নমস্কার বন্ধুরা,
আশা করি সবাই ভাল আছেন।সুস্থ আছেন।আজ আমি আপনাদের সাথে চন্দননগরের ঐতিহ্যবাহী জগদ্ধাত্রী পুজোর আরও কিছু বিখ্যাত পুজো মণ্ডপ এবং প্রতিমার ছবি আপনাদের সাথে ভাগ করে নিলাম।
চন্দননগর বলতেই প্রথমে মনে আসে জগদ্ধাত্রী পুজো। পুজোর আলোকসজ্জা, লক্ষ লক্ষ মানুষের ভিড়,এখানে অতি উঁচু মায়ের বিসর্জনের শোভাযাত্রা, পুজোতে মায়ের ডাকে সাজের কথা বিশ্বজোড়া। বলতে গেলে এখানে এই আলোকময় শোভাযাত্রা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম।
উত্তরাঞ্চল সার্বজনীন জগদ্ধাত্রী পূজা কমিটি
আমি আগের দিনই বলেছিলাম যে আমি অনেকগুলো ঠাকুর দেখেছিলাম, কিন্তু সবগুলো তখন পোস্ট করতে পারিনি। তাই আমি আবার আজকে চন্দননগরে আরো কিছু প্রতিমা এবং মন্ডপ আপনাদের সাথে ভাগ করে নিলাম। আমরা আদি মা, বোড়ো কালিতলা,বুড়িমা দেখার পরে চন্দননগরের বিবিরহাট উত্তরাঞ্চলের ঠাকুর দেখতে গেলাম। এখানে ঠাকুর খুবই নামকরা। ভাবনাচিন্তা এখানে কোলাজ করা হয়েছে । করোনা আবহের জেড়ে মানুষ যে দেড় বছর গৃহবন্দি ছিল, তখন মানুষ যে ডিপ্রেশন এর মধ্যে ছিল সেই ডিপ্রেশন উপেক্ষা করে মানুষের স্মৃতির পাতায় যে উৎসব মুখরিত দিনগুলো ফ্রেমবন্দি করে রেখেছিল,সেগুলো ভেবে এবং দেখে তাদের ভারাক্রান্ত মনটাকে হালকা করেছিল। সেই বিষয়টিকেই এখানে তুলে ধরা হয়েছে।এখানে একটা পজেটিভ দিক দেখানো হয়েছে। উত্তরাঞ্চলের এই পুজোর থিম আমার ভীষণ ভালো লেগেছে। পুজোর প্যান্ডেল থেকে বেরিয়েই এখানে মেলা বসেছিল। করোনার জেড়ে এখন প্রায় মেলা সেভাবে দেখা যায় না বললেই চলে। কিন্তু চন্দননগর এসে এই প্রতিমা, প্যান্ডেল এবং তার সাথে লাইটিং এবং মেলা 😍এতকিছু দেখে সত্যি মনটা বেশ ভালো হয়ে গিয়েছিল।
পালপাড়া সার্বজনীন শ্রী শ্রী জগদ্ধাত্রী পূজা সমিতি
আমি সমস্ত ঠাকুর দেখেছিলাম একটা টোটো ভাড়া করে কারণ আমার হাতে খুবই কম সময় ছিল ঠাকুর দেখার মতন কারণ এখানে বেশীর ভাগ ঠাকুরই ভাসান দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিল। এরপর একটু এগোলেই পালপাড়া।
উত্তর চন্দননগর এর অন্যান্য বড় জগধাত্রী পূজা গুলোর মধ্যে পালপাড়া পূর্বাঞ্চল অন্যতম।এই বছর ৭৮ বর্ষে পদার্পণ করেছে।এখানে পুজোর থিম ছিল "চেতনা"। এই করোনা আবহের জন্য অর্থাৎ কোভিড এর সময় যে অক্সিজেন সিলিন্ডারের দরকার সবচেয়ে বেশি ছিল,সেই নিয়ে মানুষের মধ্যে চেতনা দেখানোর জন্য এইa থিমটি এখানে তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়া প্যান্ডেলের সামনে দিয়ে ছোট ছোট গাছের চারা লাগানো হয়েছিল। মানুষের জীবনে অক্সিজেনের চাহিদা কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটাই এখানে বোঝানো হয়েছে।
সত্যি কথা বলতে অনেক রাত করেই আমি ঠাকুর দেখতে বেরিয়েছিলাম। চন্দননগরে সেদিন দশমী ছিল তার সাথে খুব বৃষ্টি পড়ছিল। তাই জন্য বেশিরভাগ ঠাকুর ভাসানের যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিল।আবার বৃষ্টির কারণে প্লাস্টিক দিয়ে ঠাকুরের মুখ ঢেকে দেওয়া হয়েছিল,তারই মধ্যে যতটা ভালো ভাবে প্রতিমা দর্শন করা যায় ততগুলো প্রতিমাই দর্শন করেছি।এত কম সময়ের মধ্যে এতগুলো ঠাকুর দেখা আমার কাছে কম সৌভাগ্যের ছিল না।
হেলাপুকুর ধার সার্বজনীন
এরপর যে ঠাকুর দেখতে গিয়েছিলাম পুরো চোখ ধাঁধিয়ে গিয়েছিল আমার।যেমন সুন্দর মণ্ডপসজ্জা তেমনি সুন্দর প্রতিমা। এককথায় অসাধারণ। এই জায়গাটি হল হেলাপুকুর ধার সর্বজনীন। এই বছরে এই মণ্ডপটি ৫২ বছরে পদার্পণ করেছে।এই মন্ডপ এর মূল ভাবনা ছিল রাজস্থানের কোনো এক মন্দির। এখানে পুজো মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছিল রাজস্থানের কোনো মন্দিরের আদলে। সোনালী আভায় সজ্জিত হয়েছিল মণ্ডপটি।তার সাথে সোনালী ডাকের সাজে মা জগধাত্রী।এক অন্য মাত্রা এনে দিয়েছে এই মন্ডপ।
এরপর যাওয়ার পথে দেখতে পেলাম অরবিন্দ সংঘের জগদ্ধাত্রী প্রতিমা। যখন আমি দেখলাম এই প্রতিমা তখন ঠাকুর ভাসান যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে।এই বছর অরবিন্দ সংঘ ৫৪ তম বর্ষে পদার্পণ করেছে।এখানে জগধাত্রী মাতৃরূপে ত্রিনয়নী।
এখানেই আমার মোটামুটি ঠাকুর দেখা পর্ব শেষ।
চন্দননগরে যেহেতু আমি এই প্রথম এলাম ভীষণ মজা করেছি এখানে এসে ঠাকুর প্রতিমা গুলো দেখতে সত্যিই চোখ জুড়িয়ে আসে দশমীর দিন যাওয়াতে সেভাবে লাইটিং আমি দেখতে পাইনি। কিন্তু আমি যা প্রতিমা দেখেছি তা দেখে ভীষণ আনন্দ পেয়েছি।ইচ্ছে আছে পরের বার এসে আরো অনেক অনেক থাকুর দেখবো। আর তোমাদের সাথে ভাগ করে নেব সেই মুহূর্তগুলো।
বাড়ি যাওয়ার পথে
ফটোগ্রাফি গুলি খুবই সুন্দর হয়েছে।চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী পূজা অনেক জনপ্রিয়তা রয়েছে। অনেক চমৎকার মুহূর্ত কাটিয়েছেন পূজা দেখে। শুভেচ্ছা রইলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সত্যি চন্দননগরে না গেলে বুঝতেই পারতাম না যে এত সুন্দর প্রতিমা ওখানে হয়। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit