিকটস্থ গাংনী শহরের সবজি আড়তে গিয়েছিলাম। পুকুর পাড়ের বেশ কিছু কলা গাছে কলা হয়েছিল। তার মধ্য থেকে পাঁচ কাইন কলা একটি বস্তা লোড করে মোটরসাইকেল যোগে সেখানে গিয়েছিলাম বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে। আর এভাবে দীর্ঘদিন পুকুরপাড়ের কলা বস্তা লোড করে আড়তে দিয়ে আসি। এক বস্তা কলা সর্বোচ্চ ৬০০/৭০০ টাকায় বিক্রয় করতাম। তখন প্রতি কেজি কলার দাম ছিল ২৫ /৩০ টাকা। তারও কিছু আগে যখন মূল্য কম ছিল তখন গ্রামে যেসব ব্যবসায়ী আসতো তাদের কাছে দিয়ে দিতাম। তখন দেখা যায় এক বস্তায় 400 টাকা মতো হতো কি। যাইহোক গত পরশুদিন এক বস্তা লোড করে আড়তে নিয়ে গেলাম।
আড়তে উপস্থিত হয়ে দেখলাম বিভিন্ন রকমের শাক সবজি বিক্রয় করতে এসেছেন অনেকে। দেখলাম শীতকালীন অনেক শাকসবজি উঠেছে বাজারে। তখন আমি ভাবছিলাম গত সপ্তাহে ৫৪ টাকা কেজি কলা বিক্রয় করে গেছিলাম। তারপরে বিক্রয় করেছিলাম ৫১ টাকা কেজি। তাই মনে মনে ভাবছিলাম ৫০ টাকা পর্যন্ত দাম থাকলে হয়। হয়তো এমন রেট পেলে নিজের কিছুটা চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে। কারণ এই টাকা দিয়ে অন্যান্য কিছু কেনা লাগবে আমার। এমনও চিন্তা-ভাবনা নিয়ে মোটরসাইকেল যখন আড়তে রাখলাম। মোটরসাইকেল থেকে নামার সুযোগ পেলাম না তার আগেই আড়তের লোকজন মোটরসাইকেল এর পিছন থেকে বস্তা খুলে নিয়ে চলে গেল। তখনো আমি চিন্তা করছিলাম ৫০ টাকার উপরে যদি বিক্রি করতে পারি তাহলে আমার জন্য সুবিধা হয়। এরপর মোটরসাইকেল টা রাস্তা ক্রস করে একটি হোটেলের সামনে রেখে আসলাম। যেহেতু দ্রুত আসতে হবে দেখতে হবে বিক্রয় হচ্ছে কিনা। এক কথায় নিজের জিনিস বলে কথা। বিক্রয় হলে স্লিপটা ধরতে হবে। তবে যতক্ষণ আমি এই পাশ থেকে ওপাশে গেলাম ততক্ষণ বেশ কিছু ফটো ধারণ করলাম শাকসবজির এবং উপস্থিত জনসাধারণের।
আমি আড়তের চারপাশে লক্ষ্য করে দেখলাম আলু কচু ওল মান ঝিঙে করলা পেঁয়াজ পটল সহ এমন অনেক জিনিস জুটেছে বাজারে। আমি সেগুলো ফটো ধারণ করছিলাম আর লক্ষ্য করে দেখছিলাম আমার কলা বিক্রয় হচ্ছে কিনা। দেখলাম ডিজিটাল স্কেলের পাশে রেখে দেওয়া হয়েছে আমার কলার বস্তা। এরপর আমি আড়তের কয়েকজন মানুষের কাছে জানতে চাইলাম রেট কেমন বলছে সব। তখন আড়তের একজন ব্যক্তি আমাকে জানালেন "আপনার কলার মূল্য ৬৫ টাকা পর্যন্ত উঠেছে আমরা ৭০ টাকা ধরে রেখেছি"! এমন কথা শোনার পর আমি আশ্চর্য হয়ে গেলাম। দেখলাম বেশ কয়েকজন ব্যক্তি কলা নেওয়ার জন্য রেডি রয়েছে কিন্তু ৬৫ টাকা ৬৬ টাকা পর্যন্ত বলছেন। তার মধ্য থেকে এক ব্যক্তি হঠাৎ করে এগিয়ে এসে বলল 70 টাকা দামে বাস্তার মধ্যে যা আছে সব আমি নেব। এরপর সেই ব্যক্তি অন্য কাউকে নিতে দিল না। সেখান থেকে বস্তা টানতে টানতে ভেতরে আর একটা ডিজিটাল স্কেলের কাছে নিয়ে আসলো। বস্তার মধ্যে ৩৫ কেজির একটু বেশি ছিল। আমি আমাদের ডিজিটাল স্কেলে মেপে নিয়ে গেছিলাম। এক মনে ২ কেজি বাদ দিতে হয়। সে জায়গায় ৩৩ কেজি করা হলো। কিন্তু যে ব্যবসায়িক কলা গুলো কিনলেন অনেক অনুরোধ করতে থাকলেন আরো ১ কেজি বাদ দিতে বা ফাও দিতে। বিভিন্ন অজুহাত শোনাতে থাকলেন তাই আমার অনুমতি নিয়ে ৩৩ কেজির জায়গায় ৩২ কেজি করা হলো। এতে আমি কিছুই বললাম না কারণ এত দাম। যেখানে আমার পুকুর পাড়ে কেজি কেজি পড়ে থাকে কাইন ধরে। সেই জায়গায় এত অনুরোধ করছে ১ কেজি বাদ দেবো তাতে কোন যায় আসে না আমার। এরপর স্লিপ হাতে করে ক্যাশিয়ার এর কাছে চলে গেলাম, সকল খরচ খরচ বাদ দিয়ে ২২১০ টাকা আমার হাতে দিয়ে দিলেন। যেখানে ৪০০ টাকা হতো তারপর সেখানে ৬-৭০০ টাকা হতো এখন সেই জায়গায় এক বস্তায় ২২০০ টাকা হচ্ছে। তাহলে বুঝতেই পারছেন দেশের পরিস্থিতি কোন জায়গায় যাচ্ছে। এত যদি শাকসবজির দাম হয় তাহলে দেশের মানুষ কিভাবে কিনবে এবং খাবে। এছাড়াও অন্যান্য শাকসবজির দাম শুনলাম এবং বেচাকেনা দেখলাম। এমন পরিবেশ পরিস্থিতি দেখে সত্যি আমার খুবই খারাপ লাগলো। আমি নিজেও আশাবাদী এই মূল্য একদিন কমবে এবং মানুষের হাতের নাগালে আসবে। কারণ এভাবে একটি রাষ্ট্র চলতে পারে না একটি রাষ্ট্রের মানুষ বাঁচতে পারে না। কারণ এক কেজি কলা যদি ৭০ টাকায় বিক্রয় করি আড়তে, তাহলে জনগণ কত দিয়ে কিনবে? বিষয়টা ভাবতে আমার কাছে খুব খারাপ লাগছে। যাইহোক, এরপর বাজারের আরো কিছু পরিস্থিতি দেখলাম; নিজের কেনাকাটা করলাম তারপর বাড়ি চলে আসলাম এবং এই বিষয়ে বিস্তারিত বাড়ির সকলের মাঝে আলোচনা করলাম।
Photography device:Infinix hot 11s/ Huawei P30 Pro-40mp
Location
এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
পোস্ট বিবরণ
ব্লগার | sumon09 |
---|---|
ফটোগ্রাফি ডিভাইস | Infinix Hot 11s |
What3words Location | Gangni-Meherpur |
ক্যামেরা | 50mp |
দেশ | বাংলাদেশ |
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ। |
---|
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আড়তে গিয়ে ৩২ কেজি কাঁচকলা বিক্রি করেছেন ২২১০ টাকা দিয়ে। বেশ ভালোই দাম পেয়েছেন ভাই। সবজির দাম এখন অনেক বেশি। দিনদিন দেশের সার্বিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। অনেক মানুষ না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে। যাইহোক এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এমন পরিস্থিতি সত্যি খারাপ লাগে ভাইয়া। আমি চাই এই দাম কমে ১০ টাকা ১৫ টাকায় চলে আসুক।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit