তিন বন্ধু মিলে সাতক্ষীরার লেক ভিউ রেস্টুরেন্ট এন্ড ক্যাফে ভ্রমণ

in hive-129948 •  last month 


আসসালামু আলাইকুম




হাই বন্ধুরা!

কেমন আছেন সবাই? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাই-বোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। ভ্রমণ করতে কার না ভালো লাগে। তাই সুযোগ পেলে আমারও ভ্রমণ করতে যেতে ইচ্ছে জাগে দেশের যে কোন প্রান্তে। ঠিক তেমনি ভ্রমণ কাহিনী আজকে আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করব। যেখানে সাতক্ষীরার সুন্দর একটি রেস্টুরেন্ট সম্পর্কে ধারণা দিব আপনাদের। আশা করি আমার এই ভ্রমণ বিষয়ক পোস্ট থেকে অনেক কিছু জানতে পারবেন।

IMG_20221118_184632.jpg

photography device:
Infinix Hot 11s

What3words Location



ফটোগ্রাফি সমূহ:


অনেকদিন পর হঠাৎ কেন জানি সাতক্ষীরার কথা খুবই মনে পড়ছিল। তাই মনে করলাম সাতক্ষীরা ভ্রমণের বেশ কিছু চিত্র নিয়ে উপস্থিত হয়। তবে হঠাৎ মাথায় আসলো লেক ভিউ ভ্রমণের কিছু চিত্র আপনাদের মাঝে তুলে ধরি। যেখানে আমার প্রাণপ্রিয় দুই বন্ধুর সাথে ভ্রমণ করেছিলাম স্থানটি। এটা সাতক্ষীরা সদর থেকে কিছুটা দক্ষিণ পূর্বে অবস্থিত সুন্দর একটি জায়গা। একটি বড় পুকুর কে কেন্দ্র করে খুব সুন্দর রিসোর্ট তৈরি করা হয়েছে। সাতক্ষীরা সদর হসপিটাল হতে কালীগঞ্জের রাস্তা অথবা শ্যামনগরে রাস্তার দিকে অগ্রসর হলেই এই জায়গাটা আগে চোখে বাঁধবে। আমরা তিন বন্ধু এক পড়ন্ত বিকেলে এই জায়গা ঘুরতে এসেছিলাম। মূলত আমরা সাতক্ষীরায় পরীক্ষার উদ্দেশ্যে গিয়েছিলাম। তাই মাঝেই ছুটির দিনগুলোতে সময় করে বেশ অনেক জায়গায় ভ্রমণ করেছে। তার মধ্যে অন্যতম ছিল এই লেক ভিউ রেস্টুরেন্ট এন্ড ক্যাফে। দেখার মত প্রাকৃতিক পরিবেশ বেশি একটা তৈরি করতে না পারলেও যথেষ্ট সুন্দর কৃত্রিম ভাবে সাজানোর চেষ্টা করেছে। গেট থেকে প্রবেশ করেই সুন্দর রাস্তা। ডান পাশ দিয়ে নারিকেল গাছের সারি। বামপাশের রাস্তায় বাম সাইডে নারিকেল ও আমগাছ রয়েছে। এবং ডান পাশে রয়েছে পাতাবাহার গাছ। এরপর পুকুরটার চারপাশে বেশ ভালোভাবে পাঁচিল দিয়ে বাঁধাই করা। তবে বাম পাশের নারিকেল গাছের ধোঁপে লক্ষ্য করলাম আর একটা পুকুর রয়েছে যেটা এখনো ভালোভাবে পর্যটকদের জন্য সাজানো হয়নি শুধুমাত্র সে পুকুরের মধ্যে শাপলা ফুল ও পদ্মফুল গাছ রয়েছে এছাড়াও বন জঙ্গল পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন নয়। আরেকটু সামনে এগিয়ে আসলে রয়েছে শিশু পার্ক। মূলত এই ছোট্ট পার্টিতেই বিকেলের সময় কাটানোর জন্য বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ এসে উপস্থিত হয় তাদের বাচ্চাদের নিয়ে। আরেকটু সামনে এগিয়ে গেলে রয়েছে ঝরনার সিস্টেম যেখানে পর্যটকদের বসার সুব্যবস্থা পাশাপাশি ঝরনার এপাশে ওপাশে ফুলের গাছ লাগানো এক কথায় মনোরম পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে যেন কিছুটা সময়ের জন্য বহিরাগত মানুষেরা রেস্ট নিতে পারে এবং উপভোগ করতে পারে চারিপাশের দৃশ্য। এছাড়াও পুকুরের আরেক পাশে রয়েছে লাভ আকৃতির বসার জায়গা। যেখানে আমার আপনার মত মানুষ গুলো বসতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে এবং ছবি সেলফি তুলতে পছন্দ করে।

IMG_20221118_172138_584.jpg

IMG_20221118_164625_228.jpg

Photography device: Infinix hot 11s

Lake View Satkhira



সন্ধ্যাকালীন মুহূর্তে আমরা ইচ্ছেমতো এদিকে ওদিকে ঘোরাঘুরি করলাম। হয়তো বেশি বড় স্থান নয় তারপরে যতটুক জায়গা দেখার মত। তবে তার অপজিট পাশে হয়তো প্রাকৃতিক পরিবেশের সৌন্দর্য রয়েছে তবে যেগুলো গ্রামেই পাওয়া যায়। এখানে আমরা উপস্থিত হয়ে যে যার মত ফটো ধারণ করতে থাকলাম ভিডিও ধারণ করতে থাকলাম। বেশ মনোরম পরিবেশ যত সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসতে থাকলো তত মানুষের ভিড় জমতে থাকলো। শুধু যে শিশু পার্ক টাই বাচ্চাদের খেলা করাবে তা নয়। বিকেলে তাদের সাথে খেলাধুলা সেরে রেস্টুরেন্টের মধ্যে অনেকে প্রবেশ করে হালকা খাওয়া দেওয়ার জন্য অথবা চা বা কফি খেয়ে বাসায় ফেরার জন্য। তবে একটা জিনিস আমার খুবই ভালো লেগেছিল এখানে লাল পাতার গাছ দিয়ে অনেক সুন্দর ভাবে লেক ভিউ ইংরেজিতে লেখা রয়েছে দেখে। এ লাল পাতার গাছ দুই রকমের হয়ে থাকে। একটা ঔষধি হিসেবে বিবেচিত। আর একটা পাতাবাহার হিসেবে বিবেচিত। তবে এই পাতাবাহার গাছটা খুবই কম দেখা যায়। আর ঔষধি লালপাতা গাছটা আমাদের বাসায় রয়েছে। অনেকে হাড় জোড়া অথবা "লাল বিশল্যকরণী" বলে থাকে। তবে যাই হোক পুকুরটা চারিপাশ এর পাতা বাহার গাছ দিয়ে সাজানো হয়েছে দেখতে বেশ ভালো লাগছিল। অবশ্য এই গাছের আলাদা নাম রয়েছে আমি সেই নামটা ব্যবহার করলাম না। কারণ অনেকেই পাতাবাহার বলে সম্পন্ন করে থাকে আমাদের এখানে। তবে সবচেয়ে ভালো লাগার বিষয় হচ্ছে মেন রেস্টুরেন্ট রয়েছে পুকুরের মাঝখানে। রেস্টুরেন্টটা দুই তালা বিশিষ্ট গোল আকৃতির। এছাড়া উপরে কয়েকটা বিল্ডিং রয়েছে বিভিন্ন পর্যায়ের। তবে প্রথম দিন আমাদের বেশ ভালোলাগার ছিল এই লাভের মধ্যে থেকে সুন্দর ভাবে ফটো ধারণ করব। আমরা বেশ কয়েকদিন সাতক্ষীরায় ছিলাম তার মধ্যে আমাদের সাথে যাওয়া শিক্ষার্থীর কয়েকজন এই জায়গা পূর্বে ভ্রমণ করেছিল। তারা বলেছিল রাত্রে বেলায় এই জায়গাটা জমজমাট ভাবে মানুষের আনুদান সৃষ্টি হয় এবং আলোকিত করে তোলে বিভিন্ন লাইটিং দ্বারা। সে মুহূর্তটা যদি এখানে কিছুটা সময় অতিবাহিত করা যায় তাহলে খুবই ভালো লাগবে। আমরা তিন বন্ধু সেভাবে প্রস্তুত ছিলাম এখানে দেখার জন্য।

IMG_20221118_170841_2.jpg

IMG_20221118_161732_263.jpg

IMG_20221118_171507_290.jpg

Photography device: Infinix hot 11s

Lake View Satkhira



আমরা অপেক্ষা করেছিলাম রাত হলে আরো কিছু ছবি ধারণ করব এবং এখানকার সৌন্দর্য উপভোগ করব। ঠিক সেভাবেই আমরা এই জায়গার সৌন্দর্য উপভোগ করলাম। লাভের মধ্যে ফটো তোলার জন্য অপেক্ষা করা লেগেছে এমন কি সিরিয়াল দেওয়া লেগেছে। আমাদের আগে বেশ কিছু মেয়েদের উপস্থিতি লক্ষ্য করেছিলাম যারা বিভিন্ন অ্যাঙ্গেলে ফটো ধারণ ভিডিও ধারণ করছিল এমনকি টিকটক তৈরি করেছিল। আমরাও আমাদের মত চেষ্টা করেছিলাম দুটো ফটো ধারণ করতে যেন সৃষ্টি করে রাখতে পারি। কি চমৎকার মনোরম পরিবেশ। তবে একটা বিষয় ভালো লেগেছিল দিনের বেলায় অনেক চড়ুই পাখি দেখেছিলাম সেখানে রাতের বেলায় চড়ুই পাখি গুলো আমগাছের মধ্যে উপস্থিত হয়েছিল। তবে সেই আমগাছটা কোন ফটো ধারণ করতে পারিনি।

IMG_20221118_171549.jpg

IMG_20221118_184638.jpg

IMG_20221118_184616.jpg

IMG_20221118_184456.jpg

Photography device: Infinix hot 11s

Lake View Satkhira



এরপর আমরা রেস্টুরেন্টে এসে উপস্থিত হই। সেখানে আমার একটা বিষয় লক্ষ্য করে দেখলাম কত প্রেমিক প্রেমিকা অথবা ফ্যামিলির লোকজন হিসেবে উপস্থিত হয়েছে। অনেকেই উপস্থিত হয়েছে প্রেমের টানে একে অপরকে দেখার জন্য। অনেকেই আলোচনায় ব্যস্ত নিজ নিজ ব্যবসার কথাবার্তা নিয়ে। আবার দেখলাম সংগীত জগতের কিছু মানুষ তাদের গান-বাজনা নিয়ে কথা বলছেন। এই মুহূর্তে স্মরণ করলাম সাতক্ষীরা কালীগঞ্জের জনপ্রিয় শিল্পী সোহাগের কথা। যাকে আমরা ব্যান্ড শিল্পী নামে জানি। তারি কণ্ঠের জনপ্রিয় একটি গান "লাল শাড়ি পরিয়া কন্যা আলতা রাঙ্গা পায়" নিয়ে আলোচনা করছিলাম বন্ধুরা মিলে। কারণ সাতক্ষীরায় আসার পর যে হোটেলে উঠেছিলাম সেখানে এই শিল্পীর সম্পর্কে অনেক কথা হয়েছিল। এছাড়াও অনেকের সাথে কথা হয়েছিল যারা বলেছিল পরীমনির সাতক্ষীরার সন্তান। এছাড়া কোন এক ক্রিকেট প্লেয়ারের নাম বলছিল তারা। এরপর কফি সাথে প্রবেশ করে ওয়েট করলাম কিছুটা, সময় গল্প করলাম। রেস্টুরেন্ট থেকে কফি পান করে আমরা আবারও হোটেলের দিকে রওনা দেই। এখান থেকে আমাদের হোটেলটা ছিল গাড়িতে 15 মিনিটের রাস্তা। অর্থাৎ এই স্থান থেকে সাতক্ষীরা সদর হসপিটাল এর নিকটে পৌঁছাতে ১৫ মিনিট সময় লাগে। অতঃপর আমরা আমাদের রুমে পৌঁছে গেলাম।

IMG_20221118_183546.jpg

IMG_20221118_183202300_BURST0002.jpg

Photography device: Infinix hot 11s

Lake View Satkhira



পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

received_434859771523295.gif

পোস্ট বিবরণ


ব্লগারsumon09
ডিভাইসInfinix Hot 11s
What3words locationLake View Satkhira
ক্যামেরা50mp
দেশবাংলাদেশ


পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন ভ্রমণ বিষয়ক পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকবেন সবাই। সকলের জন্য শুভকামনা রইল,আল্লাহ হাফেজ।

TZjG7hXReeVoAvXt2X6pMxYAb3q65xMju8wryWxKrsghkLbdtHEKTgRBCYd7pi9pJd6nDf4ZPaJpEx3WAqvFVny2ozAtrhFXaDMnAMUAqtLhNESRQveVFZ7XHcED6WEQD48QkCkVTAvNg6.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

তিন বন্ধু মিলে খুব সুন্দর কিছু মুহূর্ত কাটিয়েছেন। ভালো লাগলো আপনাদের ভ্রমণ পোষ্ট দেখে। বন্ধুদের সাথে এরকম ঘোরাঘুরি করতে ভালোই লাগে। জায়গা টা ভীষণ সুন্দর। রাতের বেলা লাইটিং এর কারণে খুবই ভালো লেগেছে দেখতে। ভালো লাগলো আপনাদের কাটানো মুহূর্ত গুলো দেখে। ধন্যবাদ আপনাকে।

হ্যাঁ অসাধারণ স্থান

অনেক সুন্দর একটি জায়াগা ভাইয়া আর এমন সুন্দর জায়গার ঘুরতে গেলে মন মানসিকতাও ভালো থাকে। আমার কাছে জায়গাটি বেশ পছন্দ হয়েছে। এত সুন্দর প্রকৃতির মাঝে ঘুরতে আমারও ভালো লাগে। এই লেকভিউ এর কথা আরও শুনেছি। তবে আমাদের ঢাকার আশে পাশে হলে ঘুরে আসা যেত। যাইহোক তিন বন্ধু মিলে ভালো ভ্রমণ করে অনেক ভালো কিছু সময় কাটিয়েছেন। যা এক সময় স্মৃতি হয়ে থাকবে।

ঢাকাতে তো ধানমন্ডি লেক রয়েছে