রাত দুপুরে বিলের পুকুর পাহারা দেওয়ার মুহূর্ত ফটো ও ভিডিও ধারণ

in hive-129948 •  last year 
আসসালামু আলাইকুম

IMG_20231030_033308_321.jpg





হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। রাতে একা পুকুর পাহারা দেওয়ার ভয়ানক মুহূর্ত ফটো আর ভিডিও আকারে আপনাদের মাঝে প্রকাশ করলাম পাশাপাশি বর্ণনার সাথে। আশা করি এই পোস্ট করলেই বিস্তারিত জানতে পারবেন।


ফটোগ্রাফি সমূহ:



রাত তখন তিনটা। বাড়ি থেকে রেডি হলাম পুকুর পাহারায় যাওয়ার জন্য। রাত বারোটার দিকে যাওয়া হয়,সারারাত থাকা হয় এরপর ফজরের আযানের আগে বাড়িতে আসি। তবে নিশ্চিত নেই কবে কখন কিভাবে যা আশা করা হয়। নিজের পুকুর পাহারা বলে কথা যেহেতু পাঁচটা পুকুরে পাঙ্গাস মাছ রয়েছে আর গ্রামের রয়েছে প্রচুর মাছ চোর। তাই সুযোগ সাপেক্ষে নিজের জীবন বাজি রেখে চলে যেতে হয় পুকুরে। একা পুকুরে যাওয়াটা বেশ কঠিন ব্যাপার যাদের অভ্যাস নেই তাদের জন্য, আর যাদের অভ্যাস আছে তাদের জন্যও কঠিন তবেও যেতে হয়। নিজের মত জামা প্যান্ট পড়ে রেডি হয়ে বাড়ি থেকে বের হলাম আকাশের চাঁদের একটা ফটোগ্রাফি করে।

IMG_20231030_033035901_BURST0002.jpg

IMG_20231030_033148_163.jpg

বাড়ি থেকে বের হয়ে রাস্তায় স্টিক লাইট খুব সুন্দর আলো দিচ্ছে, এপাশে ওপাশে তাকিয়ে দেখলাম কোন জন্ম মানুষ এর সাড়াশব্দ নেই। শুধু লক্ষ্য করলাম রাস্তায় আমি একলা। আর এভাবে প্রায় পুকুরে যাওয়া হয় আপনাদের মাঝে শেয়ার করা হয় না কতটা কঠিন মুহূর্ত একা রাতে পথ চলা মাঠে যাওয়া আসা। কিছুটা সামনে এগিয়ে যেতে আবারো চাঁদের আলো চোখে লাগল তাই আবার চেষ্টা করলাম ফটো ধারণ করতে।

IMG_20231030_033048_480.jpg

IMG_20231030_033041_889.jpg

IMG_20231030_033405_873.jpg

এরপর বাগানের মধ্যে প্রবেশ করলাম যেখানে রয়েছে বাঁশ গাছ তারপর মেহগনি গাছের সারি। বেশ বড় একটি বাগান রাস্তা থেকে নেমেই শুধু গাছ আর গাছ পাড়ি দিতে হবে দীর্ঘ এই বাগান ঘন অন্ধকার বাগানের মধ্যে। তবুও চাঁদের আলো পথ চলতে বেশি একটা সমস্যা বোধ হয়নি কারণ গভীর অন্ধকার বর্ষার দিনেও টস জ্বালিয়ে অন্ধকারে যাওয়ার অভ্যাস আমার। সামনে লাইটের আলো জ্বালিয়ে লক্ষ্য করলাম কোন কিছুর শব্দ কানে আসছে। যেহেতু পাশেই রয়েছে বেশ কয়েকটা তালগাছ আর বড় বাঁশ বাগান। সাহস করে সামনে এগিয়ে চলতে থাকলাম।

IMG_20231030_033306_147.jpg

এরপর বড় বাঁশ বাগানের নিচ দিয়ে মনের সাহস নিয়ে চলতে থাকলাম। হঠাৎ লক্ষ্য করলাম বাঁশ গাছের নিচে কি জানো হুড়মুড় করে চলে গেল। অনেক সময় শিয়ালের কাল থেকে থাকে, বনগাঁড়া থেকে থাকে। মনে সাহস নিয়ে ভেবে নিলাম হয়তো এমন কিছু লাইটের আলো মারলাম কোন কিছুই চোখে বাঁধলো না। এরপর আবারো পথচলা শুরু করলাম।

IMG_20231030_033452_324.jpg

IMG_20231030_033448_953.jpg

দীর্ঘ পথ চলতে চলতে পৌঁছে গেলাম আমাদের প্রথম পুকুরটায়। ঘন কালো অন্ধকার চাঁদ যেন মাঝেমধ্যে ঢেকে আসছে। আকাশের দিকে একটি ফটো মারার চেষ্টা করলাম আবারও কিন্তু তখন চাঁদ ছিল না। এরপর চলতে থাকলাম আমার পুকুরের দিকে আর চারিপাশের লক্ষ্য করতে থাকলাম কোন দিকে কোন মানুষজন আছে কিনা যেহেতু রাত্রে কালে বিভিন্ন প্রকার চোর পুকুরে ঘুরে বেড়ায়। অনেকে আছে মশারি দিয়ে ছোট মাছ ধরার উদ্দেশ্যে পুকুরে নামে এবং বড় মাছ জালে বেঁধে গেলে নিয়ে চলে যায়, নাইটো-জাল দিয়ে দাড়কি মাছ ধরার নামে পুকুরে নামে, অন্যান্য মাছ নিয়ে চলে যায় ঠিক এভাবে তিন শ্রেণীর মানুষ পুকুরে নামে আর ধরা পড়লে বলে আমরা এটা ধরতে এসেছি ওইটা ধরতে এসেছি কথা এটাই কেন আমার পুকুরে তোরা নামবি, এই পারমিশন তোদের কে দিয়েছে? চোর ধরা পড়লে গ্রামে বেশিরভাগ মানুষ দেখা যায় শরীরের পক্ষে সাপোর্ট দিয়ে থাকেন। তাই আর কি করার নিজের কাজ নিজের মাছ নিজের পুকুর নিজেরই দেখাশোনা করা লাগে। হোক সেটা দিনের বেলা অথবা রাত্রের বেলা।

IMG_20231030_033600_920.jpg

IMG_20231030_035530_0.jpg

পুকুর পাড়ে একা রাত অতিবাহিত করা বেশ কঠিন তাই এর আগে মোবাইলে সিনেমা দিতে পারতাম। মাঝেমধ্যে নিজের অবস্থান চেঞ্জ করতাম কখনো কলা গাছের নিচে কখনো বাঁশ ঝাড়ের নিচে কখনো আমার সবজি বানের নিচে আবার কখনো মাছ এর খাবার দেওয়া মাচার উপর। আর এভাবেই পুকুর পাহারা চলে আমার প্রতিনিয়ত। তবে কালরাতে ফটোগ্রাফির পাশাপাশি একটি ভিডিও ধারণ করেছি আপনাদের দেখানোর জন্য, আর ভিডিওটা আমার সবজি গাছের উপর দিয়ে। কারণ টাইমটা পাস করতে হবে। আশা করি ভিডিওটা দেখবেন।


পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

received_434859771523295.gif


পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ।

TZjG7hXReeVoAvXt2X6pMxYAb3q65xMju8wryWxKrsghkLbdtHEKTgRBCYd7pi9pJd6nDf4ZPaJpEx3WAqvFVny2ozAtrhFXaDMnAMUAqtLhNESRQveVFZ7XHcED6WEQD48QkCkVTAvNg6.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

বর্তমান সময়ে কোন কিছু করে আরাম নেই। পুকুরে মাছ চাষ করতে হলেও রাত্রে পাহারা দেওয়া লাগে না হলে চোরে চুরি করে নিয়ে যাওয়ার ভয় থাকে। বর্তমান যুগে মানুষ যাবে কোথায় সেটা বোঝা দায়। বর্তমান সময় জোসনা আলো এসে রাত্রে চারদিকে আলোকিত হয়ে থাকে তাই ফটো ভিডিও ধারণটি দারুন হয়েছে ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

হ্যাঁ ভাই সবকিছুর পরেও পাহারা তো দিতেই হবে, কিছু করার নেই যেহেতু নিজের সম্পদ।

রাত জেগে কোন কিছু পাহারা দেয়ার একদমই অভিজ্ঞতা নেই।
তবে অনেক আগে একবার চোর ঠেকানোর জন্য গ্রামের সবাই মিলে এক একদিন চার পাঁচ জন গ্রাম পাহারা দেয়া হতো।
একটা ছিলাম বন্ধুরা মিলে সবাই অনেক মজা করেছিলাম।
তবে একা একা থাকলে তো ভয় লাগার কথা একটু হলেও।

সেটা রাত পাহারা দেয়া হতো গ্রাম পাহারা করার জন্য রাস্তায় বসে, অনেক জন মিলে কিন্তু রাত জেগে মাঠের মাঝখানে একা চলাটা একটু কঠিন ব্যাপার।

বাপরে বাপ কত সাহস। আমি যখন পোস্টটি পড়ছিলাম তখন গায়ের লোম দাঁড়িয়ে যাচিছল। আর ভয়ে সমস্ত শরীর যেন কেমন করে উঠছিল। আপনার তো দেখছি বেশ সাহস। আমি হলে তো বেশ ভয় পেতাম। এমন কি হার্ট এ্যাটাক ও করতে পারতাম। সব মিলিয়ে আজ আপনার পোস্টটি বেশ ভয় নিয়েই পড়েছি।

প্রথমত আমারও একটু ভয় ভয় লাগত কিন্তু এখন আর সেগুলো কিছু মনে হয় না। বরঞ্চ রাতে আরো বেশি ভালো লাগে একলা চলাচল করতে।

আপনি আসলেই একজন সাহসী মানব। আপনি রাত তিনটার সময় নিজের জীবন বাজি রেখে পুকুরে মাছ পাহারা দেয়ার জন্য যান প্রতিদিন, জিনিস টা দেখে বুঝতে পারলাম আপনার অনেক সাহস।আর আপনার গ্ৰামে মাছ চোর শুনে আমার অনেক খারাপ লাগলো।

মাছ আছে যেখানে চোরতে থাকবে সেখানে

নির্জন রাত্রে একা একা পুকুরে যেতে বারবার বারণ করেছি। তারপরও গভীর রাত্রে একা পুকুরে যাওয়া ঠিক হয়নি। তবে গভীর রাত্রে পুকুর পাহারা করার ভিডিওগ্রাফিটি দেখতে মোটামুটি ভালো লাগছে। বিশেষ করে নিঝুম রাত্রে সবজি ও মরিচ গাছ গুলো দেখতে খুবই সুন্দর লাগছে।

হ্যাঁ রাতের দৃশ্য বেশ ভালই লাগছে

ভাইয়া আপনার পোষ্ট পড়েই আমার ভয় করছে। কিভাবে একা একা পুকুর পাহারা দেন। আপনার সাহসের প্রসংশা করতে হয়। ছবির মধ্যে যে বাঁশ,মেহেগুনী গাছের বাগান দেখালেন। এগুলোর কাছে গেলেই আমি অজ্ঞান হয়ে যাবো। মাছ চুরের জন্য আজকে কত কষ্ট করে পুকুর পাহারা দিতে হয়। চুরের যন্ত্রনায় রাতে ঘুমাতেও পারেন না। কি একটা অবস্থা। ধন্যবাদ।