গোর্খাল্যান্ড

in hive-129948 •  yesterday 

নমস্কার বন্ধুরা,


আশা করি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন।আজ আমি গোর্খাল্যান্ড সম্পর্কে কিছু লিখতে চলছি।


17323090884353732736140349246573.jpg

Image created by OpenAI

দার্জিলিংকে অনেক সময় গোর্খাল্যান্ড বলা হয় কারণ এটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের একটি বিশেষ অঞ্চল যেখানে গোর্খা জনগোষ্ঠীর সংখ্যাগরিষ্ঠ বাস।গোর্খাল্যান্ড শব্দটি ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্বপূর্ণ।এই নাম এবং অঞ্চল নিয়ে বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক আন্দোলনও হয়েছে।


গোর্খাল্যান্ড নামের উৎপত্তি:

  1. গোর্খা জনগোষ্ঠী:

    • গোর্খারা মূলত নেপাল থেকে আসা একটি জাতিগোষ্ঠী যারা দার্জিলিং ও সংলগ্ন পার্বত্য অঞ্চলে বসবাস করে।
    • তারা নিজেদের ভাষা, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য ধরে রেখেছে।
    • "গোর্খা" নামটি এসেছে নেপালের গোর্খা অঞ্চলের নাম থেকে যা ঐতিহাসিকভাবে এক শক্তিশালী সামরিক জাতি হিসেবে পরিচিত।
  2. দার্জিলিং ও কালিম্পং অঞ্চল:

    • দার্জিলিং, কালিম্পং এবং দোয়ারস অঞ্চল দীর্ঘদিন ধরেই গোর্খাদের আবাসস্থল।এই এলাকাগুলোই গোর্খাল্যান্ডের প্রস্তাবিত সীমান্ত হিসেবে বিবেচিত।

গোর্খাল্যান্ডের রাজনৈতিক আন্দোলন:

  1. আন্দোলনের শুরু:

    • ১৯৮০-এর দশকে গোর্খা ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট (GNLF) দলের নেতৃত্বে গোর্খাল্যান্ডের জন্য প্রথম বৃহৎ আন্দোলন শুরু হয়।এর প্রধান লক্ষ্য ছিল দার্জিলিংকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে পৃথক করে একটি স্বতন্ত্র রাজ্য গঠন করা।
  2. আঞ্চলিক ভাষা ও সংস্কৃতি:

    • গোর্খারা দাবি করেন যে তাদের সংস্কৃতি, ভাষা এবং ঐতিহ্য পশ্চিমবঙ্গের মূল ভূখণ্ড থেকে আলাদা।
    • দার্জিলিং পার্বত্য অঞ্চলকে গোর্খাল্যান্ড নামে আলাদা রাজ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিলে তাদের স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত হবে।
  3. ২০১৩-২০১৭ সালের আন্দোলন:

    • ২০১৩ সালে এবং ২০১৭ সালে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা (GJM) আন্দোলনের মাধ্যমে গোর্খাল্যান্ডের দাবি আরও তীব্র হয়।
    • ২০১৭ সালের আন্দোলনে দার্জিলিং পুরোপুরি বন্ধ ছিল প্রায় ১০০ দিন যা ভারতের অন্যতম দীর্ঘস্থায়ী বনধ।
  4. বর্তমান পরিস্থিতি:

    • গোর্খাল্যান্ডের জন্য রাজ্য গঠনের প্রস্তাব এখনো ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের বিবেচনার বিষয়।যদিও এই অঞ্চলে গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (GTA) নামে একটি স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা গঠন করা হয়েছে।

গোর্খাল্যান্ডের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য:

  1. ভাষা:
    • এখানে নেপালি ভাষা প্রধান।এটি ভারতীয় সংবিধানের ৮ম তফসিলে অন্তর্ভুক্ত যা একটি স্বীকৃত ভাষা।
  2. ধর্ম ও উৎসব:
    • গোর্খারা প্রধানত হিন্দু এবং বৌদ্ধ।তারা দশাই, তিহার, লোসার ইত্যাদি উৎসব উদযাপন করে।
  3. সামাজিক অবদান:
    • গোর্খা জনগোষ্ঠী ভারতীয় সেনাবাহিনীতে তাদের অবদানের জন্য বিখ্যাত। গোর্খা রেজিমেন্ট ভারতের অন্যতম সম্মানিত সামরিক রেজিমেন্ট।

গোর্খাল্যান্ড নাম নিয়ে বিতর্ক:

  1. পশ্চিমবঙ্গের বিরোধিতা:
    • পশ্চিমবঙ্গ সরকার গোর্খাল্যান্ড রাজ্য গঠনের বিরোধিতা করে কারণ এটি রাজ্যের ভৌগোলিক এবং রাজনৈতিক অখণ্ডতা ভঙ্গ করতে পারে।
  2. পর্যটন শিল্প:
    • দার্জিলিং একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন অঞ্চল। আলাদা রাজ্য হলে পর্যটন শিল্পে প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করা হয়।
  3. অর্থনৈতিক বিষয়:
    • দার্জিলিং চা শিল্প এবং অন্যান্য অর্থনৈতিক সম্পদ পশ্চিমবঙ্গের রাজস্বের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

দার্জিলিংকে গোর্খাল্যান্ড বলা হয় কারণ এটি গোর্খা জনগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক কেন্দ্রবিন্দু।যদিও গোর্খাল্যান্ড নিয়ে রাজনৈতিক আন্দোলন এবং বিতর্ক অব্যাহত রয়েছে, এটি দার্জিলিংয়ের মানুষের পরিচিতি এবং মর্যাদার প্রতীক।




VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png


ধন্যবাদ।সবাই ভালো থাকবেন।

BoC- linet.png
-cover copy.png

|| Community Page | Discord Group ||


Posted using SteemPro Mobile

1000158488.jpg

PUSS COIN:BUY/SELL

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Congratulations, your post has been upvoted by @nixiee with a 4.5822917632492475 % upvote Vote may not be displayed on Steemit due to the current Steemit API issue, but there is a normal upvote record in the blockchain data, so don't worry.

দার্জিলিং, যা অনেকের কাছে একটি ভ্রমণ প্রিয় জায়গা। কিন্তু এই দার্জিলিং কে যে গোর্খাল্যান্ড বলা হয় এটা আপনার পোস্ট থেকেই জানতে পারলাম। তাছাড়াও এই গোর্খাল্যান্ড নামকরণ এবং এখানে অবস্থানরত জনগোষ্ঠীর রাজনৈতিক অবস্থান সাংস্কৃতিক অবস্থান সহ বেশ কিছু অজানা তথ্য জানতে পারলাম। চেষ্টা করব ভারতে গেলে অবশ্যই দার্জিলিং ঘুরতে যাওয়ার। অসংখ্য ধন্যবাদ দিদি দার্জিলিং নিয়ে সুন্দর কিছু তথ্যবহুল পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য।

আপনার পোস্ট এর মাধ্যমে গোর্খা জনগোষ্ঠী সম্পর্কে অনেক তথ্য জানতে পারলাম। আপনি আপনার লেখার মাধ্যমে গোর্খা জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় বিশ্বাস,সংস্কৃতি ও উৎসব সকল বিষয় তুলে ধরেছেন। সেই সাথে তুলে এনেছেন তাদের আন্দোলনও।

দার্জিলিংকে অনেক সময় গোর্খাল্যান্ড বলা হয় কারণ এটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের একটি বিশেষ অঞ্চল যেখানে গোর্খা জনগোষ্ঠীর সংখ্যাগরিষ্ঠ বাস।

দার্জিলিংকে যে অনেক সময় গোর্খাল্যান্ড বলা হয়, এটা সত্যিই জানা ছিলো না বৌদি। দার্জিলিং ঘুরতে যাওয়ার ইচ্ছে আছে আমার। যাইহোক আপনি গোর্খাল্যান্ড নিয়ে দারুণ আলোচনা করেছেন বৌদি। পোস্টটি পড়ে অনেক কিছুই জানতে পারলাম। এমন তথ্যবহুল একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

দার্জিলিং কে ঘিরে এত কথা সত্যিই জানতাম না দিদিভাই। বেশ তথ্যবহুল লেখা, দারুণ উপভোগ করলাম ।