একদিন বাড়িতে বজ্রপাতের সম্মুখীন

in hive-129948 •  4 months ago 


আসসালামু আলাইকুম



হাই বন্ধুরা!

আমার গল্পের রাজ্যে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগতম। পূর্বসপ্তার ন্যায় আজকে উপস্থিত হয়ে গেলাম সুন্দর একটি গল্প নিয়ে। যে গল্পের মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন আমার জীবনে কোন একটা লুকিয়ে থাকা ঘটনা। একজনের জানা ঘটনা অন্য জনের মাঝে ব্যক্ত করার মধ্য দিয়ে প্রকাশিত হয় অজানা তথ্য। ঠিক তেমনি সুন্দর একটি গল্প নিয়ে উপস্থিত হয়েছি আজ। আশা করব আমার এই স্মৃতিচারণ মূলক ঘটনা জানার পর বেশ একটি বিষয় সম্পর্কে অবগত হবেন এবং কিছুটা হলেও শিক্ষা গ্রহণ করবেন এই গল্পের মধ্য দিয়ে। তাহলে চলুন শুরু করি আজকের গল্প।

IMG_20240505_084849_603.jpg


বজ্রপাতের গল্প:


পাঙ্গাস মাছের খাবার তৈরি করার জন্য পাশের গ্রামের এক অটো মিলে যেতে হয়। সেটা কলম প্রফেসরের মাছের খাবার তৈরি করা অটো-মিইল। গ্রামটার নাম ১৬ টাকা। হয়তো ইতো পূর্বের পোস্টগুলো তে আমি এই গ্রামের নাম অনেকবার উল্লেখ করেছি। গ্রামটা এলাকার মধ্যে বেশ উন্নত। বেশিরভাগ ঘর বাড়ি ছাদের এক দুই তিন তলা থেকে পাঁচ তলা পর্যন্ত। তবে এদের উন্নতির মধ্যে বিশেষ ভূমিকা রয়েছে মাছ চাষে। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য গ্রামের রাস্তা ভালো ছিল না। সবেমাত্র গ্রামের রাস্তা পাকা হয়েছে। এর আগে আংশিক রোড ছিল। যাইহোক ঘটনার দিনটা হচ্ছে আমি মাছের খাবার তৈরি করে বাড়ি ফিরব। তবে ঐদিন আমি সাইকেল নিয়ে গেছিলাম না রাস্তা খারাপের জন্য। মাছের খাবার তৈরি হতে হতে সন্ধ্যা হয়ে গেল, এ রাস্তায় কোন গাড়ি চলাচল করে না। বিশেষ প্রয়োজনের রিজার্বা গাড়ি চলে তাও খুব কম। ইতোমধ্যে মাছের খাবারগুলো প্যাকেট করা হয়ে গেছে। তারপরের দিন মিলের গাড়িতেই বাড়িতে পৌঁছে দিবে দূরের রাস্তা দিয়ে এসে। এমনই কথা কারণ করে আসলাম। কিন্তু ওই গোধূলির মুহুর্তে ব্যাপক মেঘ হয়ে গেল আকাশের দক্ষিণ কোণে। তাই অটো মিলের ম্যানেজার ও ক্যাশিয়ার উভয়ই আমাকে বারণ করলেন এখন তোমার বাড়ি যাওয়ার দরকার নেই প্রচন্ড মেঘ হয়েছে, ঝড় বৃষ্টি হতে পারে।

কয়েকজন বলল মাগরিবের আজান দিতে 15-20 মিনিট বাকি আছে, নামাজ পড়ে তারপরে তোমাকে মোটরসাইকেল করে বাড়িতে রেখে আসবো। তবে আমি ভদ্রতা দেখলাম না থাক। আপনারা কঠোর পরিশ্রম করেন আবার আমাকে রাখতে যাবেন। ১৫ মিনিটে আমি দ্রুত হেঁটে বাড়ি পৌঁছে যেতে পারবো। এটা সত্য আমি খুব দ্রুত হাঁটতে পারি এমনকি ছোটবেলায় খেলাধুলাতে দৌড়াতে ফার্স্ট থাকতাম। যাই হোক মনে সাহস রেখে হাটা শুরু করলাম। হিসাব করলে ২ কিলো রাস্তা। তবুও আমি দ্রুত পায়ে এগিয়ে আসতে থাকলাম। ইতোমধ্যে প্রচন্ড ঝড় মেঘ গর্জন শুরু হয়ে গেছে। ১৬ টাকা গ্রামের চেয়ারম্যান এর বাড়ির পাশাপাশি এসে লক্ষ্য করলাম আমাদের একটা ভাগ্নে মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি আসছে। রাস্তার অবস্থা ভালো না তারপরেও আকাশের অবস্থা দেখে ভাগ্নে গাড়ি থামিয়ে আমাকে গাড়িতে তুলে নিল। তবে এমন হেয়ারিং রাস্তায় গাড়িতে উঠে কোন শান্তি নেই, জায়গায় জায়গায় এমন ভাঙ্গা যেন গাড়ি থেকেই পড়ে যাব যাব ভাব। মোটরসাইকেলে যেখানে দুই কিলো রাস্তা সেখানে ৪ কিলো ঘুরে আসতেও মানুষের রাজি থাকে কিন্তু এ পথ দিয়ে তেমন একটা যেতে চায় না। তাহলে বুঝতে পারছেন। যাই হোক কোন রকমে বাড়িতে পৌঁছে গেলাম। ততক্ষণে হালকা ঝিরিঝিরি বৃষ্টি আর জোরে বাতাস।

আমি যখন রাস্তা হয়ে বাড়ির মধ্যে, গেটে প্রবেশ করেই আমার ঘরের দিকে আসবো এমন সময় সজোরে মেঘ ঝিলিক মেরে উঠলো। যেন চোখে কিছু দেখা যায় না এমনই বিদ্যুৎ চমকানো। আমি সাথে সাথে দুই কানের মধ্যে আঙ্গুল দিয়ে চোখ বন্ধ করে দাঁড়িয়ে পড়লাম। ইতোমধ্যে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা বাড়ির সদস্যরা দৌড়ে সব ঘরে চলে গেল। আর তারই সাথে সাথে ডাক পরল। মনে হল যেন আমার ঘরের চালের উপরে নারিকেল গাছে ডাক বা বাজ পড়লো। এই মুহূর্তে আমার আব্বা খুব বকতে থাকলো আমাকে। বলল উঠানে দাঁড়িয়ে না পড়ে তাড়াতাড়ি ঘরে উঠবে তো। আমি আবার আব্বা যেই ঘরে থাকতো সেই ঘরে না গিয়ে আমার ঘরের দিকে যাচ্ছিলাম। এতে তারা আরো রাগান্বিত হলো। কারণ ওদিকে ডাক পরল।

যাইহোক রাত হয়ে গেল এরপর যখন বৃষ্টি থেমে গেছে আটটা নয়টার দিকে সবাই সন্ধান করলাম কোথায় ডাক পরল। ইতোমধ্যে কারেন্ট এসেছে কিন্তু ওয়াইফাই লাইন বন্ধ। আমার বন্ধু বলল তার ঘরের রাউটার পুড়ে গেছে। পাশের চাচাদের বাড়িতে ওয়াইফাই লাইনের সব কিছুই পড়ে গেছে। কিন্তু কেউ বলতে পারছে না অরিজিনাল ভাবে কোথায় ডাক পড়লো। এরপর বেশ ১৫ দিন পর লক্ষ্য করা গেল চাচাদের বাড়ির পাঁচটা নারিকেল গাছ মারা যাচ্ছে। আর তারি পাশে ছিল পুরাতন টয়লেট আরেকটি নিম গাছ। এরপর অনেকের চিহ্নিত করেছিল এই জায়গায় ডাক পড়েছে। তবে দিন ১৫ পর নির্দিষ্ট হয়ে গেল হ্যাঁ এখানেই ডাক ছিটকে পড়েছে, তাই পাশাপাশি থাকা পাঁচটা নারিকেল গাছ মারা গেল। সত্যি কি ভাগ্য আমার। আমি শুধু এখানে একটা শিক্ষাই পেলাম বড়রা যখন যেটা বলে সেটাই একটু শোনার প্রয়োজন বা মান্য করা প্রয়োজন। কারণ একাধিক ব্যক্তি আমাকে মানা করছিল এ অবস্থায় বাড়িতে যেওনা। কিন্তু আমার বাড়িতে যে বিপদ সেটা কে জানতো। হয়তো আমি সেখানে তাদের কথা মান্য করে থেমে গেলে এই পরিস্থিতির সম্মুখীন হতাম না। তাই আমাদের সকলের উচিত বড়দের কথা মান্য করে চলা।

IMG-20240818-WA0000.jpg


গল্পটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

received_434859771523295.gif

গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
ফটোগ্রাফিঘটনাস্থল এরিয়া
ফটোগ্রাফি ডিভাইসInfinix Hot 11s / Huawei P30 Pro-40mp
লোকেশনজুগীরগোফা
বিষয়অতীত ঘটনা
ঠিকানাগাংনী-মেহেরপুর, বাংলাদেশ


পুনরায় ফিরে আসবো নতুন কোন গল্প নিয়ে। ততক্ষণ ভালো থাকুন সবাই, সবার জন্য শুভকামনা রইল। আল্লাহ হাফেজ।

TZjG7hXReeVoAvXt2X6pMxYAb3q65xMju8wryWxKrsghkLbdtHEKTgRBCYd7pi9pJd6nDf4ZPaJpEx3WAqvFVny2ozAtrhFXaDMnAMUAqtLhNESRQveVFZ7XHcED6WEQD48QkCkVTAvNg6.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

আপনার পোস্টটি পড়ে মনে হলো আপনি একটি চমৎকার শিক্ষণীয় অভিজ্ঞতা আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। বড়দের কথা শোনার গুরুত্ব যে কতটা, তা আপনার এই অভিজ্ঞতা থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়। আল্লাহর অশেষ রহমতে আপনি বিপদ থেকে রক্ষা পেয়েছেন, আলহামদুলিল্লাহ। আপনার মতো এই ঘটনাগুলো আমাদের সকলের জন্য একটি সতর্কবার্তা। ভবিষ্যতে আমরা যেন বড়দের পরামর্শকে অবহেলা না করি, সেই শিক্ষাটাই আপনার পোস্ট থেকে আমরা নিতে পারি। এমন একটি মর্মস্পর্শী ও শিক্ষণীয় গল্প শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

[@redwanhossain]

হ্যাঁ ভাই তাইতো পোস্ট শেয়ার করেছি, যেন সবাই বড়দের কথা মান্য করে চলে।