হঠাৎ শশুর আব্বা অসুস্থ হওয়ায় গাংনী উপজেলা জেনারেল হাসপাতালের

in hive-129948 •  3 months ago 
আসসালামু আলাইকুম


হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদের কে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আজকে আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি শশুর আব্বা অসুস্থতার জন্য হসপিটালে যাওয়ার অনুভূতি নিয়ে। আশা করব এই পোস্ট করে আপনারা অনেক কিছু জানতে পারবেন।


'আমার বাংলা ব্লগ'
কোয়ালিটি সম্পন্ন পোস্ট


IMG_20240905_210525276_BURST0001_COVER.jpg

photography device: Infinix Hot 11s-50mp




ফটোগ্রাফি সমূহ:


আমি জানি পিতা মাতার পরে শশুর শাশুড়ি তাদের নিকটস্থ সম্মানের পাত্র। তাই আমি মনেপ্রাণে আমার শশুর শাশুড়িকে সম্মান করি ভালোবাসি। তবে জীবন চলার পথে সবাইকে দেশ বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় এজন্য অনেক সময় মনমালিন্য হয়ে থাকে। তবুও সেগুলো স্বাভাবিক। জীবন চলার পথে এগুলো আসবে। তবে মনে রাখতে হবে তারাই আপন। পর কখনো আপন হতে আসবে না। আপনার আমার বিপদে পর আগে আসবে না এই সমস্ত আপন মানুষগুলো ছাড়া। তাই আমি শ্রদ্ধার সাথে তাদের কথা মান্য করার চেষ্টা করি। কিন্তু অনেক সময় থেমে থাকতে হয় থেমে যেতে হয় অনেক কারণে। কিন্তু মনের টান সর্বসময় সর্বক্ষণ পিতা-মাতার প্রতি শশুর শাশুড়ির প্রতি। আমি কখনো চাই না কারো সাথে দ্বন্দ্ব-বিবাদ বা মনোমালিন্য সৃষ্টি হোক। তাই আমি আমার সাধ্যমত উভয়ের দিকেই দেখাশোনা করার চেষ্টা করি। কখনো সম্ভব হয় কখনো সম্ভব হয় না বিভিন্ন কারণে। যাই হোক কিছুদিন আগে আমি যখন আমার এই চেয়ার টেবিলে বসেই পোস্ট কমেন্ট করায় ব্যস্ত ছিলাম হঠাৎ আমার প্রাণপ্রিয় স্ত্রী মৌসুমীর মোবাইলে ফোন আসলো আমার শশুর আব্বা অসুস্থ। কথাটা শোনা মাত্র একটু খারাপ লাগলো কারণ এদিকে আমার আম্মু অসুস্থ ওদিকে যদি শশুর অসুস্থ হয় আবার নিজের মানসিক পেরা তো রয়েছেই, কয়দিক ঠেকানো যায়। তবুও আমি আমার স্ত্রীকে বললাম তুমি নিশ্চিত হয়ে জানো কোন হসপিটালে আসতে চাচ্ছেন। যাইহোক সিদ্ধান্ত হলো গাংনী হসপিটালে আসবেন। আমিও রেডি হয়ে বের হয়ে পড়লাম। তুমি বারবার শুধু আমার কথা স্মরণ হচ্ছিল এদিকে আম্মু অসুস্থ। আমি যতটা দেখাশোনা করি পরিবারে এত বেশি কেউ মাথা ঘামায় না আমাকে নিয়ে। তাই বের হতে হতে একটু লেট হয়ে গেল।

IMG_20240905_212415_747.jpg

IMG_20240905_212420_995.jpg

IMG_20240905_200830_485.jpg


গাংনী হসপিটালে আসার পূর্বেই আমার কলিজার টুকরা ছোট বোন জানালেন ভাইয়া আব্বা ওই হসপিটালের যাচ্ছেন না হারদী হসপিটালের দিকে রওনা দিয়েছেন। তখন একটু খারাপ লাগলো কথাটা শুনে। কারণ বাড়ি থেকে আমি এই বিষয়টা নিশ্চিত হতে চেয়েছিলাম। তবুও মাঝপথে এসে আর ব্যাক নাক করে গাংনীর দিকে চলে আসলাম। কারন আমার মোবাইলের চার্জার টা নষ্ট হয়ে গেছিল যাই তো খুব বেশি শেয়ার করেছি। তবে মনের মধ্যে বারবার চিন্তা হচ্ছিল আমার আম্মার জন্য আর আমার ছোট্ট সোনামণি বাচ্চাটার জন্য। কারণ আমার স্ত্রী বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকেন তাই বাবুটা কান্না করে একলা থাকলে। ভাবছিলাম দ্রুত বাসায় চলে যাব। এই মুহূর্তে গাংনী নেট ফাস্ট নামক মোবাইলের ঘরে ঢুকলাম এবং মোবাইলের কেবল নিলাম। ঠিক ঐ মুহূর্তে শ্বশুর আব্বা ফোন দিলেন। প্রশ্ন করলেন আব্বা তুমি কোথায় আছো। আমি বললাম আব্বা আমি গাংনীতে রয়েছি। তখন উনি বললেন তুমি ওখানে থাকো। আমি গাংনীতে আসছি। তখন আমি সুন্দরভাবে বললাম আমি আছি আপনি সাবধানে দ্রুত চলে আসার চেষ্টা করেন। উনি আমার কথা শুনে খুশি হলেন বললেন আমি গাড়িতে উঠছি চলে আসছি এখনই। এরপর ভাবলাম এই বাজারে থেকে আর লাভ কি হসপিটালে চলে যায়। রাতে গাংনী বাজার বেশ জনাকীর্ণ হয়ে ওঠে। এর আগে এমনটা দেখি নাই। তবে এখন যেন রাত সাতটার পর থেকে মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে রাত নয়টা দশটা পর্যন্ত। রাস্তা সংস্কারের পর থেকে মানুষের এত আনাগোনা আর দেশ সংস্কার এরপর থেকে আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। সারাদিন বাড়িতে থাকার পর এমন পরিবেশ দেখে ভালো লাগছিল। কিন্তু গানে হসপিটালে এসেই মোটরসাইকেলটা রাখতেই শুনতে পারলাম আমার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ভাইয়ের আর্তনাদ।

IMG_20240905_211407_683.jpg

IMG_20240905_200836_262.jpg

IMG_20240905_200847_907.jpg


তাৎক্ষণিকভাবে জানতে চাইলাম কি হয়েছে। তখন সে ভাই নিজেই বললেন আমার মোটরসাইকেলটা ওইখানে রেখেছিলাম কিন্তু মোটরসাইকেলটা চরে নিয়ে গেছে। কথাটা শোনো মাত্র আমি ভয় পেয়ে গেলাম। আমার মোটরসাইকেলে না আছে কাগজ না আছে আলাদা এক্সট্রা লক। তখন ভাবলাম শশুর আব্বাকে নিয়ে যদি হসপিটালের মধ্যে থাকি তাহলে আমার গাড়িটার কি হবে। তিনি কেমন অসুস্থ সেটা বুঝতে পারছি না। এরপর এই ভাইটা অনেক কথা বলতে থাকলো। বলল মোটরসাইকেল রাখার পরে আমি উপর থেকে বারবার খেয়াল করেছি দেখলাম একটি ছেলে এখানে দাঁড়িয়ে রয়েছে অনেকক্ষণ। এরপর তার দৃষ্টিভঙ্গি আমার কাছে যেন একটু কেমন কেমন মনে হচ্ছিল। তবে আমার মোটরসাইকেলের ঘাড় লক দেওয়া ছিল তাই কিছু মনে করছিলাম না। যাই হোক উনি মোটরসাইকেল টা হারালেন। এ বিষয় না হয় পরে কথা বলব। এরপর আমার শ্বশুর আব্বা আসলেন। ডাক্তারকে দেখানো হলো। শশুর আব্বা তার সমস্যার কথা তুলে ধরলেন। কিন্তু লক্ষ্য করলাম ডাক্তার যেন গুরুত্ব দিয়ে কিছুই শুনতে চাচ্ছেন না। সরকারি হসপিটালে ডাক্তার যদি রোগীকে সময় না দেয় তাহলে এত দূর দুরান্ত থেকে এসে লাভ কি। তিনি ভর্তি হয়ে থাকতে বললেন। আসলে ভর্তি হয়ে থাকলে কি সমাধান। ডাক্তাররা এগারোটার সময় আর দিনে ১১ টার সময় দেখতে আসেন। আবার সেই দিনটা ছিল সম্ভবত বৃহস্পতিবার শুক্রবার তো ছুটির দিন। এদিকে আমার ডাক্তার বললেন আল্ট্রাসনো করতে। এইজন্য আমি নিকটস্থ রবিউল ক্লিনিকে আসলাম। সেখানে জানতে পারলাম পরের দিন সকাল ৯ টার পর থেকে এই সমস্ত চেকাপের কাজ হবে। শশুর আব্বার কথা শুনে বুঝতে পারলাম অতিরিক্ত পরিশ্রম করায় গ্যাসের প্রবলেম হয়েছে। তাই ডাক্তারের আশা ভরসা না করে বাসায় নিয়ে চলে আসলাম। আর বললাম দুই বেলা গ্যাসের ওষুধ খেতে। তবে আমার খারাপ লাগলো আর বুঝতে পারলাম সরকারি হসপিটালে না যাওয়াটাই বেটার। কিন্তু রাত আটটার পর অধিকাংশ ক্লিনিক বন্ধ হয়ে যায়। হঠাৎ এই মুহূর্তে পেশেন্টরা তো সরকারি হাসপাতালগুলোই আশা করবে। কিন্তু আশা করে লাভ টা কি? ডাক্তার যদি একটু চেকআপ না করে, প্রেশার না মাপে। একটু থেমে পেশেন্টের কথা না শুনে। মন থেকে দোয়া করি, মহান সৃষ্টিকর্তা আমার পিতা-মাতা এবং শশুর শাশুড়িকে যেনো সুস্থ রাখেন এবং নেক হায়াত বৃদ্ধি করেন।

IMG_20240905_210244_385.jpg

IMG_20240905_210247_044.jpg

IMG_20240905_210252_970.jpg

Photography device: Infinix hot 11s
Location

99pyU5Ga1kwqSXWA2evTexn6YzPHotJF8R85JZsErvtTWY68oBe2d5MBQiiXJUc2pjsGrMz4xjWmvQsjsdJnMVeP8i6MwiRYrHdW8u9nnLtpmjP8p8fhZZKVziK8U1tQW2.png


এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

received_434859771523295.gif

পোস্ট বিবরণ


ব্লগারsumon09
বিষয়হঠাৎ শশুরের অসুস্থতা
ফটোগ্রাফি ডিভাইসInfinix Hot 11s
What3words LocationGangni-Meherpur
ক্যামেরা50mp
দেশবাংলাদেশ



পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ।

R6TbvATub8MquGoqJZ4SE2UCpaUQzmNnWQxvJGwvYApXWE4KsVzC8vNNXWgtz7hrfoYPSrjupZgj7VtKhrH935ua1PLs4Vr7KiYnVAy3oD...tCNiac63XNuwJJZPbTjHfGPYJH4BJoHgX8HdohSPrSasKvArV8wiiFV7ntYqz66tLZiqG67BKrPAveZFRs3vaqucpJgsaE3qA6Rwasb2fYDx3U5dXGLwwRdyH8.png

6VvuHGsoU2QBt9MXeXNdDuyd4Bmd63j7zJymDTWgdcJjnzpQii6mQVp5A4gDGCDR68W9RxwfgYXDkuSdrT6M7Y7xaaSUX484gjnbdCNf4usUnqiHpgSG4y2v9nUyHY.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

আমরা সবাই দোয়া করি আপনার শশুর আব্বা যেন সুস্থ থাকেন এবং ভালো থাকেন। উনার অসুস্থতার কথা শুনে খারাপ লাগছে।আসলে বিপদ হঠাৎ করেই চলে আসে। বিপদ কখনো বলে আসে না ভাইয়া।

ঠিক বলেছেন আপনি।

আপনার শশুর আব্বা অসুস্থ জেনে খুব খারাপ লাগলো। যেন উনি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি। হতাশ হবেন না ভাই নিশ্চয় সুস্থ হয়ে উঠবে। তার দিকে বিশেষ খেয়াল রাখবেন। ধন্যবাদ আপনাকে ভাই ‌ ।

দোয়া করবেন সবাই যেন সুস্থ থাকে

আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো।আর আপনার কথাটা ঠিক যে আপন কখনো পর হয় না আর পর কখনো আপনা হয় না এই কথাটির সঙ্গে আমি সম্পূর্ণ একমত।

পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ