সাতক্ষীরা 'পানসি রেস্তোরাঁ'তে প্রথম খাওয়ার অনুভূতি

in hive-129948 •  2 years ago  (edited)

আজ - শুক্রবার

১০ চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
২৪ মার্চ, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ


আসসালামু আলাইকুম

IMG_20230322_202416_832.jpg
Photography device: Infinix hot 11s
লোকেশন





হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আজ আমি আপনাদের মাঝে সাতক্ষীরার পানসি রেস্তোরাঁই এক রাতে খাওয়ার অনুভূতি নিয়ে উপস্থিত হয়েছি। তবে আনন্দদায়ক অনুভূতিটা সামনের পোস্টে উপস্থাপন করব ভিডিও সহকারে। আর প্রাথমিক পর্যায়টা না পড়লে কিছুই বুঝতে পারবেন না তাই চলুন প্রাথমিক পর্যায়টা ভালোভাবে জেনে নেই।


ফটোগ্রাফি সমূহ:



আবারো কিছুদিনের জন্য সাতক্ষীরা শহরে অবস্থান করছিলাম। পরীক্ষার জন্য উপস্থিত হয়েছিলাম সেখানে। আপনারা জানেন চারুকলা বিভাগে পরীক্ষা দিতে আমি সেখানে পূর্বে একবার গিয়েছিলাম। আবারও গত ২১ তারিখে সেখানে গিয়েছিলাম। চারদিন অবস্থান করে পরীক্ষা শেষ করে বাসায় ফিরে এসেছি। তবে গতবার যখন সাতক্ষীরা অবস্থান করেছিলাম তখন আমাদের বড় ভাইদের মুখে শুনেছিলাম সাতক্ষীরা একটি বিখ্যাত রেস্তোরা রয়েছে। যার নাম 'পানসি রেস্তোরাঁ' আর এই রেস্তোরাঁর নামটি প্রায় বারবার শোনা হয়ে থাকে। এবার ইচ্ছে ছিল এই রেস্তোরায় গিয়ে একবার খেয়ে আসবো। তবে একটি কথা আপনাদের মাঝে না বললেই নয় আমি বাইরে কোথাও ঘুরতে গেলে খাওয়ার বিষয়টা থেকে নিজেকে সংযত রাখার চেষ্টা করি। কারণ বাইরে দূরে কোথাও ঘুরতে গেলে গাড়িতে যাওয়ার কারণে আমার সমস্যা সৃষ্টি না হলেও বিভিন্ন দোকান অথবা হোটেলে যদি খাওয়া-দাওয়া করি সে খাওয়ার কোন গুনগত মান যদি ভালো না হয় তাহলে সমস্যা সৃষ্টি হয় পেটে। তবুও ইচ্ছা পোষন করেছিলাম এই রেস্তোরায় খাওয়ার জন্য যেহেতু এর অনেক গুনগান রয়েছে। তবে ইচ্ছে থাকলেও তো সব সময় সব জায়গায় যাওয়া হয় না। দিনের বেলায় যাওয়ার সুযোগ না পেলেও আমরা যে ২৫ জন সাতক্ষীরায় পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলাম তার মধ্য থেকে ১৫-২০ জন হোটেল থেকে অর্থাৎ আবাসিক হোটেল থেকে দেড় কিলো দূরে এই পানসি রেস্তোরায় উপস্থিত হতে পেরেছিলাম। আর এখানে উপস্থিত ছিল আমাদের বস রাজু ভাই, উনি সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছিল।

IMG_20230322_193606_537.jpg

IMG_20230322_194945_829.jpg

IMG_20230322_194948_890.jpg

IMG_20230322_194942_579.jpg
Photography device: Infinix hot 11s
লোকেশন



প্রথমে ভেবেছিলাম রেস্তোরাঁটি হতে পারে ভালো মানের। তবে সেখানে পৌঁছে লক্ষ্য করলাম সাধারণ হোটেল গুলোর মতই। ভেতরে দেখলাম বিভিন্ন জেনারেল মিনারেল ওয়াটারের ব্যবস্থা। তবে রেস্তোরাঁ টা দুইটা বড় বড় রুম বিশিষ্ট। যেখানে প্রতিনিয়ত পাবলিক খাওয়ার জন্য উপস্থিত হচ্ছি এবং বের হচ্ছে। আমরা আমাদের মত খাওয়ার জন্য হাত মুখ ধুয়ে বসে পড়লাম সবকিছু অর্ডার করলেন রাজু ভাই। আর এই সুযোগে আমি চেষ্টা করলাম এদিক ওদিক ফটোগ্রাফি করার জন্য। আমার সাথে আমার দুই বন্ধু মিলন ও জুলহাস ছিল। পাশাপাশি পরিচিত দুইজন শিক্ষার্থী ছিল যারা পূর্ব পরিচিত এবং আমাদের সাথেই খাওয়ার জন্য হোটেলে যেত। এদের মধ্যে এক জন হিন্দু, উনি ঢাকা থেকে এসেছিলেন। যাকে আমরা বৌদি বলে ডাকতাম। আরেকজন একটি অবিবাহিত মেয়ে, চুয়াডাঙ্গায় তার বাসা। যাইহোক আমরা পাঁচজন একটি টেবিলের চেয়ারে বসে পড়লাম। রাজু ভাই অর্ডার করার পরে হোটেল বয়রা খাবার আনতে লাগলো।

IMG_20230322_195003_272.jpg

IMG_20230322_195006_489.jpg

IMG_20230322_194959_560.jpg

IMG_20230322_194954_230.jpg

IMG_20230322_201003_384.jpg
Photography device: Infinix hot 11s
লোকেশন



আমি অবশ্য হোটেলে গেলে মাংস দিয়ে কখনো খেতে চায় না। আর মাছ তো প্রয়োজন বোধ করি না যেহেতু প্রতিনিয়ত আমাদের বাসায় সব রকম মাছ রান্না হতেই থাকে। আর মাংসটা খেতে চায় না এজন্য পেট ঠিক রাখার জন্য। কারণ আমি যে কয়বার হোটেলে মাংস দিয়ে খেয়েছি মাংসের শুধু ঝাল হয়,আমি এমনিতে ঝাল সহ্য করতে পারি না। হোটেলে আমার সবচেয়ে প্রিয় জিনিস খিচুড়ি ভাত, যদি ভাত জাতীয় কিছু খেয়ে থাকি সে ক্ষেত্রে। যাইহোক এবার ইচ্ছে ছিল এই নাম করা হোটেলে যখন খেতে আসতে হয়েছে খাসির মাংস ছাড়া কোন কথা হবে না। এদিকে বিরিয়ানি খাওয়ার ইচ্ছা ছিল না, এই বিরিয়ানি খেলে আমার পেটে সমস্যা দেখা দেয়। নিজের বাসার বিরিয়ানি খেলে কোন সমস্যা নেই কারন সমস্যা যায় হোক না কেন নিজের বাড়িতে। যাই হোক, রাজু ভাই সবার জন্য অর্ডার করলো এক পিস করে খাসির মাংস পাশাপাশি আরো অন্যান্য সবজি জাতীয় রেসিপি। চারিদিকে আলোয় আলোকিত সাতক্ষীরা স্টেডিয়াম এলাকার শহরটির। জানি নিউ মার্কেট থেকে কিছুটা উত্তরে। রাত্রি কালিন মুহূর্তে আমরা অনেকজন মিলে হোটেল টাইগার প্লাজা থেকে দেড় কিলো দূরে যেয়ে খেতে এসেছি, একটা অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করছিল মনের মধ্যে। অবশ্য টাইগার প্লাজার নিকটে অন্যান্য হোটেল রয়েছে তবুও নামকরা খাবার হোটেল বলে কথা। অধীর আগ্রহে আমরা বসে ছিলাম খাওয়ার জন্য হোটেল বয় একে একে আমাদের সবার খাবার বিতরণ শুরু করলো। আর খাবার বিতরণ প্রাথমিক পর্যায়ে যেহেতু সবজি দিয়ে খাওয়া শুরু হয়ে গেল তখন কিছু মনে হচ্ছিল না। খুব আনন্দ সহকারে সবাই খাওয়া শুরু করে দিয়েছিলাম। যেহেতু খেতে বসে কথা বলতে নেই, তার পরেও অনেক জন একসাথে খেতে গিয়েছি তাই যে যার মত গাল গল্পে মেতে উঠলো খেতে বসে। গতবার আমার বন্ধুরা অনেকবার আমাকে বলেছিল এই পানসি রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার কথা কিন্তু আমি কখনো রাজি হয়ে ছিলাম না। কারণ তখন আমরা 'হাসান হোটেল'এ উঠেছিলাম হাসান হোটেলের নিকটে পাঁচ ছয়টা খাবার হোটেল রয়েছে তাই নিকটের হোটেল থেকে এত দূরে যাওয়ার কোন প্রয়োজন মনে করেছিলাম না। তাই বন্ধুদের একটা ক্ষোভ ছিল আমার প্রতি। আর খেতে বসে এই কথাটা বারবার উল্লেখ করতে থাকলো আমার কাছে,পানসি হোটেলের গুনগান করতে করতে। তবে আমি তাদের কথায় তেমন কিছু মনে করছিলাম না। আর এরপরে যা ঘটলো পরিস্থিতি আমার অনুকূলে চলে আসলো, বন্ধুদের প্রতিকূলে চলে গেল। হয়তো খেতে বসে একটু কষ্ট অনুভব করলেও খাওয়ার পরে খুবই আনন্দ বোধ করছিলাম বন্ধুদের দুর্দশা দেখে। আর সেই ফাঁকে একটা ভিডিও করে নিয়েছিলাম বন্ধুদের পানসি রেস্তোরাঁ খাওয়ার অনুভূতিটা,যা আমি সামনে পোস্টে খুব আনন্দ সহকর আপনাদের মাঝে তুলে ধরব।

IMG_20230322_195022340_BURST0002.jpg

IMG_20230322_195225_098.jpg

IMG_20230322_201016_673.jpg

Photography device: Infinix hot 11s
লোকেশন


পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

received_434859771523295.gif


পুনরায় কথা হবে পরবর্তী পর্বে, ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ।

TZjG7hXReeVoAvXt2X6pMxYAb3q65xMju8wryWxKrsghkLbdtHEKTgRBCYd7pi9pJd6nDf4ZPaJpEx3WAqvFVny2ozAtrhFXaDMnAMUAqtLhNESRQveVFZ7XHcED6WEQD48QkCkVTAvNg6.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

বন্ধুরা সবাই একসাথে মিলে কোথাও খেতে যাবার মজাটাই আলাদা। আসলে পরীক্ষা দিতে গিয়ে আপনি খুবই মজার সময় কাটিয়েছেন। আর আপনার পরীক্ষার জন্য শুভ কামনা রইলো।

আজ সুন্দর মন্তব্য পেয়ে খুব খুশি হলাম

আপনারা সবাই মিলে বেশ ভালোই খাওয়া দাওয়া করেছেন দেখছি। পানসি রেস্তোরাঁ তে প্রথমবার খাওয়ার অনুভূতির পোস্ট পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো। যেহেতু সবাই মিলে গিয়েছিলেন তাই কথা বলতে বলতে খাওয়ার মজাটাই সত্য একেবারে অন্যরকম। আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য খুবই সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি করেছেন। ভালোই কেটেছে তাহলে আপনাদের মুহূর্তটি।

অবশ্যই খুবই আনন্দঘন মুহূর্ত কেটেছে শেষের দিকে

আপনি তো দেখছি পানসি রেস্তোরাঁতে প্রথমবার খাওয়া দাওয়া করার মুহূর্তটি আমাদের মাঝে খুবই সুন্দরভাবে শেয়ার করেছেন। যেহেতু প্রথমবার খেয়েছেন তাই মনে হচ্ছে একটু বেশি ভালো উপভোগ করেছিলেন মুহূর্ত। আপনি তো দেখছি একটা ভিডিও ও করেছেন তাহলে। আশা করছি পরবর্তী পোস্টে সেই ভিডিওটি শেয়ার করবেন মুহূর্তটি ভিডিওর মাধ্যমে দেখে ভালো লাগবে।

কিছুদিনের মধ্যে লাস্ট পর্ব তুলে ধরব