আজ - মঙ্গলবার
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। দীর্ঘ দুই সপ্তাহ পরে আবারো আপনাদের মাঝে সুস্থ অবস্থায় অংশগ্রহণ করতে পেরে আমি আনন্দিত, আর তাই 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদের কে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট।
পূর্বের ন্যায় আজকেও আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। হয়তো আপনারা অনেকেই আমার বিষয়ে অবগত রয়েছেন যে আমি চেষ্টা করে থাকি আপনাদের মাঝে নতুন কিছু তুলে ধরার জন্য এবং আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে নতুন কিছু যুক্ত করতে। আপনাদের নতুন অভিজ্ঞতা অর্জনের সহায়তা অথবা পুরনো দিনের ফেলে আসা স্মৃতি গুলো স্মরণ করা বিষয়ক পোস্ট করে থাকি। তবে আমি খুব শীঘ্রই আপনাদের মাঝে আর্ট পোস্ট নিয়ে উপস্থিত হয়ে যাব যেহেতু আমি সাতক্ষীরা চারুকলা বিভাগে এই বিষয়ে কোর্স করতেছি। আপনার অনেকে অনেক সুন্দর সুন্দর আর্ট পোস্ট করে থাকেন যা আমাকে মুগ্ধ করে থাকে। তবে, আজ আমি আপনাদের উপস্থিত হয়েছি ভিন্ন বিষয় একটি পোস্ট নিয়ে যা হয়তো আপনাদের কিছুটা হলেও আনন্দ দিয়ে থাকবে। তাই চলুন মেইন পয়েন্টে যাওয়া যাক।
চলুন কিছুটা সময়ের জন্য ফিরে যায় আমাদের ছোটবেলায়, স্মরণ করি প্রাইমারি স্কুলে থাকাকালীন আমরা কেমন আচরণ করতাম বন্ধু বান্ধবী ও শিক্ষকদের সাথে। তখন আমাদের লেখাপড়া কেমন ছিল, কতটা মনোযোগী ছিলাম লেখাপড়ার ক্ষেত্রে। আপনারা যে ছেলেটাকে লক্ষ্য করছেন সে কিন্তু মুখস্থ বিদ্যায় খুবই ভালো ক্লাসে পাঁচটি ছেলের মধ্যে সে একজন। তবে তার দুষ্টামির শেষ নেই। কখনো শিক্ষকের কথা শুনতে চায় না। বিভিন্ন দুষ্টামিতে নিয়োজিত থাকে। দ্বিতীয় ঘন্টায় আমি ক্লাস নিচ্ছিলাম ক্লাস টু তে, একটি ছাত্রকে সুন্দরভাবে পড়া বুঝাচ্ছিলাম এই মুহূর্তে 'মাহিন' আমার পিছনে এসে এমন সুন্দরভাবে বসে রয়েছে। তাকে যখন প্রশ্ন করলাম বাবু তুমি এভাবে বসে আছো কেন। সে আমাকে উত্তর দেয় 'স্যার প্র্যাকটিস করতেছি! বেয়াদবি করার ফলে কখন কোন শাস্তি দেন তা তো জানিনা। যদি এমন শাস্তি দেন, তখন যেন কষ্ট না লাগে তাই আগে থেকে প্র্যাকটিস করে নিচ্ছি!' আমার তো মনে হয় না আমার লাইফে কখনো এমন বেয়াদবি করেছি বরঞ্চ স্যার ক্লাসে আসলে খুব ভয়ে থাকতাম কখন কি পড়া ধরে না জানি মারপিট করে সেই ভয়ে।
Photography device: Infinix hot 11s
location
অতি আদরের সন্তান যে গরু হয় বা বোকা হয় সে কথা সত্য। আর এ কথাটি আমি ছোট থেকে শুনে আসছি গ্রামের মানুষের মুখে। হয়তো আপনারা ভেবেছেন তার একদিনের একটা পাগলামির ফটো দেখে আমি আপনাদের মাঝে তাকে নিয়ে পোস্ট করতে চলেছি পোস্ট পোজানোর লক্ষ্যে। এমন চিন্তা ধারা আমার মাথার মধ্যে নেই। তবে তাকে দেখে, তার কার্যকলাপ দেখে অতীতের স্মৃতিগুলো স্মরণ করতে চেয়েছিলাম এবং আপনাদের স্মরণ করাতে চেয়েছিলাম জাস্ট এটুকুই। একদিন সে হাইঞ্চের এর উপরে রাখা তার বই এর ব্যাগের, সেই ব্যাগটির উপর দিয়ে দুই পা রেখে সামনে দিকে তাকিয়ে বসে রয়েছে। তাৎক্ষণিক তার নিকটে গেলাম প্রশ্ন করলাম এমন বেয়াদবি করছো কেন? অন্যরা তো সুন্দরভাবে বসে রয়েছে, পারো নাই এভাবে থাকতে? সে আমাকে উত্তর দিল 'স্যার জীবনটা রিল্যাক্স! যে যত ইনজয় করতে পারে! পড়ালেখা করে কি হবে? ওরা তো গরু! বোঝেনা তাই আপনাদের কথা শুনে বসে থাকে! আমি এখন কত সুন্দর রিলাক্সে বসে আছি।' এবার আপনারাই বলুন, এই মুহূর্তে তাকে কি উত্তর দেওয়া যায়? শুধু এটাই নয়, ক্লাস চলাকালীন সময়য়ে হঠাৎ করে জানালার গ্রিল ধরে ব্যায়াম করা শুরু করে দেয়। প্রশ্ন করলে বলে 'স্যার, ব্যায়াম করছি! শরীর সুস্থ রাখতে হবে না?' প্রতিটা ক্লাসে দু-একটা করে এমন ছাত্র থেকে থাকে। তবে এর বেয়াদবি টা একটু ভিন্ন টাইপের। মাঝে মাঝে খুব সুন্দর কুকুর বেড়াল ও বিভিন্ন ধরনের পাখির ডাক ডেকে ওঠে ক্লাস চলতে চলতেই। তবে এই বেয়াদবিগুলো আমার ক্লাসেই নয়, প্রায় প্রতিটি স্যারের একই অভিযোগ।
Photography device: Infinix hot 11s
location
হয়তো এতক্ষণ তার বেয়াদবি দিক গুলো দেখেছেন। তবে আমি বলব পারিবারিক দিক থেকে সুন্দর শিক্ষা থাকলে এবং বয়সের সাথে সাথে বুদ্ধি জ্ঞান সঠিক পর্যায়ে আসলে অবশ্যই সে ভালো একজন ছাত্র হতে পারবে। কারণ তার হাতের লেখা যথেষ্ট সুন্দর এই সমস্ত বেয়াদবি করার সত্ত্বেও যখন তাকে পড়া ধরি সব বলতে পারে। তবে তার বেয়াদবি টা বন্ধ হয় না। সাপ্তাহিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সে খুব সুন্দর কবিতা আবৃত্তি করতে পারে। এমনকি সাপ্তাহিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কুইজ প্রতিযোগিতায় সে বিজয়ী হয়। তবে আমি বলতে পারি আমাদের সময়ে এমন উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা ছিল না। ছিলনা কুইজের প্রতিযোগিতা। তবে আরো বলতে পারি আমাদের শিক্ষকরা ছিল বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার চেয়ে উন্নত। আজও মিস করি আমাদের শ্রদ্ধেয় শিক্ষক মন্ডলীকে। দোয়া করি তাদের জন্য, যারা জীবিত রয়েছে যেন সুস্থ থাকেন।
Photography device: Infinix hot 11s
location
হয়তো আপনারা অবাক হচ্ছেন ক্লাস টু এর ছাত্রদের মধ্যে ভালোবাসার ফিলিংস! অবাক হওয়ার কিছু নাই একটু লক্ষ্য করলে বুঝতে পারবেন পাঁচ জন ছাত্রকে সামনে নিয়ে আসা হয়েছে। তারা নিজেদের প্যান্ট এর নিজেদের নামের ইংরেজি অক্ষর প্লাস ভাললাগা মেয়েদের নামের ইংরেজি প্রথম অক্ষর একসাথে সুন্দর করে লিখে রেখেছে। আর তাই অভিযোগ করেছে মেয়েরা,সমাধান করতে হচ্ছে আমাকে। হাইরে প্রেমের দুনিয়া!
Photography device: Infinix hot 11s
location
মাঝে মাঝে মনে চায় অতীত লাইফে ফিরে যাই। জানিনা আপনাদের কেমন কি ফিলিংস হয়। তবে এদের পাগলামি ও কথাবার্তা শুনে অসুস্থ মানুষ ও সুস্থ হয়ে যাওয়ার উপক্রম। এদের এই সমস্ত পাগলামি গুলো অভিভাবকেরা স্বচক্ষে দেখে থাকেন, মাঝে মাঝে মারপিট করে থাকে এবং আমাদেরও বলে মারার জন্য। তবে মায়ের পেটে কোন সমাধান নেই সাধ্যমত বোঝানোর চেষ্টা ও ভয়-ভীতি দেখিয়ে সঠিক পথে নেওয়া আসার চেষ্টা সকল শিক্ষকের। অবশ্য মাঝে মধ্যে যখন মন মানসিকতা ভালো থাকে না ওদের এই পাগলামি দেখে মন ভালো করতে হয়। জানিনা এই পোস্ট পড়ার পরে কেমন কি ফিল করছেন আপনার অতীত প্রাইমারি লাইফ নিয়ে। তবে এটা সত্য স্কুলের বিভিন্ন কাজকর্ম ও প্রয়োজনে এই ক্লাস টু এর ছাত্রছাত্রীদের বেশি অংশগ্রহণ ও ভূমিকা রাখতে দেখা যায়।
💌আমার পরিচয়💌
আমি মোঃ নাজিদুল ইসলাম (সুমন)। বাংলা মাস্টার্স ফার্স্ট ক্লাস মেহেরপুর গভমেন্ট কলেজ। আমার বাসা গাংনী-মেহেরপুর। মড়কা বাজার, গাংনী,মেহেরপুর এ গ্রীনরেইন ল্যাবরেটরি স্কুল নামক প্রাইভেট প্রি-ক্যাডেট স্কুলের সহকারি শিক্ষক । ইলেকট্রনিক্সের যন্ত্রপাতি মেরামত ও সৌর প্যানেল নিয়ে রিসার্চ করতে পছন্দ করি। প্রাকৃতিক দৃশ্য ফটোগ্রাফি করা আমার সবচেয়ে বড় ভালোলাগা। দীর্ঘদিনের আমি পাঙ্গাস মাছ চাষী এবং বিরহের কবিতা লেখতে খুবই ভালোবাসি। |
---|
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
💖💞💞💖
আমার পরিচিতি | কিছু বিশেষ তথ্য |
---|---|
আমার নাম | @sumon09🇧🇩🇧🇩 |
ফটোগ্রাফি ডিভাইস | মোবাইল |
ব্লগিং মোবাইল | Infinix hot 11s |
ক্যামেরা | camera-50mp |
আমার বাসা | মেহেরপুর |
আমার বয়স | ২৫ বছর |
আমার ইচ্ছে | লাইফটাইম স্টিমিট এর 'আমার বাংলা ব্লগ' এ ব্লগিং করা |
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোষ্টে,ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ। |
---|
হাহাহা ক্লাস ফোরের কথা মনে পড়ে গেল, একটা ম্যাডাম ছিল সে কথায় কথায় আমাদের শাস্তি দিত, ক্লাসে সব থেকে ভদ্র ছেলে হওয়ার পরেও আমিও ঠিক এভাবে মুরগি রয়েছি, সেগুলো এখন স্মৃতির পাতায়। আমরা আপনার ড্রইং এর অপেক্ষায় থাকলাম শুভকামনা রইল।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আশা করি খুব শীঘ্রই আর্ট এর কাজ শুরু করব।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভাই আপনার পোস্টটি দেখে আমার ছোটকালের কথা মনে হয়ে গেল আমার সামনে আমার একটি স্যার আমার একটা বন্ধুকে এভাবে কান ধরে দাঁড় করে রাখছিল। সত্যি ভাইয়া শৈশবের স্মৃতিগুলো ভোলা যায় না।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
স্যারে তো ওভাবে কান ধরে বসিয়ে রাখে কিন্তু আমাদের মাহিনকে বসানো লাগে না। সে সেচ্ছায় বসে থাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
প্রাইমারী স্কুলে সম্ভবত ক্লাস ওয়ানে পড়ার সময়ের একটা কথা এখনো মনে আছে । আমার স্বরণ কালে ওই প্রথম স্কুলের স্যার কান মলা দিয়ে ছিলেন আমাদের দুজনের দুষ্টুমির শাস্তি হিসেবে । তখন আমাদের বসার ব্যবস্থা ছিল ফ্লোরে রেক্সিন বিছিয়ে সবাই পড়া নিয়ে ব্যাস্ত আর আমরা দুজোন গোল গোল করে ঘুরছি তাদের চারিপাশে । ঠিক এই সময়ে আমাদের প্রিয় "জালাল উদ্দীন স্যার এসে এই অবস্থা দেখে দুই হাতে দুজনের কান মলা দিয়ে বসিয়ে দিয়েছিলেন । একটা তো আমিই । অন্যটি পোস্ট দাতা নিজেই । জানিনা মনে আছে কিনা । ঘটনা সম্ভবত ১৯৯৯ সালের ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভুল করেও স্মরণ হচ্ছে না সে ঘটনাটি। তবে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলে আমাদের স্কুলের মাহিনের অবস্থা এমন হয়ে গিয়েছে তাকে কোন শাস্তি দেয়া লাগে না সে নিজে নিজেই শাস্তি গ্রহণ করে থাকে। মাহিনকে সোজা করার জন্য কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা দরকার।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ওকে নিয়ে তেমন কিছু বলার নেই, স্কুলের উজ্জ্বল প্রতিভা সে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমাদের মাঝে ফিরে আসার জন্য আপনাকে স্বাগত। ছোটবেলায় আমরাও মাহিনের মত অনেক শাস্তি ভোগ করেছি। বিশেষ করে পড়াশোনার জন্য আমার মায়ের হাতে এ ধরনের শাস্তি ভোগ করতে হয়েছে। পোস্ট থেকে ছোটবেলায় মায়ের কথা মনে পড়ে গেল।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই। দোয়া করবেন যেন নিয়মিত পোস্ট কমেন্ট করে আপনাদের মাঝে থাকতে পারি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit