হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। ইতোপূর্বে আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছিলাম কুষ্টিয়ার রোটারী ক্লাবে আব্বুর চোখ অপারেশন করার দুইটি পর্ব নিয়ে। আজ আমি আপনাদের মাঝে তৃতীয় পর্ব নিয়ে উপস্থিত হয়েছি আশা করি এই পর্বের বিস্তারিত আপনারা মনোযোগ সহকারে পড়বেন এবং অনেক কিছু সম্পর্কে ধারণা অর্জন করবেন।
কুষ্টিয়া রোটারী ক্লাব আমাদের এলাকার মধ্যে অতি নামকরা এবং স্বনামধন্য একটি প্রতিষ্ঠান। যেখানে চক্ষু রোগীদের চোখ অপারেশন লেন্স লাগানোসহ চোখের যাবতীয় কার্যক্রম করা হয়। এখানে ভালো ভালো ডাক্তার দ্বারা সকল চক্ষু রোগীদের সেবা প্রদান করা হয়ে থাকে, তাই এত সুন্দর নাম শুনেই আমরা এখানে এসেছিলাম আব্বুর চোখ অপারেশন করার জন্য। গত দেড় বছর আগে আব্বুর বাম চোখ অপারেশন করে নিয়ে গেছিলাম। ইনশাল্লাহ সেই চখে ভালো দেখতে পারে। আমাদের আগে পরে গাংনী মেহেরপুর থেকে অনেক মানুষ এখানে অপারেশন হয়ে গেছে। অনেক মানুষের সাক্ষাৎকারও পেয়েছিলাম এই রোটারি ক্লাব সম্পর্কে। তাই দ্বিতীয়বারের মতো ডান চোখ অপারেশন করতে এসেছি এখানে। যখন আব্বুকে অপারেশন থিয়েটারের মধ্যে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তখন আমার যেন সময় কাটছিল না। তাই একবার কেবিনের মধ্যে এসে বসে থাকছি,আবার অপারেশন থিয়েটারের সামনে ঘোরাঘুরি করছি, সিঁড়ি থেকে উপর নিচে নামানামি করছি, গ্লাস দিয়ে বাইরের দৃশ্য দেখার চেষ্টা করছি। এভাবেই যেন দীর্ঘক্ষন অপেক্ষা করছিলাম কখন অপারেশন শেষ করে আব্বুকে বের করে আনবে। আর এই মুহূর্তটা আত্মীয়-স্বজন আপনজন পাশে না থাকলে একলা নিজের কাছে যে কতটা কষ্টকর, অসহায় অনুভব আর ধৈর্যের ব্যাপার তা বলে বোঝানো সম্ভব নয়। এটা আবার সন্ধ্যাকালীন মুহূর্ত যেন গায়ের মধ্যে একটু ঝিমঝিম করতে থাকলো। যাইহোক অপারেশন সম্পন্ন হওয়ার পর ডাক্তার থিয়েটারের বাইরে আনলো আমি আব্বুর হাত ধরে লিফটে করে পাঁচ তলার কেবিনে চলে গেলাম। এরপর একটি নার্স এসে আমাকে বেশ কিছু উপদেশ দিয়ে গেল। কখন কোন ঔষধ খাওয়াতে হবে কি খাবার খাওয়াতে হবে ইত্যাদি যাবতীয় বিষয় বুঝিয়ে দিয়ে গেল।
Photography device: Infinix hot 11s
location
রাতে ডক্টরদের একটা বিষয় মিস হয়ে গেছিল, সেটা হচ্ছে আমাদের বলেছিল এখন থেকে অপারেশন রোগীদের জন্য রাত্রিকালীন মুহূর্তে খাবারের ব্যবস্থা রয়েছে। প্রতি অপারেশনের রাতে রোগীদের খাবার দেওয়া হয়। আপনারা যেন বাজার থেকে খাবার কিনতে যাবেন না। আপনাদের আমরা খাবার দিয়ে যাব, এরপরেও আমাদের কাছে বেশ শুকনা খাবার এমনকি ভাতও ছিল। তবে নতুন করে আর বাজারে যেয়ে খাবার কিনতে যাইনি এই আশ্বাস পেয়ে। তবে কোন কারণবশত ডাক্তারদের মিসটেক হয়ে গেছিল আমাদের কেবিন পর্যন্ত খাবার পৌঁছাতে পারিনি। পরে তারা প্রাপ্তি স্বীকার করেছিল, তবে এটা আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম এই কারণে আপনারা যদি কেউ কখনো রোটারি ক্লাবের চোখ অপারেশন করার জন্য জান,অবশ্যই রাত্রে কালীন মুহূর্তের খাবারটা যদি আপনাদের মাঝে এনে না দেয় তাহলে একটু নিচে গিয়ে যোগাযোগ নিবেন অবশ্যই পেয়ে যাবেন। কারণ ভুল ভ্রান্তি মানুষের হতেই পারে, এখানে ভুল বোঝার কিচ্ছু নেই। যাই হোক আমাদের কাছে থাকা খাবার খেয়ে রাত্রী যাপন করলাম, যেহেতু আমি আব্বুর কাছ থেকে রাতে কালীন মুহূর্তে দূরে যাওয়ার চিন্তা ভাবনাই করিনি। কারণ আমার আব্বু শুধু চোখের সমস্যাটাই নয় বিভিন্ন অসুখে অসুস্থ এই জন্যই আমি এক্সট্রা খাবার আগে থেকেই কিনে রেখে ছিলাম। আর রোটারি ক্লাবের পাশ থেকে হোটেলটা একটু দূরে, রেল লাইনের পাশে। তাই কুষ্টিয়া বক চত্বর ক্রস করে যেতে হয়। আগে থেকে খাবার নিজেদের কাছে রেখে দেওয়াটাই বেটার তা যদি হয় শুকনা জাতীয় এবং রুগীর জন্য ডাক্তারের পরামর্শ অনুসারে, সেটাই বেটার হয়।
Photography device: Infinix hot 11s
location
আলহামদুলিল্লাহ পরদিন ঘুম থেকে উঠে দেখি আব্বু ভালো রয়েছে আব্বুকে ঘুম থেকে জাগানোর পর বললাম আমি হোটেল থেকে খাবার নিয়ে আসি যেহেতু চোখ অপারেশন হয়েছে তাই আব্বার জন্য নরম খাবার আনতে হবে তাই কুষ্টিয়া রোটারি ক্লাব থেকে চার রাস্তার মোড় বক চত্বর অতিক্রম করে চলে গেলাম রেল লাইনের পাশে দুইটা হোটেল রয়েছে সেখানে। যেহেতু সকাল বেলা তাই রাস্তায় গাড়ি চলাচল মানুষের সংখ্যা খুবই কম ছিল দোকানপাটগুলো সবে মাত্র দু-একটা করে খোলা শুরু করেছে তবে রাতের কালীন মুহূর্তে বিভিন্ন সময় ঘুম ভেঙেছিল এবং দীর্ঘক্ষণ জেগে ছিলাম জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখছিলাম যখন তখন দু একটা করে গাড়ি চলাচল করছে এদিক থেকে ওদিকে ওদিক থেকে এদিকে। কিন্তু সকাল ভোরের সময় রাস্তা যথেষ্ট ফাঁকা থাকাই বেশ ভালো লাগছিল আমার কারণ কোনদিন কুষ্টিয়াতে এতটা রাস্তা ফাঁকা অবস্থায় পথে চলিনি। যাইহোক হোটেলে গেলাম সেখান থেকে খাবার নিয়ে এলাম এরপর কয়েকটা ফটোগ্রাফি করতে করতে রোটারি ক্লাবে চলে এলাম।
Photography device: Infinix hot 11s
location
এরপর একটি নার্স এসে আমাদের তথ্য দিয়ে গেল কিছুক্ষণ পর ডাক্তার এসে চোখ পরীক্ষা করবে এবং চোখের উপর জমে থাকা ময়লা পরিষ্কার করে দিয়ে যাবে, এর পূর্বে আপনারা খাওয়া-দাওয়া শেষ করে রেডি হয়ে বসে থাকবেন। আর কিছু ঔষধ দিয়ে গেছিল তা খেতে বললেন। আমরা আমাদের মত রেডি হয়ে গেলাম। কিছুক্ষণ পর সত্যিই ডাক্তার আসলো এবং আমাদের প্রেসক্রিপশন সহ যাবতীয় কাগজগুলো হাতে দিয়ে গেল আব্বার চোখ ভালো করে পরিষ্কার করল এবং বলল কিছুক্ষণ পর অপারেশন থিয়েটারে নেমে আসতে সেখানে গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা বলা হবে তারপর রিলিজ দেওয়া হবে।
Photography device: Infinix hot 11s
location
আমারও ডাক্তারের কথা মত রেডি হয়ে গেলাম। আমাদের জিনিসপত্রগুলো ব্যাগের মধ্যে সবকিছু পুরে নিলাম, যে সমস্ত জিনিসগুলো প্রয়োজনে নিয়ে এসেছিলাম। এরপর অপারেশন থিয়েটারে আব্বাকে হাত ধরে নিয়ে গেলাম। যাওয়ার সময় লক্ষ্য করে দেখলাম সমস্ত মানুষ উপস্থিত হয়ে গেছে। পাশাপাশি পেশেন্টের সব সাথে আসা মানুষেরা বাইরে অবস্থান করেছিল। প্রথমে চোখ অপারেশনের রোগীগুলোকে ভেতরে প্রবেশ করে নিল। এরপর বিস্তারিত বিষয়গুলো সামনের পোস্টে আপনাদের মাঝে তুলে ধরবো ইনশাল্লাহ।
Photography device: Infinix hot 11s
location
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ। |
অবশেষে অপারেশন এর কাজ ভালোভাবে সম্পন্ন হয়েছে এটা জানতে পেরে খুবই ভালো লাগলো। মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি যেন আপনার আব্বাকে দ্রুত সুস্থ করে দেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সাবলীল ভাষায় মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit