আজ - মঙ্গলবার
হ্যালো বন্ধুরা,
তারা কি গল্প করছে সেটাও বুঝিনা। আমি যে বোকার মত মেয়ের বেড রুমে বসে রয়েছি এমনটাই মনে হয়েছিল তখন। মারুফ বারবার এদিক-সেদিক যাচ্ছে আর আমার পাশে আসছে আমি বলছিলাম তোর উঠার দরকার নেই পাশেই থাক। এরপরে মাগরিবের আজান হলো সবাই ইফতারিতে বসে গেল। আমিও রোজা ছিলাম না। এই মুহূর্তে যেন আমার আরো লজ্জা লাগছিল। শুনতে পেলাম মেয়ে একটা রোজা ভাঙেনি আজকেও রোজা ছিল। আরো শুনতে পেলাম মেয়ে যদি রোজায় না থাকতো এতক্ষণে বিবাহ পড়িয়ে ফেলতাম! তখন মনে মনে ভাবলাম এটা কি হচ্ছে আমার সাথে এত রীতিমতো জুলুম। মনকে শক্ত করলাম মেয়ে না দেখে বিবাহ আমি করছি না। দরকার হয় জোর করে পালিয়ে যাব অথবা রাগারাগি করে চলে যাব তবুও মেয়ের সাথে কথা না বলে বিবাহ করছে না। আর মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলাম 'মেয়ে যদি মনের মত না হয় তার কাছে আমি অনেক আবোল তাবোল বলবো, যেন বুঝতে পারে আমার রিলেশন রয়েছে আমাকে জোর করব বিয়ে দেওয়া হচ্ছে'। যাইহোক ইফতারির পরে মেয়ের রুমে আবার বসলাম। এই মুহূর্তে হঠাৎ কে যেন আমাকে বলল দুই রুম পরে মেয়ে বসা আছে তার সাথে একটু আলাপ করে নাও। মেয়ের বেডরুম থেকে সেই বেডরুমে যাওয়ার মুহূর্ত যেন আমার পা উঠছিল না। ভাবছিলাম না জানি মেয়ের পাশে কারা বসা রয়েছে এবং কি বা গল্প করবো তার সাথে বুঝে উঠ ছিলাম না। যাইহোক যে রুমে মেয়ে বসা রয়েছে সেটা তার ছোট বোনের রুম। অর্থাৎ আমার ছোট শালীর ক্লাস এইটে পড়ে। রুমের মধ্যে প্রবেশ করে দেখলাম বিয়ের পাত্রী অর্থাৎ আমার বর্তমান ওয়াইফ বসা রয়েছে পাশে তার ছোট ভাই ও বোন দাঁড়িয়ে রয়েছে। বাকিরা সব দূরে চলে গেল এবং যাবার পূর্বে বলে গেল কিছুখন তোমরা গল্প করে নাও। ভেবেছিলাম মেয়ের সাথে গল্প করবো এখন দেখছি না মেয়ের ভাই বোন গল্প শুরু করল। বিস্তারিত রোমান্টিক মুহূর্ত সামনের দিনে বলা যাবে, ততক্ষণ ভালো থাকুন সবাই।
অটো গাড়ির মধ্যে বসে মারুফ আর আমার ভাই কেন জানি হাসাহাসি করছিল। তারা এটা সেটা বলছিল আর আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করতে থাকলো আর আমি বেশ নার্ভাস হতে থাকলাম।আমার ইচ্ছে ছিল যেকোনোভাবে পিছলিয়ে চলে আসব, শুধু মেয়েটা দেখে আসি। যাই হোক কাঙ্খিত গ্রামে পৌঁছে গেলাম। আমার আব্বা কিন্তু মেয়ের গ্রামের নাম ও আমাকে বলছিল না। কেন যে এমনটা করছিল সেটাও জানিনা। তবে আমি বাইরে থেকে সন্ধান নিয়ে ফেলেছিলাম গ্রামের নাম 'বাচামারি' যেহেতু আমি বারবার বলেছিলাম মেয়ে মনের মত না হলে বিয়ে করবো না আর আমার বাবা তো ছিল যে বিয়ে দিয়ে ছাড়বো। কি আর করার শেষমেষ মেয়ের বাড়িতে পৌঁছে গেলাম। মেয়ের বাড়িতে পৌঁছে আমি খুব আন-ইজি ফিল করছিলাম।
অবশ্য সেখানে পৌঁছানোর পরে কি বা আগে আসরের আজান হয়েছিল। তাই আমাদের সুযোগ এলো বাড়ির খুব নিকটে মসজিদ ঘর রয়েছে সেখানে নামাজ পড়তে যাওয়ার। তাই তাদের বাসা থেকে বের হয়ে সেখানে নামাজ পড়তে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করলাম এবং কিছুটা স্বস্তি বোধ করছিলাম। হয়তো ইমামের পিছনে জামাতে নামাজ পাব না তারপরে আমি ভাই আর মারুফ তিনজন মিলে মসজিদে চলে গেলাম যেহেতু জামাতের নামাজ শেষ হয়ে গেছে। চলতি পথে লক্ষ্য করলাম চারিপাশে অনেক মানুষ বারবার আমার পানের চেয়ে দেখছে। তবে সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয় হচ্ছে মেয়ের বাড়ির নিকটে আমাদের গ্রামের চারজনার বিয়ে হয়েছে, তা আমার কখনোই জানা ছিল না। আর তার মধ্য থেকে বেশ কয়েকজনের সাথে আমার ভাই পরিচিত যেহেতু আমার বাইরে চলার অভ্যাস নেই তাই কারো সাথে আমি তেমন পরিচিত ছিলাম না। রাস্তায় ভাই এর ওর সাথে কথা বলছে এবং তাড়াচ্ছে আমার একটু লজ্জা লজ্জা মনে ছিল। যাইহোক এরপরে কাঙ্খিত মসজিদ অর্থাৎ শশুর বাড়ির নিকটের মসজিদে তিনজন জামায়াত বাদে আসরের নামাজের কাজ সম্পন্ন করলাম। অবশ্য আমার আর মারুফের নামাজ শেষ হতে একটু দেরি হয়েছিল পূর্বে আমার ভাই নামাজ শেষ করে মসজিদের বাইরে এসে কার সাথে জানি কথা বলছিল। এরপর চেয়ে দেখি পরিচয় সম্পর্কে আমার মেজ দাদার নাতনি অর্থাৎ আমাদের চাচাতো বড় বোনের সাথে কথা বলছে তার বাড়ি এখানে সেটা আমি কখনোই জানতাম না। সে বলছে আমার ভাইয়েরা বিয়ে করতে এসেছে আর আমি জানছি না। এই জীবনে প্রথম তার সাথে কথা হল অথচ সে আমার চাচাতো বোন। যাইহোক সেই আপা আমাদের তো কোনমতে ছাড়লো না, তার বাড়িতে নিয়ে গেল। মসজিদে দুইবাড়ি পরে তার বাড়ি। সেখানে গেলাম মেয়ে সম্পর্কে সামান্য কিছু জানতে পারলাম, সে খুব ভালো বললো। আরো পরিচয় দিল আমাদের গ্রামের তিনজন মানুষ তার পাশেই বিবাহ করেছে। যার মধ্যে আমাদের ফুফাতো ভাইয়ের ছেলে একজন। অর্থাৎ মেয়ের বাড়ি বা আমার শ্বশুরবাড়ির নিকটে আমাদের চার ঘর আত্মীয় রয়েছে সেটা আমি কখনো জানতাম না। আরেকজন আমার বড় আব্বার নাতনির বাড়ি। যাই হোক সে হবার সাথে কিছুটা সময় গল্প করে আমরা চলে গেলাম মেয়ের বাড়িতে অর্থাৎ আমার শ্বশুর বাড়ির দিকে। পথের দিকে লক্ষ্য করলাম আমার শশুর আর কারা যেন সে রয়েছে আমরা কোথায় গেলাম নামাজ শেষ করে কেন ফিরছি না, ইতোমধ্যে আমার ভাইয়ের সেটে একাধিকবার ফোন চলে এসেছে। তারা ভেবেছিল আমি হয়তো বিয়ে করব না নামাজ পড়ার কথা বলে পালিয়েছি।
যাইহোক ফিরে এলাম মেয়ের রুমে বসলাম। তার রুমের বিভিন্ন জিনিসপাতি বারবার চেয়ে চেয়ে দেখতে থাকলাম আর ভাবতে থাকলাম সে কত কিছুই না ব্যবহার করে। বিশেষ করে তার বড় ভাই কুয়েতে থাকে তার জন্য বিদেশী অনেক কসমেটিক সামগ্রী দিয়ে থাকে। আর যা ড্রেসিং টেবিলের লক্ষণীয়, আরো এদিক সেদিকে। মারুফকে আস্তে আস্তে বললাম তুই আমাকে ছেড়ে বাইরে কোথাও যাস না আমি খুব আনইজি ফিল করছি ও যেন মিটমিট করে হাসতে থাকল আর ভাইয়ের চোখে চোখ রেখে হাসিতে ফেটে পড়লো। যেহেতু রোজার সময় মাগরিব সামনে চলে আসছে তাই বেশি কোন মানুষ বাইরে থেকে না আসলেও বাড়ির মধ্যে বেশ অনেক মানুষ ছিল যারা বারবার এসে আমাকে দেখে যাচ্ছে। অবশ্যই বিবাহ করব আমার কোন মন মানসিকতা আমার ছিল না আমার ইচ্ছে ছিল একটু দেখাশোনা হোক আর মেয়ের সাথে কথা বলা হোক। তারপরে সিদ্ধান্তে আসা যাবে। যদি আমার মন মত তারা ব্যবস্থা করত তাহলে আমি সামান্য ১০ মিনিটে মেয়ের সাথে আলাপ-আলোচনা করে বাসায় চলে আসতাম,এমন মন মানসিকতা নিয়েই প্রস্তুত ছিলাম।
Photography device: Infinix hot 11s
হবু শ্বশুর বাড়ি
কিন্তু সেটা আর হলো না লক্ষ্য করলাম কাজী মোল্লা সব কিছু তাদের বাড়িতে উপস্থিত। এমনকি নিকোটের গেস্ট তাদের বাসায় উপস্থিত। এদিকে নাকে বারবার বিরিয়ানি মাংসের বাসনা আসছে। মনে মনে ভাবলাম হয়তো কোরবানি হতে হবে এই মুহূর্তে আমাকে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য এখন পর্যন্ত আমি মেয়ে দেখি নাই। এদিকে আমার ভাই আমাদের সামনে নিয়ে বসে আছে পিছনে আব্বা আর মারুফের আব্বা বসে গল্প করছে।
Photography device: Infinix hot 11s
হবু শ্বশুর বাড়ি
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ।
শুনেছি মেয়েদেরকে এভাবে জোর করে বিয়ে দেওয়া হয় ছেলেদেরও যে এভাবে জোর করে বিয়ের পিঁড়িতে বসানো হয় জীবনে এই প্রথম দেখলাম। আপনি তো একেবারে মেয়ে মানুষের মত লজ্জা পাচ্ছেন। যাক শেষ পর্যন্ত মেয়েকে দেখতে পারবেন বিয়ের আগেই। পালাতে পারেন নাই বিয়ে তো ঠিকই করে নিতে হয়েছে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
মেয়ের সাথে গল্পের রোমান্টিক মুহূর্তটা সামনে দিন তুলে ধরব
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
পাত্র হিসেবে তো আপনি মাশাল্লাহ ঠিক আছেন। তাহলে বিয়ে করতে চাচ্ছিলেন না কেন। একদম আঙ্কেল ঠিক করেছে আপনাকে জোর করে বিয়ে করিয়ে দিয়েছে হাহাহা। পাত্রী দেখতে গিয়ে চলে আসার ধান্দা ছিল। কিন্তু অবশেষে বিয়ে পড়ানো হয়ে গেল বেশ ভালোই হয়েছে। অবশ্য অজানা কাউকে বিয়ে করার মধ্যে অন্যরকম রোমান্টিকতা বা আগ্রহ কাজ করে যা সচরাচর প্রেমের বিয়ে গুলোতে হয় না। আমার বিশ্বাস আপনি সুখী হবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
দোয়া করেন আপু আমাদের দাম্পত্য জীবন নিয়ে যেন সুখে থাকি
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অবশেষে আপনাকে বিয়ের পিঁড়িতে জোর করে বসানো হলো। আপনার বিয়ের কথা অনেক আগে থেকেই চলছিল সেটা শুনেছি আপনার বড় ভাইয়ের কাছে। আপনি যে বিয়ে করতে চাইছেন না এখন সেটাও শুনেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ এভাবে আপনাকে না জানিয়েই তারা বিয়ের আয়োজন করে ফেলেছে। যেহেতু আপনি আগে থেকেই না করেছেন সেজন্য আপনাকে এভাবে ধরে বেঁধে নিয়ে গিয়েছে হাহাহা। যাইহোক দাম্পত্য জীবন সুখের হোক এই প্রত্যাশা রাখলাম। তবে পরবর্তী পর্বটা অবশ্যই তাড়াতাড়ি শেয়ার করবেন পড়ার অপেক্ষায় থাকলাম।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
কি আর করার নিজের ডিসিশনে বিয়ে করতে পারলে না
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
🤣🤣🤣😂😂😂
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
বাহ বেশ ইন্টারেস্টিং ঘটনা তো। সারা জীবন তো দেখলাম মেয়েরা লজ্জা পায়। আপনাকে দেখে তো মনে হচ্ছে এখন থেকে ছেলেদের লজ্জা বেশি। সারা জীবন শুনলাম মেয়েদেরকে জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়, আপনার খেতে দেখছি আপনাকে নাকি জোর করে বিয়ে করছে। হিহিহি। ইন্টারেস্টিং ঘটনা তো। যাক অবশেষে তাহলে বিয়ের সাদ গ্রহণ করতেই হলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এটা স্বাভাবিক, সব সময় তার সব আশা করা যায় না।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ওরে ভাই আপনার পোস্ট পড়ে আমি হাসতে হাসতে পাগল হয়ে গেলাম। হা হা হা.. অনেকদিন পর খুব সুন্দর এবং মনের মত একটা পোস্ট পড়লাম আজ।
আসলে এই ব্যাপারে আমার খুব ইন্টারেস্ট ছিল, যে মেয়ে দেখতে গেলে কেমন অনুভূতি হয়। সেটার কিছুটা হলেও অন্তত বুঝতে পেরেছি। এই বিষয়ে যখন পরবর্তীতে লিখবেন তখন যদি পারেন আমাকে মেনশন দিয়ে দিয়েন। আমি অবশ্যই পড়ার চেষ্টা করব।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আচ্ছা ঠিক আছে ভাই মনে থাকলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit