গল্প: এক রাতে পুলিশের সম্মুখীন-শেষ অংশ

in hive-129948 •  24 days ago  (edited)


আসসালামু আলাইকুম



হাই বন্ধুরা!

রাতে পুলিশের সম্মুখীন হওয়ার দ্বিতীয় বা শেষ অংশ নিয়ে আবারো উপস্থিত হলাম। আশা করব এই অংশটা পরিপূর্ণ পড়ে গল্পের পূর্ণাঙ্গ বিষয় জানতে পারবেন। আর যারা প্রথম অংশ পড়েন নাই অবশ্যই প্রথম অংশ পড়বেন এবং শেষের অংশ পড়ার মধ্য দিয়ে সম্পূর্ণ বোঝার চেষ্টা করবেন। চলুন তাহলে শেষ অংশ শুরু করি।

IMG_20240813_144228.jpg

photography device:
Infinix Hot 11s

What3words Location


গল্প: রাতে পুলিশের সম্মুখীন


এরপর ভাইকে রেখে বাড়ির দিকে রওনা দিয়েছি অর্ধেক পথ পার হয়ে এসেছি। হঠাৎ রাস্তায় একটি পাখি ভ্যানে ছয় সাতজন পুলিশ আমার সম্মুখীন হল। হঠাৎ আমার চোখে লাইট এর আলো মারলো। তারা আমাকে থামতে বলল। তারপর রাগের সাথে আমার বাড়ি কোথায়? আমার নাম কি? কোথায় গিয়েছিলাম? এত রাতে কি করে বেড়াচ্ছি? বেশ কিছু প্রশ্ন করলে। আমি স্বাভাবিকভাবে উত্তর দিলাম, মাছ বিক্রয় করলাম, বড় ভাইয়ের বাড়িটা একটু দূরে ওকে বাড়ি পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে আসলাম। পিছনে স্টিক লাইটের আলো জ্বলছে ওই বাড়িটা আমাদের। আমার সাজগোজ অর্থাৎ গামবুট পায়ে জিন্সের প্যান্ট পরা কালো গেঞ্জি গায়ে দেখে ওরা একটু অন্যরকম ভাব ছিল। তারপর বলল এত রাতে মাছ ধরা। আমি বললাম, জি! শেষ হয়েছে, ১১ টায় শুরু করেছিলাম। আবার প্রশ্ন করে সঠিক তো?

IMG_20240813_144219.jpg


তখন আমার মেজাজ প্রচন্ড বেগে চড়ে উঠলো। দীর্ঘক্ষণ পরিশ্রম করলাম রাত দুইটা বেজে যাচ্ছে। গামবুট জুতা প্যান্ট খুলতে হবে ফ্রেশ হতে হবে তারপর বিছানায় প্রায় তিনটায় ধাক্কা দিতে পারে। আবার রাত পোহালে কাজ আছে অনেক। আমি বললাম আপনারা এলাকায় নতুন? নতুন চাকরি পাইছেন? ডিউটি পাইছেন এলাকা বেড়ানোর? তারা কথা বলল না। আমি বললাম দীর্ঘদিন পাঙ্গাস চাষ করি। লেখাপড়ার পাশাপাশি কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। আপনারা রাস্তায় ডিউটি দিতে আসছেন একদিন। আর আমি প্রত্যেকদিন জান ঠোঁটের আগায় রেখে সারা রাত পুকুর পাহারা করি দীর্ঘদিন ধরে। এই জীবনে প্রথম আপনাদের আজকে দেখলাম যে পুলিশ টহল দিয়ে বেড়াচ্ছে গ্রামের মধ্যে। তারপরে আবার এত সন্দেহ। চলুন আব্বা এখনো জেগে আছে গেট তালা দেওয়ার জন্য, কথা বলেন, সত্য কি না মিথ্যা বলছি তাহলে একবারে নিশ্চিত হয়ে যাবেন? একজন প্রশ্ন করল লেখাপড়া জানেন? বেশ হাসি আসলো মনের মধ্যে। বললাম বাংলায় অনার্স মাস্টার্স কমপ্লিট করেছি ফাস্ট ক্লাস রেজাল্ট। ঘুষ দিয়ে চাকরি করব না বলেই কোন চাকরিতে যাওয়া হয়নি। হারাম খেতে পছন্দ করি না। কষ্ট হলেও হালাল উপার্জনের চিন্তা। এরপর ওদের মধ্য থেকে একজন বললেন আচ্ছা ভাই আপনি যান। আমি বললাম,মাঝেমধ্যে যখন গ্রামের মধ্যে টহল দিতে আসবেন এদিকে একটু লক্ষ্য রাইখেন। আমি কিন্তু জাগ্রতই থাকি। মাঠের দিকেই থাকি। উত্তর সাইড ইশারা করে বুঝে দিলাম এই সাইডে লাইটের আলো মারবেন, আমি সাথে সাথে সিগন্যাল দিব লাইটের আলো আপনাদের দিকে দিয়ে।

IMG_20240813_144229.jpg


পুলিশের ভ্যান চালক বলে বসলেন, আপনারা এতজন মিলে বলছেন বর্ষার সময় কি ঘন অন্ধকার রাস্তায় চলায় তো কঠিন। আপনাদের সামনে যদি ডাকাত বাধে তাহলে তো আপনারা পথ খুঁজে পাবেন না পালানোর, আর ওই ছেলেটা একলা রাতে পুকুর পাহারা করে বেড়ায়। অনেক শিক্ষিত ছেলে, ফার্স্ট ক্লাস রেজাল্ট, ট্যালেন্ট আছে। আপনারা তো মনে হয় মেট্রিক পাশ করে ঢুকেছেন তাই না স্যার। কথা শুনে খুব হাসি লাগলো তখন! তাদের মধ্য থেকে একজন ধমক দিয়ে ভ্যান চালককে বললেন! গাড়ি টানেন। নীরবে তারা চলে গেল। এরপর বাড়ি ফিরলাম, আব্বা বিরক্তবোধ করলেন, এত দেরি হল কেন আমার। বিস্তারিত বাড়িতে বললাম, এরপর ফ্রেশ হয়ে ঘুমাতে প্রায় তিনটা বেজে গেল।

গল্পটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

received_434859771523295.gif

গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
ফটোগ্রাফিমাছ
বিষয়রাতে পুলিশের সম্মুখীন
ফটোগ্রাফি ডিভাইসInfinix Hot 11s
ঘটনার লোকেশনজুগীরগোফা
ব্লগারSumon
ঠিকানাগাংনী-মেহেরপুর, বাংলাদেশ


পুনরায় ফিরে আসবো নতুন কোন গল্প নিয়ে। ততক্ষণ ভালো থাকুন সবাই, সবার জন্য শুভকামনা রইল। আল্লাহ হাফেজ।

TZjG7hXReeVoAvXt2X6pMxYAb3q65xMju8wryWxKrsghkLbdtHEKTgRBCYd7pi9pJd6nDf4ZPaJpEx3WAqvFVny2ozAtrhFXaDMnAMUAqtLhNESRQveVFZ7XHcED6WEQD48QkCkVTAvNg6.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

রাতে একলা চলাচল করা বেশ কঠিন বিষয়। আবার সেই জায়গায় যদি পুলিশ সামনে বাদে তাহলে তো আরো ঝামেলা। যাই হোক আপনিও কিন্তু সুন্দর কথা বলেছেন। তাছাড়া রাতে একলা এভাবে একদল পুলিশ না হয়ে যদি ডাকাত হত কি করতেন। ভাবতে যেন অবাক লাগেছে।

সমস্যার কিছু না, সৎ সাহস মনে রাখতে হবে।

বাহ,আপনার গল্পটি পড়ে বেশ মজা পেলুম।আসলেই পুলিশগুলি মনে হয় জব্দ উত্তর পেয়েছে।তাছাড়া আপনি তো কিছুদিন মাস্টারি চাকরি করেছেন সেটাও বলতে পারতেন।আসলেই মাছ ধরা ভীষণ কষ্টের রাতে,ধন্যবাদ ভাইয়া।

না এত কিছু বলার প্রয়োজন হয়নি

আসলে সত্যি বলতে পুলিশের জ্বালায় এখন বাইরে বের হওয়া মুশকিল হয়ে গেছে। তবে আপনার এই কথাটা ভাল লেগেছে যে এত পড়াশোনা করেও ঘুষ দিয়ে যদি চাকরি করতে হয় তাহলে সে চাকরি না করাটাই ভালো। যাই হোক খুব সুন্দর পোস্ট করেছেন ভাই ধন্যবাদ আপনাকে।

ঘুষ দিয়ে চাকরি করে লাভ কি, স্টিম কিনে পাওয়ার করা অনেক ভালো।