নমস্কার বন্ধুরা,
আশা করি সবাই ভালো আছেন।সুস্থ আছেন।আজ আমি আপনাদের সঙ্গে মানুষের একে অন্যের প্রতি শত্রুতা করার বিষয়ে কিছু আলোচনা করবো।আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।
মানুষের মধ্যে শত্রুতা গড়ে ওঠা একটি জটিল মনস্তাত্ত্বিক প্রক্রিয়া যা বিভিন্ন প্রভাব, ধারণা এবং অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করে গঠিত হয়।শত্রুতার উদ্ভবের কারণ এবং প্রক্রিয়াকে মনস্তাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা যায়।মানুষের প্রাকৃতিক প্রবণতা হলো নিজস্ব পরিচয় গোষ্ঠীর সঙ্গে অন্যদের তুলনা করা।"In-group" বলতে নিজস্ব গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়কে বোঝানো হয় এবং "Out-group" হলো সেই গোষ্ঠী যাদের সঙ্গে সম্পর্ক বা পরিচয় নেই।যখন কেউ নিজের পরিচয় গোষ্ঠীকে "ভালো" এবং অন্যদের "খারাপ" বলে মনে করে,তখন শত্রুতা গড়ে উঠতে পারে।এটি প্রায়ই সামাজিক বা সাংস্কৃতিক পার্থক্যের ওপর ভিত্তি করে গঠিত হয় যেমন জাতি, ধর্ম বা রাজনৈতিক দল।
প্রতিযোগিতা বা প্রতিদ্বন্দ্বিতা প্রায়ই শত্রুতা সৃষ্টি করে।যখন মানুষ তাদের ব্যক্তিগত লক্ষ্য, সম্পদ অথবা সামাজিক মর্যাদা নিয়ে অন্যের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে,তখন শত্রু ভাবনা গড়ে ওঠে। প্রতিদ্বন্দ্বীকে শত্রু হিসেবে দেখতে শুরু করার মাধ্যমে একে অপরের প্রতি নেতিবাচক অনুভূতি জন্ম নেয়।এটি অনেক সময় কর্মক্ষেত্র, খেলাধুলা বা এমনকি পারিবারিক সম্পর্কেও দেখা যায়।
মানুষের মধ্যে শত্রুতা তৈরি হতে পারে ভুল বোঝাবুঝি এবং ভ্রান্ত তথ্যের কারণে।যখন এক ব্যক্তি অন্য ব্যক্তির আচরণ বা কথা ভুলভাবে ব্যাখ্যা করে,তখন শত্রুতার বীজ বপন হতে পারে। মিডিয়া, গুজব বা অন্যের কথার প্রভাবে ভুল ধারণা গঠিত হয় যা সম্পর্কের অবনতি ঘটাতে পারবে।
মানুষ প্রায়ই নিজেদের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য অন্যকে শত্রু হিসেবে বিবেচনা করে।যখন কেউ হুমকির মুখে পড়ে বা মনে করে যে অন্য কেউ তার ক্ষতি করতে পারে,তখন শত্রুতা তৈরি হয়। ফ্রয়েডের মতে,এটি এক ধরনের আত্মরক্ষামূলক প্রক্রিয়া, যেখানে মানুষ নিজেকে রক্ষার জন্য অন্যকে আক্রমণাত্মক হিসেবে চিহ্নিত করে।মানুষের আত্ম-সম্মান (self-esteem) এবং ইগো (ego) আঘাত পেলে শত্রুতা তৈরি হতে পারে।যখন কেউ নিজেকে ছোট বা অপমানিত মনে করে এবং এই অনুভূতির জন্য অন্যকে দায়ী করে,তখন তারা সেই ব্যক্তিকে শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করতে পারে।ইগো আঘাত প্রাপ্ত হলে মানুষ অনেক সময় অপরাধীকে শত্রু হিসেবে দেখে।
মানুষের মধ্যে শত্রুতা গড়ে উঠতে পারে রাগ, হতাশা বা অপরাধবোধের আবেগের প্রভাবে। ক্রোধের সময়, মানুষ সাধারণত তাদের সমস্যার জন্য অন্য কাউকে দোষারোপ করে এবং এই দোষারোপের মাধ্যমে শত্রুতা সৃষ্টি হয়।দীর্ঘমেয়াদী ক্রোধ বা আবেগের কারণে শত্রুতা আরও গভীর হতে পারে।
মানুষ প্রায়ই শত্রু হিসেবে দেখে সেই ব্যক্তিকে যাকে তারা হুমকি বা ক্ষতির উৎস হিসেবে অনুভব করে।এটি হতে পারে শারীরিক, মানসিক, সামাজিক বা অর্থনৈতিক হুমকি।যখন কেউ মনে করে যে অন্য কেউ তার সম্পদ, স্থান বা সম্পর্কের জন্য হুমকির কারণ তখন শত্রুতা গড়ে ওঠে।
মানুষের অতীতের নেতিবাচক অভিজ্ঞতা বা ট্রমা (trauma) থেকে শত্রুতা জন্ম নিতে পারে।যদি কেউ আগে কোনো ব্যক্তির কাছ থেকে আঘাতপ্রাপ্ত হয় বা প্রতারণার শিকার হয় তাহলে তারা সেই ব্যক্তি বা তাদের মতো অন্যদেরকেও শত্রু হিসেবে ভাবতে পারে।মানুষের মধ্যে মতাদর্শগত বা বিশ্বাসের পার্থক্যের কারণে শত্রুতা তৈরি হতে পারে।রাজনৈতিক, ধর্মীয় বা সামাজিক বিশ্বাসের ক্ষেত্রে বড় ধরনের ভিন্নতা থাকলে মানুষ সহজেই অন্যকে শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করতে পারে।
মিডিয়া এবং সমাজও শত্রু ভাবনার জন্ম দিতে পারে। অনেক সময় সংবাদ মাধ্যম,সামাজিক মিডিয়া বা নেতিবাচক প্রচারণার মাধ্যমে ভ্রান্ত তথ্য ছড়িয়ে পড়ে যা শত্রুতা বাড়াতে সহায়ক হয়।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
একেবারে যথার্থ বলেছেন বৌদি,প্রতিযোগিতার কারণে সত্যিই শত্রুতার সৃষ্টি হয়। তাই প্রতিযোগিতা না করে, সবার সাথে মিলেমিশে কাজ করাটাই ভালো। যাইহোক একজন আরেকজনের সাথে শত্রুতা করার বিষয়ে দারুণ আলোচনা করেছেন বৌদি। পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
যে চুলচেরা বিশ্লেষণ দিয়েছেন দিদিভাই, তা সম্পূর্ণটাই যৌক্তিক।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
বতর্মান সময়ে তো ভিন্ন মতের জন্য অধিকাংশ শএুতার সৃষ্টি হয়। আর শএুতার পরিণতি কখনোই ভালো কিছু হয় না। এটা বরাবরই খারাপ ফল দিয়ে থাকে। আপনি শএুতা সৃষ্টি হওয়ার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন। বেশ ভালো ছিল আপনার পোস্ট টা। ধন্যবাদ আমাদের সাথে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit