গল্পঃ পাত্রী দেখার অনুভূতি

in hive-129948 •  2 years ago 

আজ - শনিবার

২৪ বৈশাখ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
০৬ এপ্রিল, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ


আসসালামু আলাইকুম

IMG_20230506_170110485_BURST0004.jpg





হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আজ আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি বিবাহের জন্য পাত্রী দেখার অনুভূতি নিয়ে। অবশ্যই এটা আমার নিজের পাত্রী নয়, কুটুমের জন্য। আশা করি সমস্ত সময় জুড়ে আপনারা থাকবেন এবং খুবই আনন্দঘন একটি মুহূর্ত অতিবাহিত করবেন এই পোস্টের মধ্যে, তাই চলুন আর দেরি না করে এখনই বিস্তারিত আলোচনা শুরু করা যাক।


ফটোগ্রাফি সমূহ:



কুয়েত প্রবাসী কুটুম আমার, করিতে চাইছেন বিবাহ!! আহা! আহা!! বিবাহ! কথা কানে বাজলেই যেন মধুর অনুভূতি জেগে ওঠে মনের মধ্যে। আর যখনই সময় হয়ে আসে নিজের জন্য না জানি কত সুন্দর অনুভূতি আর ফিলিংস মনের মধ্যে কাজ করে থাকে। যাই হোক যেহেতু পাত্রী দেখতে গিয়েছিলাম নিজের কুটুমের জন্য তাই নিজের কাছে একটু অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করছিল। অবশ্য আমি আমার নিজের জন্য কখনো পাত্রী দেখতে যাইনি। যেটা আপনাদেরকে দেখাতে পারি নাই দীর্ঘদিন ধরে আপনাদের মাঝে বলেছিলাম পাত্রী দেখার অনুভূতি আপনাদের মাঝে প্রকাশ করব কিন্তু সেটা হয়ে ওঠেনি। তবে যেটা প্রকাশ করেছি সেটা বিয়ের মুহূর্তের অর্থাৎ যার সাথে বিবাহ করেছি ঠিক তার বিষয়। যাইহোক আজকে পাত্রী দেখার জন্য যে বাড়িতে উপস্থিত হলাম সেটা পাত্রির খালার বাড়ি। বুঝতে পারছেন নতুন স্থানে প্রবেশ করলে নিজের কাছে কিছু আইচাই মনোভাব সৃষ্টি হয়। তাই এদিক ওদিকে ঘোরাফেরা করতে হয়। ঠিক সে মুহূর্তে একটি কমলা লেবুর গাছ সামনে পড়লো তাই ফটোগ্রাফি করে ফেললাম। ফল ভর্তি ছিল গাছ। তাই সেদিকে একটু বেশি নজর ছিল। অবশ্য পাত্রী দেখতে গিয়েছিলাম আমি আমার শ্বশুর আব্বা এবং আমার ছোট শালী অর্থাৎ ছোট বোনটি। শশুর আব্বা রুমের মধ্যে প্রবেশ করলেন শালিকা আমার সামনে যাচ্ছেন রুমের দিকে।

IMG_20230506_160445_363.jpg

IMG_20230506_160459_753.jpg

IMG_20230506_160015_301.jpg
Photography device: Infinix hot 11s
লোকেশন



কারেন্ট না থাকায় রুমের মধ্যে প্রচন্ড গরম ছিল তাই আমরা ফাকায় বের হয়ে গেলাম এবং একটি লিচু গাছের নিচে বসে গল্প করতে থাকলাম নতুন গেস্ট হিসাবে। মেয়েটার বাসা পাঁচ সাত কিলো দূরে সে তার খালার বাসায় আসছিল। আমাদের প্রথমে কথা ছিল মেয়ের বাড়ি থেকেই দেখব কিন্তু পথের মধ্যে শুনলাম সে মেয়ে নাকি খালার বাসার দিকে আসছে, তাই তার খালার বাসায় উপস্থিত হতে হয়েছিল আমাদের। যাইহোক তার খেলার ফ্যামিলির লোকজন মোটামুটি অনেক ভালো খুব সুন্দর ব্যবহার করলো আমাদের সাথে। পাশাপাশি দারুণ আপ্যায়নের ব্যবস্থা ছিল আমাদের জন্য একদিকে নাস্তা অন্যদিকে মাংসের খাবার। এদিকে আমার শশুর আব্বা গল্প করতে থাকলো পাত্রীর খালুর সাথে। এত সুন্দর আপ্যায়নের অর্থ আমি তখনই বুঝতে পারছিলাম তাই আমার শালিকাকে বারবার বলছিলাম হয়তো তুমি আমার পছন্দ হবে না। যে পাত্রী মানান হয়ে থাকে সে পাত্রী কখনো অন্যের বাড়ি থেকে মুখ দেখায় না। যাইহোক মন্তব্য পরে করি আসুন সামনে আগাতে থাকি।

IMG_20230506_162225_626.jpg

IMG_20230506_164843_966.jpg

IMG_20230506_171018_868.jpg
Photography device: Infinix hot 11s
লোকেশন



পাত্রীর খালার বাড়িতে আমরা যখন পাত্রী দেখার জন্য গল্প করছিলাম এই মুহূর্তে আমার ক্লাস টু এর একটি ছাত্রী হঠাৎ এসে উপস্থিত ওই বাড়িতে অর্থাৎ পাত্রীর খালার বাড়িতে। আমার ছাত্রীর নাম মোছাঃ আফিয়া খাতুন, আমি তখন ডেকে আমার নিকটে নিলাম এবং তার মুখ থেকে শুনতে পারলাম আমরা যে পাত্রী দেখতে এসেছি সে নাকি খুব মোটা আর শ্যামলা চেহারার। তখনই আমার আর আমার শালিকার মন ভেঙে গেল। যেহেতু আমার কুটুম উঁচা লম্বা ফর্সা মানান মেয়ে ছাড়া বিয়ে করবে না। যেহেতু সে কুয়েতে থাকে প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার উপর বেতন পায় সে কি যেই সেই মেয়েকে বিবাহ করতে চাই। কিছুক্ষণ পর পাত্রী আমাদের সামনে নিয়ে আসা হল আর এই দেখে আমার শালিকা জেনো একটু অন্যরকম মনোভাব পোষণ করলো। আমারও ঠিক তেমন ভালো লাগলো না। অবশ্য মানুষকে অবহেলা করছি না। আমার কুটুমের চাহিদা যেমন তার পুরোটাই বিপরীত এ মেয়ে দেখতে পছন্দ করে এমনটা না হলে মেয়ে দেখা বিফল। মেয়েকে দেখার পর বুঝতে পারলাম এই মেয়ে দেখতে আসা আমাদের ঠিক হয়নি। আমার শ্বশুর আব্বা অতি সহজ সরল মানুষ ঘটকের কথায় চলে এসেছে কিন্তু এসে দেখা যায় পুরা মিথ্যা কথা বলেছে ঘটকে। মেয়েটি দেখতে যেন মনে হয়েছিল অনেক বয়স বেশি তবে সে নাকি সবেমাত্র নিউ টেনে পড়ে। দেখা মাত্র বুঝতে পারলাম কখনো সম্ভব না আমার কুটুমার বিয়ে করা। তবে কি করার সরাসরি তো না বলে চলে আসা যায় না মেয়েটার সাথে ইচ্ছে মতো কথা বললাম। ঠিক স্কুলে যেভাবে নতুন ছাত্রদের ভাইবা নেওয়া হয় সেভাবেই তাকে বিভিন্ন কিছু প্রশ্ন করতে থাকলাম আর সে ছোট করে শুধু উত্তর দিতে থাকলো। আর এইভাবে কিছুটা সময় পর তাদের মাঝ থেকে বিদায় নেওয়ার জন্য উঠে পড়লাম।

IMG_20230506_162718_432.jpg

IMG_20230506_164857689_BURST0001_COVER.jpg

IMG_20230506_165331_998.jpg

IMG_20230506_165346184_BURST0001_COVER.jpg
Photography device: Infinix hot 11s
লোকেশন



চলে আসার পূর্বে আমি পাত্রীর খালাতো ভাইয়ের সাথে একটি সেলফি উঠালাম। তার পিতা মূলত এই বিয়ের বিষয়ে আমার শ্বশুরের সাথে আলাপ আলোচনা করেছিলেন এবং উনি আমার কুটুমের সাথে কুয়েতে থাকেন। আমি বলে আসলাম আমরা সকলে মিলে আলাপ-আলোচনা করে পরে সিদ্ধান্ত জানাবো আপনাদের। বাসায় ফিরে আমার বাড়িওয়ালা তার ভাইয়ের কাছে মেয়ের ফটো পাঠিয়ে দিয়েছে এবং তার ভাই রেগে আগুন। সে এক কথায় বলে দিয়েছে 'খেয়ে দেয়ে কাজ নেই এমন মেয়ে আমার জন্য দেখতে গেছে, তা আবার আমার নানীদের গ্রামে। যাই হোক এই গ্রামটি ছোট এবং ওখানে তাদের অনেক আত্মীয় রয়েছে। এই গ্রামটির নাম 'রুয়ের কান্দি' আমাদের খুবই নিকটে একটি গ্রাম। তবে মেয়ের বাসায় এখান থেকে আরো কিছু দূরে। যাই হোক এভাবেই পাত্রী দেখার কাজ সম্পন্ন করলাম এবং পাত্রের মতামত জানলাম এ বিষয়ে। পাত্র মোটেও রাজি নয় বরঞ্চ উল্টাপাল্টা রাগ শুনিয়েছে তার বোনকে। অবশ্য পরবর্তীতে আরেকটি মেয়ে দেখে এসেছি, সেই বিষনিয়ে আপনাদের মাঝে আবার উপস্থিত হব।

IMG_20230506_170106958_BURST0012.jpg

Screenshot_20230506-204011.jpg
Photography device: Infinix hot 11s
লোকেশন


পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

received_434859771523295.gif


পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ।

TZjG7hXReeVoAvXt2X6pMxYAb3q65xMju8wryWxKrsghkLbdtHEKTgRBCYd7pi9pJd6nDf4ZPaJpEx3WAqvFVny2ozAtrhFXaDMnAMUAqtLhNESRQveVFZ7XHcED6WEQD48QkCkVTAvNg6.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

মেয়ের বয়স বেশি হলে কি হবে তবে আপনার শালিকার বয়সও হয়েছে হা হা হা😆 । যাক সবকিছু হচ্ছে সৃষ্টিকর্তার হুকুম ছাড়া একটা গাছের পাতাও নড়ে না। যদি এই বিয়েতে সৃষ্টিকর্তার হুকুম থাকে তাহলে আপনি আমি কিংবা কারো কোন কথার মধ্যে বাঁধা থাকবে না আপনা আপনি বিয়ে হয়ে যাবে। অবশেষে মেয়ে দেখলেন মেয়ে পছন্দ হলো না। কিন্তু একদিন কারো না কারো সাথে হয়ে যাবে এই প্রত্যাশা করি। শালিকার জন্য মেয়ে দেখতে যাওয়ার বেশ সুন্দর অনুভূতি শেয়ার করলেন। প্রথমত মনে করেছিলাম আপনি আবার দ্বিতীয় বিবাহ করতে যাচ্ছেন নাকি 😜।

আমার জন্য দেখেছিলাম তা তো আপনাদের মাঝে পোস্ট করেছি

পাত্রী দেখার অনুভূতিমূলক একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে ভালো লাগলো। আপনারা পাত্রী দেখতে গিয়েছিলেন এবং সেই বিষয়টি শেয়ার করেছেন আমাদের সকলের মাঝে। আমি তো প্রথমে ভেবেছিলাম হয়তো আপনার নিজস্ব কারো জন্য পাত্রী দেখতে গিয়েছিলেন। আপনার কুটুমের জন্য গিয়েছিলেন পাত্রী দেখার জন্য। যাইহোক ভালোই লাগলো সম্পূর্ণটা।

কুটুমের জন্য পাত্রী দেখে বেড়াচ্ছি এখনো পোস্ট পাবেন