হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদের কে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আজ আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি ফুলের বাগান তৈরি করার মুহূর্ত নিয়ে। যখন সুন্দর ভাবে প্রস্তুত করা হয়েছিল এবং গাছ রোপন করা হয়েছিল সেই মুহূর্তে আমাদের অনুভূতি যা ছিল তাই নিয়ে আজকের পোস্ট। তাই চলুন দেরি না করে মনোযোগ সহকারে পোস্ট পড়ি।
'আমার বাংলা ব্লগ' কোয়ালিটি সম্পন্ন পোস্ট |
গত ২০২২ সালে নভেম্বর মাসে আমাদের বিদ্যালয়ে ফুল গাছ লাগানোর জন্য আমরা উঠে পড়ে লেগেছিলাম। কারণ বিদ্যালয়ের পরিবেশ সৌন্দর্য করার অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে ফুলের বাগান। আর একটি বিদ্যালয়ে যদি ফুলের বাগান থাকে এবং সেখানে সর্বসময় যদি ফুল ফুটে থাকে এটা মানুষকে বেশি আকর্ষণ করে এবং ছাত্র-ছাত্রীর ভালো লাগা কাজ করে লেখাপড়া যখন একঘেয়েমিতা সৃষ্টি হয় তখন ফুলের বাগানের ফুল মানুষের একঘেয়েমিতা দূর করার অন্যতম মাধ্যম হিসেবে কাজ করে থাকে। তারপর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এভাবে ফুলের বাগান তৈরি করে তার সৌন্দর্য বৃদ্ধি এবং মানুষের মন ভালো রাখার অন্যতম পন্থা হিসেবে কাজ করার জন্যই সৃষ্টি করা হয়। এ সমস্ত বিষয়গুলো বিবেচনা করে আমি আর মোস্তাফিজুর এই কাজে অংশগ্রহণ করেছিলাম। এরপরে সক্রিয়ভাবে বিদ্যালয়ের শিক্ষকমন্ডলী ধারা ফুল গাছ তৈরি করার কার্যক্রম শুরু করা হয়েছিল ঠিক ফটোগ্রাফির দৃশ্যপট দেখে যা বুঝতে পারছেন। প্রথমে হাই রোডের পাশে দিয়ে যেই তারের প্রাচীর রয়েছে সে প্রাচীর কোল দিয়ে সম্পূর্ণটা আমি আর মুস্তাফিজুর মাটির সমান করেছিলাম এবং ঘাস গাছড়া আগাছা দমন করেছিলাম। নিচে অনেক ছোট বড় আস্ত ইট খোয়া ছিল, সেই সমস্ত ইট গুলো বের করে রাস্তার ওপাশে রাখা হয়েছিল এরপর নিচের মাটি ও বালি সাট করে ফুল গাছ লাগানোর জন্য গর্ত করা হয়েছিল। স্কুলে একাধিকবার এই বিষয় মিটিং করা হয়েছিল এবং সকল শিক্ষক মন্ডলীকে এই কাজে অংশগ্রহণ করতে হবে অথবা উপস্থিত থাকতে হবে তাই পুরুষ ও মহিলা সকল শিক্ষকেরা সেখানে নিজের সাধ্যমত চেষ্টা করছিল আগাছা দমন আর মাটির সমান করে বিভিন্ন পর্যায়ের ফুলের গাছ লাগানোর জন্য উপযুক্ত জায়গা তৈরি করতে।
Photography device: Infinix hot 11s
সোর্স
ফুল গাছ লাগানোর শুরুটা আমার আর মুস্তাফিজুরের। সেখানে সক্রিয়ভাবে অবদান দেখেছিলাম আমরা দুইজন। আর প্রাথমিক পর্যায়ে যখন কার্যক্রম শুরু করে দেওয়া হয়েছিল তখন ঠিক হয়েছিল ফুলগাছ লাগানোর জন্য সবার মন স্থির। তবে এই কাজে সক্রিয়ভাবে জাহাঙ্গীর ভাইয়া অংশগ্রহণ করতে চাইতেন না। জামা কাপড়ের ময়লা লাগা প্রচন্ড ঘেমে গেলে কাপড় নষ্ট হওয়া এছাড়াও উনার মনটা বেশ খারাপ ছিল সেই সময় কারণ উনাকে প্রধান শিক্ষকের আসনে বসানো হয়েছিল দুইবার আবার সেই প্রধান শিক্ষকের আসন থেকে নামিয়ে এসিস্ট্যান্ট বানানো হয়েছিল। হয়তো এই সমস্ত কারণে জাহাঙ্গীর ভাই এর মনটা খারাপ থাকতো। তাই সে ঠিকভাবে এই কাজে অংশগ্রহণ করতেন না। হয়তো আমাদের আশেপাশে থাকতেন কিন্তু কাজে হাত লাগাতে চাইতেন না। বুঝতে পারছেন একজন মানুষের মন খারাপ থাকলে কোন কিছুতেই মন বসে না আর সেখানে নিজের মান সম্মান বলে কথা। দুই বার প্রধান শিক্ষকের আসনে উপস্থিত হয়ে থাকেন নামিয়ে দেওয়া হয়েছে এটা যে কতটা মনে কষ্ট সেটা যিনি অপমান হন একমাত্র সেই বুঝে। যাইহোক সেই দিকে বেশি কথা বলতে ইচ্ছে নেই আমার। তবে ফুল গাছ লাগানোর বিষয়ে সমস্ত শিক্ষক মন্ডলী তাদের সাধ্যমত যখন অংশগ্রহণ করছিল তখন কিন্তু সাদা শার্ট গায়ে দেওয়া জাহাঙ্গীর ভাইয়া আশেপাশে এসে শুধু দাঁড়িয়ে থাকতেন এবং মুখপানে তাকালে একটু কষ্ট অনুভূতি লক্ষ্য করা যেত। তাই বেশি একটা কিছু বলাবলি বা নিজ থেকে হাসাহাসিটা করাটাও যেন বন্ধ রাখতে হতো নিজেদের। তবে আমাদের পাশাপাশি কিছু ছাত্র-ছাত্রী এসে ফুল গাছ লাগানোর কাজে অংশগ্রহণ করত। হয়তো হাত পায়ে ময়লা হয়ে যেত। আমরা অনেকেই নিষেধ করতাম এরপরেও ছোট বাচ্চাদের ভালোলাগার বিষয়ে এখানে নিহিত রয়েছে। তাদের বিদ্যালয় ফুলের বাগান তৈরি হচ্ছে। তারা যদি অংশগ্রহণ না করে তাহলে কারা অংশগ্রহণ করবে আবার তাদের যদি মানা করা হয় তাদের কষ্ট হবে তাই সকলেই মিলে একটাই চিন্তাধারা সুন্দর একটি ফুলের বাগান তৈরি করব। যেখানে বিভিন্ন প্রকার ফুলের দেখা মিলবে।
Photography device: Infinix hot 11s
সোর্স
ফুলের বাগানের কাজ করতে গিয়ে যখন সবাই ক্লান্ত বোধ করতাম কিছুটা সময়ের রেস্ট নিতাম এই মুহূর্তে জাহাঙ্গীর ভাইয়া কিন্তু সকলের সাথে মিশতো না, এমনকি কথাও বেশি একটা বলত না। হয়তো মনে মনে ফুলের বাগান তার ভালো লাগলো কিন্তু ওই যে নিজের মানহানির একটা বিষয় রয়েছে তাই তো সেভাবে সকলের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা হয়ে উঠতো না। শুধুমাত্র যখন যার সাথে কথা হতো প্রকাশ করতে পারত না। কারণ তার মনের মধ্যে কষ্টটা সবাই বুঝতে পারছে কিছু বলার নাই। এটা প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান নিজের পারফরমেন্স বেশি করে দেখাতে হবে বলে কথা। তবে উনি বেশি ভেঙে পড়েছিলেন হুট করে তাকে প্রধান আসন থেকে বরখাস্ত করা হচ্ছে। আবার এভাবে যে কোন মুহূর্তে চাকরিটাও চলে যেতে পারে কোন আশায় সে হাসিমুখে চলবে। সবার সাথে ঠিক এমনই অনুভূতি কাজ করতো তার।
Photography device: Infinix hot 11s
সোর্স
সবার রেস্ট নেওয়া শেষের পুনরায় যখন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করত ফুল গাছ লাগানোর তখন কিন্তু মাঝেমধ্যে জাহাঙ্গীর ভাই আশেপাশে দাঁড়িয়ে থাকতো, আবার সবার থেকে দূরে সরে যেত। আর এই বিষয় নিয়ে কিন্তু অনেক সময় সমালোচনা হতো তার নামে। তবে যখন একজনার মনের মধ্যে কষ্ট লেগে থাকে তাকে নিয়ে বেশি সমালোচনা না করাটাই উচিত। কারণ যার ভেতরে কষ্ট আঘাত হানছে তখন তাকে নিয়ে একটা বিষয় বারবার উল্লেখ না করাটাই বেটার। আর এই জিনিসটা বুঝতে পারতাম বলেই আমি আমাদের সকলের সাথে হাসিখুশি ভাবে নিজেরাই কাজ সম্পন্ন করার চেষ্টা করতাম,তাকে কেউ যেন বেশি কিছু না বলে এই বিষয়গুলো আমি আর মুস্তাফিজুর নজরে রাখতাম, কারণ উনি আমাদের শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তি। তবে আমি আর মোস্তাফিজুর সবচেয়ে বেশি চেষ্টা করতাম সুন্দর একটি ফুলের বাগান তৈরি করার। যাই হোক এই জন্য মুস্তাফিজুর তার ছাদের বাগান থেকে বিভিন্ন ফুলের চারা নিয়ে গিয়েছিল সেখানে লাগানোর জন্য আমিও মাধবীলতা গাছের চারা নিয়ে গিয়েছিলাম আমাদের বাড়িতে থেকে। আর এভাবেই সুন্দর একটি বাগান তৈরি করে কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছিলাম সেই নভেম্বর মাস থেকেই।
Photography device: Infinix hot 11s
সোর্স
সেলফিতে যে দুই ম্যাডামকে দেখতে পাচ্ছেন আপনারা ওরা দুজন অত্যন্ত ভালো এবং মেধাবী। তারা বিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য যথেষ্ট পরিশ্রম করে থাকে, শুধু শিক্ষকতা নয় বাহিক দিকগুলো খুব ভালোভাবে দেখার চেষ্টা করে। ওরা দুইজন আমার বান্ধবী ছিলেন। অবশ্য তারা আমার চেয়েও এক বছর আগে এসএসসি পাস করেছিল কিন্তু অনার্স মাস্টার্স এর বেলায় আমার সাথেই কমপ্লিট করেছে। খুব আনন্দঘন মুহূর্তের মধ্য দিয়ে আমরা সবাই একসাথে ছাত্র-ছাত্রী লেখাপড়া করতাম এবং ফুল গাছ লাগানোর এ বিষয়গুলো সম্পন্ন করতাম। আর এভাবেই ছাত্রছাত্রীর মেধা উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন কাজে আমরা অংশগ্রহণ করে বিদ্যালয়টাকে উন্নয়নের ধারা বজায় রাখার চেষ্টা করতাম।
Photography device: Infinix hot 11s
সোর্স
আশা করি,আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনি অনেক বিষয় সম্পর্কে জানতে বুঝতে ও শিখতে পেরেছেন, সেই সাথে নতুন জ্ঞান অর্জন করতে পেরেছেন। পোস্টটি উপস্থাপনা কেমন ছিল এবং এ বিষয়ে আপনার অনুভূতি কেমন, অবশ্যই কমেন্ট বক্সে আমাকে জানাতে ভুলবেন না। আপনার জন্য আমার পক্ষ থেকে শুভকামনা রইলো। |
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
💌আমার পরিচয়💌
আমি মোঃ নাজিদুল ইসলাম (সুমন)। বাংলা মাস্টার্স ফার্স্ট ক্লাস মেহেরপুর গভমেন্ট কলেজ। আমার বাসা গাংনী-মেহেরপুর। মড়কা বাজার, গাংনী,মেহেরপুর এ গ্রীনরেইন ল্যাবরেটরি স্কুল নামক প্রি-ক্যাডেট স্কুলের সহকারি শিক্ষক । ইলেকট্রনিক্সের যন্ত্রপাতি মেরামত ও সৌর প্যানেল নিয়ে রিসার্চ করতে পছন্দ করি। প্রাকৃতিক দৃশ্য ফটোগ্রাফি করা আমার সবচেয়ে বড় ভালোলাগা। দীর্ঘদিনের আমি পাঙ্গাস মাছ চাষী এবং বিরহের কবিতা লেখতে খুবই ভালোবাসি। |
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ। |
শিক্ষক মন্ডলী সবাই মিলে ফুলের বাগান তৈরি করেছেন দেখে খুব ভালো লাগলো। আপনাদের বাগান করা দেখে ছাত্র-ছাত্রীরা উৎসাহিত হবে। তারাও বিভিন্ন এবং ফুল গাছ লাগাতে উৎসাহিত হবে। বাগান করার পরে বিদ্যালয়ের পরিবেশ বেশ সুন্দর দেখাবে। বাগান করার অনুভূতি বেশ দুর্দান্ত ভাবে উপভোগ করেছেন। এত সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হ্যাঁ ভাই ফুলের বাগান থাকলে সুন্দর লাগে
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনাদের স্কুলের কার্যক্রম গুলো খুবই ভালো লাগে আমার। সব শিক্ষক মন্ডলীরা মিলে এত সুন্দর ফুলের বাগান করেন আপনারা। স্কুলের পরিবেশ সুন্দর বৃদ্ধির জন্য এর কোন বিকল্প নেই। তাছাড়া বাইর থেকে দেখলে খুবই ভালো লাগবে এরকম সুন্দর ফুলের বাগান থাকলে। এছাড়াও বাচ্চারা বেশ মজা পাবে। কারণ বাচ্চারা ফুল বেশি পছন্দ করে। সুন্দর একটি মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অনেক ভালো লাগলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
একদম ঠিক কথা বলেছেন আপু
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলেই আমরা স্কুলের এই ফুল বাগানটা তৈরি করার জন্য প্রচুর পরিমাণে কষ্ট করেছিলাম। ভাগ্য ভালো যে আমার ছাদ বাগানে অনেকগুলো ফুল গাছ ছিল আর সেগুলো নিয়ে সেই স্কুলের বাগানটা ভালোভাবে তৈরি করতে সক্ষম হয়েছিলাম।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
কষ্ট করেছি বলেই তো সুন্দর বাগান তৈরি করতে সক্ষম হয়েছিলাম
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলে মামা আপনাদের স্কুলের ফুলবাগান দেখতে আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। স্কুলের শুরু থেকেই আপনারা সেখানে ফুলবাগান তৈরি করেছিলেন দেখে সেগুলো সত্যি মুগ্ধ হয়েছিলাম আমরা। আসলে স্কুলে যদি এরকম ফুলবাগান থাকে তাহলে স্কুলের পরিবেশ দেখতে সবথেকে বেশি ভালো লাগে। ধন্যবাদ মামা এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হ্যাঁ মামা সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছিলাম এভাবে
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভাই আপনি এবং আপনার শিক্ষক মন্ডলীরা একত্রিত হয়ে যে ফুলের বাগান তৈরি করা উদ্যোগ নিয়েছেন এই বিষয়টা আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে। লেখাপড়ার পাশাপাশি স্কুলে পরিবেশটা ভালো থাকার দরকার রয়েছে। পরিবেশ যদি ভালো থাকে তাহলে মন ভাল থাকে আর মন ভালো থাকলে পড়াশুনা প্রতি আগ্রহ জাগে। আপনি শিক্ষক এবং শিক্ষিকা মন্ডলী সবার এত সুন্দর একটা উদ্যোগ নেওয়া দেখে আমার কাছে ভালো লেগেছে ধন্যবাদ ওই মুহূর্তটা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit