হাই বন্ধুরা!
কেমন আছেন সবাই? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাই-বোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। ভ্রমণ করতে কার না ভালো লাগে। তাই সুযোগ পেলে আমারও ভ্রমণ করতে যেতে ইচ্ছে জাগে দেশের যে কোন প্রান্তে। ঠিক তেমনি ভ্রমণ কাহিনী আজকে আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করব। পূর্ব সপ্তাহের মত আজকে আবারো আপনাদের মাঝে উপস্থিত হলাম সাতক্ষীরার লেক ভিউ ক্যাফে অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট নিয়ে। তবে আজকে শুধু স্মৃতি ধরে রাখার জন্য ফটো আর সেলফি পাশাপাশি সেই মুহূর্তের বিস্তারিত বিষয় আপনাদের মাঝে তুলে ধরবো। চলো শুরু করা যাক।
সাতক্ষীরা লেক ভিউ ক্যাফে এন্ড রেস্টুরেন্টে পৌঁছেছিলাম চারটার পরে। এই মুহূর্তে একটু রোদ গরম থাকায় মানুষজনের ভিড় প্রথমত কম দেখেছিলাম। এ মুহূর্তে আমি আমার দুই বন্ধু ফটোগ্রাফিতে ব্যতিব্যস্ত। সাথে ছিল আমাদের একটিমাত্র বান্ধবী রোজিনা। তার সাথে ছিল ঢাকায় থাকা আলমডাঙ্গা থানার একটি মেয়ে। সে মূলত রোজিনার রুমমেট। যাইহোক সেখানে মেয়েরা তাদের মত চলছিল আমরা তিন বন্ধু আমাদের মত ছবি ওঠানো আর ভিডিও ধারণে ব্যস্ত। আমি সেই স্টিমিটে জয়েন করার পর থেকে বন্ধুদের সাথে ছবি উঠাতে গেলেই শুধু প্রশ্ন করে বলতাম "আমি ছবি উঠাই ব্লগ করার জন্য, তোরা এত ছবি উঠিয়ে কি করবি" তখন যে যার মত উত্তর দিত। এই মুহূর্তে মিলনের মুখ থেকে উত্তর পেয়েছিলাম "বিয়ে করলে বউকে দেখাবো" আমি অবশ্য এই পর্যন্ত বউশালী সবাইকে দেখিয়ে ফেলেছি কিন্তু দুর্ভাগ্য মিলনের আজো বিয়ে হয়নি। প্রথমে রেস্টুরেন্টের চারিপাশে, পুকুরের মধ্যে থাকা রেস্টুরেন্টে যেতে যেই ব্রিজ তৈরি করা হয়েছে সেখানে আমরা তিন বন্ধু মোটামুটি ফটো আর সেলফি তুললাম। কখনো একটি মোবাইলে সবার ছবি, আবার যে যার মত নিজ নিজ মোবাইলে ছবি সেলফি ওটাতেই থাকলাম।
এরপর সেখানে থাকা তুফান কনভেনশন সেন্টারের পাশে আমরা তিন বন্ধু উপস্থিত হই সেলফি আর ফটো তোলার জন্য। হঠাৎ চোখের সামনে একটি ছোট্ট সুন্দর ফুটফুটে মেয়ে। তার বাবা-মা তাকে হাটানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু বাচ্চাটি কোল থেকে নাবতে চাচ্ছিল না। তখন আমারও ফটোগ্রাফি করে বেড়াচ্ছি তিনজন। উনারা আমাদের নিকটে হঠাৎ, আমি বলে বসলাম কি সুন্দর বাবু! ভাইয়া বাবুর ফটো উঠাবো? বাচ্চাটার আব্বা আম্মার কথা অতি ভদ্র,আর খুবই চমৎকারভাবে কথা বলছে তারা। তারা এক কথাতেই রাজি হয়ে গেল। বাচ্চাটির আব্বু বলে বসলো আমার বাবুকে যে দেখে সেই ছবি উঠাতে চায়। এরপর সেই ভাইয়া বাবুটিকে আমার মোবাইলের পানে তাকাতে বলল এবং বলল তোমার আংকেল ছবি উঠাবে একটু ভালো করে দাঁড়াও। তখন পাশ থেকে বাচ্চাটার আম্মু বলে বসলো বল যে তোমার মামা ছবি ওঠাবে তাহলে সে ভালো করে দাঁড়াবে। তখন ভাইয়া একটু রাগ হয়ে বললো আঙ্কেল বললে সমস্যা নেই,আমার মেয়ে কথা শুনবে। কিন্তু বাচ্চাটা এদিকে সেদিকে তাকাতে থাকলো। এরপর সেই আপু ভাইয়াটাকে হেটিয়ে দিয়ে বলল তুমি সরে যাও আমি মেয়ে ধরে রাখলে ছবি উঠবে। তারপর বলল দেখো বাবু তোমার তিনটা মামা তোমার ছবি তুলবে তুমি একটু ঠিক হয়ে দাঁড়াও। এই মুহূর্তে আমি কিন্তু মোটেও রাজি নই, অচেনা আপু সহ বাচ্চাটা ছবি উঠাবো। এতে বাচ্চাটার বাবাও একটু কেমন মাইন্ড করছে বুঝতে পারলাম। তখন আমি বলে বসলাম, আপু আমাদের এই ফটো অনলাইনে যেতে পারে, তাই আপনি কিছু যদি মনে না করেন আপনি ফটোর মধ্যে না থাকলে আমি খুশি হই। উনি আমার কথা বুঝলেন তারপর বাচ্চাটার আব্বা আবার বাচ্চাটাকে ধরল। এরপর ফটো উঠালাম। আমার খুব ভালো লাগছিল উনারা কেন এতটা আগ্রহী হয়ে আমাদের মোবাইলে বাচ্চার ছবি উঠাচ্ছিলেন। তবে একটা বিষয় নিশ্চিত হলাম যারা বাসায় একাকী থাকে, তারা সত্যি আমাদের মত মানুষকে পেলে মন খুলে কথা বলতে চাই অহংকার ভুলে। অনেকের অহংকার থাকে কিন্তু সব মানুষ তো সমান নয়। তারা ফাঁকা পরিবেশে আসার সুযোগ পেয়েছে এতেই অনেক আনন্দিত। এরপর পরিচিতি লাভ করলাম, কেন এসেছি, কোথা থেকে এসেছি সবকিছু খুলে বললাম। উনারা আমাদের সাথে কথা বলে খুবই আনন্দিত হয়েছিল। তবে কথা হচ্ছে পরিচয় লাভ করার পরে না ফটো তোলার কথা, সেক্ষেত্রে ফটো তোলার পরে পরিচয় হলাম।
এরপর কিছুটা সময়ের জন্য ফটো ধারণ করতে যে যার মত ছড়িয়ে পড়লাম এদিকে সেদিকে। এমন একটি মুহূর্তে কাউকে খুঁজে পাচ্ছিলাম না। অনেকক্ষণ পর আমার বান্ধবী রোজিনা এসে বলল সুমন কাউকে দেখছি না কেন। আমি বললাম আমারও তো একই প্রশ্ন। আমরা তিনজন একসাথে ছিলাম, এখন কাউকে দেখছি না। আপনি কোথায় ছিলেন? রোজিনা বলল আমি ফোয়ারার ওখানে বসে আছি অনেকক্ষণ। আমি তো হাটতে পারছি না। আসলে তার সেকেন্ড বেবি পেটে ছিল। এরপর সবার কাছে ফোন দিতে থাকলাম কিছুক্ষণ পর দেখি আমার দুই বন্ধু আর রোজিনার ওই এক রুমমেট একসাথে মানুষের ভিড় ঠেলে বের হয়ে আসলো। তারপর আমরা একটু রেস্ট নিলাম পানির ঝর্ণার কাছে। সেখানে চারিপাশে গোলাপ ফুলের গাছ। ফুল ফুটে রয়েছে। আমরা পাঁচ জন সিদ্ধান্ত নিলাম রেস্টুরেন্টের মধ্যে যাব। কি খাওয়া দাওয়া করলে ভালো হয়। সবাই সম্মতি দিল বেশি কিছু নয় শুধুমাত্র কফি খেয়ে বের হয়ে আসবো।
এরপর আমরা উপস্থিত হলাম লেক ভিউ ক্যাফে এন্ড রেস্টুরেন্ট এর মধ্যে। বাইরে থেকে দেখতে যতটা সুন্দর তার চেয়েও বেশি সুন্দর ভিতর দৃশ্য। আমার খুব ইচ্ছে ছিল ভেতরের অংশ আপনাদের ভিডিও ধারণ করে দেখাবো কিন্তু যদি কোন পারমিশন নিতে হয় বা উল্টাপাল্টা কথা শুনতে হয় সেজন্য আর ভিডিও ধারণ করতে সাহস করিনি। তবে দেখলাম অনেক মানুষের ভিড়। যত সময় ঘনিয়ে সন্ধ্যা হয়ে আসছে তত মানুষের আনাগোনা বেড়েই চলছে। আর সেখানে অর্ডার করার জন্য বিভিন্ন প্রকার খাবারের আইটেম রয়েছে নির্দিষ্ট লিস্টে। সেখানে পাঁচজনের জন্য পাঁচটি কফির অর্ডার করলাম। কিছুটা সময়ের জন্য গল্প আড্ডা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা। অতঃপর পেমেন্ট করে বের হয়ে আসা। আর বের হয়ে আসার মুহূর্তেও আমাদের তিন বন্ধুর ফটো সেলফি স্মৃতি ধরে রাখার জন্য।
যেহেতু রাত হয়ে যাচ্ছিল হোটেলে ফিরে আমাদের পড়তে হবে। এজন্য আমি সবাইকে বললাম এখানে আর বেশি সময় লস না করাটাই উত্তম। কিন্তু আমার বন্ধুর মিলন একটু রোমান্টিক। নতুন বান্ধবী সাথে সুযোগে কথা বলার চান্স নিচ্ছে দেখলাম। তবে মেয়েটা আমাদের বস হিসাবে যিনি সাতক্ষীরায় নিয়ে গিয়েছিলেন সেই বড় ভাইয়ের ভাগ্নে। এরপর শেষবারের মতো লাভের মধ্য থেকে আমাদের তিনজনার ফটো ধারণ করার কথা বলল। ওখান থেকে ফটো ধারণ করলাম। এরপর বাইরে থেকে রেস্টুরেন্টের দেখতে কেমন লাগে সেটার ফটো ধারণ করলাম। অতঃপর একটি অটো ভাড়া করে সাতক্ষীরা শহরের হাসান হোটেলে এসে উপস্থিত হয়ে গেলাম।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
বিষয় | রেনডম ফটোগ্রাফি |
ব্লগার | sumon09 |
ফটো ও ব্লগ ডিভাইস | Infinix Hot 11s |
লোকেশন | Location |
ক্যামেরা | 50mp |
দেশ | বাংলাদেশ |
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন ভ্রমণ বিষয়ক পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকবেন সবাই। সকলের জন্য শুভকামনা রইল,আল্লাহ হাফেজ। |
তিন বন্ধু মিলে সাতক্ষীরার লেক ভিউ ক্যাফে অ্যান্ড রেস্টুরেন্টে খুব সুন্দর কিছু মুহূর্ত কাটিয়েছেন। সন্ধ্যা হওয়ার পরের ভিউ গুলো বেশ দারুন লাগছে দেখতে। বন্ধুদের সাথে খুব সুন্দর মুহূর্ত কাটিয়েছেন সেখানে। সবাই মিলে কফি অর্ডার করে খেয়েছেন। আপনাদের মুহূর্তগুলো দেখে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
তিন বন্ধু মিলে সাতক্ষীরাতে বেশ ভালই সময় কাটিয়েছিলেন দেখছি, জায়গাটি যেমন সুন্দর তেমনি অনেক জনপ্রিয় এখানে যেমন ট্রাভেল করেছেন তেমনি অনেক সুন্দর ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে শেয়ার করলেন আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সাবলীল ভাষায় মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
বানানের প্রতি আরো একটু যত্নশীল হওয়ার অনুরোধ করছি। অনেক ধন্যবাদ
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আচ্ছা ঠিক আছে ভাইয়া।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনারা সকলে মিলে সাতক্ষীরায় খুব সুন্দর কিছু সময় অতিবাহিত করেছেন এবং আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে খুবই ভালো লাগছে। আসলে এমন অনেক সুন্দর সুন্দর জায়গা আমাদের দেশে রয়েছে যা দেখে মুগ্ধ ছাড়া কোন উপায় থাকে না৷ আর সাতক্ষীরা সেরকম সুন্দর একটি জায়গা৷ আপনারা আজকে লেক ভিউ ক্যাফে এন্ড রেস্টুরেন্টে যেভাবে সকলে মিলে খুব সুন্দর কিছু সময় অতিবাহিত করেছেন তা দেখে খুবই ভালো লাগছে৷
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ঠিক বলেছেন ভাই,ঠিক তেমনি সাতক্ষীরার এই জায়গাটা।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit